নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০৪ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
একাত্তরের ভূমিকার জন্য অন্তর্দ্বন্দ্ব বাড়ছে জামাতে। দলে সংস্কারের দাবি ধীরে ধীরে জোরালো হচ্ছে। নেতাকর্মীদের এমন চাপ সামাল দিতে দলকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে যুদ্ধাপরাধী দলটি। পরিবর্তন করা হবে গঠনতন্ত্র। ইতিমধ্যে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও দলটির কেন্দ্র থেকে নেতাকর্মীদের জানানো হয়েছে। তবে তাদের সে আশ্বাস বা উদ্যোগে বিশ্বাসী হতে পারছে না সংস্কারপন্থীরা। তাদের মতে এই কমিটি গঠন বা সংস্কারের বুলি শুধুই লোক দেখানো।
১৯৭১ সালের ভূমিকার জন্য বরাবরই কাঠগড়ায় জামাত। বিভিন্ন মহল থেকে তাদের ক্ষমা চাওয়ার কথা বলা হলেও নিজের অবস্থানে অনড় জামাতের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে এবার সেই দাবির পক্ষে সোচ্চার দলের সংস্কারপন্থীরা যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নবীন এবং তরুণ। কিন্তু তাদের দাবি কোনভাবেই মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় নেতারা। এরই জেরে পদত্যাগ করেছেন জামাতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। বহিষ্কার করা হয়েছে আরেক নেতা ও ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু। এমন নানা জটিলতা সামনে আসলেও দলের সংস্কার ও নাম পরিবর্তন করবে না জামাত। সংস্কারের দাবিতে জামাতের অঙ্গসংগঠন ছাত্রশিবিরের একটি অংশ শক্তিশালী হয়ে ওঠায় তাদের শান্ত করার জন্য চটজলদি সংস্কারের নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু আসলে সংস্কারের জন্য সে কমিটি গঠন করা হয়নি বলে অভিযোগ সংস্কারপন্থীদের।
সাম্প্রতিক সময়ে দলের বাইরে থেকেও আন্তর্জাতিক মহল ও তাদের শরিক বিএনপির কাছ থেকে একাত্তরের ঘটনায় ক্ষমা চাওয়ার জন্য চাপে রয়েছে জামাত। ২০ দলীয় জোট কিংবা ঐক্যফ্রন্টে বিএনপির থাকা না থাকা অনেকটাই নির্ভর করছে জামাতের সিদ্ধান্তের উপর। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কাছে বিএনপির সব দাবিদাওয়া চাপা পড়ে যাচ্ছে জামাত ইস্যুতে।
জামাতের ঘনিষ্ঠসূত্রে জানা গেছে, জামাতের শীর্ষ নেতৃত্ব কোনভাবেই তাদের নাম পরিবর্তন বা ৭১’র ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইতে রাজি নয়। তাদের দাবি জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের জামাত এক নয়। বরং এই জামাত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে স্বাধীনতার ৮ বছর পর ১৯৭৯ সালে। তাই স্বাধীনতার সময়ে এই জামাতের কোন ভূমিকা বা দায় থাকার প্রশ্নই আসে না। জামাতের নেতারা বলছেন, জামাতকে নতুন দল হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এটাকে রাজনীতি থেকে দূরে নিয়ে সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত করা হবে। দলটিকে দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য দলের সংবিধান ও অন্যান্য কৌশলে পরিবর্তন আনা হবে।
তবে তাদের এমন পরিকল্পনা বা আশ্বাসকে ফাঁকা বুলি হিসেবেই মনে করছেন মঞ্জু বা তার মতো সংস্কারপন্থী তরুণ নেতাকর্মীরা এবং তাদের মধ্যে জামাত নিয়ে অসন্তোষ থেকে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। জামাতের ঢাকা মহানগর মজলিশে শূরার অন্যতম সদস্য মঞ্জুর মতে, জামাতের ভিতর নবীন-প্রবীণদের একটি বড় অংশই দলের সংস্কার চায়। তাদের অধিকাংশই চায়, ৭১’র ভূমিকার জন্য জামাত যেন ক্ষমা চায় এবং ধীরে ধীরে এই দাবি জোরালো হচ্ছে।
জামাতের সংস্কারপন্থী নেতাকর্মীরা বলছেন, একটি কমিটি গঠন করে দলের সংস্কারপন্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এটা স্রেফ লোকদেখানো। কমিটি ও পরামর্শকরা দলের বর্তমান নেতৃত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য। দলের জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ে পুরনো নেতারা বহাল থাকায় সেখানে নতুনদের দাবি দাওয়ার মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। তাদের মতে, জামাত সংগঠনে সংস্কার আনলেও সেটা নেতাকর্মীদের চাওয়া অনুসারে নয়। একাত্তরের জন্য যাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ও অভিযোগ উঠেছে তাদেরকে কোন পদে দেখতে চায় না সংস্কারপন্থীরা। কিন্তু কেন্দ্র তাদের সে দাবি মানছে না। আর এ কারণে ধীরে ধীরে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে জামাতের একাংশ।
জামাতের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, জামাতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যদি সংস্কারপন্থীদের দাবি মেনে নেয় তাহলে পদত্যাগের মিছিলে যোগ হতে পারে আরও কিছু হেভিওয়েট নাম। এছাড়াও দলে বিদ্রোহী হয়ে বহিস্কারের শঙ্কায় রয়েছে জামাত ও শিবিরের একাধিক নেতা। এসব বহিস্কৃত ও পদত্যাগ করা এসব নেতা ও তাদের অনুসারীরা নতুন অবয়বে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক কারাগা
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সারা দেশেই বাড়ছে দলটির গৃহদাহ। দল পুনর্গঠন ও চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঘিরে দলীটির বিবাদ প্রকাশ্যে আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশ সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘন করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা। তাদের অনেকে এলাকায় গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করতে গোপনে উসকে দিচ্ছেন স্থানীয় নেতাদের। ঢাকায় ফিরে তারাই আবার দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের পথ প্রশস্ত করছেন। এতে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস ঘনীভূত হচ্ছে।
দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের দলীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কারাগারে যাওয়া নেতাদের অনেকের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মনে করছেন দলীয় অনেকে। এ নিয়ে দলের ভিতরে রয়েছে বিতর্ক। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের (অডিও-ভিডিও) ভিত্তিতে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। অনেককে অঘোষিতভাবে ‘ওএসডি’ করা হয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে। এ নিয়ে ক্ষোভে কেউ কেউ রাজনীতি থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। চলে যাচ্ছেন দেশ ছেড়ে।
এসব বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি মহাসাগরের মতো বিস্তৃত একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। এ দলে নেতাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতেই পারে। তবে কোনো রকমের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা কোন্দল নেই।
জানা গেছে, সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বিরোধ-কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে চলমান উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। এই নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বয়কটের পক্ষে নেতা-কর্মীদের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সারা দেশে সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ নেতাই তাদের নিজ নিজ এলাকায় সেই দায়িত্ব পালন করেননি। অনেকে এলাকাতেই যাননি। জেলা বিএনপির শীর্ষকর্তারাও তেমন কোনো ভূমিকা রাখেননি। বরং উল্লিখিত নেতাদের এলাকাতেই ভোট কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে। নির্বাহী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব নেতার দ্বৈত ভূমিকায় তৃণমূলের নেতারা ক্ষুব্ধ।
মন্তব্য করুন