নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
ক্ষমা নিয়ে জামাতের পর এখন বিএনপিতেও অস্থিরতা শুরু হয়েছে। বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা মনে করছেন যে, জামাত যেমন একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চেয়েছে, তেমনি বিএনপিরও বেশকিছু ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। ক্ষমার প্রসঙ্গে বিএনপির প্রথম যে প্রসঙ্গটি এসেছে তা হলো, ২১শে আগস্টের ঘটনার জন্য ক্ষমা চাওয়া। সম্প্রতি ক্ষমা নিয়ে জামাত ইসলামের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে এবং দলে স্পষ্টটই বিভক্তি দেখা দিয়েছে। জামাতের একটি পক্ষ মনে করছে যে, একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধীতার জন্য জামাতের প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং জামাত বিলুপ্তি করে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা উচিত। এই মতের পক্ষেই অধিকাংশ জামাতের সদস্য। অন্যদিকে একটা পক্ষ এই মতের বিরোধীতা করছে। তারা মনে করছে, একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত নয়। জামাতে যখন এইরকম টালমাটাল অবস্থা, বিএনপির মধ্যেও ক্ষমাপ্রার্থনা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক সেনাপ্রধান লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান সম্প্রতি তাঁর ঘনিষ্ঠ একাধিক বিএনপির নেতাদের বলেছেন, বিএনপিরও এখন আত্মশুদ্ধির সময় এসেছে। তাদেরকে এখন বিবেচনা করতে হবে কেন তাদের আজকের এই পরিনতি। তিনি মনে করেন, বিএনপির এই অবস্থার জন্য মূলত দায়ী ২০০১-২০০৬ সালের বিএনপির শাসনামল। এই সময়ে বিএনপি যে ভুলগুলো করেছিল, তার মাশুল এখন পুরো দলকে দিতে হচ্ছে।’ জেনারের মাহবুব মনে করেন, বিএনপিরও তাই আত্মশুদ্ধির প্রয়োজন এবং আত্মউপলব্ধি প্রয়োজন। এই আত্মউপলব্ধির জন্য তিনি তিনটি বিষয়ে বিএনপিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
এরমধ্যে প্রথমত, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা।
দ্বিতীয়ত, ১৫ আগস্ট বিএনপির চেয়ারপারসনের কেক কাটার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা।
তৃতীয়ত, ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির বিরুদ্ধে যে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং দুর্বৃত্তায়নের অভিযোগ এসেছে, তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা।
সম্প্রতি জেনারেল মাহাবুব একাধিক বিএনপির নেতার কাছে ক্ষমার প্রস্তাব তুলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এ ধরনের ক্ষমা প্রার্থনা করলে রাজনীতিতে একটি ভিন্ন সংস্কৃতি তৈরী হবে। এরফলে বিএনপির কোন ক্ষতি হবে না বরং সাধারণ মানুষের কাছে বিএনপির ইমেজ বাড়বে।’ তবে জেনারেল মাহবুবের এই ক্ষমা চাওয়ার প্রস্তাবকে উড়িয়ে দিচ্ছেন অনেক নেতা। তারা মনে করছেন , এটা সরকারেরই একটা অপকৌশল। লে.জে. মাহবুব সরকারের সঙ্গে নানাভাবে ঘনিষ্ঠ এবং তিনি একজন সংস্কারপন্থীও ছিলেন। কিন্তু সিনিয়র নেতারা মেনে না নিলেও বিএনপির তৃণমূল এবং মাঠ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে এ ধরণের উপলব্ধি ক্রমশ প্রবল হচ্ছে। তারা মনে করছেন, ২০০১-০৬ সালে বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক ধারা বিএনপি সূচনা করেছিল, তারই ফল ভোগ করছে বিএনপি নিজেই। এই সময় যে প্রতিহিংসা এবং যে দখলদায়িত্বের রাজনীতি সূচনা করেছিল হাওয়া ভবন এবং তারেক জিয়া, তার জন্যই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি প্রায় অস্তীত্বহীন হয়ে পরেছে। বিএনপির অধিকাংশ নেতা মনে করেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনাটা ছিল বিএনপির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভুল। তারা এটাও মনে করেন, কিছু অতি উৎসাহী লোক বিএনপিকে চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় বসানোর জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিল। কিন্তু গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কোন চিরস্থায়ীত্বতা নেই। তারা এটাও মনে করেন, বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালনটাই রাজনীতির বিভেদকে আরও উস্কে দিয়েছিল। সে কারণে তারা মনে করেন যে, ২০০১-২০০৬ শাষনামলে বিএনপির বিরুদ্ধে যত অভিযোগ উঠেছিল। সেগুলো সত্য মিথ্যে যাই হোক না কেন , অধিকাংশ মানুষ এটাকে বিশ্বাস করে। এজন্য তারা মনে করেন যে, এই বিষয়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত। কিন্তু জামাতে যেমন এই বিষয় নিয়ে স্পষ্ট দ্বিধা বিভক্তি, তেমনি বিএনপিতেও। ক্ষমা চাওয়ার মানুষের সংখ্যা খুবই কম। হয়তো শেষ পর্যন্ত যারা ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেছেন, তারাই দলে থাকবেন না।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।