নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ০২ নভেম্বর, ২০১৮
বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেই ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গতকাল গণভবনে সংলাপে অংশ্রগ্রহন করেছিল বিএনপি। বহুল আলোচিত এই সংলাপে বিএনপির মূল দাবিগুলোর একটাও অর্জিত হয় নাই। গতকালের সংলাপ শেষে, সংলাপে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে বিএনপি’তে, দেখা দিয়েছে বিদ্রোহ।
বিএনপির অধিকাংশ নেতা মনে করছেন, সংলাপে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল ভুল। এই সংলাপ ছিল একটা ফাঁদ। এই ফাঁদে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছিল। তারেক জিয়া সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে নির্দেশ দেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অসুস্থার অজুহাতে সংলাপে অংশগ্রহণ করেন নাই। সংলাপ প্রসঙ্গে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এই সংলাপে কোনও ফলাফল হবে না। অর্থহীন একটা সংলাপ হবে বলে তিনি সংলাপে অংশগ্রহণ করেননি।
গতকালের সংলাপ শেষে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে, সংলাপের পরে কি হবে? জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এখন কি করবে? গতকাল রাত ১২ টায় ড. কামাল হোসেনের বাসভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা একসঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন। সেখানে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন শেষে পরবর্তী করনীয় বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে স্পষ্ট দ্বিধাবিভক্তি লক্ষ্য করা গেছে। কামাল হোসেন অহিংস আন্দোলন করার পক্ষে তাঁর স্পষ্ট মত দিয়েছেন। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী কিছু পরামর্শ দিয়েছেন, সেগুলো পর্যবেক্ষন করে সভা সমাবেশ করে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে তাঁর স্পষ্ট অবস্থানের কথা বলেছেন তিনি। ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জ্বালাও পোড়াও বা সহিংস আন্দোলনে তিনি নেই।
অপরদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে চাপ বাড়ছে যে, যেকোনো উপায়ে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে। যেদিন থেকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে, সেদিন থেকে রাজপথ ঘেড়াও, অবরোধ, অসহযোগের আন্দোলন করার পক্ষে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল এবং বিএনপির শীর্ষ মহলের নেতাদের ধারণা, এই রকম কর্মসূচি দেওয়ার মতো যে রাজনৈতিক সামর্থ্য থাকা দরকার, সেই সামর্থ্য এখন বিএনপির নেই। সংলাপ পরবর্তী সময়ে হঠাৎ করে আন্দোলন করার এখন পরিবেশও নেই। বিশেষ করে সংলাপের ফলে যে রাজনৈতিক আবহ তৈরি হয়েছে, তাতে তীব্র কোন আন্দোলনের পরিস্থিত স্তিমিত হয়ে গেছে। বিএনপির মধ্যে থেকে যারা সংলাপে অংশগ্রহণ করেছিল তাঁরা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। তাঁরা মনে করেন, জনসংযোগ-জনসমাবেশ ইত্যাদি করেই আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে নির্বাচনে যাওয়াটাই উচিৎ।
সংলাপের বাইরে বিএনপির যে শীর্ষ নেতারা রয়েছেন তাঁরা মনে করছেন যে, কোনওভাবে সংলাপ সভাসমাবেশ এবং সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচনের জন্য এই সরকারকে বাধ্য করা যাবে না। এ অবস্থায় নির্বাচনে গেলে সরকারকে বৈধতা দেওয়া ছাড়া আর কোন পথ খোলা থাকবে না। তবে বিএনপির মধ্যে একটা অংশ তীব্রভাবে মনে করছে যে, নির্বাচন করে যদি সংসদে একটা সন্মানজনক আসন নিয়ে বিরোধী দলের স্থানেও যাওয়া যায়, তাহলে খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ অনান্য বিষয়ে দ্রুত সমাধানের পথ পাওয়া যাবে। এখন এই সংলাপের পরে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে অন্তকলহ দেখা দিয়েছে, সেই অন্তকলহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে একদিকে যেমন অকার্যকর করতে পারে, তেমনিভাবে বিএনপিতেও ভাঙ্গনের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। কারণ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঘটনের পর থেকেই বিএনপির মধ্যে মতবিরোধ ছিল। বিশেষ করে ২০ দলকে অকার্যকর করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দিকে ঝুকে পরা, প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সংলাপে যাওয়া এবং সংলাপ শেষে কিছুই না পাওয়ার কারণে কর্মীদের মনোবল ভেঙ্গে দিয়েছে। এসব কারণে এখন বিএনপিতে রীতিমত বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। এই বিদ্রোহ বিএনপিকে ভাঙ্গনের দিকে নিয়ে যায় কিনা এখন সেটাই দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।