নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৪ মার্চ, ২০১৯
টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু তৃতীয় মেয়াদের শুরুতেই রাজনীতিবিদদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে প্রশাসনের। প্রথমে এটা নীরব ছিলো, দিন যতই যাচ্ছে আমলাদের সঙ্গে রাজনীতিকদের বিরোধ প্রকাশ্য হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা এখন প্রকাশ্যে আমলাদের খরবদারি এবং কর্তৃত্বের সমালোচনা করছেন। সর্বশেষ আমলাতন্ত্রের কঠোর সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। আমলাদের তিনি ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ এর সঙ্গে তুলনা করেন। এর আগে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ আমলাতন্ত্রের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘নিরাপদ সড়কের জন্য প্রশাসনের ব্যর্থতার দায় আওয়ামী লীগ নেবে না।’ আমলাদের বিরুদ্ধে সবার আগে মুখ খুলেছিলেন শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জে এক সমাবেশে তিনি বলেছিলেন, ‘সরকারি অনেক কর্মকর্তা আজকাল রাজনীতি শেখায়।’ এরা মুখ খুলেছেন, কিন্তু অনেক ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় আমলাদের বাড়াবাড়ি এবং খবরদারিতে ক্ষুব্ধ।
৭ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হওয়ার পর থেকে সরকারের আমলাদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নতুন মন্ত্রিসভায় অধিকাংশই নতুন এবং আনকোরা মন্ত্রী হওয়ায় অনেক মন্ত্রণালয়েই আমলারা ছড়ি ঘোরাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি মন্ত্রণালয়ে সচিব তার মন্ত্রীকে শিখিয়েছেন কীভাবে কাজ করলে প্রধানমন্ত্রী সন্তুষ্ট থাকবেন। একাধিক সূত্র বলছে, সচিবদের মধ্যে একটি নিজস্ব নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুশাসনের ভিত্তিতে তারা কাজ করছেন। মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীদের ক্ষমতা খর্ব হয়েছে বলেও অনেকে মনে করেন।
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘আমলারা প্রশাসনের কাজ দেখভাল করুক আপত্তি নেই। কিন্তু রাজনীতির মধ্যে যদি তারা নাক গলায় তাহলে তো ভীষণ বিপদ।’ তিনি বলেন, ‘ইদানিং কিছু পদস্থ আমলা রাজনীতিবিদদের উপদেশ দেন, কী করতে হবে না হবে সে ব্যাপারে পরামর্শ দেন। এটা তাদের কাজ নয়।’ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, ‘প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্যেই সড়কে শৃঙ্খলা ফিরছে না। মাদক নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।’ আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, ‘এক শ্রেণীর আমলা এখন সরকারের নীতিনির্ধারক হয়ে গেছে। এই অতি উৎসাহীদের হাত থেকে সরকার এবং আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে।’
অবশ্য আমলাদের বিরুদ্ধে কিছু রাজনীতিবিদদের ঢালাও সমালোচনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রশাসনের সিনিয়র কিছু কর্মকর্তা। এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন যারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন তারা গত দশবছর ধরে এই সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। তাই সরকারের চাওয়া এবং অগ্রাধিকারগুলো তারা ভালো জানেন।’ অন্য একজন সচিব বলেছেন, ‘আমরা এই মাটিরই সন্তান। জনবিচ্ছিন্ন কিছু নই। তাই সরকারের ভালোভাবে চলার ব্যাপারে কিছু পরামর্শ আমরা দিতেই পারি।’ কোনো কোনো আমলা মনে করছেন, ‘কেউ কেউ মন্ত্রী হতে না পেরে আমলাদের উপর বেজায় চটেছেন। এজন্যই তারা এসব কথা বলছেন।’ তারা মনে করেন, মন্ত্রীদের সঙ্গে সচিবদের কোনো বিরোধ নেই বরং অধিকাংশ মন্ত্রণালয়ে ভালো টিমওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। তবে যে যাই বলুক, তৃতীয় মেয়াদে সরকার যে বেশিমাত্রায় আমলা নির্ভর হয়ে পড়েছে, তা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।