নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ভারত। এই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভারত সার্বক্ষণিক নজর রাখছে এবং পর্যবেক্ষণ করছে। গত ৯ ডিসেম্বর ছিল নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। সেই দিন ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি গোপন প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এই গোপন প্রতিবেদনটি দিল্লির পররাষ্ট্র দপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই গোপন প্রতিবেদনে বাংলাদেশের রাজনীতি আগামী নির্বাচন বিষয়ে ভারতীয় দূতাবাসের দৃষ্টিভঙ্গি এবং মূল্যায়ন উঠে এসেছে। এই প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে ভারতীয় দূতাবাসের মূল্যায়নে বলা হয়েছে, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অযাচিত ভাবে নার্ভাস হয়ে পড়েছে এবং নিজেরাই পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। এই প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগ সম্বন্ধে যে মূল্যায়নগুলো করা হয়েছে তার সারমর্ম হচ্ছে:
১. আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে কেন বিজয়ী করা হবে, আওয়ামী লীগ কেন জনগণের ভোট পাবে, এ বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ এখনো জনগণের কাছে পৌছাতে পারছেন না। গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ যে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছে এবং এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে যে আবার ক্ষমতায় রাখা প্রয়োজন, সেই বার্তাটি আওয়ামী লীগ সঠিকভাবে জনগণের কাছে পৌছাতে পারছে না।
২. এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে। নির্বাচন উপলক্ষে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছে। এছাড়াও বিএনপি ২০ দলীয় জোটের সঙ্গেও আছে। এই ঐক্যের কারণে আওয়ামী লীগের মধ্যে স্পষ্টতই নার্ভাসনেস দেখা যাচ্ছে, যা আওয়ামী লীগের মতো এমন দীর্ঘদিনের পুরোনো জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের কাছে কাম্য নয়। আওয়ামী লীগের এই নার্ভাসনেসের কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং কর্মীদের মধ্যে একধরনের অজানা আশঙ্কা ভর করছে।
৩. আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলোর মধ্যে অটুট বন্ধনে আবদ্ধ রাখতে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে জাতীয় পার্টি জোটের বাইরে ১৩২ আসনে আলাদাভাবে প্রার্থী দিয়েছেন। বিকল্পধারাও আলাদাভাবে প্রার্থী দিয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগ জোটের দীর্ঘদিনের মিত্র জাসদও আলাদা প্রার্থী দিয়েছে। আওয়ামী লীগের জন্য এটা শুভ লক্ষণ নয়। শরিকদের একাট্টা করতে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে।
৪. অনেক স্থানেই আওয়ামী লীগ অতি মাত্রায় প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে, যা নির্বাচনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের জন্য নেতিবাচক ফলাফল আনতে পারে। বরং আওয়ামী লীগের ব্যাপক জনভিত্তি রয়েছে। সেই জনভিত্তির উপরে ভর করেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী মাঠে থাকলে আরও ইতিবাচক ফলাফল করবে বলে ভারতীয় দূতাবাস মনে করছে।
৫. নার্ভাসনেস থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের সব থেকে বড় ইতিবাচক দিক হচ্ছে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ব্যক্তিত্ব এবং জনপ্রিয়তা। আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তাকে কতটুকু কাজে লাগাতে পারে তার উপর নির্ভর করছে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কি ফলাফল অর্জন করবে।
৬. নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা মৌলবাদী গোষ্ঠী এবং দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীগুলো নানা রকম ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্তে তৎপর রয়েছে। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কতটুকু বুদ্ধিদীপ্ততার সঙ্গে মোকাবেলা করে, সেটার উপর আওয়ামী লীগের নির্বাচনের ফলাফল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আওয়ামী লীগ তার দলের অভ্যন্তরের ঐক্যকে অটুট রাখলেও এখন পর্যন্ত দলের বিভিন্ন জায়গায় বিতর্ক এবং বিরোধ রয়েছে বলে ভারতীয় দূতাবাস তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। এই বিরোধ এবং বিতর্কগুলো মেটানোর ক্ষেত্রে আগামী কয়েকটা দিন আওয়ামী লীগকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তবে আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক দিক হচ্ছে যে, সেক্যুলার এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার যে অঙ্গীকার, সেই অঙ্গীকার থেকে সরে আসেনি। দেশের জনগণ স্পষ্টভাবেই জানে যে, সরকার হিসেবে আওয়ামী লীগ একটা উন্নয়নকামী এবং দক্ষ সরকার। এই বিবেচনাটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে আসবে। তবে এই নির্বাচনে জনগণের ভোটের বাইরেও নানামুখী চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র হবে বলে ভারতীয় দূতাবাস আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এইসব নানামুখী চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ কীভাবে একটা শান্তিপূর্ণ ভোট করবে, সেটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।