নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৪ এএম, ১৩ নভেম্বর, ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পত্র বিক্রি শেষ হয়েছে গতকাল সোমবার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবার আওয়ামী লীগের রেকর্ড সংখ্যক মনোনয়নপত্র কেনা হয়েছে। হিসেব অনুযায়ী, চারদিনে সর্বমোট ৪ হাজার ২৩টি মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয়েছে। এমনকি কোনো কোনো আসনে ৩০টি বা ৪০টি মনোনয়ন পত্র বিক্রির ঘটনাও ঘটেছে। প্রতি আসনে গড়ে মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয়েছে ১৩টিরও বেশি। জানা গেছে, সংসদীয় ৩০০টি আসনের মাত্র ৭টি আসনে একক মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন এবার আওয়ামী লীগে মনোনয়ন পত্র কেনার বন্যা বয়ে গেল? দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এর ৫টি কারণ পাওয়া গেছে:
১। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধরে নিয়েছিলেন বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে না। যেহেতু তাদের কোনো দাবিদাওয়া মানা হয়নি, গত নির্বাচনের মতো এবারও বিএনপি নির্বাচন বয়কট করবে বলে ধারণা করছিলেন অনেকে। তাই তাঁরা মনে করেছেন, আওয়ামী লীগের টিকেট পাওয়া মানেই হলো নিশ্চিত এমপি হওয়া। তাই আওয়ামী লীগের যে যে অবস্থায় আছেন সে অবস্থাতেই এমপি হওয়ার জন্য মনোনয়ন পত্র কিনেছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পত্র কেনার বন্যা বয়ে যাওয়ার পেছনে এটি প্রধান ও প্রথম কারণ।
২। আওয়ামী লীগের মধ্যে অনৈক্য ও অন্তর্কলহ একদম তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়েছে। তাই বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার বর্তমান এমপি বা নেতার বিরুদ্ধে একাধিক নেতা দাঁড়িয়ে গেছেন, একাধিক গ্রুপ-উপগ্রুপও তৈরি হয়ে গেছে। প্রত্যেকটি গ্রুপের নেতাই মনে করছেন, নির্বাচনে তাঁরাই যোগ্য প্রার্থী। এ কারণে একই আসন থেকে একাধিক মনোনয়ন পত্র কেনার ঘটনা ঘটেছে।
৩। অতীতে আওয়ামী লীগে একটি সংস্কৃতি ছিল যে এক এলাকায় একজনই নেতা থাকতেন। দলটিতে চেইন অব কমান্ডের একটি বিষয় ছিল। কিন্তু বর্তমানে এই চেইন অব কমান্ডটি ভেঙে পড়েছে। মনোনয়ন পত্র কিনতে আসা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেছে, একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের খুব কম নেতার প্রতিই আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাকর্মীর আস্থা, বিশ্বাস বা শ্রদ্ধা আছে। পারষ্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া কমে গেলে এবং সবাই নিজেকে একে অন্যের চেয়ে যোগ্য মনে করা শুরু করলে রাজনীতিতে এমন প্রবণতার সৃষ্টি হয়।
৪। আওয়ামী লীগ গত ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীর আর্থিক অবস্থা ভালো হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ফলে আর্থিক স্বচ্ছ্বলতা এসেছে অনেকের। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কারো যদি আর্থিক অবস্থা ভালো হয় তাহলে তিনি মনে করেন তাঁর নির্বাচনে যাওয়ার সময় হয়েছে এবং নির্বাচনে গেলে তাঁরা ভালো করবেন। তাই এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পত্র কেনার এমন ধুম পড়েছে।
৫। অধিকাংশ আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পত্র ক্রেতাদের মধ্যে তারুণ্যের প্রাধান্য লক্ষ্য করা গেছে। তরুণ আওয়ামী লীগাররা আগের নেতাদের যোগ্য মনে করছেন না। তাই তাঁরা মনোনয়ন পত্র কিনছেন। অবশ্য তরুণদের রাজনীতি সচেতনতা যে কোনো দেশের জন্যই ইতিবাচক দিক। এছাড়া আওয়ামী রাজনীতিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগের যে ধারা, তার কারণেও তরুণ মনোনয়ন প্রত্যাশীরা উঠে আসছেন বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনীতি থেকে প্রবীনরা সরে গিয়ে তরুণদের জায়গা করে দেওয়ার সময় এসেছে, এমন চিন্তাভাবনাও আওয়ামী লীগের রেকর্ড সংখ্যক মনোনয়ন পত্র বিক্রির অন্যতম কারণ।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।