নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ২৫ নভেম্বর, ২০১৮
বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, আগামীকাল বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, তাঁদের নানা রকম সমস্যা থাকার কারণে, অনেক আসনে তাঁদের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে, সেই আশঙ্কায় অধিকাংশ আসনেই একাধিক প্রার্থী দেওয়া হতে পারে। মনে করা হয়েছিল, এবার প্রার্থী নির্বাচনে বিএনপি চমক দেখাবে। ২০০৮ সালের থেকে এবারে প্রার্থী তালিকায় বড় ধরণের রদবদল হবে। কিন্তু বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র যে তথ্য দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, বিএনপির প্রার্থিতায় বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। বরং বিগত নির্বাচনে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন করেছিল, তাঁদের উপরেই বিএনপি আবার নতুন করে আস্থা রাখছে।
বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, এবারের নির্বাচনটা হচ্ছে একটা ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ছিল একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটের নির্বাচন, এবারের নির্বাচন হচ্ছে আরেকটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। একটি নির্বাচনে কেউ পরাজিত হলেই তিনি যে অজনপ্রিয় বা বাতিল হয়ে পরেছেন এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপির অনেক নতুন প্রার্থী জয়ী হয়েছিল। তারাই আবার ৯৬ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিল। আবার তাঁরাই ২০০১ সালে বিজয়ী হয়েছিল। নির্বাচনে জয় পরাজয় নির্ভর করে ঐ সময়ের রাজনীতির পরিস্থিতির উপর। যার পক্ষে জোয়ার উঠবে সেই বিজয়ী হবে।’
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় যে সমস্ত নেতৃবৃন্দ আছেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবারও তাঁরা মনোনয়ন পাচ্ছেন। ২০০৮ সালে যারা মনোনয়ন পেয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে থেকে, যারা বিভিন্ন মামলার কারণে নির্বাচনের অযোগ্য হয়ে পরেছেন এবং মারা গেছেন তাঁরা বাদে অন্যদের মনোনয়ন দেওয়া হবে।
২০০৮ সালে যারা মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ছিলেন অন্যতম। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আসনে তাঁর স্ত্রী অথবা পুত্র মনোনয়ন পাবেন বলে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছেন।
২০০৮ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচন করেছিলেন এবং মারা গেছেন তাঁদের মধ্যে আছেন ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার। ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহ এবং এম কে আনোয়ারের আসনে তাঁদের উত্তরাধিকারদের মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে বিএনপির সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও যাদের নির্বাচনে অনিশ্চয়তা রয়েছে যেমন ভারতে থাকা সালাউদ্দিন চৌধুরী, কারাগারে থাকা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার আসনে তাঁদের স্ত্রীরা নির্বাচন করবেন এমন নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। সম্প্রতি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডিত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের আসনেও তাঁর স্ত্রীকেই মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। লালবাগের আসন থেকে নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্ত্রী মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, দুয়েকটি আসনে কে মনোনয়নের পাবে, তা নিয়ে দলের একাধিক নেতাদের মধ্যে কোন্দল রয়েছে। যেমন ঢাকার মতিঝিল আসন থেকে ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছিলেন তরুণ নেতা হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। সেই সময়ে মির্জা আব্বাস নির্বাচনের অযোগ্য ছিলেন। তবে বর্তমানে মির্জা আব্বাস নির্বাচনের যোগ্য। সেক্ষেত্রে হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে রংপুরের কোনো আসন দেওয়া হবে কিনা সেটা আগামী কাল মনোনয়ন দেওয়ার পর বোঝা যাবে। তবে হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের পরিবার জানিয়েছেন তাঁরা ঢাকা থেকেই নির্বাচন করতে আগ্রহী, কারণ রংপুরে বিএনপির তেমন জনপ্রিয়তা নেই এবং রংপুর সদর আসন থেকে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ নির্বাচন করছেন। সেখানে সোহেল নির্বাচন করতে আগ্রহী নন। এছাড়াও বিএনপিতে যারা ২০০৮ সালে সংস্কারপন্থী হওয়ার কারণে মনোনয়ন পান নাই, তাঁদেরকেও এবারের নির্বাচনে ফিরিয়ে আনা হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। যেমন সংস্কারপন্থী হিসেবে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত শহিদুল হক জামাল, আবু হেনা, আলমগীর কবিরসহ প্রমুখকে এবারে ধানের শীষের গণ্ডিতে দেখা যেতে পারে। তবে মনোনয়নে ক্ষেত্রে বিএনপির বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিশ্চিত আসন তাঁরা শরিকদের ছেড়ে দিবে কি না তার উপর নির্ভর করছে। যেমন: বগুড়া ২ আসন সবসময় বিএনপি জয়ী হয়। এই আসনের দাবিদার ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। মান্নাকে এই আসন যদি ছেড়ে দেয় তাহলে সেখানে বিএনপির বিদ্রোহের অসংখ্য রয়েছে। একই ভাবে লক্ষ্মীপুর বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত, সেখানে আ স ম আব্দুর রব একজন প্রার্থী। এখানে যদি রবকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, তাহলে এখানেও বিএনপির সাংগঠনিক বিদ্রোহের সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে ঢাকার দুটি আসন যেখানে বিএনপির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং আমানুল্লাহ আমান নির্বাচন করেন, সেগুলো দাবি করছেন মোস্তফা মহসিন মন্টু। কিন্তু সুব্রত চৌধুরী ও মন্টু দুজনের একজনকেও এখনই বাদ দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা বিএনপির নেই। বিএনপি নেতারা বলছেন, মোস্তফা মহসিন মন্টুকে ঢাকা-৬ আসন দেওয়ার চিন্তা ভাবনা চলছে। তবে বিএনপি নেতা আব্দুর আউয়াল মিন্টু ঢাকা থেকে নির্বাচন করবেন বলে দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে যেমন ক্ষোভ, বিক্ষোভ, হতাশা তৈরি হয়েছে, বিএনপির মনোনয়ন প্রকাশ হলে তা নিয়েও একই রকম মনোভাব ছড়িয়ে পড়বে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।