নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০২ ডিসেম্বর, ২০১৮
একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যখন নানা কারণে জনগণের দৃষ্টিতে বিতর্কিত হয়ে যায়, অনিবার্য ভাবেই তাঁর আর প্রার্থী থাকা উচিত না। আর ওই প্রার্থীর কারণে শুধু তাঁর আসনেই না সামগ্রিক ভাবেই দলের উপর প্রভাব পড়ে। আলাদা একটি চাপ তৈরি হয়।
এবার নির্বাচনে বহুল আলোচিত ছিল আওয়ামী লীগের দুজন এমপি। এদের একজন হলেন কক্সবাজার-৪ আসনের এমপি আব্দুর রহমান বদি। তাঁকে নিয়ে বিতর্ক ছিল অনেক। আর দ্বিতীয় বিতর্কিত হলেন টাঙ্গাইল-৩ আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানা। বদির বিরুদ্ধে ছিল মাদক ব্যবসার অভিযোগ। আর রানার বিরুদ্ধে ছিল মুক্তিযোদ্ধা হত্যার মামলা। আওয়ামী লীগ দুজন প্রার্থীকেই বদল করে দিয়েছে। তবে এই বদলে খুশি হতে পারেনি সাধারণ জনগণ। কারণ দুজনের আসনেই বদলি প্রার্থী হয়েছেন তাঁদের স্বজনরাই। আব্দুর রহমান বদির বদলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন তাঁর স্ত্রী শাহীন আখতার চৌধুরী। এর ফলে আর যাই হোক বদিকে নিয়ে মানুষের মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হলো না। আবার আমানুর রহমান খানের বদলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন তাঁর বাবা আতাউর রহমান খান। এটিও সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
শুধু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপিতেও বিতর্কিত, নির্বাচনে অযোগ্য প্রার্থীদের বদলে তাঁদের স্বজনদের মনোনয়ন দেওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে। অবশ্য এমন বিতর্কিতদের কারও কারও স্বজন এবার মনোনয়ন পাননি। কিন্তু যাঁরা পেয়েছেন তাঁদের নিয়ে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে।
বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে ২০০১-০৬ সালে ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ ছিল। তিনি হাওয়া ভবন কেন্দ্রিক বিএনপির রাজনীতি করতেন। নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য, টেন্ডারবাজির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন তিনি। ওয়ান ইলেভেনে ফখরুদ্দিনের সরকার আসার পর আমানউল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকা দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে এসেছিল। দুর্নীতির দায়ে কারাভোগও করেছেন আমানউল্লাহ আমান। দণ্ডিত হওয়ার কারণে এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য হয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর বদলে বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন তাঁরই ছেলে ইরফান ইবনে আমান।
বিএনপির আরেক বিতর্কিত হলেন জিয়া পরিবারের জামাই সালাহউদ্দিন আহমেদ। বর্তমানে ভারতে অবস্থানকারী সালাহউদ্দিন আহমেদ হাওয়া ভবন ও তারেক জিয়া ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত হওয়ায় গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি অযোগ্য ছিলেন। এবারও নানা কারণে তিনি বিতর্কিত। সালাহউদ্দিনের বদলে এবার বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন তাঁরই স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়া, ভূমি মন্ত্রণালয়ের নানারকম দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। তাঁর আসনে বদলি প্রার্থী দেওয়া হয়েছে তাঁর স্ত্রী ফাহমিদা ইয়াসমিন ছবিকে।
চট্টগ্রাম-৫ আসনে বিএনপির বিতর্কিত নেতা মীর নাসিরের স্থলে বিএনপির মনোনয়ন পান তাঁর ছেলে মীর হেলাল। তবে দুজনই নির্বাচনের জন্য অযোগ্য ঘোষিত হয়েছেন।
ব্যাপক দুর্নীতি ও খাম্বা কেলেঙ্কারির জন্য আলোচিত ছিলেন ২০০১-০৬ সালের বিএনপির বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল মাহমুদ টুকু। দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত হওয়ায় ২০০৮ সালে নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে পারেননি। সেবার তাঁর স্ত্রী রুমানা মাহমুদ নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলেন। এবারও তাঁর আসনে তাঁর স্ত্রীকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করছেন জামাত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাইদী। এবার নির্বাচনে সাইদীর আসন পিরোজপুর-১ থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন তাঁরই ছেলে শামীম সাইদী।
বাংলাদেশে নির্বাচনের রাজনীতিতে বিতর্কিত প্রার্থীদের স্বজনদের মনোনয়ন দেওয়ার মানেই হলো বিতর্কিতদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করা। আর এই পুনর্বাসনকে সাধারণ ভোটাররা কখনোই ভালো ভাবে নেয় না।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সারা দেশেই বাড়ছে দলটির গৃহদাহ। দল পুনর্গঠন ও চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঘিরে দলীটির বিবাদ প্রকাশ্যে আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশ সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘন করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা। তাদের অনেকে এলাকায় গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করতে গোপনে উসকে দিচ্ছেন স্থানীয় নেতাদের। ঢাকায় ফিরে তারাই আবার দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের পথ প্রশস্ত করছেন। এতে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস ঘনীভূত হচ্ছে।
দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের দলীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কারাগারে যাওয়া নেতাদের অনেকের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মনে করছেন দলীয় অনেকে। এ নিয়ে দলের ভিতরে রয়েছে বিতর্ক। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের (অডিও-ভিডিও) ভিত্তিতে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। অনেককে অঘোষিতভাবে ‘ওএসডি’ করা হয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে। এ নিয়ে ক্ষোভে কেউ কেউ রাজনীতি থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। চলে যাচ্ছেন দেশ ছেড়ে।
এসব বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি মহাসাগরের মতো বিস্তৃত একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। এ দলে নেতাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতেই পারে। তবে কোনো রকমের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা কোন্দল নেই।
জানা গেছে, সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বিরোধ-কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে চলমান উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। এই নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বয়কটের পক্ষে নেতা-কর্মীদের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সারা দেশে সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ নেতাই তাদের নিজ নিজ এলাকায় সেই দায়িত্ব পালন করেননি। অনেকে এলাকাতেই যাননি। জেলা বিএনপির শীর্ষকর্তারাও তেমন কোনো ভূমিকা রাখেননি। বরং উল্লিখিত নেতাদের এলাকাতেই ভোট কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে। নির্বাহী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব নেতার দ্বৈত ভূমিকায় তৃণমূলের নেতারা ক্ষুব্ধ।
মন্তব্য করুন