নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮
বিএনপি নির্বাচনী প্রচারণায় সিপিডি, অধিকার, সুজন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো কিছু বেসরকারি সংস্থাকে ভাড়া করেছে। এই সংস্থাগুলো তাদের নিজস্ব উদ্যোগে সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা করবে বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায়। এই প্রচারণাগুলো ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে নেতিবাচক মতামত তৈরিতে সাহায্য করবে বলে মনে করে বিএনপি। বিএনপির একজন নেতা এই কথা স্বীকার করে বলেছেন, ‘বিএনপি যখন সরকারের সমালোচনা করবে তখন তা হবে রাজনৈতিক। সাধারণ মানুষের মধ্যে তা প্রতিক্রিয়া ফেলবে না। এ জন্যই আমরা সিভিল সোসাইটি গ্রুপ এবং অন্যান্য বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এই কাজে ব্যবহার করার চেষ্টা করছি।’
বিএনপির ঐ নেতার কথার প্রমাণ মেলে গত শনিবার। ঐ দিন ‘সিপিডি বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে আমরা কি করবো’ শিরোনামে একটি সংলাপ আয়োজন করে। সিপিডি এই সংলাপের আয়োজক। কিন্তু এরকম একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের অর্থ কোথা থেকে এলো সে প্রশ্ন উঠেছে। ব্যাংকিং খাত নিয়ে গবেষণার অর্থই বা সিপিডিকে কে দিলো। এসব প্রশ্নের উত্তরে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন,‘এটা সিপিডি নিজস্ব উদ্যোগে করেছে।’ হঠাৎ নির্বাচনের আগে এই আয়োজন কেন, এই প্রশ্নের উত্তরে ফাহমিদা বলেন, ‘নির্বাচনের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।’
তবে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বরকত বলেছেন, ‘এটি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারণার একটি অংশ। উদ্দেশ্যমূলকভাবেই এটা করা হয়েছে।’ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ বিরোধী প্রচারণার জন্যই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পরিকল্পনায় ঐ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপ অনুষ্ঠানটি যে হোটেলে হয়েছে, তার বুকিং দেখলেই এ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এটি প্রথমে ড. কামাল হোসেনের একটি অনুষ্ঠানের জন্য বুক করা ছিল পরে তা সিডিপির নামে পরিবর্তন করা হয়েছে। জানা গেছে, সিডিপি আর্থিক খাত নিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আরও কিছু তথাকথিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। কিন্তু গত শনিবার ব্যাংক নিয়ে যে গবেষণা পত্রটি প্রকাশ করা হয়েছে তা সুস্পষ্টভাবে ‘সাব জুডিস’ বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। তিনি বলেন, প্রত্যেকটি ঘটনা বিচারাধীন এবং তদন্তাধীন। কোনো দায়িত্বশীল মানুষ এসময়ে এভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারে না।’ ড. আতিউর বলেন, ‘তাহলে আগের ব্যাংকিং সেক্টরের দুর্নীতির কথা তারা বলল না কেন?’
জানা গেছে, শুধু সিডিপি নয়, ‘সুশাসনের জন্য নাগরিকও’ নির্বাচনে বিএনপি বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে কাজ করছে। সুজন সারাদেশে পর্যবেক্ষক প্রশিক্ষণের নামে আওয়ামী লীগ বিরোধী প্রচারণা করেছে। এখন তারা নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করছে, যাতে বিএনপির বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি আছে। এই রিপোর্টটি খুব শীগগিরই সুজন প্রকাশ করবে বলে জানা গেছে। এছাড়াও ‘অধিকার’ নামে একটি সংগঠন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগের সমালোচনায় মুখর। আর হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তো দীর্ঘদিন ধরেই যুদ্ধাপরাধীদের লবিস্ট হিসেবে কাজ করছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।