নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৪ নভেম্বর, ২০১৮
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আসন্ন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত এবং ঐক্যফ্রন্টের ভাষায় ইসির কিছু পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রতিবাদে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন এই আইনি লড়াইয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন জোটটির একাধিক নেতা।
ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাংলা ইনসাইডারকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখন ইভিএম ব্যবহার না করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে আমরা বারবার বলেছি। সকলের সঙ্গে আলাপ আলোচনার করে পরবর্তী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার জন্য তাদের অনুরোধ করেছিলাম আমরা। কিন্তু নির্বাচন কমিশন আমাদের এ কথা আমলে নিচ্ছে না। জোর করেই তারা আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের ব্যাপারে চেষ্টা চালাচ্ছে। তার মানে তাদের কোনো বদ মতলব রয়েছে। আমরা চ্যালেঞ্জ না করে এই বিষয়টি ছেড়ে দেব না।’
এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ঐক্যফ্রন্টের আইনি টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আরেকজন নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, শুধু ইভিএম নয়, নির্বাচন কমিশন আরও কিছু বিষয়ে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য যা যা করা দরকার কমিশন সেটা করছে না। কাজেই বিষয়টি আমরা আইনগত ভাবে মোকাবেলা করার জন্য তৈরি হচ্ছি।’
সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনী আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কমিশনকে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। কিন্তু আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি নির্বাচন কমিশন সে ক্ষমতা প্রয়োগ করছে না।’
বিএনপির অন্যতম নেতা এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কাছে আমরা একের পর এক যে দাবিদাওয়াগুলো করেছি তার একটিও নির্বাচন কমিশন আমলে নিচ্ছে না। ফলে নির্বাচন কমিশনের এমন পক্ষপাতমূলক আচরণের বিরুদ্ধে আমাদের আইনি প্রতিকারেই যেতে হবে।’
ঐক্যফ্রন্টের কোন কোন অভিযোগ নির্বাচন কমিশন আমলে নিচ্ছে না সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘কোনো অভিযোগই তারা আমলে নিচ্ছে না। আমরা যখন বলেছি, পুলিশ ও প্রশাসনে যেসব দলীয় লোকজন আছে তাদেরকে অবিলম্বে সরিয়ে দিতে তখন তারা সেটা করেনি। আমাদের নেতাকর্মীদের যে ধরপাকড় করা হচ্ছে সে বিষয়েও ইসির কোনো বক্তব্য নেই। সম্প্রতি বিএনপির একজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর লাশ পাওয়া গেছে বুড়িগঙ্গায়। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশন এখন নিরপেক্ষ নেই। তাই আমরা হাইকোর্টে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছি। হাইকোর্ট থেকেই আমরা দিক নির্দেশনা নেব।’
উল্লেখ্য, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রতিদিনই কোনো না কোনো অভিযোগ নিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। অবশ্য নির্বাচন কমিশন একাধিক সূত্র বলছে, নির্বাচন কমিশন ঐক্যফ্রন্টের প্রত্যেকটি অভিযোগের ব্যাপারেই আলাপ-আলোচনা করছে এবং যে অভিযোগগুলো শোনার মতো সেগুলো তারা তাৎক্ষণিক ভাবে সমাধান করে দিচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের যে অভিযোগ করা হয়েছিল সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কাউকে অকারণে গ্রেপ্তার-হয়রানি না করতে পুলিশ প্রশাসনকে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দিয়েছে। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যেন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ডেকে বৈঠক না করা হয়। সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই সব ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প ও অনুদান নিষিদ্ধ করে নির্দেশ দিয়েছে।
ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম আপত্তির জায়গা ইভিএমের ব্যাপারেও স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইভিএমের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সামনের নির্বাচনে খুবই ছোট আকারে পরীক্ষামূলক ভাবে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। কাজেই এতে আপত্তির কিছু নেই। যেহেতু আইনের মাধ্যমে ইভিএম চালুর বৈধতা দেওয়া হয়েছে তাই যদি কেউ ইভিএম নিয়ে আদালতে যেতে চায় আইনগত ভাবেই তা নির্বাচন কমিশন মোকাবেলা করবে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক কারাগা
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সারা দেশেই বাড়ছে দলটির গৃহদাহ। দল পুনর্গঠন ও চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঘিরে দলীটির বিবাদ প্রকাশ্যে আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশ সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘন করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা। তাদের অনেকে এলাকায় গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করতে গোপনে উসকে দিচ্ছেন স্থানীয় নেতাদের। ঢাকায় ফিরে তারাই আবার দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের পথ প্রশস্ত করছেন। এতে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস ঘনীভূত হচ্ছে।
দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের দলীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কারাগারে যাওয়া নেতাদের অনেকের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মনে করছেন দলীয় অনেকে। এ নিয়ে দলের ভিতরে রয়েছে বিতর্ক। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের (অডিও-ভিডিও) ভিত্তিতে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। অনেককে অঘোষিতভাবে ‘ওএসডি’ করা হয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে। এ নিয়ে ক্ষোভে কেউ কেউ রাজনীতি থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। চলে যাচ্ছেন দেশ ছেড়ে।
এসব বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি মহাসাগরের মতো বিস্তৃত একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। এ দলে নেতাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতেই পারে। তবে কোনো রকমের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা কোন্দল নেই।
জানা গেছে, সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বিরোধ-কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে চলমান উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। এই নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বয়কটের পক্ষে নেতা-কর্মীদের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সারা দেশে সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ নেতাই তাদের নিজ নিজ এলাকায় সেই দায়িত্ব পালন করেননি। অনেকে এলাকাতেই যাননি। জেলা বিএনপির শীর্ষকর্তারাও তেমন কোনো ভূমিকা রাখেননি। বরং উল্লিখিত নেতাদের এলাকাতেই ভোট কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে। নির্বাহী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব নেতার দ্বৈত ভূমিকায় তৃণমূলের নেতারা ক্ষুব্ধ।
মন্তব্য করুন