নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৪ মার্চ, ২০১৯
আবার ভারতবিরোধিতায় ফিরছে বিএনপি। গত এক যুগ ধরে ভারতকে সমীহ করে চলার নীতি ভুল ছিলো বলে মনে করছে দলটির নীতিনির্ধারকরা। এজন্যই ভারতের কাছে দলটি গুরুত্ব হারিয়েছে বলে মনে করেন দলের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। তারা ভারতের নির্বাচনকে সামনে রেখে তীব্র ভারতবিরোধী অবস্থান গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপিকে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র মতে, বিএনপির মধ্যে বিদ্যমান হতাশা কাটিয়ে কীভাবে দলকে সংগঠিত করা যায় সে ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে কয়েকজন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবির মতামত চাওয়া হয়েছিলো। অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, দৈনিক দিনকালের সম্পাদক ড. রেজওয়ান সিদ্দিকী এবং প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ। এরা বিএনপিকে ঢেলে সাজানো, তৃণমূলের কাছে পরামর্শ গ্রহণ, শীর্ষনেতাদের সারাদেশ সফরসহ একাধিক বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। তবে এদের প্রত্যেকের পরামর্শে বিএনপিকে ‘দেশপ্রেমিক’ এবং ‘স্বাধীনতার রক্ষক’ সংগঠনের পরিচয় ফিরিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। এরা সবাই মনে করেন, ভারতের তোষণ নীতি বিএনপির ভোট ব্যাংক নষ্ট করবে এবং বিএনপিকে বি টিমে পরিণত করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক উপাচার্য তার পরামর্শে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে তীব্র ভারতবিরোধী সেন্টিমেন্ট আছে। এই মানুষগুলোই বিএনপির মূল শক্তি। অথচ গত এক দশক ধরে ‘ভারতের আগ্রাসনের’ বিরোধিতা করতে বিএনপি কুণ্ঠিত। ফলে এই জনগণ বিভ্রান্ত।’ তিনি মনে করেন, ‘আওয়ামী লীগই ভারতের একমাত্র বন্ধু। ভারত বাংলাদেশে তার ‘আধিপত্য’ রাখতে পারবে শুধু আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই। তাই বিএনপিকে কেন তারা আস্থায় নেবে?’
বিএনপির পরামর্শকদের একজন সিনিয়র সংবাদকর্মী বলেছেন, ‘আগে ভারত বিএনপিকে ভয় পেতো। মনে করতো, বিএনপির সঙ্গে সুসম্পর্ক না রাখলে বাংলাদেশে ভারত বিরোধিতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। ভারত যে কোন দেশে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ভয় পায়। কিন্তু এখন বিএনপি নেতারা ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। এটা বিএনপির বিচ্যুতি। বিএনপিকে জনগণের শক্তিতে বলীয়ান হতে হবে। জনগণের কথা বলতে হবে। আর সেটা যদি করতে হয় তাহলে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ ভারতে আগ্রাসী নীতির সমালোচনা করতেই হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির মধ্যেও এখন ভারতবিরোধী মনোভাব চাঙ্গা হচ্ছে। বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, ভারতের প্রত্যক্ষ সমর্থনেই আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায়। তবে একাধিক কূটনৈতিক সূত্রের খবরে জানা গেছে, মধ্য এপ্রিল থেকে অনুষ্ঠেয় ভারতের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে বিএনপি ভারতবিরোধী প্রকাশ্য অবস্থান নেবে। এরকম অবস্থানের লক্ষ্য দুটি। প্রথমত; পাকিস্তান চায় নির্বাচনকে ঘিরে ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলো সক্রিয় হোক। সেজন্য বাংলাদেশে যদি ভারতবিরোধী মনোভাব চাঙ্গা হয় তাহলে সেটি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মনোবল বাড়াবে। দ্বিতীয়ত; ভারতে আগামী নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসুক তাদের একটা বার্তা দেয়া যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি একটা ফ্যাক্টর। ভারত বিরোধীদের অবজ্ঞা করে বাংলাদেশে ভারত সুবিধা করতে পারবে না।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।