ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি কি পারবে আওয়ামী লীগ হতে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২১ মার্চ, ২০১৯


Thumbnail

বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত, বিভ্রান্ত এবং অন্তর্কলহে জর্জরিত একটি রাজনৈতিক দল। অনেকেই মনে করছেন বিএনপির ভাঙন এখন সময়ের ব্যাপার। নেতৃত্বশূন্যতা, নেতাদের মধ্যে পারস্পারিক বিরোধ এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা বিএনপিকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে। এ অবস্থা থেকে কি বিএনপির উত্তরণ সম্ভব? বিএনপিতে খুব কম নেতাই পাওয়া যাবে যারা আশাবাদী। তাদের আশাবাদের প্রধান কারণ হলো আওয়ামী লীগ।

৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দিশেহারা, বিভ্রান্ত এবং নেতৃত্বহীন একটি রাজনৈতিক দল ছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত একরকম দিগ্বিদিকজ্ঞানশুন্য একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ছোটাছুটি করেছে। ১৯৮১ সালে জাতির পিতা কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল এবং সেটাও দীর্ঘ সময় লেগেছিলো। মূলত ১৯৮৬ সালের এরশাদবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্রমশ সংগঠিত হতে থাকে। তখন থেকেই আওয়ামী লীগের পুনর্জন্ম হয়।

বিএনপি মনে করছে আওয়ামী লীগ যেভাবে নির্যাতন, নিষ্পেষণের পরও সংগঠিত হয়ে গড়ে উঠেছিলো, যদি বিএনপি সঠিক নেতৃত্ব পায় এবং সঠিকভাবে গড়ে উঠতে পারে ঠিক সেরকম একটি সুযোগ বিএনপির সামনেও আছে। বিএনপি এখন মনে করছে, বিএনপিকে এখন টিকে থাকতে হলে আওয়ামী লীগের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হবে।

১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ যখন নতুন নেতৃত্ব হিসেবে শেখ হাসিনাকে নির্বাচন করে তখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন, আওয়ামী লীগের কোন নেতাও ছিলেন না। জাতির পিতার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার সংসার জীবন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু বিএনপির জন্য এরকম একজনকে খুঁজে পাওয়ায় এখন দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপিতে যাকে নেতৃত্বে উত্তরাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল, সেই তারেক জিয়া এতোটাই বিতর্কিত এবং অগ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন যে বিএনপির পক্ষে এখন তাকে নতুন করে নেতৃত্বের সামনে আনাটা গ্রহণযোগ্য হবে না। শেখ হাসিনা যেমন আনকোরা কিন্তু ক্লিন ইমেজের অধিকারী হয়ে দলকে সংগঠিত করেছিলেন সেরকম একজন নেতা খুঁজে পাওয়াই এখন বিএনপির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

অনেকেই মনে করেন, ৭৫’র পরে আওয়ামী লীগ কখনই ঘুরে দাঁড়াতে পারতো না যদি শেখ হাসিনা দলের নেতৃত্ব গ্রহণ না করতেন। শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের পরই আওয়ামী লীগ সংগঠিত হতে থাকে, দলের বহুধাবিভক্তি কেটে যায়। আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। আওয়ামী লীগের এই পুনরুজ্জীবন প্রক্রিয়ার চাবি ছিলেন শেখ হাসিনাই। কিন্তু বিএনপিতে শেখ হাসিনা কে হবেন?

কিন্তু তারপরও বিএনপির নেতারা বলছেন, ইতিহাস সবসময় একইভাবে পুনরাবৃত্তি হয় না। বিএনপির একটি জনসমর্থন আছে এবং দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ বিএনপিকে পছন্দ করে। বিএনপি এখন যে নিপীড়ন নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ঠিক এমনটাই গিয়েছিল ৭৫’র পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ। যদিও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করেন, বিএনপি এখন যে অবস্থায় আছে তার সঙ্গে ৭৫ পরবর্তী সময়ের আওয়ামী লীগের নির্যাতন নিপীড়নের তুলনা করা অবান্তর। কারণ ৭৫-এ আওয়ামী লীগের শুধু শীর্ষস্থানীয় নেতাদের হত্যাই করা হয়নি আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছিলো। বিভৎস কায়দায় নারকীয় নির্যাতন ও হত্যা চালিয়ে আওয়ামী লীগকে নিস্তেজ করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। সে তুলনায় বিএনপির উপর কোন নির্যাতন নিপীড়নই হয়নি। বিএনপির যাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে সেগুলো সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই করা হয়েছে। কাজেই ’৭৫ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আজকের বিএনপির নির্যাতনের তুলনা করা হলো অর্থহীন।

দ্বিতীয় যে সমস্যা বলা হচ্ছে সেটা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা একটি দল। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ক্রমশ বিকশিত হয়েছে। ৬৯-র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ জনগণের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছিল। এই পুরো সময়টিতে আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র সাড়ে তিন বছর ক্ষমতায় ছিল। আওয়ামী লীগ বিরোধী দল হিসেবে রাস্তায় আন্দোলনের ক্ষেত্রেই অধিক পারঙ্গম একটি রাজনৈতিক দল।

বিএনপির জন্ম হয়েছিল ক্যান্টনমেন্টে। বিভিন্ন দল থেকে আদর্শহীন নেতাদের ভাগিয়ে এনে একটি ক্লাবের আকারে রাজনৈতিক দল করা হয়েছিল। আদর্শহীন রাজনৈতিক দল হওয়ার কারণে সংকটকালে বিএনপির নেতৃত্ব ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। দৃঢ় অবস্থান নিয়ে বিএনপি আন্দোলন বা সংগ্রাম বা নির্বাচন কোনোটিই করতে পারছে না। জনগণের চিন্তা চেতনা থেকে উৎসারিত নয়, এজন্যই বিএনপির আজকের এই অবস্থা বলে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

তবে বিএনপির কেউ কেউ মনে করেন, বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে হলেও ৮২ সাল থেকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিএনপিরও একটা পুনর্জন্ম হয়েছিল। যার ফলে বিএনপি জনগণের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছিল। তাছাড়া আওয়ামী বিরোধী একটি বিরাট জনগোষ্ঠী বিএনপিকে সমর্থন করে। কাজেই বিএনপির কোনো আদর্শ না থাকলেও কিংবা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে ভেড়ানো নেতাদের একটি দল হলেও শেষ পর্যন্ত জনসমর্থন হলো বড় কথা এবং বিএনপি একটি জনসমর্থনপুষ্ট রাজনৈতিক দল। কাজেই বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারে এবং সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ৭৫ থেকে ৮১ পর্যন্ত যে প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করেছে সেই প্রক্রিয়াগুলোই অনুসরণ করতে চায়। কিন্তু ৭৯-র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করেছিল এবং মাত্র ৩৯টি আসন পেয়ে সংসদে যোগ দিয়েছিল। বিএনপি এবার আসন পেয়েছে ছয়টি। সেই আসন নিয়ে কি বিএনপি সংসদে যোগ দিতে পারবে? ইত্যাদি বহু মিল অমিল খুঁজে দেখা যাচ্ছে যে, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুটি ভিন্ন খাতের, ভিন্ন ধাঁচের রাজনৈতিক দল। কাজেই একটি রাজনৈতিক দল অন্য আরেকটি রাজনৈতিক দলের মতো করে উঠতে পারবে না।

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে, ইতিহাসে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি বারবার ঘটে না। সে কারণে বিএনপি আওয়ামী লীগের মতো করে আবার উদ্ভাসিত হবে এটা কতটুকু বাস্তবসম্মত সেটা ভেবে দেখার বিষয় বটে।

বাংলা ইনসাইডার/এসআর/এমআর 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মির্জাপুরে বিএনপির ২০ নেতাকে সতর্ক বার্তা

প্রকাশ: ০৯:০৩ এএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাচনে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ফিরোজ হায়দার খানের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ২০ নেতাকে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৮ মে) উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রউফ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আরিফ এবং পৌর বিএনপির সভাপতি হয়রত আলী মিঞা সম্পাদক এসএম মহসীন স্বাক্ষরিত পৃথক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সতর্ক বার্তা পাওয়ার পর নির্বাচনি প্রচারে অংশ নিলে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলেও জানানো হয়।

সতর্ক বার্তাপ্রাপ্ত নেতারা হলেন, উপজেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক তোজাম্মেল হোসেন প্রিন্স, সদস্য আলী হোসেন রনি, প্রচার সম্পাদক সাঈদ আনোয়ার, গোড়াই ইউনিয়নের সাবেক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন, বহুরিয়া ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি অকরাম মল্লিক ভাওড়া ইউনিয়নের সাবেক সম্পাদক তপন হাসান খানসহ ২০ নেতা।


টাঙ্গাইল   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আবার তাপস-খোকন বিরোধ, আওয়ামী লীগে অস্বস্তি

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

সারা দেশে আওয়ামী লীগে কোন্দল বিভক্তি চরম আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যেই ঢাকার আওয়ামী লীগের দুই হেভিওয়েট নেতা শেখ ফজলে নূর তাপস এবং সাঈদ খোকনের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্য আকার রূপ নিয়েছে। কয়েকদিন আগে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন দুটির মেয়রদের মেয়াদ চার বছর পূর্ণ হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের প্রথম দিকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে ঢাকা সিটির দক্ষিণের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন এখন তাপসের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। অন্যদিকে বর্তমান মেয়র তাপস দীর্ঘদিন ধরেই সাঈদ খোকনকে কোণঠাসা করার জন্য প্রকাশ্য তৎপরতা দেখিয়েছেন। এই দুই নেতার বিরোধ এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে এক অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যে সময় সারা দেশে আওয়ামী লীগ কোন্দল নিরসনে আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে।

আরও পড়ুন: জামায়াত চাঙ্গা হচ্ছে কীভাবে?

সাইদ খোকন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র ছিলেন। তার মেয়র থাকা অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নানা রকম অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছিল। বিশেষ করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে তার সীমাহীন ব্যর্থতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ গত নির্বাচনে সাঈদ খোকনকে আর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে মনোনয়ন দেয়নি। তার বদলে ধানমন্ডি এলাকার এমপি শেখ ফজলে নূর তাপস মনোনয়ন পান এবং নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি চার বছর অতিক্রম করেছেন। তাপস যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ব্যাপক উন্নয়ন করতে পেরেছেন এমনটি নয়৷ তবে দুর্নীতি বা অন্যান্য অভিযোগে তিনি সাঈদ খোকনের মত ব্যাপকভাবে সমালোচিত হননি।

অন্যদিকে সিটি কর্পোরেশনে দায়িত্ব গ্রহণ করে তাপস সিটি কর্পোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং সেটি করতে যেয়ে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের অনুগত বেশ কয়েক জনকে চাকরিচ্যুত করেন। তিনি সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে বেশ প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহণ করেন এবং তার কিছু নীতি এবং কর্মসূচির বিপরীত অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। এরকম বিরোধের জেরে এক সময় সাঈদ খোকনের সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছিল দুর্নীতির অভিযোগে। এবং দুজনের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্য রূপ ধারণ করেছিল। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপে সেই বিরোধ সাময়িকভাবে থেমে যায়।

আরও পড়ুন: অর্থকষ্টে বিএনপি

সাইদ খোকন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হন। গত নির্বাচনে তিনি ঢাকার একটি আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। আজ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য প্রেস’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে তিনি মেয়র হিসেবে তার কার্যক্রম এবং সাফল্যের কথা তুলে ধরেন৷ এই সাফল্যের কথা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বর্তমান মেয়রের তীব্র সমালোচনা করেন এবং মেয়রের বিভিন্ন নীতি এবং অবস্থানের ব্যাপারে নেতিবাচক মন্তব্য তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন: তারেক কি যুক্তরাজ্যে অবাঞ্ছিত হচ্ছেন?

ধারণা করা হচ্ছে যে, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখেই সাঈদ খোকন সমালোচনার তীর ছুড়েছেন তাপসের দিকে। এখন তাপস যে তাকে পাল্টা আঘাত হানবেন এটা বলাই বহুল্য। স্থানীয় ঢাকাবাসীরা মনে করছেন, ফজলে নুর তাপস মেয়র হওয়ার পর সিটি কর্পোরেশনের দুর্নীতি কমিয়েছেন। তিনি কিছু সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ এবং কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন। দুজনেরেই ভালো মন্দ আছে। তবে সাঈদ খোকন মেয়র থাকা অবস্থায় দুর্নীতির একটি বড় ধরনের পার্সেপশন সাধারণ মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছিল যেটি তাপসের সময় তৈরি হয়নি। এখন মেয়র হিসেবে আবার দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনে ফিরে আসতে চাইছেন সাঈদ খোকন। সে জন্যই তিনি বর্তমান মেয়রকে সমালোচনা করছেন বলেই অনেকে মনে করেন।

তবে তাপস এবং সাঈদ খোকনের এই বিরোধ আওয়ামী লীগের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে এই সময় আওয়ামী লীগের দই গুরুত্বপূর্ণ নেতার বিরোধ সরকার সম্পর্কে এবং দলের ভিতর ভুল বার্তা দিবে বলেই অনেকে মনে করছেন। 


আওয়ামী লীগ   সাঈদ খোকন   শেখ ফজলে নুর তাপস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জামায়াত চাঙ্গা হচ্ছে কীভাবে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর নির্বাচন বিরোধী অধিকাংশ বিরোধী শিবিরেই এখন হতাশা। বিশেষ করে আন্দোলনের ব্যর্থতা নেতা কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের অনীহা তৈরি করেছে। নতুন করে আন্দোলন শুরু করা বিএনপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য কষ্টসাধ্য এবং কঠিন হয়ে উঠেছে বলেই মনে করেন বিএনপির নেতারা। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে জামায়াত যেন বিএনপির সহায়ক শক্তি হিসেবে দাঁড়িয়েছে। বিএনপিকে চাঙ্গা করা এবং বাঁচিয়ে রাখার মহান দায়িত্ব গ্রহণ করেছে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত।

গত কিছুদিন ধরেই জামায়াতের মধ্যে অত্যন্ত চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জামায়াত শুধু তাদের নিজেদের সংগঠনকে গোছাচ্ছে না বরং বিএনপিকেও পরিচালনা করার ক্ষেত্রে প্ররোচিত করছে, প্রভাব বিস্তার করছে। জামায়াত এখন আবার শক্তিশালী অবস্থানে ফিরে এসেছে। বিশেষ করে বিরোধী রাজনীতির মেরুকরণে জামায়াত এখন কর্তৃত্বের আসন গ্রহণ করেছে বলেও মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন: অর্থকষ্টে বিএনপি

প্রশ্ন উঠেছে জামায়াত চাঙ্গা হচ্ছে কীভাবে? ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ভূমিধস বিজয়ের পর যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করে এবং এই বিচারে জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব নেতাকেই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে এবং তারা সর্বোচ্চ শাস্তি পেয়েছে। একে একে জামায়াতের সব শীর্ষনেতা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত হওয়ার পরও দলটি বিলুপ্ত হয়নি, ভেঙে পড়েনি। বরং বিভিন্ন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, জামায়াত এখন আগের চেয়ে সংগঠিত হচ্ছে এবং তৃণমূল পর্যন্ত এর সংগঠন বিস্তার করছে। জামায়াত দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে সমাবেশ করতে পারেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়গুলোতে জামায়াতের শোডাউন লক্ষ্য করার মতো। বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের জামায়াতের সমাবেশ তার আগে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আমাদের কর্মী সমাবেশ। নির্বাচনের পরে জামায়াতের তৎপরতা। গত রমজানে পাঁচতারকা সোনারগাঁ হোটেলে জামায়াতের ইফতার পার্টি ইত্যাদি সবই জামায়াত কে নতুন শক্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

জামায়াত চাঙ্গা হচ্ছে কীভাবে সেটি এখন একটি বড় প্রশ্ন। কারণ যুদ্ধাপরাধের বিচারের পর অনেকেই মনে করেছিলেন যে বাংলাদেশে ধর্মান্ধ মৌলবাদ এবং স্বাধীনতার বিরুদ্ধে রাজনীতির চির অবসান ঘটবে। এই দলগুলো মুখ থুবড়ে পড়বে। কিন্তু এই সমস্ত বিচারের এক দশক পরও দেখা যাচ্ছে যে জামায়াত নতুন করে সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছে। এর একটি বড় কারণ হল স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে প্রগতিশীল ধারার রাজনৈতিক দলগুলো মানুষকে আকর্ষণ করতে পারছে না। জামায়াত তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে সংঘটিত হচ্ছে। অনেক স্থানে জামায়াত তাদের পরিচয় গোপন করে ধর্মপ্রচারের নামে তাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করছে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে দাওয়াত এবং নানা রকম ইসলামী কর্মসূচির মাধ্যমে জামায়াত একটি নতুন আবহাওয়া তৈরি করার চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন: তারেক কি যুক্তরাজ্যে অবাঞ্ছিত হচ্ছেন?

তাছাড়া জামায়াতপন্থি যেসমস্ত ব্যবসায়ীরা তারা সরকারের সাথে একধরনের গোপন আঁতাত এবং সম্পর্ক তৈরি করছেন এবং আঁতাত ও সম্পর্কের মাধ্যমে তারা সরকারের সাথে ব্যবসা-বানিজ্য করছেন। সেই ব্যবসার টাকা সংগঠন করার জন্য দিচ্ছেন। আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে তা হলো, জামায়াতের কর্মীরা দলকে নিয়মিত চাঁদা দিচ্ছেন এবং ছোট ছোট চাঁদার ফলে একটি বিপুল অর্থ জমা হচ্ছে। আর একারণেই জামায়াত এখন বিরোধী রাজনীতির কেন্দ্রে এসে দাড়িঁয়েছে। 


জামায়াত   বিএনপি   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

অর্থকষ্টে বিএনপি

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপি নতুন করে আন্দোলন শুরু করতে চাইছে। কিন্তু আন্দোলন শুরু করার জন্য যে আর্থিক সামর্থ্য প্রয়োজন, সেই আর্থিক সামর্থ্য এখন বিএনপির অনেক কমে গেছে। অর্থকষ্টে ভুগছে দলটি। সম্প্রতি দলের স্থায়ী কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বিষয়টি লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার কাছে অবহিত করেন। তারেক জিয়া তাদের বলেছেন, ‘আমারই চলতে কষ্ট হচ্ছে, আপনারা টাকা জোগাড় করুন’।

উল্লেখ্য যে, বিগত দুই বছর বিএনপির বেশ কিছু কর্মসূচি করেছিল এবং তাদের কাছে আর্থিক প্রবাহে একটা স্ফীতিভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল। বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা গোপনে গোপনে দুই নৌকায় পা দেওয়ার মতো আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। তাছাড়াও বিভিন্ন বিএনপিপন্থি ব্যবসায়ীরা দলটিতে অর্থ সহায়তা বাড়িয়েছিল। তাদের আশা ছিল যে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচন প্রতিরোধ করতে পারবে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটবে। আর এই কারণেই ডু অর ডাই অবস্থা থেকে অনেক ব্যবসায়ী বিএনপিকে দুই হাতে অর্থ ঢেলেছিল। আর এ কারণেই বিএনপির মধ্যে গত দুই বছর চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছিল। কোটি কোটি টাকা খরচ করে তারা বিভিন্ন বিভাগীয় সমাবেশ করেছে। কর্মসূচি পালন করেছে। এই সমস্ত কর্মসূচির ফলে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের আশা এবং উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের ঘটনার পর আস্তে আস্তে বিএনপিতে অর্থ প্রবাহ কমতে থাকে।

আরও পড়ুন: তারেক কি যুক্তরাজ্যে অবাঞ্ছিত হচ্ছেন?

বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন যে, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত বিএনপিকে অনেকেই আর্থিক সহায়তা দিচ্ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠিত হওয়া এবং বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রগুলো নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রেক্ষিতে এখন বিএনপিকে সবাই এড়িয়ে চলতে চাইছে। যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা আগে বিএনপিকে অর্থ দিতেন তারা এখন বিএনপি নেতাদের টেলিফোন ধরছেন না বলেও কোন কোন নেতা অভিযোগ করেছেন। আর বিএনপিপন্থি যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা সরকারের পতনের লক্ষ্যে আন্দোলনের গতি বাড়ানোর জন্য দুহাতে অর্থ দিয়েছেন তারা এখন হাত পা গুটিয়ে নিয়েছেন।

এখন ওই সমস্ত ব্যবসায়ীরা তাদের অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করছেন। নতুন করে সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে কারও কারও মধ্যে। কারণ তারা মনে করছে, আন্দোলনে বিএনপি পরাজিত হয়েছে, এখন বিএনপির পেছনে অর্থ ঢালা মানে নিজেকে ঝুঁকিতে ফেলা। এ কারণেই বিএনপি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যে চাঁদা আদায় করত সেই চাঁদার পরিমাণ এখন শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে।

আরও পড়ুন: হাইকমান্ডের হাতে বিএনপির ৩০০ নেতার ভাগ্য

বিএনপির অর্থ উপার্জনের একমাত্র উপায় হল, কমিটি গঠন করা এবং কমিটি গঠন করার মাধ্যমে বিভিন্ন নেতা কর্মীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা। কিন্তু নেতাকর্মীরা এখন আগের মতো সচল অবস্থায় নেই। বহু নেতাকর্মী জেলে। তাদের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। এমনকি অনেকে আদালতের খরচ মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছেন। এ কারণে টাকা দিয়ে কমিটিতে জায়গা নেওয়াটা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এখানেও আর্থিক অর্থ প্রাপ্তিতে একটি টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। এ কারণে বিএনপি এখন বহিষ্কার বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকছে। বিভিন্ন নেতাকে ঢালাওভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। তখন তারা টাকা পয়সা দিয়ে দলে আবার জায়গা করে নিচ্ছেন। এভাবে কোনরকমে দলটি টিকছে।

তবে বিএনপি নেতারা মনে করছেন, যারা অর্থসংগ্রহ করছে সে সমস্ত নেতারা ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। বিশেষ করে কয়েকজন নেতা যারা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তারা একটি মোটা অংকের টাকা নিজেদের কাছে রেখে অল্প কিছু দলের জন্য বরাদ্দ করেছেন। তবে ওই সমস্ত নেতাদের অনেকেরই দাবি তারা নিজের কাছে কিছুই রাখেননি। বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তারা যে চাঁদা বা আথিক অনুদান পেয়েছেন তার একটি বড় অংশই তাদেরকে লন্ডনে পাঠাতে হয়েছে তারেক জিয়ার বিলাসী জীবনযাপনের জন্য।


বিএনপি   আওয়ামী লীগ   ব্যবসায়ী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

হাইকমান্ডের হাতে বিএনপির ৩০০ নেতার ভাগ্য

প্রকাশ: ০৭:১৯ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

দীর্ঘদিন ধরে চলছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সরকারবিরোধী আন্দোলন। এই আন্দোলনকে ঘিরে নানা কারণে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এখন পর্যন্ত সাত শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার করেছে দলটি। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতারাও রয়েছেন। বহিষ্কার হওয়া এসব নেতারা এবার ভুল স্বীকার করে দলে ফিরতে চান।

এরই মধ্যে ক্ষমা চেয়ে অন্তত তিনশজন আবেদন করেছে দলীয় হাই কমান্ডের কাছে। আবেদনের পর এখন পর্যন্ত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে মাত্র ২০ জনের। বাকিদের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে অনড় হাইকমান্ড।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্ষমা না পেয়ে কেউ কেউ একাধিকবার আবেদনও করেছেন। ঘুরছেন বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছে।

তবে কোনো সংকেত না মিললেও বিএনপির কর্মসূচিতে বহিষ্কৃত অব্যাহতি পাওয়া নেতাদের অনেকেই অংশ নিচ্ছেন।

ক্ষমা না করার কারণ হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, বেশ কয়েকজন একাধিকবার আবেদন করলেও স্থানীয় গ্রুপিং-দ্বন্দ্বের কারণে দলে ফেরানোর সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। আবার ঢালাওভাবে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করলে দলে চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়তে পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বহিষ্কৃত নেতাদের আবেদন বিবেচনাধীন রয়েছে।

এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় কেন্দ্রীয় জেলা পর্যায়ের ১৪ জনকে বহিষ্কার করে বিএনপি। এর মধ্যে দুজন ছাড়া কেউ বিজয়ী হতে পারেননি। ফলে বাকিদের কেউ কেউ বিএনপিতে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ছাড়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত বহিষ্কার করা হয়েছে ২০৪ নেতাকে।


হাইকমান্ড   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন