নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
বিএনপির সঙ্গে জামাতের সম্পর্ক যতটা না আদর্শিক, তার চেয়ে বেশি অর্থনৈতিক। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি এবং জামাতের সম্পর্কের টানাপোড়নের মধ্যে তাদের অর্থনৈতিক যোগসূত্রের বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। জামাত তার নীতি নির্ধারনী সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিএনপি যদি জামাত থেকে আলাদা হয় তাহলে তারা ১২০ কোটি টাকা ফেরত চাইবে। যে অর্থ অতীতে জামাত বিএনপিকে দিয়েছিল। বিএনপির সঙ্গে ১৯৯৬ এর পর থেকে জামাতের ঐক্য গড়ে উঠেছিল। মধ্যপ্রাচ্যসহ ইসলামী দেশগুলো এবং পাকিস্তানের কাছ থেকে যে অর্থগুলো বাংলাদেশে আসে সেই অর্থের মূল বাহক জামাত। বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য এই সমস্ত অর্থ জামাত সংগ্রহ করে বিএনপিকে দিত। যখন বিএনপির একটি অংশ জামাত থেকে আলাদা হতে চাইছে, তখন জামাত মনে ভিন্ন চিন্তা। জামাত যে অর্থগুলো বিএনপিকে দিয়েছিল তাদের সাংগঠনিক ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য, নির্বাচন পরিচালনার জন্য, সেই অর্থগুলো বিএনপির ফেরত দিতে হবে। জামাতের সর্বশেষ বৈঠকে, যেখানে ২০ দলের ভবিষ্যৎ এবং বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। সেখানে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা চমকপ্রদ। সেই তথ্যে দেখা গেছে যে, এবারের নির্বাচনের জন্যও জামাত বিএনপিকে টাকা দিয়েছে। এই টাকা পাকিস্তান থেকে লন্ডনে গিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, এবারের নির্বাচনে জামাতের ২২ জনকে ধানেরশীষ প্রতীক দেওয়া হয়েছিল। জানা যায় যে, কোন জনপ্রিয়তা বা জামাতের প্রতি কোন ভালোবাসার জন্য নয়। এই অর্থের বিনিময়ে জামাত ২২ টি মনোনয়ন কিনেছিল। এই টাকা লন্ডনে পরিশোধ করা হয়েছিল। ‘জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশ’ যদিও তাদের নাম পরিবর্তন করেছে। কিন্তু এটি একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন। এফবিআইর মতামত অনুযায়ী জামাত হলো আন্তর্জাতিক একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। পাকিস্তান বা অন্যান্য দেশের জামায়াত ইসলামের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক রয়েছে। এবং একই আদর্শ নিয়ে তারা পরিচালিত হয়। সেইজন্য বাংলাদেশে সংগঠন পরিচালনা, নির্বাচনসহ অন্যান্য তৎপরতার জন্য জামাত আন্তর্জাতিক তহবিল থেকে অর্থ পায়। কিছুদিন আগ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে জামাতের অর্থ পাওয়া ছিল একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এই সমস্ত অর্থের একটি বড় অংশ জামাত দিত বিএনপিকে।
এবারের নির্বাচনই শুধু নয়, বিভিন্ন সময়ে জামাত যে অর্থ দিয়েছে সে সমস্ত নিয়ে জামাতের নীতি নির্ধারক বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধে যখন আন্দোলন শুরু হয় তখন সে আন্দোলনে শরিক হওয়ার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে টাকা দিয়েছিল জামাত। কথা ছিল যে, বেগম খালেদা জিয়া ২০ দল নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধে আন্দোলন করবে। সেই প্রেক্ষিতে বেগম খালেদা জিয়া বেশ কিছু জনসভায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছিলেন। কিন্তু পরে জনমতের চাপে বেগম খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দেওয়া হয় এ নিয়ে যেন তারা তেমন কথাবার্তা না বলেন। যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে বিএনপির নিশ্চুপ থাকার একটি বড় কারণ ছিল অর্থপ্রাপ্তি।
২০০১ সালে জামাতের দুজন মন্ত্রী হন। এরা হলেন যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামী এবং আলী আহসান মুজাহিদ। এ দুজনকেই মন্ত্রী করার জন্য জামাত তৎকালীন সময়ে বিএনপিকে অর্থ দিয়েছিল বলে ওই বৈঠকে উঠে এসেছে।
১৯৯১ সালে নির্বাচনের পর বিএনপি এবং জামাতের সম্পর্কের টানাপোড়ন সৃষ্টি হয়। এরপর ১৯৯৬ সালে বিএনপিই জামাতের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কারণ জামাত যখন বিএনপি থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল, তখন বিএনপির মধ্যপ্রাচ্যসহ পাকিস্তান থেকে বিএনপির একার পক্ষে অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছিল না। এজন্যই মূলত আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের জন্য জামাতের সঙ্গে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়। তারপরে চারদলীয় জোট গঠন করা হয় এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হয়। ঐ নির্বাচনেও পাকিস্তানের আইএসআই বিএনপিকে যে বিপুল পরিমাণের টাকা দিয়েছিল, তা জামাতের মাধ্যমেই দিয়েছিল। জামাত তাদের রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারনের সর্বশেষ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে , যদি জামাত আলদা হয় বিএনপি থেকে, তাহলে বিভিন্ন সময়ে বিএনপিকে আন্দোলন, সংগ্রাম এবং নির্বাচনের জন্য যে অর্থ দিয়েছিল সে অর্থগুলো ফেরত দিবে। প্রাথমিক হিসেবে দেখা গেছে, অর্থের পরিমাণ ১২০কোটি টাকার কাছাকাছি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, মূলত আর্থিক কারণেই তারেক জিয়া জামাত থেকে আলাদা হতে চান না। ২০ দলকে নিয়েই তিনি রাজনীতি করতে চান। কিন্তু জামাত বিএনপির সঙ্গে থাকায় শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও অশ্বস্তির সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপিকে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে বিএনপির সঙ্গে জামাতের সখ্যতা থাকলে বা সম্পর্ক থাকলে বিএনপিকেও তারা একটি মৌলবাদী দক্ষিনপন্থী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করবে। সে হিসেবে বিএনপির সঙ্গে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি আদায় করা কষ্টসাধ্য হয়ে পরবে। সেই বিবেচনা থেকেই বিএনপি যখন জামাত থেকে আলাদা হতে চাইছে, তখন তাদের অর্থনৈতিক ভাগ বাটোয়ারার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
গণতন্ত্রকে সংহত করতে হলে শক্তিশালী বিরোধী দলের প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন (১৯৮১)’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই না বিএনপি আরও দুর্বল হোক। কারণ গণতন্ত্রকে সংহত করতে হলে শক্তিশালী বিরোধী দলের প্রয়োজন রয়েছে। তারা সেই দায়িত্বটি পালন করুক সেটিই আমরা চাই।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন থেকে বাইরে থাকার যে পথ অনুসরণ করছে, এতে করে বিএনপির জন্য আকাশটা ছোট হয়ে আসছে। সেই পথে যদি থাকে তাহলে এক সময় বিএনপি হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আসলে বিএনপি এখন খেই হারিয়ে ফেলেছে। আগে দেখতাম দুই একজন নেতা খেই হারায়। গয়েশ্বর বাবু খেই হারায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী আবোল তাবোল বলে। এখন দেখি আরো সিনিয়র নেতারাও আবোল তাবোল বলে, খেই হারিয়ে ফেলেছে। আসলে কেউ যখন আশার আলো দেখে না, তখন তারা খেই হারিয়ে ফেলে। বিএনপির অবস্থা হচ্ছে সেটি।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অথচ বিএনপির নেতারা কোনো কিছুই দেখতে পায় না। কালকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘুরে যাওয়ার পর তাদের (বিএনপি) মাথা খারাপ হয়ে গেছে। উনারা আশা করেছিলেন কী না কী বলে। অনেক চেষ্টাও করেছিলেন দেখা সাক্ষাৎ করার জন্য। কিন্তু তাদের আশায় গুড়ে বালি দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বার্তা দিয়ে গেছে তারা সম্পর্ককে আরো গভীর করতে চায়, সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। আমরাও সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এজন্য বিএনপির নেতাদের মাথা খারাপ। এখন তারা নানা ধরনের কথা বলছে।
স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর সভাপতিত্বে ও বঙ্গবন্ধু একাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজির সঞ্চালনায় এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী লীগের নেতা এম এ করিম, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটির চেয়ারম্যান মো. সুমন সরদার, মহাসচিব এম এ বাশার, কো-চেয়ারম্যান সেহেলী পারভীন প্রমুখ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ গণতন্ত্র
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ১৭ মে দেশের বিভিন্ন এতিমখানায় খাবার বিতরণ
করবে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি।
বুধবার (১৫ মে) আওয়ামী লীগের ত্রাণ
ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচি
ঘোষণা করা হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার
(১৬ মে) দুপুর ১টায় তেজগাঁও ‘রহমতে আলম ইসলাম মিশন এতিমখানা’য় সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে
সুষম খাবার বিতরণ করা হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এছাড়াও এদিন রাজধানী ঢাকায় আজিমপুর
সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা, মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোডস্থ এতিমখানা, সোবহানবাগ মসজিদ
সংলগ্ন এতিমখানা, বাড্ডা বেরাইদ রহিম উল্লাহ এতিমখানায় এতিম অসহায়দের মাঝে খাবার সামগ্রী
বিতরণ করা হবে।
একই সঙ্গে সিলেট হযরত শাহজালালের (র.)
মাজার সংলগ্ন এতিমখানা এবং চট্টগ্রাম হযরত শাহ আমানতের (রহ) মাজার সংলগ্ন এতিমখানা
ও গরীব উল্লাহ শাহের (রহ) মাজার সংলগ্ন এতিমখানাতেও খাবার সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
হবে।
এছাড়াও ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির
সদস্যদের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন জেলা সদরে অবস্থিত এতিমখানাগুলোতে সুষম খাবার পরিবেশন
করা হবে।
পরের দিন শনিবার দুপুর ১টায় চট্টগ্রামের
কদম মোবারক এতিমখানায় সুষম খাবার বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এতিমখানা আওয়ামী লীগ উপ-কমিটি
মন্তব্য করুন
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২৯ মে অনুষ্ঠেয় তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৫২ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী
তাদের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে ১৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ২৬ জন ভাইস চেয়ারম্যান
প্রার্থী ও ৯ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। গতকাল বুধবার বিএনপির পাঠানো এক সংবাদ
বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিভাগভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, রংপুর বিভাগের ১২ জন, রাজশাহী বিভাগের চারজন, বরিশাল বিভাগের পাঁচজন, ঢাকা বিভাগের চারজন, ময়মনসিংহ বিভাগের ৯ জন, সিলেট বিভাগের সাতজন, চট্টগ্রাম বিভাগের একজন, কুমিল্লা বিভাগের ছয়জন ও খুলনা বিভাগের চারজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, দলের ভেতর সুবিধাবাদী, লুটেরা এবং দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। কিন্তু ২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্র্যাকডাউন হবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করবে। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।