নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৫ মে, ২০১৯
হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বিপুল সম্পত্তির মালিকানা পাবে তার পুত্র এরিক এরশাদ এবং তার প্রথম স্ত্রী রওশান এরশাদ, আর অন্য কেউ নয়। আর এরশাদ যদি তার সমস্ত সম্পত্তি দান করতে চান সেটাও আইনগতভাবে মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৬১ অনুযায়ী সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ দান করতে পারবেন। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইবনে আজিজ মো. নুরুল হুদা এরশাদের বর্তমান পারিবারিক অবস্থান বিশ্লেষণ করে মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৬১ অনুযায়ী তার সম্পত্তির বণ্টন এভাবেই জানিয়েছেন।
হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অতি আলোচিত এবং সমালোচিত একটি নাম। আমরা যাকে স্বৈরাচারী এরশাদ বলতে পছন্দ করি, তিনি এরই মধ্যে তিনি পা দিতে যাচ্ছেন ৯০ বছরের এর কোটায়। রাজনৈতিক অঙ্গনে তার পদচারণা শুরু সেই ৮০’র দশকে। সাবেক সেনাপ্রধান এই নেতা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্ভট পদক্ষেপ আর আচার-আচরণের কারণে শুরু থেকেই জনগণের কাছে বিতর্কিত। তার ব্যক্তিগত জীবনটাকেও নেতিবাচকভাবে বর্ণাঢ্য বলা যায়। একাধিক বিয়ে, সম্পর্ক, নিজের এবং পালক সন্তানদের নিয়েও আমাদের রয়েছে বিস্তর কৌতুহল। তিনি এরই মাঝে সম্পত্তির পাহাড় গড়েছেন। তার হিসাব অনেকেরই অজানা। এখন তিনি চূড়ান্ত বার্ধক্যের পথে, তার মৃত্যুর পরে তার এই বিশাল সম্পত্তি তার এই বিতর্কিত উত্তরসূরিদের মধ্যে কীভাবে ভাগ হবে, তা নিয়ে অনেকেরই রয়েছে অনেক প্রশ্ন। সেই প্রশ্নগুলো খোলাসা করতেই বাংলা ইনসাইডারের আজকের বিশেষ আয়োজন।
এরশাদের বর্তমানে বৈধ স্ত্রী রয়েছেন একজন, তিনি রওশন এরশাদ। উনার বাইরে বিবাহিত সম্পর্ক যা ছিল তা এখন নেই, অর্থাৎ বিবাহবিচ্ছেদ ঘটেছে। এই বিচ্ছেদ হওয়া স্ত্রী বা বিভিন্ন সময়ে যাদের সঙ্গে এরশাদ সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন বা এখনো আছেন- তাদের কেউই এরশাদের সম্পত্তির কোনো অংশ পাবেন না। অপরদিকে তার যাবতীয় সম্পত্তির সমান ৮ ভাগের ১ ভাগ পাবেন তার স্ত্রী রওশন এরশাদ।
তার পালকপুত্র সাদ এরশাদ এবং আরেক পালক কন্যাও আইনমতে এরশাদের সম্পত্তির কোনো অংশ পাওয়ার কথা নয়। তার একমাত্র ঔরশজাত সন্তান এরিক এরশাদ তার সম্পত্তির ৮ ভাগের বাকি ৭ ভাগই পাবেন। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বাবা-মা বেঁচে থাকলে আইনমতে তারাও বিশাল সম্পত্তির নির্দিষ্ট অংশ পেতেন আইনত। তার পাঁচ ভাইবোনের কেউই তার সম্পত্তির কোনো অংশ পাবেন না।
এরিক এরশাদের মা এবং বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক কিছু পাচ্ছেন কি পাচ্ছেন না, তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে অনেকেরই। মজার বিষয় হলো, বিদিশাও এরশাদের অবর্তমানে কোনো সম্পত্তির অংশ পাবেন না।
অনেকের প্রশ্ন, এই যে বিশাল সম্পত্তি, এর কোনো অংশ কি কোনো ট্রাস্টে দিয়ে দিতে ইচ্ছুক কি না। এরশাদ জীবদ্দশায় উনার যেকোনো কল্যাণমূলক কাজে উনি ব্যয় করতেই পারেন। কিন্তু সেটা কি পুরো সম্পত্তি? সেক্ষেত্রে তিনি যদি কাউকে অসিয়ত (কোনো ব্যক্তি তার মৃত্যু ও পরবর্তীকালের জন্য কাউকে কোনকিছুর বিশেষত সম্পত্তির মালিকানা প্রদানার্থে নির্দেশ দান করাকে বুঝায়) করতে চায় যে অমুক সম্পত্তি অমুকক্ষেত্রে ব্যবহার করো, সেক্ষেত্রে তিনি মোট সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ দান করতে পারবেন।
তিনি নিজের নামে কোনো ট্রাস্ট বা ফাউন্ডেশন করলে তিনি যদি চান তার সব সম্পত্তি সেখানে অন্তর্ভূক্ত করে দেবেন, তাহলে সেখান থেকে যে লাভ বা আয় হবে সেটাও ভাগ হবে তার ইচ্ছায়। সেখানে ব্যবস্থাপনায় কে থাকবে, কে বা কারা কমিটিতে থাকবে তখন এক-তৃতীয়াংশ বা দুই-তৃতীয়াংশ বলে কিছু থাকবে না। এরশাদ নিজের ইচ্ছায় সব দান বা বণ্টন করতে পারবেন। একমাত্র কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠান, উন্নয়নমূলক কোনো সংগঠনের দান করতে চাইলে বা অন্যকোনো ব্যক্তিকে অসিয়ত করে যেতে চাইলে এক-তৃতীয়াংশের বেশি অংশ দিতে পারবেন না।
তবে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের অবর্তমানে বা তার মৃত্যুর পর আগে তার কোনো ধার-দেনা আছে কিনা তা যাচাই করে দেখা হবে। রাজনৈতিক স্বনামধন্য ব্যক্তি হিসেবে তার ব্যাংক, প্রতিষ্ঠানের কাছে কোনো দেনা থাকতেই পারে। সেটা পরিশোধের পরে, বৈধ স্ত্রীর দেনমোহর বাকি থাকলে তা পরিশোধ করে তারপর তার সম্পত্তির ৮ বা ৭ ভাগ হবে, সেই ভাগের নির্দিষ্ট অংশগুলো পাবে তার যোগ্য উত্তরসূরিরা।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।