নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৩ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
ক্ষুদ্র মানে ফেলনা কিছু নয়। একটা বড় বাড়ির বিদ্যুত লাইনের কাট আউটের একটা ছোট্ট তার ছিড়ে গেলে পুরো বাড়ি অন্ধকারে নিমিজ্জিত হয় ঠিক তেমনি আবার ঐ ছোট্ট তার জুড়ে দিলে নিমেষেই পুরো আঙ্গিনা আলোয় উদ্ভাসিত হয়। একটা লিংকপিন ছুটে গেলে যেমন অনেক বড় ক্ষতি হয় ঠিক তেমনি একটি ছোট্ট পদক্ষেপের ফলাফল অনেক বড় হতে দেখা যায়। তাই তো সরকার ঘোষণা করেছে, সৃজনশীল আইডিয়া বা পরিকল্পনা উপস্থাপন করে আর্থিক পুরস্কারসহ নানা সুবিধা ভোগ করতে পারবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। আইডিয়া ব্যাংকের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু করছে সরকার।
উন্নয়নের ধারাকে আরো গতিশীল ও টেকসই করতে সরকারি কর্মচারীদের গতানুগতিক কাজের বাইরে নিয়ে আসতে চায় সরকার। অর্থাৎ যে যেখানে দায়িত্ব পালন করছেন, সেখানেই সংশ্লিষ্ট কাজের মধ্যে সৃজনশীলতা দেখাতে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। এজন্য তৈরি করা হয়েছে আইডিয়া ব্যাংকও। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে উদ্ভাবনী সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পরিকল্পনা বিভাগের আওতায় পরিচালিত ইনোভেশন টিমের সভায় উদ্যোগগুলোকে বাস্তবায়ন করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।
ইনোভেশনের জন্য বা ইনভেটিভ আইডিয়ার জন্য শুধু সরকারী কর্মকর্তা কেন জনিনা। তবে আমাদের এশিয়ার অনেক দেশেই আছে যে, ইনভেটিভ বা সৃজনশীল আইডিয়া ব্যাংক আছে অন্যভাবে। সরকারী-বেসরকারী বা পেশা নির্বিশেষে দেশের যে কোন নাগ্রিক এই উদ্যোগে নিজেকে শামিল করতে পারেন। এসব দেশে ইনভেটিভ আইডিয়ার প্রস্তাব জমা হয় মোটা দাগে দুই ক্যাটাগরিতে। এক- শুধু আইডিয়া, দুই কোন সৃজনশীল আইডিয়া দিয়ে কোন কিছু তৈরী করা বা বানানো।
আমি ২য় শুধু আইডিয়া নিয়ে এবার কিছু বলতে চাই। ২য় ক্ষেত্রে একটা বড় খামে দুটি ছোট খামের একটিতে সৃজনশীল আইডিয়ার তত্ত্ব ও তার কারিগরি বিষয় লেখা থাকবে বিস্তারিত। অন্যটিতে তা বাস্তবায়ন করতে কী খরচ হবে তা জানানো থাকবে আইটেম ওয়াইজ। সৃজনশীল আইডিয়ার কোন কারিগরী প্রস্তাব গ্রহীত হলে তার অর্থনৈতিক প্রস্তাবের খাম খুলে দেখা হবে। প্রস্তাব অনুযায়ী সম্ভব হলে তাঁকে সেই পরিমাণ টাকা অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে কিন্তু তার স্বত্ব (পেটেন্ট রাইট) থাকবে যৌথভাবে সরকার আর ইনোভেটরের। পরে সংশ্লিষ্ট কোন শিল্প গোষ্ঠী এটা কিনে নিলে সৃজনশীল আইডিয়ার উদ্ভাবকের স্বার্থ রক্ষা করবে সরকার।
শিল্প বিকাশের সাথে সাথে তা টেকসই আর আরও উন্নত করতে সব উন্নত দেশেই সৃজনশীল আইডিয়ার চর্চার অভ্যাস দেখা যায়। তাই উন্নত দেশের আদলে প্রতি বছর সরকার একটা বাজেট করতে পারে এই ব্যাংকের জন্য। দেশের প্রতি জেলায় ২ বা ৪ জনকে তাঁদের সৃজনশীল আইডিয়ার জন্য টাকা দেওয়া হবে তাঁর বাস্তবিক রূপ দেখানোর জন্য। কোন জেলা থেকে উপযুক্ত আইডিয়া না পাওয়া গেলে অন্য জেলা থেকে ভালো আইডিয়া গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে প্রতি বছর ২/৪টা নতুন কিছু আসবেই যা উন্নত দেশের এমন কর্মসূচী থেকে জানা যায়। প্রাপ্ত নতুন সৃজনশীল আইডিয়ার ২/৪টা সফল হলেই সরকারের পুরো খরচের কয়েকগুণ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা হবে। নতুন নতুন ইনভেটিভ আইডিয়া ডেভেলপ করতে মানুষ উৎসাহিত হবেন, দেশ এগুবে নতুন আঙ্গিকে।
কত টাকা দেওয়া হয়?
সৃজনশীল আইডিয়ার জন্য খুব বেশি টাকা দেওয়া হয় না। খুব কম পরিমাণ টাকা দেওয়া হয় কোন নতুন কিছু সৃজনের জন্য। এর মানে বড় কোন আইডিয়া এই কর্মসূচীর আওতায় আনা হয় না। বানিজ্যিক ব্যবহারের উপযোগী কোন সৃজনশীল আইডিয়ার জন্য বাণিজ্যিক বিনিয়োগ দরকার হলে তা করবে বেসরকারী খাত, সরকার নয়।
কোথা থেকে এই টাকা আসবে?
আসলে বড় বড় সব কোম্পানি কর্পোরেট সোশ্যাল রেস্পন্সিবিলিটি (সিএসআর) ফাণ্ড দেয় বিভিন্ন সেবা মূলক কাজে। কিন্তু আসলে তা সব ক্ষেত্রেই সঠিকভাবে কাজে লাগে না। সরকার আইন করে এই ফাণ্ডের একটা অংশ সৃজনশীল আইডিয়া ব্যাংকে নেবে তহবিল তৈরির জন্য। এই ব্যাংকের টাকা থেকেই সৃজনশীল আইডিয়ার খরচের যোগান হতে পারে।
প্রচারের কথাঃ
সরকারী বেসরকারী সব মিডিয়ায় সৃজনশীল আইডিয়ার এই তথ্য বিনা পয়সায় প্রচার করবে, তেমন সরকারী নির্দেশনা থাকা জরুরী। তিন দফা খবর প্রচার হবে। এর প্রথম পর্যায়ে সৃজনশীল আইডিয়া জমা দেওয়ার আহবান, ২য় পর্যায়ে কারা কোন কোন ফিল্ডের জন্য নির্বাচিত হলেন আর শেষ ধাপে কে কী করলেন মানে ফলাফল সাথে কার প্রকল্পে কী হলো, এতে সম্ভাব্য কী কী লাভ হতে পারে ইত্যাদির কথা প্রচার করা।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১৫ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১২ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক অভাবনীয়, অনন্য এবং যুগান্তকারী একটি মডেল। শিশু স্বাস্থ্য, মাতৃ স্বাস্থ্য এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। নবজাতকের মৃত্যু, মাতৃ মৃত্যু কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনুসরণ শুরু করেছে। গত বছর ১৭ মে কমিউনিটি ক্লিনিক ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ সারা বিশ্বের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’।
আজকে আমরা ১৭ মে নিয়ে কথা বলছি। যেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আবার গত বছর এই দিনে তাঁর চিন্তা প্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিককে জাতিসংঘ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, উন্নয়নশীল বাংলাদেশের কথা বলছি, যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, একদিন উন্নত বাংলাদেশ হব বলে স্বপ্ন দেখছি এই সবকিছু শেখ হাসিনার স্বপ্ন, শেখ হাসিনার ইনিশিয়েটিভ। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৭৮১ সালে পলাশি যুদ্ধে ইতিহাসের ঘৃণিত সেনাপতি মির্জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজ উদ্দৌলার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ২০০ বছরের গোলামী আমাদের ললাটে এসেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও বাঙালী এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়নি। যার পটভূমিতে বীরদর্পে আবির্ভূত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ থেকে ৭৫’ বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে স্বাধীনতার লাল পতাকা উড়েছিল বাঙালী আশায় বুক বেধেছিল।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বিয়োগান্তের ঘটনায় জাতি ছিল দিক নির্দেশনাহীন। নারকীয় এই ঘটনায় জনগণ হয়ে পড়েন দিশেহারা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার কোন শক্তি সাহস ছিল না। দলের অনেক বড় বড় নেতাও ছিলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ধানমন্ডির ৩২ বাড়ি ছিল কবরের নীরবতা। সমগ্র জাতি তখন অন্ধকারে। সামরিক বুটে পিষ্ঠ গণতন্ত্র। নির্বাসনে সংবিধান আর মানুষের মৌলিক অধিকার। বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি বঙ্গবন্ধু নাম উচ্চারণ ছিল নিষিদ্ধ।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মৌলিক চরিত্রকেই বদলে ফেলা হয়। বিশেষ করে পাকিস্তানি ধারায় সামরিক শাসনের সংস্কৃতির প্রবর্তন ঘটে দেশে। সাম্প্রদায়িকতা ফিরে আসে রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে। একের পর এক স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা ঘটতে থাকে দেশে। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমন প্রতিকূল সময় ১৯৮১ সালের ১৭ মে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্নাত মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন বাঙালির মুক্তির মহানায়কের যোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা।