নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২০ জানুয়ারী, ২০১৯
চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়ে কাল প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন শেখ হাসিনা। এবারের মন্ত্রিসভায় তিনি ছাড়া চারবারের পূর্ণমন্ত্রী আর কেউ নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ৯৬ সালের মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সে হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সরকার পরিচালনার সাথী মাত্র তিনিই। ওবায়দুল কাদের মন্ত্রিসভায় তিনবারের মন্ত্রী। দিনবারের মন্ত্রী আছেন আর শুধু স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। তিনিও ২০০৮ মেয়াদে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে বয়সে বড় মাত্র চারজন। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ মিয়াঁ মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠতম ব্যক্তি। তার জন্ম ১৯৪৫ সালের সেপ্টেম্বরে। মন্ত্রিসভায় দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী হলেন আ.ক.ম. মোজাম্মেল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এই মন্ত্রীর জন্ম ১৯৪৬ সালের ১ অক্টোবর। তিনি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে ১ বছরের বড়। অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামাল প্রধানমন্ত্রীর সমসাময়িক। তার জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৫ জুন। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে তিনি মাত্র তিন মাসের বড়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ.কে আব্দুল মোমেনের ২৩ আগস্ট, ১৯৪৭। অংকের হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে একমাসের বড়।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শিতায় এদের থেকে অনেক বড় উচ্চতায় নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। রাজনীতিতে তিনি এই মন্ত্রিসভায় সবচেয়ে অভিজ্ঞ এবং প্রাজ্ঞ। আগের মন্ত্রিসভায় যেমন তোফায়েল আহমেদ বা বেগম মতিয়া চৌধুরী বলতেই পারতেন, ৬০’র দশকেই তারা জনপরিচিতির চূড়া ছুঁয়েছিলেন। তারা বলতেই পারতেন, রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার চেয়ে অনেক পুরনো। একারণে প্রকাশ্যে না হলেও ভেতরে হয়তো তাদের মধ্যে একধরনের অনুভূতিও কাজ করতো। যেমন ’৯৬-র মন্ত্রিসভায় অনেক মন্ত্রীই প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতেন। এমনকি, ২০০১ সালে নির্বাচন এগিয়ে আনা সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে দেয়নি সিনিয়র নেতারা।
২০০৮ সালে ক্ষমতায় ফিরে এসে অবশ্য মন্ত্রিসভার পূর্ণ কর্তৃত্ব ছিল প্রধানমন্ত্রীর হাতে। তারপরও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অনেক সিদ্ধান্তই প্রধানমন্ত্রীর উপর চাপিয়ে দিতেন। ২০১৪ সালের মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে বয়সে বড় মন্ত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি হলেও ব্যক্তিত্বে, প্রত্যয়ে ঐ মন্ত্রিসভায় তিনি ছিলেন পূর্ণ কর্তৃত্বের অধিকারী। তাঁর সিদ্ধান্তগুলো তেমন আপত্তির মুখে পড়েনি। কিন্তু মন্ত্রিসভায় সিনিয়র সদস্য থাকায় একটি সমস্যা ছিল যে, মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর আকাঙ্ক্ষা এবং চাহিদাগুলোর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল না। বিশেষ করে সিনিয়র মন্ত্রীরা তাদের মতো করে মন্ত্রণালয় চালাতেন।
এবার মন্ত্রিসভায় সে রকম পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কাল প্রথম মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের কঠোর বার্তা দেবেন বলে জানা গেছে। দুর্নীতি বন্ধ এবং নির্বাচনী ইশতেহারের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয়ের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী একটি সমন্বয় ঘটানোর নির্দেশনা দেবেন। প্রধানমন্ত্রী চাইবেন, একটি ক্লিন ইমেজ নিয়ে যেন এই মন্ত্রিসভা তার মেয়াদ শেষ করে। আর অভিজ্ঞতায় সবচেয়ে প্রবীণ প্রধানমন্ত্রী হয়তো তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলবেন, ‘মন্ত্রিত্ব কোন চাকরি নয়, এটা জনগণের জন্য একটি দায়িত্ব পালন মাত্র’।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।