নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৯
নতুন সংসদে যোগদানের ব্যাপারে বিএনপিতে চাপ বাড়ছে। বিএনপির মধ্য থেকে যারা নির্বাচিত হয়েছেন, যারা দীর্ঘমেয়াদে সংগঠনকে শক্তিশালি করতে চান তারা সংসদে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল, সিভিল সোসাইটি এবং বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবিরা বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছে তারা যেন সংসদে যায় এবং সংসদে গিয়ে যেন তারা সরকারের কঠোর সমলোচনায় স্বোচ্ছার হয়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদিও ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা শপথ নিবেন না। কিন্তু ভারতীয় দূতাবাস এবং মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দলের সেন্টিমেন্টের বাইরে গিয়ে তিনি কোন কাজ করতে পারেন না।’ তিনি বলেছেন, ‘যদি দল সিদ্ধান্ত নেয় যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিতরা শপথ নিবেন এবং সংসদে যোগদান দিবেন। তাহলে তারও সংসদে যোগ দিতে আপত্তি নেই। এ ব্যাপারে দলের হাইকমান্ডের মতামত প্রয়োজন।’
গতকাল (১৩ জানুয়ারী) বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু এই সাক্ষাতে বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির নির্বাচিতদের সংসদে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে কোন মতামত জানাননি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন যে, ‘তারা চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলাপ করতে চান। এজন্য তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু সে চিঠির উত্তরে কোন সময় এখন পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে পাননি।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, ‘এই চিঠি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এবং খালেদা জিয়ার সঙ্গে হয়তো খুব শীঘগিরই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের একটি সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হতে পারে। তবে এটা কবে হবে সে ব্যাপারে কোন সুস্পষ্ট ঘোষণা পাওয়া যায়নি।’ বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় পার্টি থেকে যে বিরোধী দল করা হয়েছে। সে ব্যাপারে তাদের আপত্তি রয়েছে। জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হতে পারে না। কারণ, জাতীয় পার্টি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট হয়ে নির্বাচন করেছে। শপথ নেওয়ার আগে তারা সরকারের কাছ থেকে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট মতামত চায় । বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টিকে যেভাবে সংসদে বিরোধী দল করা হয়েছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ,জাতীয় পার্টির সংসদীয় নেতার নির্বাচন কোন সংসদীয় কমিটির বৈঠকে হয়নি। দ্বিতীয়ত, জাতীয় পার্টি ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে ঐক্য করে নির্বাচন করেছেন। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে ঐক্য করে নির্বাচন করলে তারা বিরোধী দল হতে পারে না।’
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার ক্ষেত্রে বিএনপি প্রথমে প্রধান বিরোধী গ্রুপ হিসেবে স্বীকৃতি চায়। যখন জাতীয় সংসদে নূন্যতম এক দশমাংশ আসন থাকে না একটি রাজনৈতিক দলের, তখন তারা সংসদীয় গ্রুপ হিসেবে পরিণত হয়। এমনকি জাতীয় পার্টিও সংসদে বিরোধী দলের মর্যাদা আইনত পায় না। কারণ তাঁদের এক দশমাংশ প্রতিনিধিত্ব সংসদে নেই। এছাড়াও বিএনপি আরও কিছু দাবি দাওয়া নিয়ে মিমাংসা করে সংসদে যেতে চায় বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছে, সংসদে শপথ নেয়া এবং যোগদানের ক্ষেত্রে প্রচুর সময় রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী একজন সংসদ সদস্য, সংসদের প্রথম কার্য দিবস থেকে নব্বই কার্য দিবস অনুপস্থিত থাকলে বা শপথ না নিলেই কেবল তাঁর সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ৩০ জানুয়ারির পর থেকে যারা বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তাঁদের ক্ষণ গণনা শুরু হবে। সেজন্য তাদের হাতে পর্যাপ্ত সময় আছে। এই সময়ে তারা রাজনৈতিক পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আগ্রহী।
বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে সংলাপের আহ্বান করেছেন, সেই সংলাপ একটা সংসদে যোগদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন অধ্যায় তৈরি করতে পারে।’ তারা মনে করছেন, তিনটা শর্ত পূরন করলে শেষ পর্যন্ত হয়তো বিএনপি সংসদে যেতে পারে। তাঁর প্রথমটা হচ্ছে, তাঁদেরকে বিরোধীদলের মর্যাদা দেওয়া, দ্বিতীয়টা হচ্ছে খালেদা জিয়ার মুক্তি দেওয়া, তৃতীয়টা হচ্ছে নির্বাচনের সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে যে হয়রানিমুলক মামলা করা হয়েছে তাঁদেরকে মুক্তি দেওয়া।’
তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন যে, ‘সংসদে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির কারো নেই। এমনকি মহাসচিবেরও নেই। এই সিদ্ধান্ত নিতে হলে জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকতে হবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক কবে কিভাবে ডাকা হবে সেটি নিয়ে এখন পর্যন্ত দলের মধ্যে কোন আলোচনা হয়নি।’
ইতিমধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের একটা স্থায়ী কমিটির মিটিং ডাকার জন্য চেষ্টা করছেন এবং ওই মিটিংয়েই বিএনপির নির্বাচিত সদস্যদের সংসদে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এদিকে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবিদের একটি বড় অংশ বিএনপিকে সংসদে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। গতকাল বিএনপিপন্থী একাধিক বুদ্ধিজীবি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে গুলশানের কার্যালয়ে বৈঠক করেন। সেখানে তারা বিএনপিকে সংসদে গিয়ে উচ্চস্বরে সরকারের সমলোচনা করা, তাদের বক্তব্য জোড়ালোভাবে সংসদে উপস্থাপন করার তাগিদ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তারা ১৯৭৩ সালের সুরিঞ্জিত সেন গুপ্তর উদাহরণ টানেন। সার্বিকভাবে বিএনপির ওপর সংসদে যোগ দেওয়ার চাপ বাড়ছে এবং একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজে সংসদে যোগ দেওয়ার পক্ষে কিন্তু পুরো দলকে কিভাবে তিনি সংসদে যোগ দেওয়ার পক্ষে আনবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান
বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের ধারণা পাল্টিয়েছে, বিশ্বাস জন্মেছে।
তার কারণেই প্রার্থীরা আবারও ভোটাদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটাদের দ্বারে
যাওয়ার যে সংস্কৃতি সেটা আবারও ফিরে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) যশোর শিল্পকলা
একাডেমির মিলনায়তনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে
অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যশোর, নড়াইল ও মাগুরার জেলার প্রার্থী নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে
মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন।
একদিন বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন বিশ্বের
রোল মডেল হবে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৩৬ শতাংশ
এ সময়ে অনেক। দেশের কয়েকটা রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নেয়াতে ভোটার উপস্থিতি কম।
আগামীতে দেশের যত ভোট আসছে, ততই আমাদের ভোটের পরিবেশ, ভোট গ্রহণ পরিবর্তন ঘটছে। বিগত
সময়ে নির্বাচন নিয়ে কি ঘটেছে সেটা ফিরে তাকানোর আর কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন
কমিশন সকল বির্তক, সমালোচনা পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়ে দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
ইসি আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচনে ভোটারের
উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা কাজ করবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম
ধাপে মোট ভোট গ্রহণের শতাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এবার থেকে ভোট গ্রহণে উপজেলা ভিত্তিক
তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা আলাদাভাবে
প্রচারণা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা ভোটাদের বাঁধা দিবে তাদের প্রতিহত করবে প্রশাসন।
আমরা প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি আইনের হাত ও ক্ষমতা অনেক বেশি। নির্বাচন বানচাল করতে
সেই ক্ষমতা কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে প্রশাসন।
ইসি আরও বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমান
কমিশন সততার সঙ্গে কাজ করছে। শুধু কমিশন নয়, নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা সততার
সঙ্গে কাজ করছে। নির্বাচনে সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য আইন পাস করেছে এ কমিশন। কেউ সাংবাদিকদের
কাজে বাধাগ্রস্ত করলে জেল জরিমানার বিধান করা হয়েছে। মিডিয়াকে এ অবস্থানে নেয়ার ক্ষেত্রে
এ কমিশন ও সরকার ভূমিকা রাখছে।
যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল
হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় যশোর, নড়াইল ও মাগুরা জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপাররা
বক্তব্য রাখে। সভায় যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার সকল প্রার্থী, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উপজেলাসমূহের
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাবৃন্দ, আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা
রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাবৃন্দ
এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ
নেয়।
অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে শার্শা উপজেলা
পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে অংশ নেন ইসি আহসান
হাবিব খান।
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।