ইনসাইড আর্টিকেল

বাংলাভাষা বিষয়ক চিন্তাভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯


Thumbnail

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ কোন সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আমার সঠিক মনে নেই। কলকাতা শহরে এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন তৎকালীন বাংলার কৃতবিদ্য মানুষদের এক বিরাট অংশ। তাঁর পেছনের একটু ইতিহাস আছে। ১৯০৫ সালে তাঁর পেছনের একটু ইতিহাস আছে। ১৯০৫ সালে লর্ড কার্জনের সিদ্ধান্ত অনুসারে বাংলা প্রদেশকে কেটে দু’টুকরা করা হয়। বাংলার পূর্বাঞ্চলকে আসামের সঙ্গে যুক্ত করা হল এবং পশ্চিম অংশকে জুড়ে দেয়া হলো বিহারের সঙ্গে।

এ বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে সমগ্র বাংলায় এক প্রচণ্ড গণঅসন্তোষের সৃষ্টি হয়। বঙ্গভঙ্গ রোধ করার উদ্দেশ্যে নানারকম কর্মসূচি গ্রহণ করা হতে থাকে। কোন কোন অঞ্চলে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করেছিল। আবার কোন কোনহ অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামারও আকার ধারণ করেছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ঘরে বাইরে’ উপন্যাসটি এই বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পটভূমিতেই রচিত হয়েছিল। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের রাজনৈতিক তাৎপর্য নিয়ে যে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে অদ্যাবধি তার নিরসন হয়নি।

একধরনের পণ্ডিত এবং গবেষক বলে থাকেন ধুরন্ধর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বাঙালির জাতিসত্তাকে কেটে দ্বিখণ্ডিত করার যে চক্রান্ত করেছিল বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন হল তার প্রত্যক্ষ রূপ। আরেক ধরনের পণ্ডিত এবং গবেষক একটু ভিন্ন রকমের কথা বলেন। তারা মনে করেন, শেষ পর্যন্ত বঙ্গভঙ্গ যদি টিকিয়ে রাখা যেত আখেরে সারা ভারতেরই লাভ হত। পূর্ববঙ্গের ঢাকায় একটি নতুন রাজধানী চালু করা হলে অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া মুসলমান সমাজের মধ্য থেকে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণী জন্ম নিত। তার ফলে পরবর্তীকালে যে আলাদা পাকিস্তান রাষ্ট্র তৈরি হয়েছিল তার প্রতিষ্ঠার কোন যৌক্তিকতা থাকত না। বর্তমান নিবন্ধে আমি বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের রাজনৈতিক তাৎপর্য নিয়ে কোন আলোচনা করব না। | এই বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সঙ্গে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ গঠনের একটি প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। কলকাতার যে শিক্ষিত হিন্দু মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর লাকেরা সারা বাংলায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন তারা অত্যন্ত শংকিত হয়ে পড়েছিলেন । যদি বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন দীর্ঘদিনের জন্যে কার্যকর থাকে তাহলে তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি অবশিষ্ট থাকবে না। এই শ্রেণীটি সেই জিনিসটি খুব ভালভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে পেরেছিলেন।

বঙ্গবঙ্গকে সকল প্রকারে যাতে অসম্ভব করে তোলা যায় সেই লক্ষ্য পূরণ করার জন্যে একটি আধা সামাজিক এবং আধা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সষ্টির প্রয়োজনীয়তা মর্মে মর্মে অনুভব করেছিলেন। সেই কারণেই মুখ্যত বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ সৃষ্টি। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ তৎকালীন বাংলার জনসমাজের মধ্যে একটি শক্তিশালী ঐক্যবোধ সুদৃঢ় করার উদ্দ্যেশ্যে কতিপয় কর্মসূচি যেমন গ্রহণ করেছিলেন তেমনি বাঙালির একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সৃষ্টির বিষয়টিও তাঁদের চিন্তা কল্পনার মধ্যে ছিল। তাঁরা তৎকালীন বঙ্গ প্রদেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেন। তাছাড়া বিজ্ঞান, শিল্প এবং কৃষ্টি এ সমস্ত বিষয়গুলো সাহিত্য সম্মেলনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করে। সেই সময়ে কলকাতা কেন্দ্রিক বাঙালির বিদ্বত সমাজটির মধ্যে বাংলা ভাষাকে নিয়ে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষার সৃষ্টি হয়েছিল। তাঁদের কেউ কেউ মনে করতে আরম্ভ করলেন কোনদিন যদি ভারত স্বাধীন হয় তাহলে বাংলাভাষা সেই স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রভাষা রুপে পরিগণিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা সৃষ্টি করা তাঁদের একটি পবিত্র কর্তব্য। এই লক্ষ্য সামনে রেখে তাঁরা প্রতিবছর বাংলা প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় যেমন সাহিত্য-সম্মেলনের আয়োজন করতে থাকলেন তেমনি বাংলার বাইরে উড়িষ্যার কটক, বিহারের ভাগল্পুর এবং আসামের অঞ্চলেও সাহিত্য সম্মেলনের কর্মসূচি প্রসারিত করতে থাকলেন। প্রায় সর্বভারতে প্রসারিত এই কর্মকাণ্ডের পেছনে তাঁদের মনে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষাই ক্রিয়াশীল ছিল। আর সেটা হলো এই যে বাংলা ছাড়া ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর মধ্যে গ্রহণযোগ্য করার একটি কর্মপদ্ধতি তাঁরা চিন্তা করে আসছিলেন। তাঁরা মনে করতেন বাংলা ভাষার সঙ্গে অসমীয়া (অসহনীয়া) এবং উড়িষ্যা ভাষার সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বাংলা ভাষা যদি পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়ে ওঠার সুযোগ পায় তাহলে আসাম এবং উড়িষ্যার লোকেরাও বাংলা ভাষাকে নিজেদের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করতে অমত করবেন না। উড়িষ্যা এবং আসাম ছাড়া বিহার বাংলার সীমান্তবর্তী এলাকা। বিহারের মানুষ একধরনের  হিন্দী উপভাষায় কথা বললেও বাংলার সন্নিকটবর্তী জেলাসমূহের মানুষেরা যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করেন সেটা হলো হিন্দি এবং বাংলার মিশ্রণে সৃষ্ট একটি ভাষা। বিশুদ্ধ হিন্দি যেমন নয় তেমনি পুরোপুরি বাংলাও নয়। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন রদ করা হল এবং বাংলার দুই ভাঙ্গা অংশকে আবার প্রশাসনিকভাবে সংযুক্ত করা হলো। কিন্তু বাংলা থেকে ভারতের রাজধানী সরিয়ে দিল্লীতে নিয়ে গেলো ব্রিটিশ সরকার। কলকাতা থেকে দিল্লীতে রাজধানী স্থানান্তর করার কারণে পূর্বে ব্রিটিশ-ভারতে বাংলা যে ধরণের গুরুত্বের অধিকারী ছিল তাঁর অনেকখানিই হারিয়ে বসল। তাঁর পরবর্তী রাজনীতির যে গতি প্রক্রিয়ার মধ্যে ভারতে এই উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জনগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পারিক অবিশ্বাস এবং সন্দেহ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকল। তাঁর ফলে বাংলাভাষার অবিভক্ত ভারতে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গৃহীত হওয়ার দাবী ক্রমাগত শক্তি হারিয়ে ফেলেছিল। প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক মনে করতেন ১৯৪০ সালে শহর কলকাতার প্রথম ভাষা ছিল ইংরেজি, দ্বিতীয় ভাষা হিন্দি, তৃতীয় ভাষা উর্দু এবং রাজনৈতিক গুরুত্বের দিক দিয়ে বাংলা ভাষার অবস্থান ছিল চতুর্থ স্থানে।

বাংলাভাষা সম্পূর্ণরূপে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ার কারণে বাঙালির ঐক্যবদ্ধ থাকার সম্পূর্ণ সম্ভাবণা যেমন তিরোহিত হোল, তেমনি বাংলাভাষা ভারতের রাষ্ট্রভাষা হয়ে ওঠার দুয়ারও চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেলো। তারপরের ইতিহাস সকলেই জানেন ভারতকে কেটে দু টুকরা করা হল, ভারতের মুসলমান প্রধান অঞ্চল নিয়ে একটি নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তান সৃষ্টি হলো। পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির অর্ধযুগ অতিক্রম করার পূর্বে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের জনগণ বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষায় পরিণত করার দাবিতে একটি দুর্বার গণআন্দোলন সৃষ্টি করল। সেই গণদাবির রুদ্ররোষের মুখে পাকিস্তান সরকারকে বাধ্য হয়ে বাংলা ভাষাকে উর্দুর পাশাপাশি আরেকটি রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং  সমাজবিজ্ঞানীদের সুচিন্তিত অভিমত এই যে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির জন্ম সম্ভাবিত হয় ১৯৫২ ভাষা আন্দোলনের মধ্যদিয়ে তার প্রথম সূচনা হয়েছিল।

আমরা ভাষা সম্পর্কিত আলোচনার আরেকটি পরিপ্রেক্ষিত পাঠকদের সামনে এই আলোচনায় তুলে ধরতে চাই। বাংলা বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা। বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবাংলা, ত্রিপুরা আসামের জনগোষ্ঠীর একটি অংশ বাংলাভাষায় কথা বলে। আসামে বাংলাভাষার স্বীকৃতির দাবিতে বাঙালি জনগোষ্ঠীর লোকেরা ৫২ সালে ঢাকার মনের মত একটি আন্দোলন তৈরি করেছিল। তাদের দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না। আজকে ভারতের যে সকল এলাকার মানুষ বাংলাভাষায় কথা বলেন তাদেরকে কতিপয় সংকটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যে সমস্ত রাজ্যে বাংলাভাষীরা সংখ্যালঘু সেখানে প্রাদেশিক ভাষাসমূহের চাপ তাদের সহ্য করতে হচ্ছে। অন্যদিকে পশ্চিম-বাংলায় বাংলাভাষা স্থানীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও হিন্দিভাষার হামলা তাদের পক্ষে এড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। পশ্চিম বাংলার বাংলাভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে এনিয়ে তীব্র অসন্তোষ রয়েছে। জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিদের অনেকেই আশংকা করছেন পশ্চিম-বাংলায় বাংলাভাষা আজ থেকে অন্তত ৫০ বছর পরে টিকে থাকবে কি না। আগ্রাসী হিন্দির মোকাবেলা করা ছাড়াও পশ্চিম-বাংলার বাঙালিকে আরো কতিপয় সংকটের মুখোমুখি দাঁড়াতে হচ্ছে। পশ্চিম-বাংলার সীমান্তে ঝাড় খণ্ডে একটি নতুন রাজ্য তৈরি করা হয়েছে। গুরখারা সুভাষ ঘিসিং-এর নেতৃত্বে দার্জিলিং অঞ্চলে ‘গুর্খাল্যাভ` রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছে। এতেই শেষ নয়, বাংলা কে দিল্লিতে  বিহারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা কামতাপুর নামে আরও একটি রাজ্য তৈরি করার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। গুর্খাল্যান্ড, কামতাপুর এই দুটি রাজ্য প্রতিষ্ঠার স্বীকৃতি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দিতে বাধ্য হবে। প্রশ্নটা সময়ের। এই আলাদা প্রশাসনিক কেন্দ্রগুলো যদি গঠিত হয়ে যায় সেখানে বাংলাভাষা কোন একটা ভূমিকা পালন করতে পারবে সেটা আশা করা যায় না। প্রস্তাবিত রাজ্য গুর্খাল্যান্ডে গুর্খারা নেপালি ভাষা দাবী করবে এবং প্রস্তাবিত কামতাপুর রাজ্যে সাঁওতাল ইত্যাদি আদিবাসীদের ভাষা প্রাধান্য পাবে। বাংলাভাষা কলকাতার আশেপাশে কয়েকটি জেলা নিয়ে এক চিলতে ভুমির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে বাধ্য হবে তাও হিন্দির আগ্রাসন সহ্য করে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল এইযে, এই কলকাতা মহানগরের বাঙালিরা একসময়ে বাংলাভাষাকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিল।

[লেখাটি আহমদ ছফার প্রবন্ধ সমগ্রর (তৃতীয় খন্ড)-এর ১২৩ থেকে ১২৬ পৃষ্টা থেকে সংকলিত।]

(খ্যাতিমান লেখক, ঔপন্যাসিক, চিন্তাবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী আহমদ ছফা। ১৯৪৩ সালের ৩০ জুন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার গাছবাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর লেখায় বাংলাদেশি জাতিসত্তার পরিচয় নির্ধারণ প্রাধান্য পেয়েছে। জীবদ্দশায় আহমদ ছফা তাঁর প্রথাবিরোধী, নির্মোহ, অকপট দৃষ্টিভঙ্গীর জন্য বুদ্ধিজীবি মহলে বিশেষ আলোচিত ছিলেন। ২০০১ সালের ২৮ জুলাই অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার সময় তাঁর মৃত্যু হয়।)

বাংলা ইনসাইডার/এসআর



মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

পরীক্ষার ফলাফলে কেন ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে?

প্রকাশ: ০৮:০৩ এএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

একটি জাতির মেরুদণ্ড হল শিক্ষা। যা কিনা জাতি গঠনের প্রধান উপাদান। স্বমহিমায় নিজেদের উদ্ভাসিত করতে কেবল শিক্ষত জাতিই পারে। বিবেকবান মানুষ, সুনাগরিক, কর্তব্যপরায়ণ, দায়িত্ববান ও দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে শিক্ষার বিকল্প নেই। সে জন্য প্রয়োজন শিশুকাল থেকেই শিক্ষা অর্জন। স্কুল-কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য অনেকেই পারি দেন বিদেশে।

শিক্ষার সূচনা পরিবারের থেকে হলেও জ্ঞান অর্জনের বাল্যকালের বিশেষ ধাপ মনে করা হয় প্রাইমারি থেকে এসএসসি পর্যন্ত। আর এই এসএসসি পরিক্ষার ফলাফলে চলতি বছরে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পাসের গড় হার ৮৩ দশমিক শূন্য ৪। যা গতবারের (২০২৩ সালে) চেয়ে বেড়েছে। গেল বছর পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। কিন্তু এবারের এসএসসি তে মোট পাসের হারের মধ্যে ছাত্রীদের পাসের হার ৮৪.৪৭ আর অন্যদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৮১.৫৭ শতাংশ। এর নেপথ্যের কারণ কি? কেনইবা ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পাসের হার এগিয়ে?

রোববার (১২ মে) এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর এক সংবাদে সম্মেলনে পরিক্ষায় অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছেলেদের সংখ্যা কম দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেন ছেলেরা পিছিয়ে তা জানতে শিক্ষা বোর্ড প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশ অনুযায়ী এসএসসি ফলাফলে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা কেন এগিয়ে তার কিছু সুনির্দিষ্ট দিক থেকে শিক্ষার্থীদের বেড়ে উঠা, তাদের প্রতি পরিবারে দায়িত্ব ইত্যাদি নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি যে..

সাধারণত পড়াশোনার ক্ষেত্রে ছেলেদের পিছিয়ে পড়ার পেছনে মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত সময় ব্যয় করা প্রধানত দায়ী হতে পারে। ছেলেরা বাইরে ঘোরাঘুরির পাশাপাশি বাসায় ফিরে মোবাইল ফোনে ডুবে যাচ্ছে। স্কুলপড়ুয়ারা অতি মাত্রায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করায় পড়ালেখায় মনোযোগী হতে পারছে না। এমনকি  ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্ররা মোবাইল ফোন ব্যবহারের বেশি সুযোগ পাচ্ছে। পাশাপাশি কিশোর অপরাধে জড়িয়ে পড়াও ছেলেদের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। ছাত্রীদের মধ্যে তারা পড়াশোনায় বেশি আগ্রহ দেখছেন। আর ছেলে সন্তানদের চেয়ে মেয়েরা পড়াশোনায় আগ্রহী হয়ে ওঠায় তাদের পড়াশোনায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বাবা-মাও। এমনকি মেয়েদের লেখাপড়ায় অভিভাবকরা বেশি ব্যয় করতেও দ্বিধা করছেন না।

সচেতন মহল মনে করছেন, স্কুলপড়ুয়া ছেলেটার হাতে বাবা-মা মোবাইল তুলে দিচ্ছে। কিন্তু মেয়েটার হাতে দিচ্ছে না। হয়তো অন্য কোনো চিন্তা থেকে দিচ্ছে না। তাতে মেয়েটা পড়াশোনায় মনোযোগ দিচ্ছে। আর ছেলেটা ফেসবুক, গেমিংয়ে সেটা ব্যবহার করছে। এভাবে ছেলেরা পড়ালেখায় ক্রমে চরম অমনোযোগী হয়ে পড়ছে।’ অতি মাত্রায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে পড়ছে।

মেয়েরা কেন এগিয়ে 

মেয়েরা পড়ালেখায় মনোযোগি হতে পারে কারণ তারা আগ্রহশীল, সাহায্যকারী, মনোযোগী, এবং সমর্থনশীল হতে পারেন। তাদের প্রকৃতি বিশেষভাবে পড়াশোনার ক্ষেত্রে উত্সাহী এবং অনুশাসিত হয়। মেয়েদের পড়ালেখায় মনোযোগের আরও  কিছু কারণ হতে পারে, যেমন..

সামাজিক প্রতিফলন: সাধারণ সমাজে শিক্ষার প্রতিফলন মেয়েদের হাতেই। তাই তারা নিজেকে সমাজের মধ্যে সাবাস করার জন্য শিক্ষালোভী হতে চায়।

প্রতিযোগিতামূলক: মেয়েদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষার আগ্রহ অনেক। আর তাই তারা শিক্ষা অর্জন ও পড়াশোনার মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে।

সামর্থ্য ও উদারতা: মেয়েদের অনেকে সামর্থ্য ও উদারতা দেখানোর চাপে থাকে, যা তাদের পড়ালেখায় মনোযোগিতা বৃদ্ধি করে।

পরিবারের সমর্থন: পরিবারের সদস্যরা মেয়েদের উত্সাহ দিয়ে পড়ালেখায় মনোযোগিতা বৃদ্ধি করে। এতে করে মেয়েদের ফলাফল আসে সাফল্যের।

এছাড়াও সম্পূর্ণ সমাজে মেয়েদের উপলব্ধি ও প্রতিযোগিতামূলক স্বাধীনতা দেওয়া উচিত, যা তাদের পড়ালেখায় আরও মনোযোগিতা বৃদ্ধি করে। এই সমস্ত কিছু কারণে মেয়েদের পড়ালেখায় মনোযোগিতা বৃদ্ধি হয় তার তাই তারা পরিক্ষার ফলাফলে অর্জন করে সাফল্য।

সাধারণত আদর্শ ছাত্রের বৈশিষ্ট্য হিসেবে আমরা জানি: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত থাকা, নিয়মিত পড়াশোনা করা, সহপাঠদের (জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও শ্রেণী নির্বেশেষে) সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করা, নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলা, মাদক থেকে দূরে থাকা, প্রলোভন থেকে বিরত থাকা, এমনকি সমাজ ও রাষ্ট্র বিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকা।

যা করা উচিৎ

সম্প্রসারণ ও সমর্থন: পরিবারের সদস্যরা ছাত্রদের শিক্ষামূলক প্রক্রিয়ার সমর্থক করতে হবে এবং তাদের পক্ষ থেকে প্রশংসা ও সমর্থন প্রদান করতে হবে।

প্রোত্সাহন ও সমর্থন: পারিবারিক সদস্যরা ছাত্রদের এমন কার্যকলাপে উৎসাহিত করতে হবে যা ছাত্রদের শিক্ষামূলক ও ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ছাত্রদের প্রেরণা ও মনোনিবেশ: ছাত্র প্রোত্সাহন ও প্রেরণা প্রদানের মাধ্যমে তারা উচ্চ লক্ষ্য স্থাপন করতে পারে এবং নিজেদের উন্নতিতে মনোনিবেশ করতে পারে।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ:

এছাড়া ছাত্র-ছাত্রী উভয়কেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন ক্যারিয়ার প্লানিং, দারিদ্র্য সহায়তা, নৈতিক শিক্ষা, ব্যক্তিগত উন্নতি ইত্যাদির জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। কেননা পারিবারিক শিক্ষাব্যবস্থা সামাজিক, মানসিক ও ব্যাক্তিগত উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি ছাত্র-ছাত্রীদের সুস্থ ও সমৃদ্ধ রেখে তাদের পড়ালেখা করতে উৎসাহিত করে। ফলে ছাত্র-ছাত্রীরে মেধা বৃদ্ধি হতে পড়াশোনায় মনোযোগি হবে। এবংকি পরিক্ষার ফলাফল অগ্রগতি হবে। জাতি হবে শিক্ষিত। প্রজন্ম গড়বে শিক্ষিত মেধাযুক্ত।


পরীক্ষা   ছেলে   মেয়ে  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

বাড়ছে ‘ভার্চুয়াল অ্যাডিকশন’, তরুণীদের সচেতনতা কোথায়?

প্রকাশ: ১০:৪২ এএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

বর্তামানে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের জীবনকে করেছে সহজ থেকে সহজতর। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করেই জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতি বা ‘শিল্প বিপ্লব’ গড়ে উঠেছে। জ্ঞানের সমৃদ্ধি, সংরক্ষণ ও ব্যবহার তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। কিন্তু তথ্য-প্রযুক্তির সুবিধাটি যখন একদল অসৎ ও অপরাধপ্রবণ ব্যক্তির দ্বারা নেতিবাচকভাবে ব্যবহৃত হয় তখনই এর অপব্যবহারে বিপন্ন হয় সমাজ তথা প্রজন্ম।

প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় ক্রমেই তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে তরুণীরা। যুগের বিবর্তন এবং সরকারের সুক্ষ পরিকল্পনায় একদিকে তরুণীরা যেমন তাদের স্বাধীনা অর্জন করেছে অন্যদিকে সেই স্বাধীনতা রক্ষা করার নামে এই তরুণীদের অনেকেই বিষর্জন দিচ্ছে তাদের অস্তিত্ব ব্যক্তিত্ব কিংবা স্বতিত্ব।

জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’-এর প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ জন পুরুষ, ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ জন তরুণী। যেখানে পুরুষের চেয়ে তরুণীদের সংখ্যা বেশি সেখানে তরুণীদের সমাজের সচেতনতা অবলম্বন করে তাদের স্বাধীনতা রক্ষা করা জরুরী।

তরুণীরা ভার্চুয়াল ব্যবহারে সচেতন না হলে পড়তে পারে বিপদজনক পরিস্থিতিতে। অনলাইনে যদি কোন সম্পর্কে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করতে হলে প্রাইভেসি নিশ্চিততা হানির ঝুঁকি থাকে। এটি তরুণীকে নিজের গোপনীয়তা সংরক্ষণ না করে বিপদে ফেলতে পারে। অনলাইনে যে সম্পর্ক এবং বার্তা পাঠানো হয়, তা যদি নিয়মিত হয় তাহলে মনের অপরিচিত মানুষের সাথে সমস্যা হতে পারে। যেমন, অবাঞ্ছিত মেসেজ বা ব্লক করা প্রবলেম হতে পারে। এছাড়াও অনলাইনে অসময়ে নেগেটিভ বা হানিকর কোনও সম্পর্কে পড়তে পারে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এমনকি ঝুঁকি থাকতে পারে অপরাধী হানির। অপরাধী হানির শিকার হতে পারে কিছু তরুনী, যেমন সাইবার বুলিং, অনলাইন নির্যাতন, কাইবার সাথে পার্সনাল তথ্যের অপসারণ ইত্যাদি।

এদিকে বিবিএস জানায়, এক দশকে দেশে জনসংখ্যা বেড়েছে ২ কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ৯১৯ জন। সর্বশেষ ২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৪০ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৭। ক্রমাগত ভাবে বৃদ্ধি হচ্ছে দেশের জনসংখ্যা। সরাকারের নানান উদ্যেগ বাল্যবিবাহ থেকে পরিবার পরিকল্পনার নির্দেশনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হলেও বেশিভাগই হচ্ছে না তরুণীসচেতনতা অবলম্বন না করাতে।

অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার কিংবা ‘ভার্চুয়াল অ্যাডিক্টেড’ এর অসচেতনার ফলে সময় অপচয় হয় পর্যাপ্ত পরিমাণ। অনলাইনে সময় অপচয় একটি বিশেষ ধরণের সমস্যা কেননা দৈনন্দিন জীবনের কাজে অসুবিধা তৈরি করতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অহেতুক পদ্ধতিতে সময় ব্যায় করা। প্রত্যেক তরুণীকেই নিজের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সংরক্ষণস্বার্থে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, বর্তমান প্রজন্মের তরুণী কিংবা তরুণীরাই পরিবর্তন করতে পারে দেশ কিংবা জাতীকে।

যুগের বিবর্তনে প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের পরিবর্তন হওয়াটা যেমন স্বাভাবিক, তেমনি সেই পরিবর্তনের ফলে যুগের মহিমায় পৃথিবীতে প্রযুক্তিগত দিক থেকে পুরুষদের মতে তরুণীদেরও ভূমিকা চোখে পড়ার মতো। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে পুরুষরা তরুণীদেরকে কর্মস্থলে তাদের সমান অবস্থানে রাখা জরুরী। এতে তৈরি হবে কর্মবন্ধন, সম্পূর্ণ হবে প্রযুক্তির উদ্দেশ্যের সফলতা আর পরিপূর্ণতা পাবে সমাজ, সংস্কৃতি, রাষ্ট্র, এবং তরুণীদের সঠিক অধিকার।


ভার্চুয়াল অ্যাডিকশন   তরুণী   সচেতনতা   প্রজন্ম  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

প্রেম মানে না বয়সের গণ্ডি

প্রকাশ: ০৭:৫৬ এএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রেমের কোনো বয়স হয় না। গল্প, উপন্যাস ও বাস্তব জীবনে এর আগে বহুবার তা প্রমাণ হয়েছে। আরও একবার সে কথা মনে করিয়ে দিল নিউইয়র্কের বাসিন্দা হ্যারল্ড টেরেন্স (১০০) ও জেনি শার্লিনের (৯৬) প্রেমকাহিনি। তাদের এই প্রেম পরিণতিও পেতে চলেছে। কিছু দিন পরেই দুজনে সংসার পাতবেন। তারই প্রস্তুতি চলছে।

হ্যারল্ড বিমানবাহিনীতে কাজ করতেন। এখন অবসরপ্রাপ্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পড়াশোনা চলাকালীন বিমানবাহিনীতে যোগ দেন হ্যারল্ড। তখন হ্যারল্ডের বয়স ২০। চাকরি সূত্রে ইংল্যান্ড পাড়ি দেন। কয়েক বছর সেখানেই ছিলেন। হঠাৎই ইংল্যান্ড ছেড়ে যাযাবর হয়ে যান।

ইউক্রেন, বাগদাদ, তেহরানসহ বিভিন্ন দেশে ঘুরে কাজ করতে থাকেন। বেশ কয়েক বছর এভাবে চলার পর জীবনে থিতু হতে চান তিনি। তাই আবার আমেরিকায় ফিরে আসেন। নিজের মাটিতে ফিরে নতুন জীবনও শুরু করেন। সংসার পাতেন দীর্ঘ দিনের বন্ধু থেলমার সঙ্গে।

বছর দুয়েকের মধ্যে দুই সন্তান আসে। স্ত্রী, সন্তানকে ছেড়ে কাজে ফেরার ইচ্ছা ছিল না হ্যারল্ডের। কিন্তু স্ত্রীর জোরাজুরিতেই আবার কাজে যোগ দিয়েছিলেন। হ্যারল্ড চলে যাওয়ার পর সংসার ও সন্তানের সমস্ত দায়িত্ব গিয়ে পড়ে থেলমার ওপর। দায়িত্ব পালনে অবশ্য কোনো ত্রুটি রাখেননি তিনি। সন্তানরাও বড় হয়ে নিজেদের মতো জীবন গুছিয়ে নেয়।

জীবনের অধিকাংশ সময় পরিজনদের সঙ্গ পাননি। জীবনের শেষটা এমন হোক, তা চাননি হ্যারল্ড। তাই ২০২১ সালে চাকরি থেকে পুরোপুরি অবসর নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।  কিন্তু নিয়তিতে যা লেখা থাকে, তার অন্যথা হওয়ার জো নেই। হ্যারল্ড বাড়ি ফেরার মাসখানেকের মধ্যে মারা যান থেলমা। দুই ছেলে কাজের সূত্রে ভিন দেশে।

স্ত্রীর মৃত্যুর পর আবার একা হয়ে যান বৃদ্ধ হ্যারল্ড। তার এই নিঃসঙ্গ জীবনে হঠাৎই আলাপ জেনির সঙ্গে। জেনি অবিবাহিত ছিলেন। মনের মতো কাউকে পাননি, তাই সংসারও পাতা হয়নি। ৯৬ বছর বয়সে হ্যারল্ডের সঙ্গে আলাপ হওয়ার পর জেনির মনে হয়েছিল, এই মানুষটির জন্যই অপেক্ষা করছিলেন।

তাই সময় নষ্ট না করে নিজেই মনের কথা খুলে বলেন হ্যারল্ডকে। একা থাকতে আর কে চায়! তাই আর দেড়ি করেননি, জেনির সঙ্গে জীবনের বাকি দিনগুলো হেসেখেলে কাটিয়ে দিতে চেয়ে আবার নতুন করে শুরু করেন।


প্রেম   বয়স   গণ্ডি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তপ্ত জায়গায় যেভাবে থাকে মানুষ

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

এইতো কয়েকদিন পূর্বেও ৪৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার ফলে নাভিশ্বাস উঠেছিল সারা দেশের মানুষের। সারা দেশব্যাপী হিট অ্যালার্ট জারি করা থেকে শুরু করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা- কত কিছুই না হয়েছে এই তীব্র তাপদাহের কারণে। তবে পৃথিবীতে এমন স্থানও রয়েছে যেখানে তাপমাত্রা থাকে ১২৭ ডিগ্রী ফরেনহাইট।

স্থানটি হচ্ছে ডেথ ভ্যালি। নাম শুনেই নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, স্থানটি কতটা ভয়ংকর। বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থানের মধ্যে অন্যতম স্থান এটি। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম স্থানের তকমা অর্জন করে ডেথ ভ্যালি। সবচেয়ে উষ্ণতম মাসের রেকর্ড হিসেবে, ওই বছরের একটানা চার দিন ১২৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা ধরা পড়ে। যা তাপমাত্রার সর্বোচ্চ রেকর্ড।

ডেথ ভ্যালি ক্যালিফোর্নিয়া এবং নেভাদা সীমান্তে অবস্থিত। বিশ্বের সবচেয়ে তাপমাত্রা বিরাজ করে ডেথ ভ্যালির মরুভূমিতে। এটি বিশ্বের অন্যতম উষ্ণ স্থান হিসেবে পরিচিত। মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকাতে কেবল কয়েকটি মরুভূমি আছে। যেখানে গ্রীষ্মে তাপমাত্রায় শীর্ষে পৌঁছায়।

ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে কাজ করেন ব্রান্ডি স্টুয়ার্ট। পার্কের কমিউনিকেশন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে তিনি। তিনি বলেন, ‘এখানে এখন যেরকম গরম পড়েছে, আমরা সবাই আমাদের ধৈর্য হারিয়ে ফেলছি। আপনি যখন বাইরে যাবেন, মনে হবে যেন আপনার মুখে অনেকগুলো হেয়ার ড্রায়ারের গরম বাতাস এসে পড়ছে।’

তিনি আর বলেন, ‘এখানে এত গরম যে, আপনার গায়ে যে ঘাম হচ্ছে তা আপনি টেরই পাবেন না। কারণ খুব দ্রুত এটি বাষ্প হয়ে উবে যাচ্ছে। ঘামে যখন কাপড় ভিজে যায়, সেটা টের পাওয়া যায়, কিন্তু গায়ের চামড়ায় ঘাম শুকিয়ে যায় খুব দ্রুত। এই বিষয়টিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে আমার সময় লেগেছে।’

ডেথ ভ্যালি এক বিস্তীর্ণ মরুভূমি। মাঝে মাঝে বালিয়াড়ি আর গভীর খাদ রয়েছে। পার্শ্ববর্তী রাজ্য নেভাডা পর্যন্ত বিস্তৃত। বিশ্বের উষ্ণতম জায়গা হওয়ার পরও এই জায়গাতে থাকে কয়েকশ’ মানুষ। মিজ স্টুয়ার্ট তাদের একজন।

মিজ স্টুয়ার্ট বলেন, গ্রীস্মের সময় তাদের বেশিরভাগ সময় ঘরের ভেতরেই কাটে। তবে অনেকে পাহাড়ের দিকে চলে যায়, যেখানে তাপমাত্রা একটু কম। যখন লোকে এতে অভ্যস্ত হয়ে যায়, তখন এটা স্বাভাবিক বলেই মনে হয়। তখন তাপমাত্রা ৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (২৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) নীচে নামলে সেটাকেই মনে হয় খুব ঠান্ডা।

ডেথ ভ্যালির লোকজনের বাড়িতে এয়ার কন্ডিশনিংয়ের ব্যবস্থা আছে। এটি তাদের ঘর ঠান্ডা রাখে। কাজেই ঘুমাতে অসুবিধা হয় না। তবে বিদ্যুৎ যদি চলে না যায়। যখন প্রচণ্ড গরম পড়ে, তখন সবাই সারাক্ষণ এয়ারকন্ডিশনিং চালিয়ে ঘর ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করে। তখন বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা তৈরি হয়।

ডেথ ভ্যালির বেশিরভাগ মানুষ থাকেন এবং কাজ করেন ফার্নেস ক্রীকে। এখানেই সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এই জায়গাটা সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ২৮০ ফুট নীচু একটা বেসিনের মতো। চারিদিকে উঁচু এবং খাড়া পাহাড় দিয়ে ঘেরা।

জেসন হেসার এই ফার্নেস ক্রীকেই থাকেন। তার আসল বাড়ি মিনেসোটাতে। কাজ করেন এখানকার একটি গলফ কোর্সে। এটি বিশ্বে সমুদ্র সমতল থেকে সবচেয়ে নীচু কোনো গলফ কোর্স। সামরিক বাহিনীর এই সাবেক সদস্য বলেন, ‘আমি দুবার ইরাকে ছিলাম। যদি ইরাকে থাকতে পারি, তাহলে ডেথ ভ্যালিতেও থাকা যায়।’

জেসন গলফ কোর্সে কাজ শুরু করেন ভোর পাঁচটার একটু আগে এবং দুপুর একটা পর্যন্ত কাজ করে যান। তিনি বলেন, ‘ওরা আমাদের জানিয়েছে, যখন গরম আরও বেশি পড়বে, তখন আমাদের আরও ভোরে কাজ শুরু করতে হবে। একেবারে ভোর চারটায়। আর সেই ভোরেও কিন্তু তাপমাত্রা প্রায় ১০০-১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৭ দশমিক ৭ হতে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।’

হেসার এখানে এসেছিলেন ২০১৯ সালে। তিনি তার কাজটা বেশ পছন্দ করে ফেলেছেন। আরও কয়েক বছর তিনি এখানে থাকার পরিকল্পনা করছেন। অবসরে তিনি গলফ কোর্সে গলফ খেলতে পছন্দ করেন। তবে সেজন্য উঠতে হয় বেশ সকালে এবং খেলা শুরু করতে হয় সকাল সাতটায়। কারণ এরপর গরম খুবই অসহনীয় হয়ে উঠে।

তিনি বলেন, ‘আমি যখন এখানে এসেছি, তখন তাপমাত্রা বেশ ভালোই ছিল। শর্টস আর পোলো শার্ট পরে একটা কোল্ড বিয়ার বা কোল্ড সোডা। আপনার সাথে যদি ঠান্ডা পানীয় থাকে, আপনাকে আগে সেটা পান করে নিতে হবে। নইলে গলফের মাঠ থেকে ফিরে কিন্তু দেখবেন সেটা আর ঠান্ডা নেই। আর আগে পান করে নিলে গলফ খেলাটাও জমে ভালো।’

ক্রিসটোফার বার্ট আবহাওয়া বিষয়ক ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন। ১৯১৩ সালে ডেথ ভ্যালিতে রেকর্ড করা তাপমাত্রা নিয়ে কেন এই সংশয়, সে সম্পর্কে তিনি বলেন, ঐ এলাকার আশেপাশের অন্যান্য এলাকার রেকর্ডের সঙ্গে এটি মিলছিল না। ফার্নেস ক্রীকের তাপমাত্রা আশে-পাশের এলাকার চেয়ে প্রায় দু্ই বা তিন ডিগ্রি বেশি ছিল।

কেউ কেউ যুক্তি দেন যে, ডেথ ভ্যালির চেয়েও হয়তো বেশি গরম পড়ছে বিশ্বের আরো অন্য কোনো জায়গায়। কিন্তু আবহাওয়ার ওপর যারা নজর রাখেন, তারা এই দাবিকে গুরুত্ব দেন না। কারণ এসব জায়গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করার জন্য নির্ভরযোগ্য কোনো আবহাওয়া কেন্দ্র নেই।


তীব্র তাপদাহ   গরম   ডেথ ভ্যালি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড আর্টিকেল

'এপ্রিল ফুল' এর ট্র্যাজেডিতে কি জড়িয়ে আছে?

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এপ্রিল মাসের প্রথম দিনটি পশ্চিমা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে বেশ ঘটা করে পালন করা হয়। এদিনে একে অপরকে চমকে দিয়ে 'বোকা বানাতে' চায়। যদিও বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে এই প্রচলন খুব একটা দেখা যায় না।

পহেলা এপ্রিল পশ্চিমা দেশগুলোতে অনেকে কিছুটা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে। অন্যথায় কারো না কারো কাছে তাকে বোকা হিসেবে পরিচিত হতে হবে এবং এটি নিয়ে হাস্যরস তৈরি হতে পারে।

এ দিনটিকে তাই বলা হয় অল ফুলস ডে, বাংলায় বোকা বানানোর দিনও বলতে পারেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ফলাও করে ভুয়া ও ভুল সংবাদ ছাপায়। পরদিন অবশ্য সেটার সংশোধনী দিয়ে জানিয়ে দেয় খবরটা আসলে এপ্রিল ফুল ছিল।

একই সাথে এদিন পরিবারের ছোটরা সাধারণত বড়দের সাথে নানাভাবে মজা করে বোকা বানানোর চেষ্টা করে। আবার বন্ধু বা কলিগরাও একে অন্যের সাথে মজা করে। তবে যাকে বোকা বানানো হয়, তাকে শেষে সবাই মিলে চিৎকার করে জানিয়ে দেয় 'এপ্রিল ফুল'।

ধারণা করা হয়, ইউরোপে এপ্রিল ফুলের প্রসার ফ্রেঞ্চ জাতির মধ্যে। ফ্রেঞ্চরা ১৫০৮ সাল, ডাচরা ১৫৩৯ সাল থেকে এপ্রিল মাসের প্রথম দিনকে কৌতুকের দিন হিসেবে পালন শুরু করে। ফ্রান্সই প্রথম দেশ হিসেবে সরকারিভাবে নবম চার্লস ১৫৬৪ সালে এক ফরমানের মাধ্যমে ১ জানুয়ারিকে নববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন । অর্থাৎ তিনি এটি করেন ১৫৮২ সালে ইতালীয়ান পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরী প্রবর্তিত গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার হিসেবে প্রচলন হওয়ারও আগে। পাশাপাশি ১ এপ্রিল বন্ধুদের উপহার আদানপ্রদানের প্রথা বদলে যায় ১ জানুয়ারি। কারণ তখন বিভিন্ন দেশে জুলিয়ীও ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নিউইয়ার পালিত হত ১ এপ্রিলে। অনেকেই এই পরিবর্তনকে মেনে নিতে না পেরে এদিনই তাদের পুরনো প্রথাসমূহ চালিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু ১ জানুয়ারির পক্ষের লোকজন এদেরকে ফাঁকি দিতে ১ এপ্রিলে ভুয়া উপহার পাঠানোর প্রথা চালু করে।

ফ্রান্সে কাউকে বোকা বানালে বলা হত এপ্রিল মাছ (April fish), ফ্রেঞ্চ ভাষায় poisson d’avril. এই্ নামকরণের কারণ, রাশিচক্র অনুযায়ী স্বর্গের কাল্পিক রেখা অতিক্রম করলে এপ্রিলে সূর্যকে মাছের মত দেখায়। এইদিনে তারা ছুটি কাটাত এবং মরা মাছ এনে তাদের বন্ধুদের পেছনে সেটে দিয়ে মজা করত।

ডাচদের আরও কারণ রয়েছে। স্পেনের রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ ১৫৭২ সালে নেদারল্যান্ড শাসন করতেন। যারা তার শাসন অমান্য করেছিল তারা নিজেদেরকে গুইযেন বা ভিখারী বলে পরিচয় দিত । ১৫৭২ সালের এপ্রিলের ১ তারিখে গুইযেন বা বিদ্রোহীরা উপকূলীয় ছোট শহর ডেন ব্রিয়েল করায়ত্ব করে ফেলে। তাদের এই সফলতায় বিদ্রোহের দাবানল দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। শেষমেষ স্প্যানিশ সেনাপ্রধান বা দ্যা ডিউক অব অ্যালবা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হন। সেই থেকে দিনের প্রচলন।

মুসলমানদের জন্য ট্র্যাজেডির?

বাংলাদেশে একটা প্রচলিত ধারণা এপ্রিল ফুলের সঙ্গে আসলে মুসলমানদের বোকা বানানোর ইতিহাস জড়িয়ে আছে।

অনেকেই মনে করেন ১৫শতকের শেষ দিকে স্পেনে মুসলিম শাসনের অবসান ঘটান রাজা ফার্দিনান্দ ও রানি ইসাবেলা। তারা স্পেনের মুসলিম অধ্যুষিত গ্রানাডায় হামলা করেন এবং পরাজিত অসংখ্য মুসলিম নারী, পুরুষ ও শিশুকে মসজিদে আটকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারেন। আর সেদিনটি ছিল পহেলা এপ্রিল।

কিন্তু এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই বলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান।

"এটি আমরাও শুনেছি এবং এটি একরকম আমাদের বিশ্বাসের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু আমি ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে যখন স্পেনের ইতিহাস পড়েছি, দেখেছি যে সেসময় গ্রানাডার শাসক ছিলেন দ্বাদশ মোহাম্মদ। তার কাছ থেকেই ফার্দিনান্ড ও ইসাবেলা গ্রানাডা দখল করে নেন। আর এ ঘটনাটি ঘটেছিল জানুয়ারি মাসের ২ তারিখে। কোন কোন সূত্র বলে জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ। এবং এটি দুই পক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠনিক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে হয়েছিল।"

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলছেন, সেসময় ফার্দিনান্ড ও ইসাবেলা মুসলমানদের উপর নির্যাতন করেছে, ইহুদিদের উপরও করেছে, কিন্তু এপ্রিল ফুলের যে ট্র্যাজেডির কথা বলা হয় সেটার সাথে তার কোন সত্যতা পাওয়া যায় না।

"ইতিহাসে আমরা যে বইগুলো পড়েছি সেখানে কোথাও ঐ বর্ণনা পাইনি। আমাদের কাছে মনে হয় এই ঘটনা নিয়ে একটা মিথ তৈরী করা হয়েছে, যার সাথে কোন ঐতিহাসিক সংযোগ নেই।"

মি. ছিদ্দিক বলেন অন্যদিকে গূরুত্ব দিয়ে অবশ্য মুসলমানরা এটি উদযাপন নাও করতে পারে। কারণ ইসলাম ধর্ম মিথ্যা বলা, প্রতারিত করা বা কাউকে বোকা বানানো সমর্থন করে না।

মজা আনন্দের জন্য তো কোনো বিশেষ দিন আমাদের না হলেও চলে। সেখানে কোনো ছক কষে কাউকে ঘাবড়ে, কোনো কঠিন পরিস্থিতির মুখে ফেলে দিয়ে আনন্দ নেওয়াটা সুস্থ মানসিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দিতেই পারে।

মজা করে কাউকে বোকা বানাতে চাইলে সেটা বিশেষ কোনোদিনেই করতে হবে এমনটা তো নয়। মজা করুন, তবে সেটা বোকা বানিয়ে নিজের বিমলানন্দ নেওয়ার মাধ্যমে নয়। কারণ আপনি যাকে বোকা বানাতে চান, সে যে আপনাকে কখনো বোকা বানানোর চেষ্টা করতে না, এটা ভাববেন না। আর এই বোকা বানাতে গিয়ে আপনার স্বভাব, সম্পর্কগুলো যে নষ্টের দিকে যেতে পারে, সেটাও তো আপনাকে ভাবতে হবে। 


এপ্রিল ফুল   পহেলা এপ্রিল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন