নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০১৯
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নয় বেগম জিয়ার পরিবার। বেগম জিয়ার ছোটভাই শামীম ইস্কান্দার এবং তাঁর বোন বেগম জিয়ার প্যারোলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আগামী দু’একদিনের মধ্যে তারা বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে প্যারোলে রাজী করাবেন বলে জানা গেছে। গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির নীতি নির্ধারনী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংসদে যাবে না এবং বেগম খালেদা জিয়ার জন্য কোনো প্যারোল আবেদন করা হবে না। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আইনী লড়াই অব্যাহত রেখে এবং আন্দোলনের মাধ্যমে তারা বেগম জিয়াকে মুক্ত করবেন। এ লক্ষ্যে আইনী লড়াইকে আরও জোরদার করার জন্য স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রস্তাবও উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু সেই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। কারণ তারা এ ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব তারেক জিয়ার মতামতের অপেক্ষায় রয়েছেন। তারেক জিয়ার অনুমতি পেলেই তারা এটা স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে। এদিকে আজ এই খবর জানার পর ক্ষুব্ধ হয়েছেন বেগম খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার। তিনি দলের মহাসচিবের সঙ্গে কথা বলেন। মহাসচিবের সঙ্গে কথা বলে তারা বলেন যে, আপনার গত দেড় বছরেও খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য একটা আন্দোলন করতে পারেননি। এখন আপনার খালেদা জিয়ার মুক্তির আইনী লড়াই এবং আন্দোলনের কথা বলছেন! এর চেয়ে হাস্যকর কথা আর কিছু নেই।
শামীম ইস্কান্দার বিএনপির মহাসচিব ছাড়াও একাধিক নেতার সঙ্গে এনিয়ে কথা বলেছেন এবং তিনি তীব্র উষ্মা প্রকাশ করেছেন। তার মতে, খালেদা জিয়ার এখন যে শারীরিক অবস্থা তাতে তাকে অনতিবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে অথবা কোন বিশেষায়িত হাসপাতালে নেওয়া প্রয়োজন। এখানে জেদাজেদির কোন অবকাশ নেই। কিন্তু বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শামীম ইস্কান্দারকে বলেছেন, তার পরিবার ইচ্ছে করলে প্যারোলের জন্য আবেদন করতে পারেন। এটা তার পারিবারিক সিদ্ধান্ত। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাকে স্বরণ করিয়ে দেন, এর আগেও তিনি গণমাধ্যমে বলেছিলেন,‘ বেগম খালেদা জিয়া প্যারোল নিবেন কিনা এটা বেগম খালেদা জিয়া ও তার পারিবারিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু দল থেকে আমরা মনে করি যে, প্যারোল নিয়ে তার মুক্তি হবে অপমানজনক।’ একই সঙ্গে তারা সংসদে যেতেও ইচ্ছুক নন বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন। এর সমর্থনে তার যুক্তি হলো যে, বিএনপি যদি সংসদে গিয়ে প্যারোল দেয় তাহলে এটা সরকারের কাছে নতি স্বীকার করা হবে। তাতে খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিনের যে রাজনৈতিক ইমেজ, তা ক্ষুন্ন হবে। এই বাস্তবতায় তিনি রাজনীতির কৌশল হিসেবে দলগতভাবে দলের বিরোধীতা করার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। কিন্তু শামীম ইস্কান্দার মনে করেন, এখন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে রাজনীতি করাটা ঠিক নয়। বেগম খালেদা জিয়া এখন রাজনীতির রেষারেষির জিম্মি হয়েছেন। যে কারণে তার সুচিকিৎসা হচ্ছে না। তিনি বলেন যে, দল যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন, বেগম খালেদা জিয়াকে প্যারোলে রাজি করানোর জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে তিনি চেষ্টা করে যাবেন। বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করা ও সুচিকিৎসা করাটাই এখন সবচেয়ে বড় ব্যাপার।
উল্লেখ্য যে, বেগম খালেদা জিয়ার এই প্যারোল এবং তার সুচিকিৎসার ব্যাপারে স্থায়ী কমিটির বাইরে বিএনপির অনেক নেতাই শামীম ইস্কান্দারের পক্ষে। তারাও শামীম ইস্কান্দারের সঙ্গে এনিয়ে যোগাযোগ করছেন। এখন বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা তাকে (খালেদা জিয়া)-কে রাজি করাতে পারবেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
অবশ্য একাধিক সূত্র বলছে, বেগম খালেদা জিয়া প্যারোলের ব্যাপারে আগে যে কঠোর অবস্থানে ছিলেন সেখান থেকে এখন নমনীয়। শামীম ইস্কান্দারের ঘনিষ্ঠরা বলছেন যে, তারা যে পারিবারিক বৈঠক করেছেন, সে বৈঠকে বলেছেন,‘রাজনৈতিকভাবে লাভ জনক কৌশল নির্ধারনী এখন ব্যাপার নয়। এখন হলো চিকিৎসাটাই মুখ্য। এজন্য তারা বেগম খালেদা জিয়াকে যেকোন মূল্যে রাজি করাবেন। তিনি রাজি হলে সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারোলের আবেদন করবেন।
বাংলা ইনসাইডার/এসআর/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।