নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১০ নভেম্বর, ২০১৮
বিএনপি এবার নির্বাচনে যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আওয়ামী লীগের মধ্যে ছিল। এমনকি এবার তিনমাস আগে পর্যন্ত একমাত্র শেখ হাসিনা ছাড়া দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীদের ধারণা ছিল যে বিএনপি বোধহয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। দেশে একটি একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেই এমপি হয়ে যাওয়ার নিশ্চিত এমন ধারণা ছিল অনেক নেতাকর্মীদের। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বলছে, শেষপর্যন্ত যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে আওয়ামী লীগকে কঠিন পরীক্ষার মধ্যেই পড়তে হবে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫টি কারণে আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে আশঙ্কার মুখে পড়তে পারে। এমনকি এই কারণগুলোর জন্য হোঁচট খাওয়ার মতো ফলাফল অর্জন করতে পারে আওয়ামী লীগ। কারণগুলো হলো:
১. নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। আগামীকাল মনোনয়ন কমিটির মিটিংও শুরু হতে যাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অন্তত ৯০টি আসনে কোন্দল একেবারেই বন্ধ হয়নি। এই কোন্দলের জেরেই শনিবার রাজধানীতে দুজনের প্রাণহানিরও ঘটনা ঘটেছে। এই কোন্দলটি ঘটেছে দুই শীর্ষ নেতার পর্যায়ে। এজন্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, অপরজন ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক। এটা শুধু রাজধানীর মধ্যেই নয়। সারাদেশের চিত্রও প্রায় একই।
মনোনয়নপত্র দাখিলকে ঘিরে এই কোন্দল যে আওয়ামী লীগ খুব দ্রুত কমিয়ে ফেলতে পারবে, সেই সম্ভাবনাও খুব কম। কেউ হয়তো ভয়ে নির্বাচনে দাঁড়াবেই না বা প্রার্থী হবেন না। কিন্তু যে প্রার্থী হবেন, তাঁর বিরুদ্ধে ভেতরে ভেতরে বঞ্চিত বা প্রতিপক্ষের ক্ষতি করার ব্যাপারটি আসতেই পারে। ১৯৯১ সালে এমন ঘটনা ঘটেছিল। তেমনটা হলে আওয়ামী লীগের নিশ্চিত আসনগুলোও হাতছাড়া হওয়ার ভয় থাকছে।
২. আওয়ামী লীগ টানা ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। এই ক্ষমতায় থাকার ফলে আমাদের দেশে প্রাতিষ্ঠানিকতা বিরোধী মানসিকতার মানুষগুলোর মনে আওয়ামী লীগের প্রতি ক্ষোভ, অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। পাওয়া না পাওয়ার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে মানুষের মধ্যে। সবাইকে সন্তুষ্ট করতে না পারায়ও ক্ষোভ আছে। আর এর সব দায় বর্তাবে অবশ্যই ক্ষমতাসীন দলের প্রতি। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের প্রতি। সেই নেতিবাচক প্রভাব অবশ্যই নির্বাচনে পড়বে।
৩. আওয়ামী লীগের বিভিন্ন এমপি, মাঠ পর্যায় এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাদের বিভিন্ন রকমের দৌরাত্ম, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের অভিযোগ, আধিপত্য বা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা, নানারকম দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকাতেই এমন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বিরাজ করছে। মানুষ সাধারণত তাদের ভোটের মাধ্যমেই তাদের অন্যায় এবং অপমানের প্রতিবাদ করতে চায়। আওয়ামী লীগ যদি এখনই বিষয়গুলো নিয়ে না ভাবে, তাহলে সামনে শঙ্কা থেকেই যায়।
৪. আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আওয়ামী লীগ বিরোধী ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এখন অনেক বেশি সোচ্চার। আর মনে করা হচ্ছে, নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই প্লাটফর্মে এখনই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যেসব গুজব আর মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে, সেটাই আওয়ামী লীগ রুখতে পারছে না। আর নির্বাচনকালে যা হবে, তার জবাব আওয়ামী লীগ কীভাবে দেবে বা নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা কি করবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
৫. আওয়ামী লীগ এখন একক নেতা নির্ভর অর্থাৎ শেখ হাসিনা নির্ভর দলে পরিণত হয়েছে। এখন যদি দেশে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়, শেখ হাসিনা যে নির্বাচিত হবে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু শেখ হাসিনা কি একা ৩০০ আসনের একটি নির্বাচন বহন করতে পারবেন? এটা একটা বড় প্রশ্ন। সেই ৭০ এর নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়ের নির্বাচনে তিনি ছাড়াও তার অধস্তন নেতাকর্মীরাও দলকে টেনে তুলতে পারতো। ৯৬ এর সময়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি বিশাল নেতৃত্বের দল ছিল। কিন্তু এখন সব দায়সারা গোছের, কেউ দায় নিতে চায় না। দলকে টেনে তোলার মতো নেতৃত্ব এখন দলে নেই। সিনিয়র নেতারাও গা বাঁচিয়ে চলার চেষ্টায় আছে। এমন অবস্থায় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কি করবে, কতটা সফল হবে সেটা নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে ততই স্পষ্ট হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।