ইনসাইড ইকোনমি

‘দাম কমোনে ব্যাচাবিক্রি বাড়ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:৩০ পিএম, ২৩ নভেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

‘কয়ডা দিন ধইরা বাজারে প্রচুর তরি-তরকারি, প্রতি রাইতেই আগেরতন প্রাইয় দিগুণ ট্রাক মাল সব্জি নিয়া কারানবাজারের আড়তে আহে। আগেরতন এহন পাল্লা প্রতি হক্কল সব্জির দামও কম। পাইকারি দাম কমোনে, খুচ্রা বাজারেও দাম কমছে। দাম কমোনে ব্যাচাবিক্রি বাড়ছে।’

ক্রেতার কাছ থেকে টাকা নিতে নিতে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা রহমত মিয়া।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সবজির উপর নির্ভর করে রাজধানীর কাঁচাবাজার। যে সময় সরবরাহ বেশি থাকে তখন স্বস্তি আর যখন সরবরাহ কম থাকে তখন আপনাআপনি বেড়ে যায় কাঁচাবাজারের সব পণ্যের দাম। তারই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে কমতে শুরু করেছে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজির দাম।

আজ শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল কাঁচাবাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঢেড়শ ৩০ টাকা, বেগুন ৩৫ টাকা, পটল ২৫ টাকা, টমোটো ৪০ টাকা, শশা ৩০ টাকা, কাচামরিচ ৫৫ টাকা, গাজর ৮০ টাকা ও মুলা ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও পাতাকপি ২০ থেকে ৩০ টাকা পিসে বিক্রি হচ্ছে। সব রকমের শীতকালীন সবজির দাম কমায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের মাঝে।

তবে অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, ডাল, মসলা ও তেলের দাম। প্রতি কেজি মসুর ডাল (দেশি) ১০০ টাকা, ভোজ্যতেল প্রতি লিটার খোলা ৯০ টাকা, বোতল ১০৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা ১০০-১২০ টাকা, রসুন (ইন্ডিয়ান) ৬০, দেশি ৫৫, পেঁয়াজ (দেশি) ৫০ টাকা, পেঁয়াজ (ইন্ডিয়ান) ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে, শীতের কারণে নদী ও খালবিলের পানি কমে আসায় মাছও ধরা পড়ছে প্রচুর পরিমাণে। এরফলে বাজারও এখন মাছে ভরপুর। সেই সঙ্গে ইলিশের সরবরাহ রয়েছে পর্যাপ্ত। সবমিলিয়ে স্থিতিশীল রয়েছে মাছের দাম।

বাজারে প্রতি কেজি পাঙ্গাস ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হয়- যা গত সপ্তাহে ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেজিপ্রতি কৈ ১৫০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে- যা গত সপ্তাহে ১৮০-২০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া ১২০-১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রুই ২৮০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হয়েছে- যা গত সপ্তাহে ৩০০-৩১০ টাকায় বিক্রি হয়। ট্যাংরা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে- যা গত সপ্তাহে ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়। শিং ৩০০-৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে- গত সপ্তাহে ৪০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। চিংড়ি প্রতি কেজি ৫০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে- যা গত সপ্তাহে ৬০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

ইলিশের আমদানি বেশি থাকায় দামও কম। বড় সাইজের ইলিশ ৮০০-৯০০ টাকায় এবং মাঝারি সাইজের ইলিশ ৫০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

অপরিবর্তিত আছে সব ধরণের মাংসের দাম। গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪৮০-৫০০ টাকায়। খাসির মাংস কেজি প্রতি ৭৫০ টাকা। সাদা বয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১২০-১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮০-২১০ টাকায়, আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩৫০-৪১০ টাকায়।

বাংলা ইনসাইডার/বিকে/জেডএ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

খেলাপি ঋণে নতুন রেকর্ড

প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ০৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

নানা পদক্ষেপ নিয়েও খেলাপি ঋণ নিরাময় করতে পারছে না নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংক। উল্টো দিন দিন বাড়ছে। সবশেষ ২০২৪ সালের মার্চ প্রান্তিক শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা, এর মধ্যে তিন মাসেই বেড়েছে ৩৬ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা।

এক বছর আগে ২০২৩ সালের মার্চে ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ হাজার কোটি টাকা এবং গত ডিসেম্বরে ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হালনাগাদ বিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, ২০২৪ সালের মার্চ প্রান্তিক শেষে ব্যাংকখাতে মোট বিতরণ (আউটস্ট্যান্ডিং) করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা।

তার আগের প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা বা মোট ঋণের ৯ শতাংশ। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংকখাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩৬ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা। গত বছরের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৫০ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণও ধাপে ধাপে কমিয়ে আনাতে হবে। আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতে খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের নিচে এবং সরকারি ব্যাংকে ১০ শতাংশের নিচে নামাতে হবে। কিন্তু বর্তমানে বেসরকারি খাতের খেলাপি ঋণ ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। আর সরকারি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ২৭ দশমিক ৪৯ শতাংশই খেলাপি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো গত মার্চ পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করেছে ৩ লাখ ১২ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৮৫ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকগুলো একই সময়ে ঋণ বিতরণ করেছে ১২ লাখ ২১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৮৮ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলো ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করেছে ৬৬ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৩ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৫ দশমিক ২০ শতাংশ। এ ছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৪০ হাজার ৩২ কোটি টাকার ঋণ। যার মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা। বিতরণকৃত ঋণের এটি ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

আইএমএফের শর্ত মতে, পুনঃতপশিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, সন্দেহজনক ঋণ ও আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণকেও খেলাপি দেখাতে হবে। সেক্ষেত্রে আএমএফের হিসাবে খেলাপি দাঁড়াবে ৪ লাখ কোটি টাকার বেশি। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর অবস্থান না থাকায় খেলাপি বাড়ছে বলে মত অনেকের।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, খেলাপির যে চিত্র যা উঠে এসেছে প্রকৃত চিত্র এটা না। প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ, আরও বড় হবে। অর্থঋণ আদালত ও সুপ্রিম কোর্টে যে মামলাগুলো বিচারাধীন, সেগুলোকে ক্লাসিফায়েড ঋণে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। এটাই মোট খেলাপি ঋণের প্রধান অংশ। আরেকটি বিষয় হলো মন্দ ঋণ রাইট-অফ করা হয়েছে। সেটাও ক্লাসিফায়েড ঋণে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। এগুলো সব যোগ করলে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত দেশের ব্যাংক খাতে মোট প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখার কথা ছিলো ১ লাখ ১১ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। কিন্তু এই সময়ে প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয়েছে ৮৪ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ বর্তমানে সার্বিক প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা।


খেলাপি ঋণ   বাংলাদেশ ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

সাদা-কালোর চক্করে গ্যাঁড়াকলে সাধারণ করদাতা


Thumbnail

প্রস্তাবিত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের মতোই ব্যক্তি শ্রেণি বিভাগে করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা রাখা হয়েছে। তবে রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে সর্বোচ্চ আয়ের করসীমা ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।

অন্যদিকে, মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে এবারও কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। মূলত অপ্রদর্শিত অর্থ, অর্থনীতির মূলধারায় আনতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে পুরোনো আয়কর আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাকে বর্তমান আইনে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ পদ্ধতিতে কর দিয়ে টাকা বৈধ করলে সরকারের অন্য কোনো সংস্থা উৎস নিয়ে আর কোন প্রশ্ন করতে পারবে না।

এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার মাত্র ১০ শতাংশ কর পরিশোধ করে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় কালো টাকা সাদা করার সুযোগের পাশাপাশি সহজ শর্তে পাচার অর্থ দেশে ফেরাতেও বাজেটে দায়মুক্তির সুযোগ দেওয়া হয়। তবে, বারবার সরকারের এ ধরনের উদ্যোগকে বৈষম্যমূলক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একে সাধারণ করদাতাদের ওপর অবিচার উল্লেখ করে বাজেটে এ ধরনের সুবিধা রাখা পুরোপুরি অযৌক্তিক বলেও মত তাদের। 

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী এখন থেকে যে কোনো করদাতা সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ করের সঙ্গে অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ জরিমানা দিলেই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ পাবেন। যদিও, এর বাইরে প্লট বা ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে এলাকাভেদে নির্দিষ্ট আয়তনের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত কর পরিশোধ করেও অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ রয়েছে। তবে এসব ক্ষেত্রে সরকার সংশ্লিষ্ট যে কোনো সংস্থা চাইলে পরবর্তীতে ওই টাকার উৎস সম্পর্কে করদাতাকে প্রশ্ন করতে পারবে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের এমন বিতর্কিত উদ্যোগ সত্ত্বেও অতীতে এতে খুব বেশি সাড়া মেলেনি। উল্টো বারবার এ ধরনের সুযোগ দেওয়ায় নিয়মিত করদাতারা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তাদের মতে, একজন সাধারণ করদাতা যেখানে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হারে কর দিচ্ছেন, সেখানে মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার এ সুযোগ নিয়মিত করদাতাদের ওপর অন্যায্য সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। আর এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে মানুষ করদানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলার পাশাপাশি আয়কর রিটার্ন দাখিলে বৈধ আয়কে অপ্রদর্শিত বলে দেখানোর প্রবণতা বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের, যা আগামী দিনের জন্য একধরনের সতর্কবার্তা হিসেবেই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রস্তাবিত বাজেট   কালো টাকা   জাতীয় রাজস্ব বোর্ড   ২০২৪-২৫ অর্থবছর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

একনজরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট

প্রকাশ: ০৬:৩৮ পিএম, ০৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট ঘোষণা পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এটি দেশের ৫৩তম ও আওয়ামী লীগ সরকারের ২৫তম বাজেট এবং অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট। গতবারের তুলনায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা বেশি ধরা হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করা শুরু করেন।

জাতীয় সংসদে ‘সুখী সমৃদ্ধ উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার’ শীর্ষক প্রস্তাবিত এ বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবছরের (২০২৩-২৪) চেয়ে ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা।



২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার বাড়লেও ঘাটতির পরিমাণ কমছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তবে অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, আগামী অর্থবছর ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

অভ্যন্তরীণ ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি, যার ৭২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং ৬৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি ঋণ। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।

২০২৪-২৫ অর্থবছর   বাজেট   অর্থমন্ত্রী   আবুল হাসান মাহমুদ আলী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

যেসব পণ্যের দাম বাড়বে

প্রকাশ: ০৫:৩১ পিএম, ০৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল তিনটায় জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। পরে অর্থমন্ত্রী বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন।

দাম বাড়বে যেসব পণ্যের

প্রস্তাবিত বাজেটে এলইডি বাল্ব, টিউব লাইট, বিভিন্ন ধরনের জুস, ম্যাঙ্গো বার, রোলিং পেপার, নিরাপত্তা সেবা, নিলাম সেবা, রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনারসহ ১৩টিরও বেশি পণ্য ও পরিষেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর বাড়তে পারে। 

এসব পণ্যের বেশিরভাগের ওপরই উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছে। এ ছাড়া, আগামী ৩০ জুন শেষ হতে চলা চলতি অর্থবছরে এসি উৎপাদনে যে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে তা প্রত্যাহার করা হতে পারে নতুন অর্থবছরে। 

২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেফ্রিজারেটর উৎপাদনে ভ্যাটের হার বর্তমানের পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে। এছাড়া মোবাইল অপারেটরদের সিম কার্ড বিক্রির ওপরও কর বাড়ানো হতে পারে। 

প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু পণ্যে আয়কর, শুল্ক, ভ্যাট অথবা সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে বাড়ছে সিগারেট, পানির ফিলটার, কাজুবাদাম, ফ্রিজ, এসি, আইসক্রিম, বেভারেজ, ইট, এলইডি বাল্ব, তামাকজাতীয় দ্রব্য। 

আরও বাড়ছে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল, টিউব লিসেনিং জেল, কৃত্রিম কোরান্ডাম, অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, ফ্লোরোসেন্ট বাতির যন্ত্রাংশ, কাচ, প্লাস্টিক, মেডিকেল যন্ত্র, সরঞ্জাম, মূলধনী যন্ত্রাংশ, নির্মাণসামগ্রী, সিম কার্ড, নিলামকারী সংস্থা, সিকিউরিটি সার্ভিস ও লটারির টিকিট ইত্যাদি পণ্যের দাম।

বাজেটে সিগারেটের উৎপাদন পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ও মূল্যস্তর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তিন স্তরের সিগারেটে সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে সব ধরনের সিগারেটের দাম বাড়বে। প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৪৮ টাকা ও একই পরিমাণ গুলের মূল্য ২৫ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। 

বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত পানির ফিলটার আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। দেশে উৎপাদন হওয়ায় পানির ফিলটার আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ে অনেকে বাসায় এলইডি বাল্ব ব্যবহার করেন। এলইডি বাল্ব এবং এনার্জি সেভিং বাল্ব উৎপাদনের উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে।

কাজুবাদাম চাষকে সুরক্ষা দেওয়ার অংশ হিসেবে খোসা ছাড়ানো কাজুবাদাম আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হচ্ছে। ফলে আমদানি করা কাজুবাদামের দাম বাড়বে। দেশে ফ্রিজ-এসি উৎপাদনে ব্যবহৃত কমপ্রেসর ও সব ধরনের উপকরণের ভ্যাট এবং শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। তাই এসি ও ফ্রিজের দাম বাড়বে। এলআরপিসি তার আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। এরফলে নির্মাণ খাতে খরচ বাড়বে।

গাড়ি সিএনজি-এলপিজিতে কনভার্সনে ব্যবহৃত কিট, সিলিন্ডার ও অন্য যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। গাড়ি কনভার্সন খরচ বাড়বে। আবার লোডশেডিং মোকাবিলায় বাসাবাড়ি বা শিল্পে জেনারেটরের ব্যবহার বাড়ছে। 

জেনারেটর সংযোজন ও উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ বা যন্ত্রাংশ আমদানিতে এক শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। দেশের বাজারে জেনারেটরের দাম বাড়বে। বিদেশ থেকে আমদানি করা ম্যাকরেল মাছ আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর যোগ করায় দাম বাড়বে।

শিল্পে ব্যবহৃত ৩৩টি আইটেমের কাঁচামাল আমদানিতে এক শতাংশ শুল্ক বসানো হচ্ছে। এ তালিকায় আছে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল, শিরীষ কাগজ উৎপাদনে ব্যবহৃত টিউব লিসেনিং জেল, কৃত্রিম কোরান্ডাম, অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, প্যাট চিপস উৎপাদনে ব্যবহৃত ইথাইলিন গ্লাইকল, পানির মোটর উৎপাদনকারী অ্যালুমিনিয়াম ইনগট, ফ্লোরোসেন্ট বাতির যন্ত্রাংশ, কাচ, প্লাস্টিক, এলইডি টেলিভিশন উৎপাদনে ব্যবহৃত এলইডি বাল্ব, বাতি উৎপাদনে ব্যবহৃত অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয় প্রভৃতির দাম বাড়বে।

অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে শিল্প প্রতিষ্ঠানের মূলধনী যন্ত্রাংশ ও নির্মাণসামগ্রী আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করে ১ শতাংশ শুল্ক বসানো হচ্ছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নে ডেভেলপারের আনা ব্যবহৃত সামগ্রীতে এক শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুযোগ বাতিল করা হচ্ছে।  

ফলে অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক ছাড়া অন্য শুল্ক-কর (ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, রেগুলেটরি শুল্ক) পরিশোধ করতে হবে।

ট্যুর অপারেটর সেবার ওপর বিদ্যমান মূসক অব্যাহতি প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, থিম পার্কে মূসক ৭ দশমিক ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ফলে বাড়বে ঘোরাঘুরির খরচ। নিলামকারী সংস্থা, সিকিউরিটি সার্ভিস ও লটারির টিকিটে মূসক ১০ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ করা প্রস্তাব করা হয়েছে।  

ইটের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সুনির্দিষ্ট কর ১০ থেকে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে বাড়বে নির্মাণ খরচ। আইসক্রিম ও কার্বোনেটেড বেভারেজের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে আইসক্রিম ও কোমলপানীয়ের দাম বাড়বে।

মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহারে দেওয়া সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে মোবাইলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বাড়বে। ই-সিম সরবরাহের ক্ষেত্রে মূসক ২০০ টাকার বিপরীতে ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

কিছু শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে রেফারেল বা বিশেষায়িত হাসপাতাল শুল্কছাড় সুবিধায় ১ শতাংশ শুল্কে মেডিকেল যন্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানির সুযোগ রয়েছে। বাজেটে ২০০টিরও বেশি মেডিকেল যন্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হচ্ছে। ফলে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় আরও বাড়বে।

বাজেট   অর্থমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

১৩ বছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে দ্বিগুণ

প্রকাশ: ০৫:২১ পিএম, ০৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

প্রবাসীকর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২১.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। আর গত ১৩ বছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে দ্বিগুণ।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ তথ্য জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী কর্মীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে স্বাবলম্বী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ১০.৯৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দ্বিগুণ হয়ে ২১.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বিদেশফেরত কর্মীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের অনুকূলে সরকার ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রদান করেছে বলে জানিয়েছেন মাহমুদ আলী।

দেশে নারীবান্ধব কর্মক্ষেত্র সৃষ্টির প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী জানান, কর্মক্ষেত্রে আহত হওয়ার ঝুঁকি থেকে সুরক্ষার জন্য নারীদের জন্য ‘এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি ইনস্যুরেন্স’ স্কিম পাইলট ভিত্তিতে চালু করা হয়েছে।

মাহমুদ আলী বলেন, শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতে ১ হাজার ৫৫০টি কারখানার কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

রেমিট্যান্স   প্রবাসী   বাংলাদেশ ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন