নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০১৯
বেগম খালেদা জিয়ার কৌশল বুঝছেন না এখন বিএনপির নেতারাও। বেগম খালেদা জিয়া তাঁর স্বাস্থ্য এবং অসুস্থতা নিয়ে লুকোচুরি করছেন। নিজেকে রহস্যাবৃত করে রেখেছেন। কেন তিনি তা করছেন সেটা বুঝতে পারছেন না বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও। বিএনপির নেতৃবৃন্দরা বেগম খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা না নিতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন। আজ গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার আদালতে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ জানায় অসুস্থতার জন্য তাকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না।
এর আগে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন হয়েছিল। সেখানে তাকে নিয়ে যাওয়ার কথাও ছিল। এজন্য দুটি কেবিন খালি করেছিল মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু খালেদা জিয়া চিকিৎসার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে গিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি চিকিৎসা নিতে আগ্রহী নন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বেগম জিয়া তার অসুস্থতা নিয়ে একটা রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করছেন। এই প্রক্রিয়ায় তিনি নিজেই তার মুক্তির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে চাইছেন। কিন্তু এই কৌশলটি ঠিক কি, তা বুঝতে পারছেন না বিএনপির নেতারাও। একাধিক নেতারা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়া এখন বিএনপির নেতাদেরও বিশ্বাস করছেন না। বিএনপির মধ্যেই অনেক সরকারী চর রয়েছে বলে বেগম খালেদা জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাতে স্পষ্টই বলেছেন। এজন্য তিনি তার কৌশল গোপন করেছেন এবং তিনি বলেছেন, তিনি একাই লড়বেন এবং একাই তিনি তার মুক্তির ব্যবস্থা করবেন। সেই লড়াইয়ের কৌশল হিসেবেই আদালতে অনুপস্থিত থাকছেন। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েও যাচ্ছেন না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। তবে জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার যে অসুস্থতার কথা বলা হয়েছে সেটা আসলে অনেক ফুলিয়ে ফাপিয়ে বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচ্ছে। প্রেসার, ব্লাড সুগার এবং অন্যান্য রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট স্বাভাবিকই রয়েছে। শুধুমাত্র বার্ধক্য জনিত কারণে তাঁর হাটাচলার অসুবিধা হচ্ছে। তাঁর দীর্ঘদিনের পুরনো আর্থ্রাইটিসের কারণে তিনি হাঁটতে চলতে পারছেন না। এটাই তার প্রধান সমস্যা। অন্য বিষয়গুলো নিয়ে তার কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু আজ বেগম খালেদা জিয়া হুমকি দিয়েছেন তিনি জেল কর্তৃপক্ষর দেওয়া ওষুধের উপর আস্থা রাখতে পারছেন না। ওষুধ খাওয়াও তিনি ছেড়ে দিবেন। পর্যায়ক্রমে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে তিনি নিজেকে অসুস্থ বানিয়ে সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায় করবেন কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ আজ তিনি জেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, নিয়মিত যে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়, সেটা তিনি করবেন না। জানা গেছে পর্যায়ক্রমে তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করার পাশাপাশি ওষুধ খাওয়াও বন্ধ করে দিতে পারেন। আস্তে আস্তে নিজেকে তিনি অসুস্থ প্রমাণ করতে পারেন। এমন একটা পরিস্থিতি তৈরী করতে পারেন যেখান থেকে সরকার বাধ্য হয় তাকে ইউনাইটেড হসপিটালে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। একটা সূত্র বলছে, জেল কর্তৃপক্ষকে এটাও হুমকি দিচ্ছেন তাকে যদি তাকে যদি তার পছন্দের চিকিৎসক ও হসপিটালে চিকিৎসা করানো না হয়, তাহলে তিনি অনশনেও যেতে পারেন। সেই অনশন ভাঙ্গতেই হয়তো তাকে ইউনাইটেড হসপিটালে নেওয়া হবে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এর আগে তিনি তার অসুস্থতার ব্যাপারে কথা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে বললেও, এখন বিএনপির নেতৃবৃন্দই তাঁর প্রতিপক্ষ হয়েছে। বিএনপির নেতৃবৃন্দ তার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিলে তিনি বলেছেন যে, সরকারকে তথ্য দেওয়ার জন্যই কি চিকিৎসার খোঁজ খবর নিচ্ছেন? বেগম খালেদা জিয়া এখন কাউকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। না সরকার, না নিজ দলের নেতৃবৃন্দকে। তিনি মনে করছেন, একাই তিনি ইউনাইটেডে চিকিৎসার জন্য যে লড়াই করবেন। কিন্তু একা লড়াই করে তিনি জয়ী হতে পারেন কিনা, সেটাই দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।
তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই আজ দেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, কিন্তু বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল বাকশালকে গালিতে পরিণত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমও লিখছে ভারত বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে বিএনপি। ভারত প্রশ্নে এখন মধ্যপন্থা নিতে চায় বিএনপি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই, সংসদ এবং সংসদের বাইরেও সরকারের বিরোধিতা জারি আছে। সরকার কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে না। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন। শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।