নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৩ এএম, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮
ব্রহ্মপুত্রপাড়ের জেলা ময়মনসিংহে নির্বাচনী আসন ১১টি। এই জেলায় মোট ভোটার ৩৭ লাখ ৫১ হাজার ১২১। এর মধ্যে নারী ভোটার ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৯১০। আর পুরুষ ভোটার ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ২১১। নির্বাচনী মাঠের হিসাব-নিকাশ বলছে, এই আসনে নৌকা ৮টি, ধানের শীষ ২টি এবং লাঙল ১টি আসন পাবে।
ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট এবং ধোবাউড়া উপজেলা)
এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ জুয়েল আরেং। তিনি নৌকার পক্ষে ব্যাপক হারে নির্বাচনী সভা ও গণসংযোগ চালাচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপি এখান থেকে আলী আজগরকে মনোনয়ন দিয়েছিল। তবে উচ্চ আদালতের এক আদেশে তাঁর প্রার্থিতা আটকে যায়। বিএনপি এখানে বিকল্প প্রার্থী দেওয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে কোনো ঘোষণা দেয়নি দলটি। বিএনপির নেতা- কর্মী ও সমর্থকরাও এখানে নীরব। এসব কারণে এই আসনে নৌকার জয় অনেকটাই নিশ্চিত।
ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর এবং তারাকান্দা উপজেলা)
ময়মনসিংহ-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শরিফ আহমেদ। আর বিএনপির হয়ে লড়ছেন শাহ শহীদ সরোয়ার। শরিফ আহমেদ এই আসনের বর্তমান প্রার্থী। এলাকায় তাঁর প্রভাব রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির শহীদ সরোয়ার ২০০১ সালে এই আসন থেকে জয় পেলেও এবার নির্বাচনী মাঠে তিনি একেবারেই নীরব। এ কারণে এই আসনে আওয়ামী লীগের জয় দেখছি আমরা।
ময়মনসিংহ-৩ (গোরীপুর উপজেলা)
ময়মনসিংহের এই আসনে আওয়ামী লীগের নাজিমুদ্দিন আহমেদের বিপরীতে রয়েছেন ধানের শীষের এম ইকবাল হোসেন। নাজিমুদ্দিনকে নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও এই আসনটিতে তিনিই জয়ী হবেন বলে মনে করছি আমরা। কারণ এই এলাকায় বিএনপির মধ্যে গ্রুপিং রয়েছে। এবার দলীয় মনোনয়ন নিয়েও নেতাদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছিল। এটা নির্বাচনী যুদ্ধে বিএনপিকে দুর্বল করে ফেলছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ময়মনসিংহ-৪ (ময়মনসিংহ সদর উপজেলা)
এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আবু ওহাব আকন্দ। এবার নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মাঠে নেই। অন্যদিকে এই আসনে আওয়ামী লীগের আমিনুল হক শামীম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাওয়ায় এখানে বিএনপি নিশ্চিতভাবেই লাভবান হবে। এ কারণে এই আসনে ধানের শীষ জিতবে বলে প্রেডিক্ট করছি আমরা।
ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা উপজেলা)
এই আসনের মূল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন আওয়ামী লীগের কে এম খালিদ বাবু এবং বিএনপির জাকির হোসেন। কে এম খালিদ বাবু ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাকির হোসেনকে হারিয়েছিলেন। এবারেও তিনি এখানে শক্ত অবস্থানে আছেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এখানে তারই জয়ের সম্ভাবনা বেশি।
ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া উপজেলা)
ময়মনসিংহ-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোসলেম উদ্দিন। আর ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শামস উদ্দিন আহমেদ। মোসলেম উদ্দিন এই এলাকার গত দুই মেয়াদের সাংসদ। এবারও এখানে তিনি শক্তিশালী অবস্থানে আছেন। অন্যদিকে নির্বাচনী মাঠে বিএনপিকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে এখানেও আওয়ামী লীগের জয় দেখছি আমরা।
ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল উপজেলা)
ময়মনসিংহ-৭ আসনটিতে বিএনপির তুলনায় আওয়ামী লীগই শক্তিশালী। ১৯৯৬ সাল থেকে এই আসনে জয় পায়নি বিএনপি। এবার এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রুহুল আমিন মাদানী। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভুত হয়েছেন বিএনপির মাহবুবুর রহমান। জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদও এখানে প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে শেষ মুহূর্তে রুহুল আমিন মাদানীকে সমর্থন দিয়েছেন তিনি। এই আসনে নৌকার জয়ের পাল্লাই ভারী। কারণ বিএনপি এখানে বিভক্ত। প্রথমে দলটি থেকে জয়নাল আবেদিনকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও পরবর্তীতে তা বাতিল করা হয়।
ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা)
এই আসনে অতীতের নির্বাচনগুলোতে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ সমান ৩ বার করে জয় পেয়েছিল। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি এই আসনে জয় পেয়েছে ৪ বার। এবার এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম। অন্যদিকে ধানের শীষ প্রতীকে লড়ছেন গণফোরামের এ এইচ এম খালেকুজ্জামান। গণফোরামের তুলনায় জাতীয় পার্টি এখানে শক্তিশালী দল। এজন্য এই আসনে লাঙল জয় পাবে বলে প্রেডিক্ট করছি আমরা।
ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল উপজেলা)
ময়মনসিংহ-৯ এ আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুল আবেদীন। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির খুরুরাম খান চৌধুরী। আনোয়ারুল আবেদীন এই আসনের বর্তমান সাংসদ। অন্যদিকে খুরুরাম খান ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে এই আসন থেকে জয় পেয়েছিলেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার এখানে আনোয়ারুল আবেদিনেরই জয়ের সম্ভাবনা বেশি। কারণ বিএনপি নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে নানা অভিযোগ তুললেও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাতে দলটির নেতা কর্মীরা একেবারেই নিষ্প্রভ।
ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও উপজেলা)
ময়মনসিংহ-১০ আসনের গফরগাঁওয়ে গত মঙ্গলবার উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও পাগলা থানা বিএনপির প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান শেখসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এ থেকেই বোঝা যায় যে আওয়ামী লীগ এখানে কতটা শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। এই আসনে এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফাহমী গোলন্দাজ। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এলডিপির সৈয়দ মাহমুদ মোরশেদ। আওয়ামী লীগের তুলনায় এলডিপির অবস্থান একেবারেই দুর্বল হওয়ায় এখানে নৌকার জয় নিশ্চিত বলে মনে করছি আমরা।
ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা উপজেলা)
এই আসনে এবার নতুন প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এখানকার একাধিকবারের সাবেক সাংসদ আমানুল্লাহকে বাদ দিয়ে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজিমউদ্দিন আহম্মেদকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। অন্যদিকে এখানে বিএনপির প্রার্থী ফখরউদ্দিন আহমেদ। তিনি ২০০৮ সালে এখান থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। তবে এবার তিনি জয় পাবেন বলেই মনে করছে বাংলা ইনসাইডার। কারণ আওয়ামী লীগ এই এলাকায় বিভক্ত। কাজিমউদ্দিন আহম্মেদ নিজ দলের নেতা কর্মীদেরই সমর্থন পাচ্ছেন না। এটা নির্বাচনী যুদ্ধে তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/এমআর
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।