নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৮ মার্চ, ২০১৯
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে যেন কোনো বিতর্ক না হয়, সে ব্যাপারে সজাগ থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আজ প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে এই নির্দেশনা দেন। ডাকসু নির্বাচনের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ আজ গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় সাবেক ছাত্রলীগনেতা আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের পক্ষে। এই নির্বাচনে ছাত্রলীগ বিপুলভাবে জয়ী হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে এটাই সবথেকে বড় কথা। শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক। শিক্ষার্থীরা যাকে ইচ্ছা ভোট দেবে- এটাই গণতন্ত্রের কথা। এজন্যই আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনকে বিএনপি-জামাত ইস্যু করতে চাইবে। নানারকম গুজব ছড়িয়ে তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইবে। পাশাপাশি, অসত্য প্রচার চালিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করতে হবে।’ তিনি কোনো উস্কানিতে পা না দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগের নেতাদের নেতাদের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নানারকম ষড়যন্ত্র চলছে। এগুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’ আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ভালো কাজ করলে নিশ্চয়ই ভোটাররা পক্ষে ভোট দেবে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে জয় পরাজয়ের চেয়ে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন যেন হয় সেটা নিশ্চিত করা ছাত্রলীগের দায়িত্ব।’
আলোচনায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ছাত্রদল এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্যানেল কীভাবে মিথ্যাচার করছে তাঁর কিছু নজির তুলে ধরেন। একজন সাবেক ছাত্রনেতা, বাম ছাত্র সংগঠন গুলোর ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী এসবে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন। পরে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর দোয়া চান। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বলেন, ‘আমার দোয়া সবসময়ই তোমাদের সঙ্গে থাকে।‘ প্রধানমন্ত্রী এ পর্যন্ত ছাত্রলীগ যেভাবে ধৈর্য্য এবং সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছে তাঁর প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অবস্থা নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে।
উল্লেখ্য আগামী ১১মার্চ দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনে ছাত্রলীগ ছাড়া আরও তিনটি প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নির্বাচনে ছাত্রলীগ ছাড়াও প্রধান তিনটি প্যানেল হলো, কোটা সংস্কার আন্দোলন প্যানেল, ছাত্রদল এবং বাম ছাত্র সংগঠনের প্যানেল। নির্বাচনের বিভিন্ন ব্যাপারে ছাত্রদল এবং অন্যান্য সংগঠনগুলো আপত্তি করলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চীন সফর ভারত যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।
বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন র্যাবের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায় না তখন বিএনপি নেতারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন। তারা দলীয় কার্যালয়ে মিষ্টিমুখের ব্যবস্থাও করেছিলেন।
আবার ডোনাল্ড লু নির্বাচনের আগে যখন বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছিলেন তখন বিএনপি নেতাদের প্রকাশ্যে মার্কিন বন্দনা করতে দেখা গেছে। ২৮ অক্টোবরের আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই মার্কিন দূতাবাসে বা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বাসভবনে বিএনপির নেতাদের আনাগোনা ছিল। তারা সেখানে চা চক্রে মিলিত হয়েছেন, নৈশভোজে মিলিত হয়েছেন এবং বিভিন্ন রকমের শলাপরামর্শ করেছেন।
পিটার ডি হাস গত বছরের ১০ অক্টোবর বিএনপি যখন সমাবেশ করতে পারেনি তখনও একতরফা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বিতর্কিত সংগঠন মায়ের ডাকের এক নেতার বাসায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি বিএনপির প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি জানিয়েছিলেন। এভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উপর এক ধরনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন এবং সহানুভূতি দেখিয়েছিল।
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহানুভূতি এবং পরোক্ষ সমর্থনের কারণেই বিএনপির আন্দোলনের পালে হাওয়া লেগেছিল। নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি চাঙ্গা ভাব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। যদিও ২৮ অক্টোবরের পর এই ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই আহ্বানের চিঠি নিয়ে পিটার ডি হাস তিনটি দলের নেতাদের কাছে গিয়েছিলেন এবং একটি সংলাপ আয়োজনের শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই সংলাপ আয়োজনে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কেউই সাড়া দেয়নি।
এখন নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে এবং ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ১১ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলার পরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া এবং নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু’র আগে আফরিন আক্তার নির্বাচনের পরে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং সেই সময় তিনি হোটেল ওয়েস্টিনে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শামা ওবায়েদ আফরিন আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যদিও সেই সাক্ষাতের পর তারা কোনও কিছুই সাংবাদিকদেরকে জানাননি। কিন্তু এবার ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। আর এটি বিএনপির মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদেরকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিচ্ছেন না, পাত্তা দিচ্ছে না। বরং সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বিএনপি নেতারা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়ালসহ যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং মার্কিন দূতাবাসে যাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তাদেরকে দুষছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপির মধ্যেই সমস্যা রয়েছে। বিএনপির নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারেননি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিএনপির বক্তব্যগুলো তারা সঠিকভাবে ও যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি। আর একারণেই ডোনাল্ড লু’র সফরের পর বিএনপির মধ্যে চলছে এক ধরনের হতাশা।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি
মন্তব্য করুন
আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, দলের ভেতর সুবিধাবাদী, লুটেরা এবং দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। কিন্তু ২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্র্যাকডাউন হবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করবে। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ এবং তার আদর্শিক জোট ১৪ দলের নেতাদের চীন সফরে হিড়িক পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর এই চীন সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের চীন সফরের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছেন। তবে তারা এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই মনে করছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।