নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০১৯
সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিনজন ব্যক্তির সঙ্গে রাতভর বৈঠক করেছেন বেগম জিয়া পরিবারের দুজন সদস্য। তারা বলেছেন, জামিন পেলে বেগম জিয়া রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন। চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেলেও তিনি (বেগম জিয়া) রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকবেন না। বেগম জিয়ার ভাই, তাঁর আরেক নিকট আত্মীয় সরকারকে অনুরোধ করেছেন যেন বেগম জিয়ার পরবর্তী জামিনের আবেদনের বিরোধীতা করা না হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন কেন? এর জবাবে বেগম জিয়ার নিকটাত্মীয়রা বলেছেন, রাজনীতিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। রাজনীতি করার জন্য যেরকম শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য দরকার তা তাঁর নেই। এই অবস্থায় তিনি নিজেই রাজনীতি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাকী জীবনটা তিনি অবসরেই কাটাতে চান।
কিন্তু সরকারের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, সরকার বেগম জিয়ার রাজনীতি থেকে অবসরের ব্যাপারে কোনোরকম শর্ত দিচ্ছে না। সরকার চায় না, বেগম জিয়া রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াক। সরকার বেগম জিয়াকে প্যারোল দিতে চায়। সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যিনি জিয়া পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকগুলোতে অংশ নিচ্ছেন, তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা প্যারোলের কথা বলছি এ কারণে যে প্যারোল সরকারের হাতে। যৌক্তিক কারণে সরকার আবেদন সাপেক্ষে যে কাউকে প্যারোল দিতে পারে। কিন্তু জামিন সরকারের হাতে না, এটা আদালতে এখতিয়ারাধীন বিষয়।’ সরকারের অন্য একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বলছেন, ‘একজন দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির জামিনের বিরোধীতা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এটা না করা হলে একটি খারাপ দৃষ্টান্ত হবে। এজন্যই আমরা বলছি তিনি যেন প্যারোল নেন।’ অবশ্য আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ মনে করেন যে, ‘বিএনপির এবং জিয়া পরিবার খালেদার জামিন বা প্যারোল কোনোটাই চান না। তারা চান এটাকে ইস্যু করে মাঠ গরম করতে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপির অভ্যন্তরীন কোন্দলের বলী হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপির সমান কোন ইস্যু নেই জন্যই এখন খালেদা জিয়ার বিষয়ে আবেগ ছড়াতে চাইছে।’ হানিফ বলেন, ‘বেগম জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যাপারে সরকার আন্তরিক। দণ্ডিত হিসেবে তিনি যা প্রাপ্য তার চেয়েও বেশি সুযোগ পাচ্ছেন।’ জিয়া পরিবারের একজন সদস্য বলেছেন, ‘প্যারোলের ব্যাপারে বেগম জিয়া কেন আগ্রহী নন, সেটা তারা বুঝতে পারছেন না। সম্ভবত বিএনপির নেতারা তাকে বুঝিয়েছেন। কিন্তু আমরা তাকে (বেগম জিয়াকে) বোঝাতে পারছি না, এখন যেকোন মূল্যে চিকিৎসা জরুরী। সূত্রমতে, সরকারের সঙ্গে জিয়া পরিবারের আলোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, সরকার প্যারোল দিতে প্রস্তুত। আর জামিন দিতে হলে তা আদালতের বিষয়। বেগম জিয়া রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ার ঘোষণা দিলে পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হবে কিনা? জানতে চাওয়া হলে সরকারের একজন বলেছেন,‘ আগে তিনি আবেদন করুক।’
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চীন সফর ভারত যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।
বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন র্যাবের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায় না তখন বিএনপি নেতারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন। তারা দলীয় কার্যালয়ে মিষ্টিমুখের ব্যবস্থাও করেছিলেন।
আবার ডোনাল্ড লু নির্বাচনের আগে যখন বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছিলেন তখন বিএনপি নেতাদের প্রকাশ্যে মার্কিন বন্দনা করতে দেখা গেছে। ২৮ অক্টোবরের আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই মার্কিন দূতাবাসে বা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বাসভবনে বিএনপির নেতাদের আনাগোনা ছিল। তারা সেখানে চা চক্রে মিলিত হয়েছেন, নৈশভোজে মিলিত হয়েছেন এবং বিভিন্ন রকমের শলাপরামর্শ করেছেন।
পিটার ডি হাস গত বছরের ১০ অক্টোবর বিএনপি যখন সমাবেশ করতে পারেনি তখনও একতরফা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বিতর্কিত সংগঠন মায়ের ডাকের এক নেতার বাসায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি বিএনপির প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি জানিয়েছিলেন। এভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উপর এক ধরনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন এবং সহানুভূতি দেখিয়েছিল।
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহানুভূতি এবং পরোক্ষ সমর্থনের কারণেই বিএনপির আন্দোলনের পালে হাওয়া লেগেছিল। নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি চাঙ্গা ভাব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। যদিও ২৮ অক্টোবরের পর এই ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই আহ্বানের চিঠি নিয়ে পিটার ডি হাস তিনটি দলের নেতাদের কাছে গিয়েছিলেন এবং একটি সংলাপ আয়োজনের শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই সংলাপ আয়োজনে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কেউই সাড়া দেয়নি।
এখন নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে এবং ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ১১ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলার পরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া এবং নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু’র আগে আফরিন আক্তার নির্বাচনের পরে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং সেই সময় তিনি হোটেল ওয়েস্টিনে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শামা ওবায়েদ আফরিন আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যদিও সেই সাক্ষাতের পর তারা কোনও কিছুই সাংবাদিকদেরকে জানাননি। কিন্তু এবার ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। আর এটি বিএনপির মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদেরকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিচ্ছেন না, পাত্তা দিচ্ছে না। বরং সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বিএনপি নেতারা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়ালসহ যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং মার্কিন দূতাবাসে যাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তাদেরকে দুষছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপির মধ্যেই সমস্যা রয়েছে। বিএনপির নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারেননি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিএনপির বক্তব্যগুলো তারা সঠিকভাবে ও যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি। আর একারণেই ডোনাল্ড লু’র সফরের পর বিএনপির মধ্যে চলছে এক ধরনের হতাশা।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি
মন্তব্য করুন
আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, দলের ভেতর সুবিধাবাদী, লুটেরা এবং দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। কিন্তু ২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্র্যাকডাউন হবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করবে। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ এবং তার আদর্শিক জোট ১৪ দলের নেতাদের চীন সফরে হিড়িক পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর এই চীন সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের চীন সফরের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছেন। তবে তারা এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই মনে করছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।