নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ১৯ এপ্রিল, ২০১৯
আপনার পাশের ফ্লাটে একজন ‘সিঙ্গেল মাদার’ থাকে না? তাকে একদিন দেখা দরকার। যে নারীর গায়ে এই খেতাবটি লাগানো, তাকে নিয়ে সমাজ এমনই কৌতুহলী, সমাজের অনেক প্রশ্ন আছে। কিন্তু আধুনিক যুগে এসে পরিস্থিতি পরিস্কার হলেও বিভিন্ন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি আর সমস্যার সম্মুখীন হতে একা মায়েদের। এর মধ্যে কেউ আবার নতুন করে যদি সম্পর্কে জড়িয়ে নতুন সংসারের সিদ্ধান্ত নেয়, তাকে তো আরও বিব্রত হতে হয়।
স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়া, স্বামীর মৃত্যু বা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে অনেক মা একাই সন্তান বড় করার সাহসী পদক্ষেপ নেন। কিছু বছর আগেও সমাজে সিঙ্গেল মাদারদের সহজভাবে নেওয়া হতো না। এখন অবশ্য দিন বদলেছে। স্বামীর মৃত্যু বা বিচ্ছেদের পর অনেক মা এখন একা সন্তানের দায়িত্ব নেন। কখনো অসুখী দাম্পত্য থেকে বাঁচতে নিজেকে ও সন্তানকে নিয়ে বেরিয়ে নতুন একটি জীবনের স্বপ্ন দেখে।
কিন্তু পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, ‘সিঙ্গেল মাদার’-দের এই সমাজে পথচলা মোটেও সহজ নয়। প্রতি পদক্ষেপে কতোই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয় তাদের। সবচেয়ে সমস্যা হলো নতুন করে অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো, সেটা আমাদের সমাজে বড় একটা ট্যাবু। নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হলেও পরিবার বা সমাজ অনেক ক্ষেত্রেই এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দেয়না। তাছাড়া একা মায়েদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়, মানসিক অবস্থাও পাল্টে গেছে। তাই নতুন সম্পর্কে জড়ানোর আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
যাকে আবার জীবনসঙ্গী করতে চাচ্ছেন আগে তাকে যাচাই করুন। দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কে তার বিশ্বাস কতটুকু ভেবে নিন। তিনি শেষ কবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্কে জড়িয়েছিল এবং সম্পর্কটা কতদিন টিকেছিল সেটা নিয়েও ভাবুন। বিভিন্ন মতবিরোধকে সে কিভাবে সমাধান করে, রাগ সামলাতে দক্ষতা কেমন, সম্পর্ক বিষয়ক সমস্যাগুলো কীভাবে সমাধান করে কিনা সেটা আপনাকে পর্যবেক্ষণ করে নিতে হবে।
সাংসারিক ও অর্থনৈতিক কর্তব্যগুলো সম্পর্কে তার অভিমত কী, সন্তানাদি নিয়ে তার চিন্তাধারা কেমন? সন্তানের প্রতি সে কতটা ধৈর্যশীল? সে কি নিজের সন্তান নিতে চায়? আপনার সন্তানকে সহজভাবে মেনে নিতে এবং তাদের বেড়ে উঠতে সাহায্য করবে কি না- এগুলো বিষয় অবশ্যই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে।
অবিবাহিতদের প্রেমের থেকে তালাকপ্রাপ্ত বা বিধবা মায়ের প্রেমের বিষয়টি জটিল। এসময় নতুন করে সংসারের পরিকল্পনা দোষের নয়। তবে সঙ্গী পছন্দের ক্ষেত্রে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সতর্কতা অঅর যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার প্রস্তুতি থাকতে হবে। কারণ পুরনো ভুলের পুনরাবৃত্তি আশাপ্রদ নয়। আর নিজের পাশাপাশি সন্তানের ভবিষ্যৎও জড়িয়ে এর সঙ্গে। তাই যেকোনো সম্পর্কে জড়ানোর আগে নিজের সঙ্গেই কিছুটা বোঝাপড়া হওয়া জরুরি। ভবিষ্যতে যার সঙ্গে নিজেকে জড়াতে চাইছেন, তার সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়ার পাশাপাশি কিছু প্রশ্ন করুন নিজেকেই। সময় নিন পর্যাপ্ত।
তার প্রয়োজনীয়তা
এখন অনেক নারী একাই ভালো আছেন, তেমনই থাকতে চান। আর একবার তালাক হলে অনুভূতি কঠিন হয়, নতুন করে সংসার শুরুর অনুভূতি মন থেকে হারিয়ে যাবে তাও নয়। এক্ষেত্রে নিজেকে সময় দিয়ে প্রয়োজনগুলো বুঝতে হবে। নিজেকে একাকী জীবনযাপনের জন্য সমর্থ বলে মনে হলে নতুন সম্পর্ককে আর না করাই ভালো। তাই নতুন সম্পর্কে যাওয়ার আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন যে আপনার আর সন্তানের জীবনে তৃতীয় ব্যক্তির প্রয়োজন কতটুকু।
নিজের চাওয়া সম্পর্কে বুঝুন
সঙ্গী বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে সঙ্গীর কাছে আপনার প্রত্যাশার বিষয়ে স্পষ্টভাষী হওয়া জরুরি। সংসারের দায়িত্ব নেওয়া বা সঙ্গ দেওয়া- যে কারণই হোক নতুন সঙ্গীকে আপনার ইচ্ছা জানাতে হবে। এতে ভবিষ্যতে কষ্ট পাওয়া ও বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে বাঁচবেন। তাই সম্পর্কের আগে এসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করুন।
সঙ্গী যেমন হলে ভালো হয়
জীবনসঙ্গীর মধ্যেকার গুণাগুণ একেকজনের কাছে একেকরকম হয়। একা থাকা অবস্থায় মানসিকতা নরম থাকে বলে অন্যের ভালো কথায় গলে যাওয়ার বিষয়টি কাজ করে। কিন্তু আপনাকে অবশ্যই আত্মসম্মান ধরে রাখতে হবে আপনার সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে। অন্যের কথায় প্ররোচিত না হয়ে সব বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
জীবনের এমন পর্যায়ে আপনাকে আর্থিক এবং মানসিক উভয় দিক থেকে স্থিতিশীল একজন সঙ্গী বেছে নিতে হবে। এমন একজন যে আপনাকে সম্মান করবে এবং আপনার পরিস্থিতি বুঝে পাশে থাকবে। যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কে বিশ্বাসী। কারণ দ্বিতীয় এই অধ্যায়ে এসে সম্পর্কের স্থায়িত্ব বেশ জরুরি। আর্থিক নিশ্চয়তার পাশাপাশি আপনার সঙ্গে মানসিকতার মিল আছে কিনা, সেই দিকটি বিচার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সব বুঝে শুনে তবেই সামনে এগোতে হবে।
সন্তানকে মানিয়ে নিতে সময় দিন
আপনার নতুন সঙ্গী আপনার সন্তানের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের ক্ষেত্রে এ পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে সময় প্রয়োজন। কারণ তাদের মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বড়দের মতো না। অনেক সময় মেনে নিতেও পারে না যে তাদের মায়ের জীবনে অন্যকেউ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। আর আগে ডিভোর্স হলে ওই বিষয়গুলো বোঝার মতো মানসিক অবস্থা ও বয়স সন্তানের হলে দুটো মিলিয়ে তার গভীর প্রভাব পড়ে যায় মনে। তাই পরবর্তীতে মায়ের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হতে পারে।
এগুলো মাথায় রাখুন। সন্তান বড় হলে তার সঙ্গে আলাপ করুন। বোঝার চেষ্টা করুন সন্তান নতুন ব্যক্তিকে তার জীবনে সহজভাবে স্থান দিতে পারছে কিনা।
মনে রাখবেন, সমাজ, সন্তান আর পারিবারিক দিক বিবেচনা করে তারপর নতুন সম্পর্ক। পাছে লোকে কি বলে তা ভেবে গুটিয়ে থাকবেন না। নতুন সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে তাড়াহুড়া নয়। সবদিক ভেবে তবেই সিদ্ধান্ত। নিতে হবে। নতুন জীবনে যাওয়ার আগে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া একান্ত জরুরি।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ
মন্তব্য করুন
মানুষের মন যেমন আনন্দিত হয়, তেমনি মন খারাপও হয়। কিন্তু মন খারাপ বা বিষণ্নতাভাব যদি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে তখন মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে নজর দিতে হবে। এবার হাতের স্মার্টফোনে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কিছু অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে মন থাকবে চাঙা ও সুস্থ।
জাতিসংঘের ২০২২ সালের একটি প্রতিবেদনে হয়, বিশ্বজুড়ে প্রায় ১শ কোটি মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া ২০২৩ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের অর্ধেক মানুষ কোনো না কোনো মানসিক রোগে ভুগছে। এজন্য মানসিক স্বাস্থ্য সংকটকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া যেমন জরুরি, তেমনি হাতের স্মার্টফোনের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে খুব সহজেই মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নও নেয়া সম্ভব।
গুগল
প্লে কিংবা অ্যাপ স্টোরে মানসিক স্বাস্থ্যের নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক কিছু অ্যাপ রয়েছে।
যেমন: সিজোফ্রেনিয়া, উদ্বেগ, বিষণ্নতা প্রভৃতি। এসব মেন্টাল হেলথ
অ্যাপের মাধ্যমে মানসিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা ও তা
দূর করার বিভিন্ন পদ্ধতি
অনুশীলন করা যায়।
মানসিক
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবচাইতে জনপ্রিয় অ্যাপ হলো ‘ডেলিও’ নামের
অ্যাপটি। এই অ্যাপ ব্যবহারকারীর
কাছ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন
বিষয়ের ওপর অনেক তথ্য
গ্রহণ করে থাকে। সেখান
থেকে কারো প্রতিদিনের মন-মানসিকতার অবস্থা, ‘মুড সুইং’, মানসিক
স্বাস্থ্য সংকটের কারণ খুঁজে বের
করাসহ বিভিন্ন রকম তথ্য-উপাত্ত
তৈরি করে। এসব বিষয়ের
ওপর বিবেচনা করে, পরবর্তীতে এই
অ্যাপগুলোর পরামর্শে নির্দিষ্ট জীবনযাপনের পদ্ধতি অনুসরণ করলে মানসিকভাবে অনেকটাই
সুস্থ থাকা যায়।
অন্যদিকে,
হেডস্পেস অ্যাপ মূলত বেশি ব্যবহার
করা হয় তাৎক্ষণিক মানসিক
সংকট দূর করার জন্য।
যদি কেউ তার চিন্তা-ভাবনা কিংবা আচরণের অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন দেখতে
পান, তাহলে এই অ্যাপটি তার
অসাধারণ সঙ্গী হিসেবে সহায়তা করবে। অনেক বেশি বিষাদ,
দুশ্চিন্তা কিংবা সম্পর্কের টানা-পোড়েনের মধ্যে
থাকলেও অনেকে এই অ্যাপ ব্যবহারের
পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তবে
পেশাদার মনোবিদের বিকল্প হিসেবে এই অ্যাপগুলোকে ব্যবহার
না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিক পর্যায়ের মানসিক সমস্যায় এই অ্যাপগুলো ব্যবহার
করা যেতে পারে, তবে
কারও অবস্থা যদি মাত্রা ছাড়িয়ে
যায়, তাহলে অ্যাপের ওপর নির্ভর না
করে, অবশ্যই নিবন্ধিত মনোচিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
মন্তব্য করুন
মানুষের মন ভালো থাকলে যেমন বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা আসে, ঠিক তেমনই
মন খারাপের প্রভাব পড়ে নিত্যকাজের ওপর। মন খারাপ থেকে সৃষ্টি হয় উদ্বেগ যা পৌঁছাতে
পারে ডিপ্রেশনেও।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা আমাদের মানসিক চাপ তৈরি
করে। অল্পকিছু চিন্তা দিয়ে তা শুরু হয়, এক পর্যায়ে চলে যায় বহুদূর। তবে এসব অতিরিক্ত
চিন্তা দূর করে মনকে শান্ত করার কিছু প্রাচীন জাপানি কৌশল রয়েছে। সেগুলো মানলে পাবেন
অতিরিক্ত চিন্তা থেকে মুক্তি।
শিরিন-ইয়োকু
মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে প্রাকৃতিক জগতের শান্ত পরিবেশে নিজেকে নিয়ে যান। ‘শিরিন-ইয়োকু’
বা ‘ফরেস্ট বাথিং’ হল আমাদের ডিজিটাল জটিল অংক থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির সতেজ শ্বাস গ্রহণ।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সবুজের মধ্যে সময় কাটালে স্ট্রেস হরমোন কমে যায়। ফলে
মন শান্ত হয় এবং শান্ত চিন্তার পরিবেশ তৈরি করে। তাই অতিরিক্ত চিন্তা আসলে পার্কে হাঁটাহাঁটি
করুন বা তাজা বাতাসে শ্বাস নিন। দেখবেন ঝরঝরে পাতাগুলো আপনার মনে প্রশান্তি এনে দেবে।
শোগানাই
‘শোগানাই’ ধারণাটি বাংলায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ‘এটি সাহায্য করবে না’। যার সহজ অর্থ
আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যা রয়েছে, তার একটি সচেতন গ্রহণযোগ্যতা। যখন আমরা মেনে
নিতে পারি, অতিরিক্ত চিন্তা অতীতের ঘটনাগুলোকে পরিবর্তন করবে না বা ভবিষ্যতের ফলাফলগুলোকেও
নিয়ন্ত্রণ করবে না, তখন মানসিক দৃঢ়তা শিথিল হয়ে যায়। ‘যদি এমন হতো’ বাদ দিয়ে আমরা
যখন ভাববো যা হয়ে গেছে তা আর ফিরবে না, তখন অতিরিক্ত চিন্তাও আর আসবে না।
গামন
‘গামন’ হল, ‘সহনশীলতা’ বা ‘অধ্যবসায়’। এটি অতিরিক্ত চিন্তাভাবনাকে দূর করে দেয়। সহনশীলতা
মানুষকে পরিস্থিতির আলোকে মানিয়ে নিয়ে সহায়তা করে। তাই নিজের মধ্যে সহনশীলতা কম থাকলে
তা বাড়িয়ে ফেলুন খুব দ্রুত। তখন অল্পতেই অতিরিক্ত চিন্তা থেকে পাবেন মুক্তি। আর চিন্তামুক্ত
হয়ে কাজে মন দিলে সফলতা আসবে অতি দ্রুত।
মন্তব্য করুন
সাধারণত ঘুমের ক্ষেত্রে অনেকেরই আলাদা চাহিদা থাকে, তবে দীর্ঘ সময়
ধরে ঘুমানো মাঝে মাঝে শরীরের ভেতরের সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করতে পারে। নিয়মিত চেয়ে
অনেক বেশি ঘুমানোর সময় দেখে অতিরিক্ত ঘুমানোকে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে
প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি রাতে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আপনি কীভাবে বুঝবেন
যে আপনি যথেষ্ট বেশি ঘুমাচ্ছেন?
২০১৪ সমীক্ষা অনুসারে, ঘুম অসংখ্য শারীরিক এবং মনস্তাত্ত্বিক ক্রিয়াকলাপে
একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানসম্পন্ন ঘুমকে সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং বেঁচে
থাকার জন্য অপরিহার্য বলে মনে করা হয়। অতিরিক্ত ঘুমকে সাধারণত প্রতি রাতে নয় ঘণ্টার
বেশি ঘুমানো হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। তবে ব্যক্তিভেদে ঘুমের চাহিদা পরিবর্তিত হতে
পারে, তাই আপনার সাধারণ ঘুমের ধরণ এবং ঘুম থেকে ওঠার পরে আপনি কেমন অনুভব করেন তা বিবেচনা
করা গুরুত্বপূর্ণ।
ঘুমের ধরন ব্যক্তিভেদে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয় এবং বয়স, জেনেটিক্স,
জীবনধারা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের মতো কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়। যদিও প্রাপ্তবয়স্কদের
জন্য ঘুমের প্রস্তাবিত পরিমাণ সাধারণত প্রতি রাতে ৭-৯ ঘণ্টা, তবে কারও কারও ক্ষেত্রে
স্বাভাবিকভাবেই কম বা বেশি প্রয়োজন হতে পারে।
স্লিপ ফাউন্ডেশনের মতে, প্রতি রাতে প্রয়োজনীয় ঘুমের পরিমাণ বিভিন্ন
কারণের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়, যেমন দিনের অভ্যাস, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং ঘুমের
ধরন। যদিও প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে অনেকেরই ছয় ঘণ্টা ঘুমালেই পর্যাপ্ত হতে পারে
তবে অন্যরা, যেমন ক্রীড়াবিদদের অতিরিক্ত সময় ঘুমানো প্রয়োজন হতে পারে। মাঝে মাঝে,
কঠোর কার্যকলাপ বা ভ্রমণের মতো পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘুমের প্রয়োজন
হতে পারে।
অত্যধিক ঘুম বা হাইপারসোমনিয়া হলো মানুষের জন্য স্বাভাবিকের তুলনায়
বেশি ঘুমানো। অতিরিক্ত ঘুমের ফলে কিছু লক্ষণ শরীরে ফুটে ওঠে। তার মধ্যে রয়েছে ক্রমাগত
ক্লান্তি, মাথাব্যথা এবং সকালে ঘুম থেকে উঠতে অসুবিধা। হাইপারসোমনিয়া, নারকোলেপসি
বা স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো অবস্থার কারণে ঘুমের সময় বর্ধিত হতে পারে। অতিরিক্ত ঘুমের
ফলে মাঝে মাঝে বিষণ্ণতা এবং মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আবার মাঝে মাঝে দীর্ঘ সময় ঘুমানো উদ্বেগের কারণ নাও হতে পারে, তবে
ক্রমাগত অতিরিক্ত ঘুম শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
যার মধ্যে স্থূলতা, ডায়াবেটিস, বিষণ্ণতা এবং দুর্বল স্মৃতিশক্তি ও ইমিউন ফাংশনের ঝুঁকি
রয়েছে।
এমনকি ঘুমের সময়কে প্রভাবিত করতে পারে বয়স, জীবনযাত্রার অভ্যাস,
ভেতরগত স্বাস্থ্যের অবস্থা, ওষুধ, স্ট্রেস লেভেল এবং শব্দ ও আলোর এক্সপোজারের মতো পরিবেশগত
কারণে। ঘুমের গুণমান উন্নত করতে নিয়মিত ঘুম থেকে ওঠার সময়সূচী সেট করুন, ঘুমানোর
সময় আরামদায়ক রুটিন তৈরি করুন এবং ঘুমের পরিবেশ তৈরি করুন। বিছানায় যাওয়ার আগে
আপনার ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার এড়ানোর চেষ্টা করুন।
অতিরিক্ত ঘুম স্বাস্থ স্লিপ ফাউন্ডেশন
মন্তব্য করুন
রিমঝিম বৃষ্টি কমবেশি সবার ভালো লাগলেও কাজ বাড়িয়ে দেয় গৃহিণীর। কেননা বৃষ্টির সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ঘরের পরিবেশ হয়ে ওঠে স্যাঁতসেঁতে। তাই বৃষ্টির দিনে ঘরের জন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি যতে্নর। কয়েকদিন একটানা তাপদাহের পর শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তবে বৃষ্টিতে আনন্দের পাশাপাশি ভোগান্তিও কম নয়। অতি আর্দ্রতায় ঘরের ইন্টেরিয়র-এক্সটেরিয়রের ক্ষতি, মশা, ঘরে মোল্ড পড়া, পোকামাকড়সহ বিভিন্ন সমস্যা লেগেই থাকে। তাই এ সময়ে ঘরের জন্য দরকার বাড়টি যত্ন। বর্ষায় অন্দরের পরিবেশ ঠিক রাখার টিপস চলুন জেনে নেয়া যাক……………….
১. বর্ষা শুরুর আগে অথবা একেবারে দরজা, জানালা বা গ্রিল তৈরির শুরুতেই টিনের দরজা বা জানালায় কোটিং রং ব্যবহার করা উচিত।
২. কোনো কারণে দেয়ালে ফাটল ধরলে দেয়াল ড্যাম হয়ে যেতে পারে। তাই এগুলো পরীক্ষা করে ফাটল ঠিক করতে হবে। ভালো হয় দেয়ালে ওয়েদার প্রুফ পেইন্ট ব্যবহার করলে।
৩. বর্ষায় অনেক সময় কাঠের আলমারিতে ফাঙ্গাস পড়ে। আবার দেখা যায় আলমারি পেছনের বোর্ড ফুলে গিয়ে কাঠ বেঁকে যায়। তাই বৃষ্টির দিনে আসবাবপত্র দেয়াল থেকে একটু দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া সব ক্ষেত্রে জীবাণুনাশক ব্যবহার করা ভালো।
৪. বারান্দায় রাখা ফুলের টবগুলো সঠিক জায়গায় রাখতে হবে। অনেক সময় বারান্দায় বৃষ্টির ছাটে পানি জমে কাদার সৃষ্টি হয়। তাই ভালো ড্রেনেজ ব্যবস্থা রাখতে হবে। টবে পানি জমে মশা এবং পোকার আক্রমণ হতে পারে। আবার প্রচণ্ড বাতাসে বারান্দায় ঝুলে থাকা বা ছাদের রেলিংয়ে রাখা টবগুলো ভেঙে কিংবা ওপর থেকে পড়ে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই টবগুলোকে এমনভাবে রাখতে হবে, যাতে আলো-বাতাস নিশ্চিত করার পাশাপাশি দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
৫.বর্ষায় কার্পেট ব্যবহার না করাই ভালো বরং এগুলো প্লাস্টিকে মুড়িয়ে তুলে রাখুন শুষ্ক কোনো জায়গায়।
৬. প্রতিদিন মুছে পরিষ্কার রাখতে হবে লেদারের সোফা। একইভাবে মাঝে মাঝে পরিষ্কার করতে হবে লেদারের অন্যসব আসবাবও।
মন্তব্য করুন
বিচ্ছেদ মানেই অসহনীয় এক পৃথিবী, বিচ্ছেদ মানেই ‘জীবনের শেষ’ এ
রকম মনে করে না মৌরিতানিয়ার নারীরা। বিচ্ছেদের পর ওই নারীর সৌজন্যে বিশেষ অনুষ্ঠানের
আয়োজন করে তার পরিবার। স্বামীর ‘যন্ত্রণা’ পেরিয়ে মেয়েরা নিজের ঘরে আরেকবার ফিরে আসার
সুযোগ পাওয়ায় দেশটিতে বিচ্ছেদ উদ্যাপন করা হয়।
পরিবারের সব সদস্যরাই বিষয়টি স্বাভাবিক চোখেই দেখেন। তারা মনে করেন, ভালোর জন্যই মেয়ে আবার পরিবারে ফিরে এসেছে। এই ফিরে আসাকে তারা ‘কলঙ্কমুক্ত’ জীবনের সুযোগ হিসেবেও দেখেন। তাই একটি ব্যর্থ সম্পর্কের ইতি ঘটায় আনন্দে। সব আয়োজন শেষ হলে বিচ্ছেদী নারী অবিবাহিতদের কাতারে চলে যান।
আরও পড়ুন: নারীর প্রতি এক পৃথিবী সম্মান থাকুক প্রতিটি পুরুষের
মরুভূমির তরুণী মেহেদি শিল্পী একাগ্রচিত্তে আলপনা আঁকছেন তার আজকের খদ্দের ইসেলেখে জেইলানির হাতে। তিনি খুবই সতর্ক, কোনোভাবেই যেন ভেজা মেহেদিতে দাগ না পড়ে! ঠিক যেমনটি ছিলেন বিয়ের আগের দিন। এবার কিন্তু তার বিয়ে হচ্ছে না। হচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ!
বিবাহ বিচ্ছেদ উপলক্ষে পরদিন হবে উৎসব। জেইলানির মা এই আনন্দে নিমন্ত্রণ করেছেন শহরবাসীকে। উল্লসিত কণ্ঠে বলছেন, তার মেয়ে এবং মেয়ের প্রাক্তন দুজনেই ভালোভাবে বেঁচে আছে।
মায়ের কথা শুনে হাসলেন জেইলানি। তিনি তখন সামাজিক প্ল্যাটফর্ম স্ন্যাপচ্যাটে মেহেদির ছবি পোস্ট করতে ব্যস্ত। মেহেদির ছবি পোস্ট করা বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণার আধুনিক সংস্করণ হয়ে উঠেছে। যদিও মৌরিতানিয়ায় এটি বহু পুরোনো সংস্কৃতি।
বিচ্ছেদের উৎসবে আগে ছিল নাচ, গান আর ভোজ। এখন সেলফি প্রজন্মে এসে যুক্ত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। আলপনা আঁকা কেক। মেয়েরা এখানে সোশ্যাল মিডিয়ায় গর্ব ভরে আনন্দের সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেয়।
আরও পড়ুন: বিচ্ছেদের কত দিন পরে নতুন সম্পর্কে জড়াবেন!
অনেক দেশের সংস্কৃতিতে বিবাহবিচ্ছেদকে লজ্জাজনক হিসেবে দেখা হয়। তবে পশ্চিম আফ্রিকার সুন্দর দেশ মৌরিতানিয়ায় এটি কেবল স্বাভাবিকই নয়, নারীদের কাছে আনন্দের উপলক্ষ! কারণ, শিগগিরই তার আবার বিয়ে হবে। বহু শতাব্দী ধরেই সেখানে নারীরা আরেক নারীর বিবাহ বিচ্ছেদে উৎসব করে।
মৌরিতানিয়ার ২০১৮ সালের এক সরকারি রিপোর্টে দেখা যায়, এক তৃতীয়াংশ বিয়ে ডিভোর্সের পরিণতি পেয়েছে। এর মধ্যে ৭৪ শতাংশ নারী আবার বিয়ে করেছেন। আর ২৫ শতাংশ বিয়ে করেনি।
মৌরিতানিয়া প্রায় শতভাগ মুসলিম দেশ। এখানে ঘন ঘন বিবাহবিচ্ছেদ হয়। অনেকে ৫ থেকে ১০ বার বিয়ে করে। কেউ কেউ ২০ বারেরও বেশি!
অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দেশটিতে বিবাহবিচ্ছেদের হার বিশ্বে সর্বোচ্চ। তবে মৌরিতানিয়ায় এ প্রসঙ্গে খুব বেশি নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। এর আংশিক কারণ হচ্ছে, এখানে বিবাহবিচ্ছেদ প্রায়শই মৌখিক হয়, নথিভুক্ত নয়।
দেশটিতে বিবাহবিচ্ছেদ এতটা সাধারণ কেন—সে প্রসঙ্গে দেশটির সমাজবিজ্ঞানী নেজওয়া এল কেত্তাব বলেন, মৌরিতানীয় সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মৌর সম্প্রদায় তাদের বাবার পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে শক্তিশালী মাতৃতান্ত্রিক প্রবণতা পেয়েছে। দেশটির যাযাবর সম্প্রদায় নারীদের মর্যাদার কথা ছড়িয়ে দিয়েছে বহুদিকে। অন্যান্য মুসলিম দেশের তুলনায় মৌরিতানিয়ার নারীরা বেশ স্বাধীন।
তিনি আরো বলেন, দেশটিতে বিয়েকে পেশা হিসেবেও নেয়া যায়।
আরও পড়ুন: যুগের পরিবর্তনে আধুনিক সম্পর্কের দৃষ্টি ভঙ্গিতেই কি বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদ?
এখানে বিশেষ পরিস্থিতিতে নারীরাও বিবাহ বিচ্ছেদের পদক্ষেপ নিতে পারেন। অনেক নারী আছেন যারা কখনোই বিবাহবিচ্ছেদের কথা ভাবেন না। এরপরও বিচ্ছেদ যদি ঘটেই যায়, তাহলে নারীদের সমাজে সমস্যায় পড়তে হয় না। কারণে এখানে এমন নারীদের কেউ নিন্দা করে না, বরং সমর্থন জানায়। সমাজই পরিস্থিতিকে সহজ করে তোলে।
আরও পড়ুন: দাম্পত্যে বয়সের ব্যবধান কতটা ঝুঁকির?
উল্লেখ্য, মৌরিতানিয়া হলো যাযাবর, উট আর আকাশ ভরা তারা ও উজ্জ্বল
চাঁদের দেশ। কখনো কখনো ১০ লাখ কবির দেশও বলায় একে। হয়তো এ কারণেই এখানে বিবাহবিচ্ছেদও কাব্যিক!
মন্তব্য করুন
সাধারণত ঘুমের ক্ষেত্রে অনেকেরই আলাদা চাহিদা থাকে, তবে দীর্ঘ সময় ধরে ঘুমানো মাঝে মাঝে শরীরের ভেতরের সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করতে পারে। নিয়মিত চেয়ে অনেক বেশি ঘুমানোর সময় দেখে অতিরিক্ত ঘুমানোকে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি রাতে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আপনি কীভাবে বুঝবেন যে আপনি যথেষ্ট বেশি ঘুমাচ্ছেন?
রিমঝিম বৃষ্টি কমবেশি সবার ভালো লাগলেও কাজ বাড়িয়ে দেয় গৃহিণীর। কেননা বৃষ্টির সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ঘরের পরিবেশ হয়ে ওঠে স্যাঁতসেঁতে। তাই বৃষ্টির দিনে ঘরের জন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি যতে্নর। কয়েকদিন একটানা তাপদাহের পর শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তবে বৃষ্টিতে আনন্দের পাশাপাশি ভোগান্তিও কম নয়। অতি আর্দ্রতায় ঘরের ইন্টেরিয়র-এক্সটেরিয়রের ক্ষতি, মশা, ঘরে মোল্ড পড়া, পোকামাকড়সহ বিভিন্ন সমস্যা লেগেই থাকে। তাই এ সময়ে ঘরের জন্য দরকার বাড়টি যত্ন। বর্ষায় অন্দরের পরিবেশ ঠিক রাখার টিপস চলুন জেনে নেয়া যাক……………….