নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০২ নভেম্বর, ২০১৮
সংলাপ নিয়ে হতাশ তারেক জিয়া। গতরাতেই তিনি একাধিক নেতার কাছে ফোন করে সংলাপের পূর্ণ বিবরণ নিয়েছেন। সংলাপে বিএনপি নেতাদের পারফরমেন্সে নাখোশ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে টেলিফোন করে তারেক জিয়া বলেছেন, ‘আপনারা কি দাওয়াত খেতে গিয়েছিলেন?’ মির্জা আব্বাসকেও টেলিফোন করে বলেন, ‘আপনারা তো আমাদের দাবিগুলোই ঠিকমতো তুলে ধরতে পারলেন না। গেলেন ওনার( প্রধানমন্ত্রীর) কথা শুনে চলে আসলেন।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মির্জা আব্বাসও স্বীকার করেছেন যে, সংলাপে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের হোমওয়ার্ক এবং প্রস্তুতি ভালো ছিলো না। মির্জা আব্বাস তারেক জিয়াকে বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আরও প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়া উচিৎ ছিলো।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, তারেক বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বললেও দলের মহাসচিবের সঙ্গে কোন কথা বলেননি। গত কিছুদিন ধরেই তাদের মধ্যে দুরত্ব চলছে। বিএনপি’র একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। একাধিক নেতাকে তিনি বলেছেন, ‘মির্জা ফখরুল ডুয়েল গেম খেলছেন।’ একটি সূত্র জানিয়েছে, গত একমাস ধরেই তারেক নতুন মহাসচিব খুঁজছেন। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে বিএনপির মহাসচিব করার ব্যাপারে মোটামুটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। এ ব্যাপারে তারেক একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গেও কথা বলেছিলেন। বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, এই তথ্যটি কেউ সরকারকে ফাঁস করে দেয়। সেই প্রেক্ষিতেই সরকার খসরুকে পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার করে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চায় মির্জা ফখরুলই বিএনপি মহাসচিব হিসেবে নির্বাচন পর্যন্ত থাকুক। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। মির্জা ফখরুল যে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই কাজ করছেন, তা তারেক জিয়াও জানেন। বিশেষ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং সংলাপ ইত্যাদি বিষয়ে মির্জা ফখরুলের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী স্পষ্ট হয়ে গেছে বলে তারেকসহ বিএনপির একাধিক নেতা মনে করেন। এজন্য তারেক বিকল্প মহাসচিব খুঁজছেন। কিন্তু এখনো আমীর খসরু মাহমুদ ছাড়া গ্রহনযোগ্য কাউকে খুঁজে পাননি তারেক। বিএনপির আরেক নেতা নজরুল ইসলাম খানকে মহাসচিব হিসেবে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু দলের সিনিয়র নেতাদের কাছে তাঁর গ্রহনযোগ্যতা নেই। বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নামও আলোচনায় আসে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রিজভীকেও তারেক মহাসচিব পদের জন্য যোগ্য মনে করেননা। বিএনপিপন্থি একজন নেতা বলেছেন, যাকেই তারেক পছন্দ করেন তাঁর উপরই মামলার খড়গ নেমে আসে। ফলে মির্জা ফখরুলকেই থাকতে হচ্ছে বিএনপিতে। তবে বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আসল চেহারা স্পষ্ট হয়ে যাবে।। তখনকার পরিস্থিতে বিএনপি হয়তো নতুন মহাসচিব খুঁজে নেবে। তার আগে এই স্বল্পতম সময়ের মধ্যে মহাসিচিব পরিবর্তন সম্ভব না বলেই মনে করছে বিএনপিতে তারেক পন্থীরা।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।