নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৪ মার্চ, ২০১৯
এরশাদ এখন জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা। এর আগের মেয়াদে তিনি ছিলেন মন্ত্রীর মর্যাদার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। তাঁর কথাই জাতীয় পার্টিতে শেষ কথা। কিন্তু তারপরও ‘সুখ’ নেই এরশাদের। সুযোগ পেলেই তিনি বলেন, ‘আমার হাত পা বাঁধা। আমি বন্দী। আমি কথা বলতে পারি না।’ কি কারণে এরশাদ ক্ষণে ক্ষণে একথা বলেন? কেনই বা তিনি ক্ষণে ক্ষণে রং বদলান? এরশাদের ঘনিষ্ঠরা বলেন ‘মঞ্জুর হত্যা মামলার জন্যই এরশাদ বন্দী।’ ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হন জিয়াউর রহমান। জিয়া হত্যায় অভিযুক্ত হন তৎকালীন চট্টগ্রামের জিওসি মেজর জেনারেল মঞ্জুর। জেনারেল মঞ্জুর ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়। জেনারেল মঞ্জুরকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে আসার পথে একদল সেনা কর্মকর্তার হাতে তিনি নিহত হন।
অনেকেই মনে করেন, জিয়া হত্যার মূল রহস্য আড়াল করতেই মঞ্জুরকে হত্যা করা হয়েছিল। এরশাদ তখন ছিলেন সেনাপ্রধান। ৮৪ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের একপর্যায়ে বিএনপি অভিযোগ করে যে, জিয়া হত্যায় এরশাদের হাত রয়েছে। জিয়া হত্যার প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতেই জেনারেল মঞ্জুরকে হত্যা করা হয় এরশাদের নির্দেশে। যদিও বরাবরই এরশাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। ৯১ এর নির্বাচনে জয়ী হয় বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি। বিএনপি ক্ষমতায় এসে মঞ্জুর হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত শুরু করে। তদন্তের প্রেক্ষিতে নতুন করে চালু হয় মঞ্জুর হত্যা মামলা। এই মামলার অন্যতম আসামি করা হয় হুসেইন মুহাম্মাদ এরশাদকে। এরপর ২৭ বছর ধরে এই মামলা চলছে। মামলার রায়ের তারিখও ঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু তারিখের দিন আবার মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বলা হয় মঞ্জুর হত্যা মামলাই এরশাদকে বশীকরণের চাবি। যখন যে দল ক্ষমতায় এসেছে, সেই দলই এরশাদকে ‘অনুগত’ এবং একান্ত বাধ্যগত রাখতে এই মামলা ব্যবহার করেছে। এরশাদ যখনই ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কিছু বলে বা একটু নড়াচড়া করে তখনই মঞ্জুর হত্যা মামলা সচল হয়। এরশাদ অমনি সুবোধ বালক হয়ে সরকারের গুণকীর্তন করতে থাকেন। সব দলকেই সমর্থনের শর্ত হিসেবে এরশাদ এই মামলা থেকে পরিত্রাণ চান। তাকে আশ্বাসও দেওয়া হয়। কিন্তু ক্ষমতায় যে দলই যায় সেই দলই এরশাদের জীবনকাঠি হাতছাড়া করেন না।
এই মামলার একজন কৌশুলী বলেন, জেনারেল মঞ্জুর যখন গ্রেপ্তার হন এবং তাকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছিলো, তখন এরশাদ সেনাপ্রধান ছিলেন। তাই তিনি দায় এড়াতে পারেন না। এরশাদ গত ২৫ বছর ধরে এই মামলা থেকে মুক্তির জন্য হাসফাঁস করছেন। এখন এই মামলা দিয়েই এরশাদকে রওশন কাবু করেছেন বলে জাতীয় পার্টিতে গুঞ্জন। জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্র বলেছেন, রওশন কথা দিয়েছেন যে জিএম কাদেরকে হটিয়ে তাকে দল চালাতে দিলে তিনি এরশাদকে মঞ্জুর হত্যা মামলার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করবেন। জানা যায়, রওশন এটাও বলেছেন, জিএম কাদের কো-চেয়ার এবং উপনেতা থাকলে মঞ্জুর হত্যা মামলা চলবে। এ কারণেই এরশাদ তড়িঘড়ি করে রাতের আধারে দলে ক্যু করেছেন বলে জাপার একাধিক নেতা মনে করেন। এরশাদকে ‘মুক্ত’ করার শর্তেই রওশন জাতীয় পার্টির চাবি পেয়েছেন। রওশন কি পারবেন এরশাদকে মুক্ত করতে?
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
প্রায় ১০ হাজারের বেশি অবৈধভাবে বসবাস করা বাঙালিকে যুক্তরাজ্য ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের সেখানে থাকার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের দৈনিক টেলিগ্রাফ এবং স্ট্যান্ডার্ডের খবরে বলা হয়েছে, ১১ হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী, ভ্রমণ কিংবা অন্য কোন কাজের পেশায় যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে তারা বসবাসের জন্য রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। বাকি ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আবেদন খারিজ হওয়া এসব বাংলাদেশীকে এখন বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন’ চুক্তির আওতায় এসব বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানানো গেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ‘ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন’ চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই চুক্তি অনুযায়ী যারা যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে বসবাস করবেন তাদেরকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, তারেককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কৌশল হিসেবেই যুক্তরাজ্যের সাথে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। এই চুক্তির আওতায় শুধুমাত্র অবৈধ ব্যক্তিদেরকেই দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে না, বাংলাদেশে দন্ডিত, অপরাধী এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদেশে বসে অপপ্রচারকারীদেরও ফিরিয়ে নানার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই চুক্তিতে বলা হয়েছে, যারা বাংলাদেশে অপরাধ করে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে যাবে তাদেরকে যুক্তরাজ্য ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করবে এবং তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল করার জন্য প্রক্রিয়া করবে। সেই বিবেচনায় তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের একটি অন্যতম রাজনৈতিক কৌশল হল, তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে দন্ড কার্যকর করা। ইতোমধ্যে তারেক জিয়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেননি এবং আপিল করার সময়সীমাও পেরিয়ে গেছে। এছাড়াও অর্থপাচারের একটি মামলায় হাইকোর্ট তাকে ৭ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করেছেন। তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ সরকার নানা রকম দেন দরবার করে আসছেন। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে তারেক জিয়াকে দেশে আনা সম্ভব হয়নি।
তারেক এখন যুক্তরাজ্যে আছে রাজনৈতিক আশ্রয়ে এবং রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করা ব্যক্তিকে যে সমস্ত শর্ত এবং নিয়ম মানতে হয় তা মানছেন না বলেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একাধিকবার অধিকার করা হয়েছে। যেমন- লন্ডনে বসে তারেক বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্র এবং সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম বিষেদাগার করছেন, সরকার পতনের জন্য ষড়যন্ত্র করছেন।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর অন্তত ৩টি সফরে তারেক জিয়া লন্ডনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলেন এবং তার নির্দেশে সেখানে সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। বাংলাদেশ দূতাবাসেও তারেক জিয়ার নির্দেশে হামলা করা হয়েছিল এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ বলে বাংলাদেশ সরকার মনে করে। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের দূতাবাস তারেক জিয়াকে ফিরিয়ে আনার জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছে এবং কূটনৈতিকরা মনে করছেন, তারেক জিয়াকে ফিরিয়ে আনার স্বার্থেই ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।
তবে কোন কোন মহল বলছে, তারেক জিয়ার বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাকে যেহেতু যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হয়েছে এবং তারেক জিয়া সেই রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের আবেদন সংক্রান্ত চিঠিতে উল্লেখ করেছেন যে, বাংলাদেশে এলে তার জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে সেকারণেই তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে পাঠানোর বিষয়টি এত দ্রুত নাও হতে পারে। তবে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে এ ব্যাপারে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখবে বলেই জানা গেছে।
তারেক জিয়া বিএনপি যুক্তরাজ্য ফাস্ট ট্র্যাক চুক্তি
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।
তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতার কারণেই আজ দেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর কাছে আবেদন করে বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন, কিন্তু বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল বাকশালকে গালিতে পরিণত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমও লিখছে ভারত বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে বিএনপি। ভারত প্রশ্নে এখন মধ্যপন্থা নিতে চায় বিএনপি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই, সংসদ এবং সংসদের বাইরেও সরকারের বিরোধিতা জারি আছে। সরকার কোনো দল বা গোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে না। গণতন্ত্রের বিচারে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রায় ১০ হাজারের বেশি অবৈধভাবে বসবাস করা বাঙালিকে যুক্তরাজ্য ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের সেখানে থাকার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের দৈনিক টেলিগ্রাফ এবং স্ট্যান্ডার্ডের খবরে বলা হয়েছে, ১১ হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী, ভ্রমণ কিংবা অন্য কোন কাজের পেশায় যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে তারা বসবাসের জন্য রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। তবে তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। বাকি ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আবেদন খারিজ হওয়া এসব বাংলাদেশীকে এখন বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন’ চুক্তির আওতায় এসব বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানানো গেছে।
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন। শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।