নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০১ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০১৯
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এখন হাইব্রিডের জয়জয়কার। হাইব্রিডদের জোয়ারে এখন সত্যিকারের আওয়ামী লীগাররা কোনঠাসা হয়ে পড়ছেন। এখন তৃনমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে হাইব্রিডদেরই বিজয় কেতন উড়ছে। হাইব্রিডরা কিভাবে আওয়ামী লীগে শক্তপোক্ত জায়গা করে নিলেন এ প্রশ্ন উঠেছে অনেকের মনেই। অনেকের জিজ্ঞাসা, হাইব্রিডরা কিভাবে আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত ত্যাগীদেরকে পরাস্ত করে কর্তৃত্ব নিজেদের করায়ত করলেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে দেখা যায় ১০ উপায়ে হাইব্রিডরা খাঁটি আওয়ামী লীগারদের পরাজিত করছেন। হাইব্রিড থেকে আওয়ামী লীগের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হওয়ার ১০টি সহজ উপায় হলো:
১. আপনার আওয়ামী লীগে যোগদান করতে হবে বড় রকমের উপঢৌকন দিয়ে। খুব জাকজমকের সঙ্গে দেখাতে হবে আপনি আর্থিকভাবে অত্যন্ত সামর্থ্যবান।
২. আপনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেই নতুন একটা আওয়ামী লীগ তৈরী করবেন। আপনি আগে যে দলে ছিলেন বা আওয়ামী লীগে যারা বিভিন্নভাবে অবহেলিত, বিক্ষিপ্ত বা প্রায় অবসরে আছেন তাদেরকে জড়ো করবেন। তাদের জন্য কিছু খরচপাতি করে একটা বিকল্প আওয়ামী লীগ দাড় করাবেন। ঐ আওয়ামী লীগের কাজ হবে শুধু আপনার গুণকীর্তন করা।
৩. স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আপনাকে সুসম্পর্ক রাখতেই হবে। কারণ স্থানীয় প্রশাসন আপনার উপর রিপোর্ট দিবে আপনি এলাকায় কতটা জনপ্রিয়। প্রশাসন যতক্ষন না বলবে আপনি এলাকায় জনপ্রিয়, ততক্ষণ আপনার শিকে কিছুই উঠবে না।
৪. শুধু স্থানীয় প্রশাসনের অনুগ্রহেই সবকিছু হবে না। কেন্দ্রীয় নেতাদের, বিশেষ করে যারা গুরুত্বপূর্ণ নেতা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। তাদেরকে আওয়ামী লীগে যোগদানের পরপরই নানা উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিতে হবে। তারা এসে যেন আপনার গুণকীর্তন করে বক্তব্য দেয় তার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. আপনি হাইব্রিড থেকে আওয়ামী লীগার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগকে কচুকাটা করার উদ্যোগ নিবেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগে যারা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিভিন্ন সময় পরীক্ষিত ও ত্যাগী তাদেরকে আপনি কোনঠাসা করার জন্য চেষ্টা করবেন।
৬. যদি আপনি স্থানীয় পরীক্ষিত আওয়ামী লীগারদের বৈধভাবে কোনঠাসা করতে না পারেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হামলাও করা যেতে পারে। মামলা হামলা করে তাঁদের ঘরে উঠিয়ে দেওয়া খুব সহজ কাজ হাইব্রিড আওয়ামী লীগারদের জন্য।
৭. আপনি আওয়ামী লীগে যোগদিয়েই কিছু উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করবেন যেমন মাদ্রাসা, স্কুল তৈরী করা। এই সমস্ত মাদ্রাসা স্কুল যদি কোন বিশেষ নামে নামাঙ্কিত হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই।
৮. আপনার শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ সংগঠনের পাল্টা সংগঠন করলেই হবে না। আপনাকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছা সেবক লীগের মধ্যেও একটা নতুন বলয় তৈরী করতে হবে। পারলে নিজেদের পছন্দের লোকদের দিয়ে আলাদা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ বা যুবলীগ গঠন করতে পারেন।
৯. হাইব্রিড থেকে আওয়ামী লীগার হতে হলে যেকোন মূল্যে, নিজের খরচে হলেও প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হতে হবে। এখন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হওয়া খুবই সহজ। ব্যবসায়ীদের একটা বিরাট বহর প্রায়ই প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়। হাইব্রিডরা অনেক বুদ্ধিমান, নিশ্চয়ই তাদের এটা ম্যানেজ করা কঠিন হবে না।
১০. এসব করেও যদি লাভ না হয় তাহলে আপনাকে ঢাকায় আসতে হবে এবং ঢাকায় যারা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক আছেন বা আওয়ামী লীগের যারা উচ্চপদে বা শীর্ষপদে আছেন তাদের সঙ্গে আপনার মেলামেশা বাড়াতে হবে। স্থানীয় পর্যায় যেন জানা যায় আপনি আওয়ামী লীগের উপরমহলের ঘনিষ্ঠ।
এসবেই আপনি হাইব্রিড থেকে একজন সাচ্চা আওয়ামী লীগারে পরিণত হবেন। আপনার এলাকার আওয়ামী লীগ আপনার কথায় উঠেবে এবং বসবে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।