নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০১৯
অনুগত বিরোধী দলের বৃত্ত ভেঙে সম্মিলিত বিরোধী দলের নেতা হতে চেয়েছিলেন জিএম কাদের। সেজন্যই জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তাকে সংসদীয় দলের উপনেতার পদ থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে, বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন বিরোধীদলীয় নেতাদের সঙ্গে জিএম কাদের পর্যায়ক্রমে যোগাযোগ শুরু করেছিলেন এবং আলাপ-আলোচনা শুরু করেছিলেন। বিএনপিকে তিনি সংসদে এসে বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। জাতীয় পার্টিও খোলস ছেড়ে বেরিয়ে সরকারের সমালোচনায় মুখর হবে এমন একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিলো।
একইসঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগ নিয়ন্ত্রিত ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে যারা মন্ত্রী হয়েছিলেন তাদের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন এবং সংসদে সরকারের বিরুদ্ধে সকলের সম্মিলিত একটি ফর্মুলা নিয়ে তিনি কাজ করছিলেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, জিএমি কাদের সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি মনসুরকে বলেন যে, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি সংসদীয় অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। এক্ষেত্রে তিনিই (জিএম কাদের) সংসদে বিরোধী দলের নেতা। সংসদে বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টি নতুন রূপে আসতে চায়। সরকারের অনুগত ও আজ্ঞাবহ বিরোধী দল না হয়ে প্রকৃত অর্থে সরকারের সমালোচক হয়ে সংসদে জনগণের কথা তিনি বলতে চান। সুলতান মনসুরও তার সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। সুলতান মনসুরের উদ্যোগেই তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে জিএম কাদেরের অনেক পুরনো সম্পর্ক। দু’জনের মধ্যে দীর্ঘদিনের যোগাযোগও রয়েছে। তিনি মির্জা ফখরুলকে অনুরোধ করেছেন, সরকারকে চাপে ফেলার উদ্যোগ হিসেবে একটি সম্মিলিত বিরোধী প্ল্যাটফর্ম হওয়া উচিৎ। সংসদের ভিতরে-বাইরে এরকম একটি প্ল্যাটফর্ম যদি গঠন করা যায় তাহলে তার ভাষায় সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা ও অগণতান্ত্রিক কর্মসূচিগুলো বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হতে পারে। এ জন্য মির্জা ফখরুলের সঙ্গে জিএম কাদেরের অন্তত দুটি বৈঠক হয়েছিলো বলে জানা গেছে। সংসদে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আরও সময়ের প্রয়োজন বলে মির্জা ফখরুল জিএম কাদেরকে জানিয়েছিলেন। তবে তিনি জিএম কাদেরের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছিলেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জিএম কাদের চেয়েছিলেন বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ঐক্যফ্রন্ট ও ১৪ দলের শরিকদের নিয়ে সংসদের ভিতরে এবং বাইরে একটি বিরোধী সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলবেন। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, যখন তিনি ১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেন তখন ১৪ দলের কেউ কেউ বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিগোচরে আনেন। তখনই জিএম কাদেরের বিপদের সূচনা হয়। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এ ব্যাপারে জিএম কাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তা স্বীকার করেন। তিনি এরশাদকে বলেন, ‘এভাবে দলের সংগঠন শক্তিশালী হবে না। গৃহপালিত বিরোধী দলের কোন মর্যাদা নেই। জাতীয় পার্টির ২২টি আসন রয়েছে। জাতীয় পার্টি যদি সত্যি সত্যি বিরোধী দলে থাকে তাহলে অন্য রকম বিরোধী দল হবে। বিএনপি নয়, জাতীয় পার্টিই প্রধান বিরোধী দল হিসেবে জনগণের কাছে আবেদন পাবে।’
একটি সূত্র বলছে, এরশাদের সবুজ সংকেত পেয়েই জিএম কাদের এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে এরশাদ অন্যসময়ের মতো আবারও পাল্টে যান। যার কারণে জিএম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যানের পদ খোয়াতে হয়েছে। সরকার চায় না জাতীয় পার্টি সরকারের বলয়ের বাইরে গিয়ে একটা অবস্থান নিয়ে সরকারকে চাপে ফেলুক। বিশেষ করে কিছু স্পর্শকাতর রাজনৈতিক বিষয়ে যেন জাতীয় পার্টি সংসদে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি না করে সেজন্য সরকার অত্যন্ত সচেতন। একারণেই জিএম কাদেরকে সরিয়ে দেয়ার পিছনে সরকারের একটি মহলের ইন্ধন রয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।