নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৮ নভেম্বর, ২০১৮
গত একবছরে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে সবথেকে বেশি সোচ্চার ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতাও তারা কম করেনি। কিন্তু আজ ইউরোপীয় পার্লামেন্ট (ইপি) আনুষ্ঠানিকভাবে জানালো যে, বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তারা পর্যবেক্ষণ করবে না। ইপির দুই কর্মকর্তা আজ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই বিবৃতি সরকার বিরোধী জোটের জন্য এক বড় আঘাত। শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়ন নয়, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রও ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর ফলে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন একটি বড় ধাক্কা খেলেন। গত একমাস ধরে তিনি চেষ্টা চালান ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য যেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে। তাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুরোধ জানিয়ে ড. কামাল হোসেন ব্যক্তিগতভাবে চিঠিও দিয়েছিলেন। ঐ চিঠিতে ড. কামাল বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র পূন:প্রতিষ্ঠার জন্য এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার নির্বাচনকে প্রভাবিত করার সব চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় নির্বাচন নিরপেক্ষ করার স্বার্থে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কোনো বিকল্প নেই।’ ক’দিন আগে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে ডেকেও ড. কামাল হোসেন একই কথা বলেন। কিন্তু ড. কামালের ডাকে সাড়া দিলো না কেউ। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ডেমোক্রেসি সাপোর্ট অ্যা ইলেকশন কো অর্ডিনেশন গ্রুপ সাধারণত বিদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে। এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে যে পাঁচটি বিষয় তাঁরা বিবেচনা করে সেগুলো হলো: ১. একটি দেশ যখন অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য নির্বাচন করে। ২. একটি দেশে যখন ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। ৩. গৃহযুদ্ধ বা গৃহযুদ্ধ অবসানের পরিপ্রেক্ষিতে যখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৪. সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত একটি দেশ, যেখানে গণতন্ত্রের পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। ৫. যে দেশগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সূত্রে জানা গেছে, এই পাঁচটি বিষয়ের একটিও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বলেই শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না।
বিএনপি আগামী নির্বাচনে তাদের পক্ষে যেন মার্কিন প্রশাসন অবস্থান নেয়, এজন্য দুটি লবিস্ট ফার্মকেও নিয়োগ দিয়েছিল। এই লবিস্ট ফার্ম দুটির মূল কাজ ছিল, বাংলাদেশের সরকারের উপর যেন মার্কিন প্রশাসন চাপ সৃষ্টি করে। তাঁরা যেন সরকারকে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধ্য করে। শুধু এই দুই লবিস্ট ফার্ম নয়, ড. কামাল হোসেনেও এব্যাপারে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কিন্তু এখানেও ড. কামাল হোসেন ব্যর্থ হয়েছেন।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলেছে, ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মূল উদ্দেশ্যই ছিল, বিএনপি যেন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সমর্থন পায়। এজন্যেই বিএনপি ড. কামাল হোসেনকে ফ্রন্টের আহ্বায়ক করেছিলেন। কিন্তু ড. কামাল হোসেন এক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছেন। আর সে কারণেই বিএনপিতে ড. কামাল হোসেনের প্রয়োজনও ফুরিয়ে গেছে। বিএনপিও এখন বুঝেছে, আসলে তাঁর ক্ষমতা কত।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।