নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৩ নভেম্বর, ২০১৮
দেশের রাজনীতিতে দীর্ঘ দিনের ত্যাগী, নিবেদিত প্রাণ, পরীক্ষিত এবং দলের দুঃসময়ের কাণ্ডারি এমন কয়েকজন রাজনীতিবিদ এবারের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না বলে জানা গেছে। এই সংসদ নির্বাচনে তাঁরা রাজনীতিকে বিদায় জানানোর মাধ্যমে দীর্ঘ রাজনৈতিক জিবনের ইতি টানছেন।
বেগম সাজেদা চৌধুরীঃ আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারি বেগম সাজেদা চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ফুফু বলেই ডাকেন। পঁচাত্তর সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা সপরিবারে হত্যার পর যে দুজন আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন। তাঁদের একজন হলেন জোহরা তাজ উদ্দিন এবং অপরজন হলেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত সাজেদা চৌধুরী। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তিনি এবারের নির্বাচন করছেন না। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ এবং পারিবারিক কোন্দল ও নানা কারণে তাঁর আসনে হয়তো তাকে পরিবর্তন করা হতে পারে বলেই জানা গেছে। তিনি যদি এবারের নির্বাচন না করেন, তাহলে তাঁর দীর্ঘ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের সমাপ্তি ঘটবে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা।
সাহারা খাতুন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাহারা খাতুন একজন আদর্শ কর্মী হিসেবেই সবচেয়ে বেশি সমাদৃত এবং পরিচিত। তিনি রাজনীতি থেকে পেয়েছেন অনেক কম, কিন্তু রাজনীতি করতে গিয়ে তিনি দেশ ও দলকে দিয়েছেন অনেক বেশি। দলের নেতৃত্বের পতি তাঁর বিশ্বাস এবং আস্থা কোনো সময় নষ্ট করেন নাই। দুঃসময়ের কাণ্ডারি হিসেবে তিনি পরিচিত। বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের সময় তাঁর সাহসী ভূমিকা দলে এবং দলের বাইরেও প্রশংসিত হয়েছিল। গত নির্বাচনে ঢাকার উত্তরার একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাচ্ছেন না বলেই এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে। তিনি যদি শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন না পান, তাঁর যে বয়স তা থেকে ধারণা করা যায়, এটাই হবে তাঁর রাজনীতির অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি।
কর্নেল (অবঃ) শওকত আলী: শরিয়তপুরের একটি আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন কর্নেল (অব:) শওকত আলী। তিনি ডেপুটি স্পীকার ছিলেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সহ আসামি হিসেবে তাঁর নাম ছিল। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বহু ত্যাগ এবং কষ্ট স্বীকার করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি বীর সৈনিক হিসেবে দেশের জন্যে লড়েছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে কর্নেল (অব:) শওকত আলী এবারে হয়তো মনোনয়ন পাবেন না। তিনি যদি এবারে মনোনয়ন না পান, তাহলে তারও রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
শুধু আওয়ামী লীগই নয়, বিএনপি থেকেও এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়ার কারণে, অনেক বিএনপি নেতার রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকমহল মহল মনে করছে।
ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার: বার্ধক্যের কারণে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এবারের নির্বাচনে হয়তো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন বিএনপির দুঃসময়ের কাণ্ডারি ছিলেন। বিএনপি আমলে তিনি জাতীয় সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতিও ছিলেন। তিনি কখনই তাঁর নীতি আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়া গ্রেপ্তারের পর, তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতি অনুগত ছিলেন। তাঁর আসনে হয়তো তাঁর পুত্র বা অন্য কাউকে বিএনপি মনোনয়ন দিবে বলে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে জানা যাচ্ছে। তিনি যদি এবারে নির্বাচন না করেন, তাহলে এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটবে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহাবুবুর রহমান: সাবেক সেনাপ্রধান ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহাবুবুর রহমান। তিনি দিনাজপুরের একটি আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন। জেনারেল মাহাবুবের রাজনৈতিক বিশ্বাসের চেয়ে, তাঁর ব্যক্তিগত সততা, নিষ্ঠা এবং স্পষ্টবাদিতার কারণেই তিনি দেশের রাজনীতিতে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি বিএনপিতে তারেক জিয়ার অপশাসন এবং জিয়া পরিবারের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ৯৬ সালের নির্বাচনের কঠিন সময়ে তাকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং সেই দায়িত্ব তিনি নিষ্ঠার সঙ্গেই পালন করেছিলেন। রাজনীতিতে স্পষ্টবাদিতা এবং নিজের মত খোলামেলাভাবে বলার কারণে, তিনি প্রশংসিত, সমালোচিত এবং নিন্দিত। এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি যদি মনোনয়ন না পান, তিনি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন না করতে পারেন, তাহলে এখানেই তারও রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটবে।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।