নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১২ নভেম্বর, ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক একেবারেই থাকছেন না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন তাঁরা পর্যবেক্ষণ করবেন না। আজ নির্বাচনের পুন:তফসিলের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও তার দেশের কেউ এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্কিন দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ’২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে ছুটি থাকবে। এ সময় তাই কোনো মার্কিন পর্যবেক্ষক থাকবেন না।’ তবে, ইউএসএইড এর বাঙালি কর্মকর্তাদের একটি ক্ষুদ্র টিম কেন্দ্রীয় ভাবে নির্বাচনের বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করবেন বলে মার্কিন দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে। একই কারণে, ইউএনডিপির নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমেও কোনো বিদেশি প্রতিনিধি থাকবে না। ইউএনডিপি সূত্রে জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ের পর্যবেক্ষণও সীমিত করা হবে। তবে কেন্দ্রীয় ভাবে, নির্বাচনে আচরণ বিধি মানা হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ইউএনডিপি সূত্রে জানা গেছে, তারা নির্বাচনে সকল দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হচ্ছে কি না এবং নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে কিনা, তা কেন্দ্রীয় ভাবে মনিটর করবে জাতিসংঘের এই সংস্থাটি। একই ভাবে, জাপানও এবার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বড়দিন থেকে ইংরেজি নববর্ষ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে দীর্ঘ ছুটি থাকে। এই ছুটির মধ্যে কেউই কোনো কাজ করতে চান না। মার্কিন দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে। সব রাজনৈতিক দল এতে অংশ নিচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের পর্যবেক্ষণের চেয়েও বড় হলো জনগণ এই নির্বাচন কীভাবে দেখছে। জনগণ যদি তাদের ভোট স্বাধীনভাবে এবং নির্বিঘ্নে প্রয়োগ করতে পারে, সেটাই হবে গণতন্ত্রের জন্য বিজয়।’ ব্রিটিশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলে এমনিতেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কমে যায়। জনগণই নির্বাচনের আসল পর্যবেক্ষক।’
বিদেশী পর্যবেক্ষক না থাকাকে একটা দুরভিসন্ধি হিসেবে দেখছে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘এ কারণেই আমরা নির্বাচন একমাস পেছানোর দাবি করেছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের ইঙ্গিতে সরকার ডিসেম্বরেই নির্বাচন করতে চায়।’ তিনি বলেন, ‘সরকার নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে একটা সাজানো নির্বাচন করতে চায়, এ কারণেই তারা চায় না বিদেশি পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করুক।’ ড. মঈন খান বলেন, ‘বিদেশি পর্যবেক্ষক না থাকলে নির্বাচনে কারচুপি করা অনেক সহজ হয়ে যাবে।’ অবশ্য মঈন খানের এই বক্তব্যকে হাস্যকর এবং উদ্ভট বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘বিদেশিরা থাকবে কি থাকবে না, তার ওপর কি দেশের নির্বাচন পেছানো যায়? এদের কি দেশের মানুষের প্রতি নূন্যতম আস্থা নেই।’ ডা. দীপু মনি বলেন, ‘প্রচুর পরিমাণ বিদেশি পর্যবেক্ষক এবার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এরা অধিকাংশই বিদেশি অর্থায়নপুষ্ট। কাজেই তাদের কাছ থেকেই বিদেশিরা তথ্য পাবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিদেশিরা কি বললো, তার চেয়ে দেশের মানুষ কি ভাবছে, সেটাকেই গুরুত্ব দিতে চাই।’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।