নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১২ জানুয়ারী, ২০১৯
২০০৮ সালে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের বাইরে বিশেষ সহকারী নিয়োগ দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদের তিনি নির্বাচিত সদস্য। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মাহবুবুল আলম হানিফকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তার বদলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে ১৪ দলের নেতা হাসানুল হক ইনুকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার কারণে হানিফকে পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী করা হয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনে হানিফ ফের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তখন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীরে দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে নেয়া হয়। মাহবুবুল আলম হানিফের পরে আব্দুস সোবহান গোলাপকে বিশেষ সহকারী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু গোলাপ এবার এমপি হয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। কাজেই তিনি আর বিশেষ সহকারী হিসেবে থাকতে পারবেন না বলেই একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এবার তাহলে কী প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী পদ থাকবে? থাকলে কাকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে?
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, দলের দুজন যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এবং দুজন সাংগঠনিক সম্পাদক এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে এক বা একাধিক ব্যাক্তিকে বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। তবে ২০০৮ সালে যখন মাহবুবুল আলম হানিফকে বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল তখন তার পদমর্যাদা সচিব পর্যায়ে ছিল। কিন্তু এখন যারা বিশেষ সহকারী হবেন, তাদের মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীর সমপর্যায়ের পদমর্যাদার করার কথা ভাবা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠসূত্রগুলো বলছে, যারা নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। কিন্তু দলের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যাদেরকে কৌশলগত কারণে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তারা যেন নিজেরা হতাশায় না ভোগেন, সেই জন্যই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করার একটা পরিকল্পনা আছে। এবার নির্বাচনে সময় যখন তারা মনোনয়ন বঞ্চিত হন। প্রধানমন্ত্রী তখন তাদেরকে ডেকে কথা বলেন। তাদের নির্বাচন মনিটরিংয়ের কাজে নিয়োগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন নির্বাচনী সফরে তারা সফরসঙ্গী হন। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তারা নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়ার পরও তারা দলের জন্য কাজ করেছেন। তাতে প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ঠ সন্তুষ্টও। এদের অনেকেরই রাজনৈতিক উজ্জল ভবিষ্যত রয়েছে। দলের জন্য বিগত দিনে তাদের অবদান অনস্বীকার্য বলেও প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন। আর এ কারণেই তারা যেন হতাশ না হয়ে পরে। তারা যেন রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন। আবার একইসঙ্গে তাদের কেউ যেন অপাংক্তেয় মনে না করে। সেই জন্যই তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করার একটি চিন্তা ভাবনা চলছে। যদিও বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, এদের মধ্যে কেউ মন্ত্রীও হতে পারেন। কারণ মন্ত্রিসভার পূর্ণাঙ্গ বিন্যাস এখনো হয়নি।
মহিলা এমপি নিয়োগের পর মন্ত্রিসভার একটা পরিবর্ধন হবে। তখন হয়তো এক বা দুইজনকে মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী করা হতে পারে। অন্য একটি সূত্র বলছে, যেহেতু এরা অনির্বাচিত ব্যক্তি, তাই মন্ত্রিসভায় এদের অন্তর্ভূক্ত করার সম্ভাবনা কম। তাদেরকে বরং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর যে এখন বিশেষ সহকারী স্টাফ রয়েছে। তাদের সবাই প্রশাসন ক্যাডার থেকে আসা। তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ঠতা খুব একটা নেই। প্রধানমন্ত্রী এবারের সরকারে রাজনৈতিক কর্ম পরিকল্পনা এবং পরিকাঠামো বাড়াতে চায়। এজন্য দু- একজন রাজনীতিবিদকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিশেষ দায়িত্ব দিতে পারেন। এটা যে শুধু বিশেষ সহকারীর পদ হবে এমনটা নয়। অন্যকোন পদে নিযুক্ত করেও প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে বিশেষ দায়িত্ব দিতে পারেন। তাদের পদমর্যাদা কি হবে সেটাও নিশ্চিত নয়। যে চারজন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তার মধ্যে সবাইকে হয়তো বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হবে না। তবে কাকে দেওয়া হবে। সেটা নিশ্চিত করবেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।