নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১০ এপ্রিল, ২০১৯
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকতে পারবেন না মন্ত্রীরা। আওয়ামী লীগের আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য দলের কাউন্সিলে এরকম সিদ্ধান্ত নেয়া হতে চলেছে। দল এবং সরকারকে আলাদা করতে আওয়ামী লীগ এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে। দলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ছাড়া অন্যকোন কেন্দ্রীয় নেতা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভূক্ত থাকলে তাদেরকে হয় মন্ত্রীত্ব না হলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গ্রহণ করতে হবে। আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির ১১ জন নেতা মন্ত্রিসভায় রয়েছেন। এরা হলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ডা: দীপু মনি, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক টিপু মুনশি, আইন বিষয়ক সম্পাদক শ. ম রেজাউল করিম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, খালেদা মাহমুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের মধ্যে দুজন; নুরুল কবির হুমায়ূন এবং বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান। অক্টোবরে কাউন্সিলের সময় যদি তাঁরা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে তাদের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছেন। তবে এখানে উপদেষ্টা মণ্ডলী অন্তর্ভূক্ত হবেন না। কারণ উপদেষ্টারা নির্বাহী দায়িত্ব পালন করেন না, এটা আলংকারিক পদ।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসেছে। অনেকেই এমপি কিংবা মন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন পান না। ফলে তাদেরকে দলে জায়গা দিতে হবে এবং তারা যেন দলের জন্য কাজ করতে পারে। অন্যদিকে যারা মন্ত্রী হন তারা মন্ত্রণালয় কিংবা সরকারি কর্মকাণ্ডে তাদের ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে দলের জন্য তারা সময় দিতে পারেন না।
উল্লেখ্য যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দল এবং সরকার আলাদা করার প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এজন্যই তিনি শুধুমাত্র দল চালানোর জন্য মন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলেন এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন, যে সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে বিবেচিত হবে। কিন্তু ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট এর পর আওয়ামী লীগ যখন পুনর্গঠিত হয় এবং ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে তখন বাস্তবতা বিবেচনা করে দল এবং সরকারকে আলাদা করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এখন টানা তিন মেয়াদে যেহেতু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে এবং তিনবারই আওয়ামী লীগ দুই তৃতীয়াংশের বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করেছে কাজেই এখন দল এবং সরকারকে আলাদা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতারা মনে করছেন। দলের সভাপতি দলের বিভিন্ন ফোরামে স্পষ্ট বলেছেন যে, সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। দলের নেতারা যারা মন্ত্রী হয়েছেন তারা সংগঠনে অনিবার্যভাবেই সময় দিতে পারে না। কাজেই দলকে শক্তিশালী করার জন্য ফুল টাইম নেতৃত্বের প্রয়োজন। তবে দলের সাধারণ সম্পাদক ফুল টাইম হবেন না তিনি মন্ত্রী হবেন এটা নিয়ে এখন পর্যন্ত অনিশ্চয়তা রয়েছে। একটি সূত্র বলছে যে, শেষ পর্যন্ত যদি ওবায়দুল কাদের পুরোপুরি সুস্থ না হন তাহলে পরে হয়তো দলে দীর্ঘদিন পর একটি পূর্ণকালীন সাধারণ সম্পাদক দেয়া হতে পারে। তবে সাধারণ সম্পাদক বাদ দিয়ে অন্য পদগুলোর ক্ষেত্রে এবার কঠোরভাবে যে নীতিটি অনুসরণ করা হবে তা হলো যদি তিনি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী হন তাহলে তিনি দলের কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে বাদ পড়বেন। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের তৃনমূলে এবং বিভিন্ন পর্যায়ে দক্ষ মেধাবী এবং বিচক্ষণ নেতৃত্ব আছে যারা আসলে জায়গা পাচ্ছেন না। যার ফলে নেতৃত্বের বিকাশ হচ্ছে না। এ কারণেই আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা এরকম সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এসআর/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।