ইনসাইড পলিটিক্স

বরেণ্য নেতাদের বংশধররা কে কোথায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৫ মে, ২০১৯


Thumbnail

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সফল রাজনীতিবিদ। শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশ পরিচালনা করছেন। বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা রাজনীতির সঙ্গে উৎপোতভাবে জড়িত না থাকলেও তিনি বোনের সার্বক্ষণিক সঙ্গী।  বঙ্গবন্ধুর দুই ছেলের মধ্যে শেখ কামাল রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু ১৫ আগস্ট নৃশংশভাবে বঙ্গবন্ধু পরিবারের প্রায় সবাইকে হত্যা করা হয়। অনেকেই ভেবেছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিবার অধ্যায়ের শেষ। কিন্তু তার কন্যা শেখ হাসিনা বাবার নাম উজ্জল করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সমসাময়িক আরো কয়েকজন বাঙালি নেতা আছেন যাদের আমরা শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করি। তাদের সন্তানদের খোঁজ আমরা কয়জন জানি? এমনই কয়েকজন নেতার সন্তানদের খোঁজ দেওয়া হলো:

হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী

গণতন্ত্রের মানসপুত্রখ্যাত উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনীতিক হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। যুক্ত পাকিস্তানের এক সময়ের প্রধানমন্ত্রী ও নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক গুরু তিনি। ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি দুই বিয়ে করেছেন। স্যার আবদুর রহিমের কন্যা নিয়াজ ফাতেমার সাথে বিয়ে হয় ১৯২০ সালে। নিয়াজ ফাতেমা ১৯২২ সালে ইন্তেকাল করেন। তার এক পুত্র ও এক কন্যা আকতার জাহান ও শাহাব সোহরাওয়ার্দী। শাহাব সোহরাওয়ার্দী ছাত্র থাকাকালে ১৯৪০ সালে লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৮ বছর বিয়ে করেননি। ১৯৪০ সালে তিনি রাশিয়ান অভিনেত্রী ভেরা অ্যালেক্সান ড্রভনা টিসেস্কোকে বিয়ে করেন। ১৯৪৬ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে ভেরা শিশুপুত্র রাশেদকে নিয়ে লন্ডনে বসবাস করেন। ভেরা অ্যালেক্সান ড্রভনা টিসেস্কো ১৯৮৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ইচ্ছা ছিল পুত্র আইনে ডিগ্রি নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেবেন। পিতার বাসনা পূরণ হয়নি। রাশেদ সোহরাওয়ার্দী চার্টার হাউস অক্সফোর্ড এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে রয়েল একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্ট থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে অভিনয় পেশায় যোগ দেন। তিনি রয়েল শেকসপিয়র কোম্পানিতে কয়েক বছর ছিলেন।

রাশেদ সোহরাওয়ার্দী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেতা। তিনি ১৯৬৩ সালে ডক্টর হু, ১৯৯৮ সালে জিন্নাহ, ২০১৫ সালে লিজেন্ড চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন। জিন্নাহ চলচ্চিত্রে তিনি নেহরুর ভূমিকায় অপূর্ব অভিনয় করেন। তিনি একজন বিশ্বখ্যাত লেখকও ছিলেন। লেখক হিসেবে তিনি রবার্ট অ্যাশবি নামে পরিচিত।

তবে রাশেদ অভিনয়কে প্রাধান্য দিয়ে যতটা পেরেছেন রাজনীতির সঙ্গে ছিলেন। ছাত্রজীবনে তিনি পিতার গ্রেপ্তার, মুক্তি আন্দোলন দেখেছেন। তিনি বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলন ৬ দফা ও মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা ঘোষণার পর শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেফতার করা হয়। আওয়ামী লীগের এ সংকটকালে দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া লন্ডন থেকে রাশেদ সোহরাওয়ার্দীকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। পল্টন ময়দানে ৬ দফা ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমানের আসন শূন্য রেখে সভা চলছে। প্রধান অতিথি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর পুত্র রাশেদ সোহরাওয়ার্দী। তিনি ৬ দফা বাস্তবায়ন ও শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের মুক্তি দাবি করেন। তার ভাষণ ৬ দফা আন্দোলনকে বেগবান করে।

লন্ডন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন রাশেদ সোহরাওয়ার্দী। তিনি এক বক্তৃতায় বলেছেন,  I consider Sheikh Hasina & Sheikh Rehana as my own sisters. I request her, to remaining Prime Minister as long as she lives. তার এ ভাষণ সত্যিই প্রমাণিত। শেখ হাসিনা রাজনীতিতে আছেন এবং চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। রাশেদ সোহরাওয়ার্দী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টির জন্য নেতৃত্ব দেন। পিতার মতো তার মেধা ও দক্ষতাও ছিল। রাশেদ চৌধুরী এ বছর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন।

মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী

মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৯২৫ সালে প্রায় ৪০ বছর বয়সে বগুড়ার পাঁচবিবির জমিদার শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মেয়ে আলেমা খাতুনকে বিবাহ করেন। তখন আলেমা খাতুনের বয়স ছিল ১৮-১৯ বছর। আলেমা খাতুনের গর্ভে ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথম ছেলে আজিজুল হক শৈশবেই মারা যান। অন্যান্যরা হলেন- রেজিয়া খানম, আবু নাসের খান, গোলাম কিবরিয়া এবং মাহমুদা খানম।

এরপর রাজনৈতিক প্রয়োজনে মওলানা ভাসানী আরও দু’বার বিয়ে করেছিলেন। দ্বিতীয় বিয়ে করেন টাঙ্গাইলের দীঘুলিয়া গ্রামের আবদুর রহমান মীরের মেয়ে আকলিমা খাতুনকে। বিয়ের ৬ মাস পরে আকলিমা খাতুন মারা যান। এরপর বিয়ে করেন বগুড়ার আদমদীঘি থানার কাঞ্চনপুর গ্রামের কাসিমউদ্দিন সরকারের মেয়ে হামিদা খাতুনকে। এ সময় হামিদা খাতুনের বয়স ছিল ১২ বছর। তার গর্ভে ১ ছেলে ও ২ মেয়ে- আবু বকর, আনোয়ারা খানম এবং মনোয়ারা খানম জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সালের ডিসেম্বর মাসে হামিদা খাতুন মারা যান।

তার ছেলে আবু নাসের খান ভাসানী ছিলেন এরশাদ সরকারের মন্ত্রী। রাজনীতিতে তিনি তেমন সুবিধা করতে পারেননি। ভাসানীর তিন ছেলেই মারা গেছেন। চার মেয়ে বেঁচে থাকলেও তারা কেউ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নেই। ভাসানীর স্ত্রী আমেনা ভাসানী ন্যাপের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনিও মারা গেছেন। মওলানা ভাসানীর মেয়ের জামাই চৌধুরী মোতাহের হোসেন ছিলেন জিয়াউর রহমান সরকারে বিএনপি দলীয় এমপি।

শেরে বাংলা একে ফজলুল হক

এ. কে. ফজলুক হক এম.এ. পাশ করার পর দাম্পত্য জীবনে প্রবেশ করেন। এ সময় নবাব আবদুল লতিফ সি. আই. ই-এর নাতনি খুরশিদ তালাত বেগমের সাথে তার বিয়ে হয়। খুরশিদ তালাত বেগম দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। খুরশিদ তালাত বেগমের অকাল মৃত্যুর পর তিনি হুগলী জেলার অধিবাসী এবং কলকাতা অবস্থানকারী ইবনে আহমদের কন্যা জিনাতুন্নেসা বেগমকে বিয়ে করেন। কিন্তু, জিনাতুন্নেসাও নিঃসন্তান অবস্থায় পরলোক গমন করেন এবং ১৯৪৩ সালে এ. কে. ফজলুক হক মীরাটের খাদিজাকে বিয়ে করেন।

তাদের ছেলে ফায়জুল হক ছিলেন জিয়া সরকারের বিএনপি দলীয় এমপি। পরে তিনি জাতীয় পার্টির টিকিটে এরশাদ সরকারের ও আওয়ামী লীগের টিকিটে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। তার বড় ছেলে একে ফাইয়াজুল হক রাজু আওয়ামী লীগ নেতা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানাড়ীপাড়া)  আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ফাইয়াজুল হক রাজু আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। তবে তার মেয়ের জামাই আখতারুল আলম ফারুক ময়মনসিংহ জেলা বিএনপি নেতা।

বাংলা ইনসাইডার



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আরও ৫২ নেতাকে বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৬:১৫ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপের ভোটে অংশ নেওয়ায় আরও ৫২ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আছেন ১৭, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) ২৬ এবং ভাইস চেয়ারম্যান (নারী) ৯ জন নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

বুধবার (১৫ মে) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় দলটি। শুরুতে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করার ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে তাদের কাছে। জবাব দিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেয়া হয়েছে তাদের।

বিবৃতিতে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ৩য় ধাপে ১১২টি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৯ সাংগঠনিক বিভাগ থেকে ৫২ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ ৫২ জনের মধ্যে রংপুর বিভাগের ২২ জন। রাজশাহী বিভাগর আট জন। বরিশাল বিভাগে ৫ জন, ঢাকা বিভাগে চারজনের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ১ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে ৯ জন, সিলেট বিভাগে ৭ জন, কুমিল্লায় ছয়জন, খুলনায় চারজন এবং চট্টগ্রামে একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত ১৯৩ জনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলো। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নির্বাচন থেকে ফিরে আসায় কয়েকজনের বহিষ্কারাদেশ তুলেও নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট করায় ৮০ জন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি। দ্বিতীয় ধাপে বহিষ্কার করা হয় ৬১ জনকে।

প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় বিএনপির ২৮ জন নেতা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে জয়ী হন ৭ জন।

তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৯ মে। গত রবিবার ছিল এই ধাপের নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন।


বিএনপি   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ডোনাল্ড লু’র সফরকে ঘিরে বিএনপিতে হতাশা

প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।

বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন র‌্যাবের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায় না তখন বিএনপি নেতারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন। তারা দলীয় কার্যালয়ে মিষ্টিমুখের ব্যবস্থাও করেছিলেন।

আবার ডোনাল্ড লু নির্বাচনের আগে যখন বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছিলেন তখন বিএনপি নেতাদের প্রকাশ্যে মার্কিন বন্দনা করতে দেখা গেছে। ২৮ অক্টোবরের আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই মার্কিন দূতাবাসে বা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বাসভবনে বিএনপির নেতাদের আনাগোনা ছিল। তারা সেখানে চা চক্রে মিলিত হয়েছেন, নৈশভোজে মিলিত হয়েছেন এবং বিভিন্ন রকমের শলাপরামর্শ করেছেন।

পিটার ডি হাস গত বছরের ১০ অক্টোবর বিএনপি যখন সমাবেশ করতে পারেনি তখনও একতরফা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বিতর্কিত সংগঠন মায়ের ডাকের এক নেতার বাসায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি বিএনপির প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি জানিয়েছিলেন। এভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উপর এক ধরনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন এবং সহানুভূতি দেখিয়েছিল।

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহানুভূতি এবং পরোক্ষ সমর্থনের কারণেই বিএনপির আন্দোলনের পালে হাওয়া লেগেছিল। নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি চাঙ্গা ভাব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। যদিও ২৮ অক্টোবরের পর এই ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই আহ্বানের চিঠি নিয়ে পিটার ডি হাস তিনটি দলের নেতাদের কাছে গিয়েছিলেন এবং একটি সংলাপ আয়োজনের শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই সংলাপ আয়োজনে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কেউই সাড়া দেয়নি।

এখন নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে এবং ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ১১ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলার পরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া এবং নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু’র আগে আফরিন আক্তার নির্বাচনের পরে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং সেই সময় তিনি হোটেল ওয়েস্টিনে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শামা ওবায়েদ আফরিন আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যদিও সেই সাক্ষাতের পর তারা কোনও কিছুই সাংবাদিকদেরকে জানাননি। কিন্তু এবার ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। আর এটি বিএনপির মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।

বিএনপি মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদেরকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিচ্ছেন না, পাত্তা দিচ্ছে না। বরং সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বিএনপি নেতারা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়ালসহ যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং মার্কিন দূতাবাসে যাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তাদেরকে দুষছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপির মধ্যেই সমস্যা রয়েছে। বিএনপির নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারেননি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিএনপির বক্তব্যগুলো তারা সঠিকভাবে ও যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি। আর একারণেই ডোনাল্ড লু’র সফরের পর বিএনপির মধ্যে চলছে এক ধরনের হতাশা।


ডোনাল্ড লু   বাংলাদেশ   রাজনীতি   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের পাঁচ সহযোগী সংগঠনের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ

প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের পাঁচ সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ। ২০১৯ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ কৃষক লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠিত হয়। ইতোমধ্যে এসব কমিটি ঘোষণার চার বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। আর তাঁতী লীগের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে ২০১৯ সালেই। বেশির ভাগ সংগঠনের তৃণমূলও অগোছালো। এসব সংগঠনের বেশির ভাগেরই সুপার ইউনিট খ্যাত ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) শাখার কমিটিও এলোমেলো। যদিও মেয়াদোত্তীর্ণ সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের দাবি দায়িত্ব নেয়ার পর বেশির ভাগ জেলা, মহানগরীর সম্মেলন তারা করেছেন। করোনা, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে সবগুলো ইউনিটের সম্মেলন শেষ করতে পারেননি। চলতি বছরেই তৃণমূল পর্যায় থেকে সব ইউনিটের সম্মেলন শেষ করার কথা বলছেন নেতারা।

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৫.(২) এর ক ধারা মতে, “বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগ, আওয়ামী  স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, বাংলাদেশ তাঁতী লীগ ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বলিয়া গণ্য হইবে। তবে জাতীয় শ্রমিক লীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাদের স্ব-স্ব সংগঠনের গঠনতন্ত্র দ্বারা পরিচালিত হইবে।” মৎস্যজীবী লীগও বর্তমানে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের স্বীকৃতি পেয়েছে।

তাঁতী লীগ: ২০১৭ সালে প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমিটি পায় তাঁতী লীগ। এ কমিটিতে ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলী সভাপতি ও খগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ সাধারণ সম্পাদক হন। তাঁতী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রতিবেদককে জানান, ‘আমাদের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। ৭৮ টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ২-৪ টি ছাড়া বাকি সবগুলোর কমিটি দিয়েছি। তাঁতীদের উন্নয়নে কী করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডে যোগাযোগ করতে বলেন।’ 

বাংলাদেশ কৃষক লীগ: ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় কৃষক লীগের সপ্তম সম্মেলন। এতে কৃষিবিদ সমীর চন্দ্র সভাপতি ও অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠনটির কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ বলেন, নেত্রী যখন চাইবেন তখনি সম্মেলন হবে। যেসব ইউনিটের কমিটি গঠন বাদ আছে আমরা সেগুলোর সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ: ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সপ্তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তখন তিন বছরের জন্য সভাপতি হন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সাধারণ সম্পাদক হন মাঈনুল হোসেন খান নিখিল। তিন বছর মেয়াদি বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। যুবলীগের সুপার ইউনিটখ্যাত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের কমিটির  মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই।

বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ: ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে নির্মল রঞ্জন গুহকে সভাপতি এবং আফজালুর রহমান বাবুকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। নির্মল রঞ্জন গুহের মৃত্যুর পর সভাপতি হন গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবক লীগের মেয়াদও শেষ হয়েছে। তবে অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে তৃণমূলের অনেক ইউনিট। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাচ্চু জানান, ‘৭৯ টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ১২-১৪ টির সম্মেলন হয় নি। আমরা সেগুলোর সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

মৎস্যজীবী লীগ: ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর মৎস্যজীবী লীগের প্রথম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোহাম্মদ সাইদুর রহমান সভাপতি, মোহাম্মদ আজগর নস্কর সাধারণ সম্পাদক হন। মৎস্যজীবী লীগ সারাদেশে যতগুলো কমিটি করেছে তার বেশিরভাগই বিতর্কিত। তবে সব ছাপিয়ে যায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি দেওয়াকে কেন্দ্র করে। নতুন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জানেন। ৫০ টির মতো সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন করেছি। অধিকাংশ কমিটি দিয়েছি। অল্পকিছু বাকি আছে।’

সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনের বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “আমাদের দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হচ্ছে দ্রুত মেয়াদোত্তীর্ণ সব ইউনিটের সম্মেলন শেষ করা। সেটা কেন্দ্র হোক আর জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে হোক। আওয়ামী লীগেরও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন শেষ করার কথা বলা হয়েছে। একেবারে তৃণমূল পর্যায় বিশেষ করে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন সম্মেলন করে এরপর পর্যায়ক্রমে পৌর, উপজেলা, জেলা, মহানগর সম্মেলন শেষ করে কেন্দ্রীয় সম্মেলন করা হবে।"


আওয়ামী   লীগ   সহযোগী   সংগঠন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় বিএনপির ৪৫ নেতাকে শোকজ

প্রকাশ: ১১:৩৯ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৪৫ নেতাকে শোকজ করে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠিতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দেওয়া চিঠির বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তাদেরকে শোকজ দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কেন তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে না, তার জবাব দিতে বলা হয়েছে।

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে চার ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া  প্রায় ৩০০ শতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করে বিএনপি। তবে, বহিষ্কৃত অনেক নেতা নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এই প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, অনেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এই কারণে এখন পর্যন্ত কতজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে তার সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।

প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে বিএনপি ৮২ জন নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করে। দ্বিতীয় ধাপে ৬৬ জনকে বহিষ্কার করে। আর তৃতীয় ধাপে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে কতজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তার সঠিক সংখ্যাটি পাওয়া যায়নি।

গত ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচনে বহিষ্কৃতদের মধ্যে সাতজন চেয়ারম্যান এবং তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।

জানা গেছে, তৃতীয় ধাপের ভোটে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা প্রার্থী হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে এরইমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর ৪৫ জনকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শোকজ নোটিশপ্রাপ্ত নেতার মধ্যে ১৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। বাকি নেতারা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।


বিএনপি   শোকজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকারবিরোধী আন্দোলন: শক্তি বাড়াতে নানা উদ্যোগ বিএনপির

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

সরকারবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সাংগঠনিক অবস্থান শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। কেন্দ্রে থেকে তৃণমূল পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে দল এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে সক্রিয় করাই দলটির মূল লক্ষ্য। সেজন্য নির্বাহী কমিটির শূন্য পদ পূরণসহ কেন্দ্রীয় কমিটিতে বড় ধরনের পরিবর্তন হবে। এর মধ্যে যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নতুনদের আনা হতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে সাংগঠনিক শক্তি-দুর্বলতা বিশ্লেষণ করা হয়। তার ভিত্তিতে এরই মধ্যে সংগঠন ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে দলটি। গত ১ মার্চ ছাত্রদলের আগের কমিটি ভেঙে মূল নেতৃত্বে নতুনদের আনা হয়। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি পুনর্গঠনেরও প্রস্তুতি চলছে। সেইসঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শূন্য পদ পূরণ এবং নিষ্ক্রিয়দের বদলে নতুন মুখ নিয়ে আসারও চিন্তা চলছে। সার্বিকভাবে সংগঠনকে গতিশীল ও মাঠের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করতেই এসব পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে এখনই রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়ে যাবে-বিএনপির নীতিনির্ধারকরাও এমন ভাবছেন না। এজন্য জনগণকে সম্পৃক্ত করে ধারাবাহিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে মনে করেন তারা। সেই লক্ষ্য নিয়েই দলকে শক্তিশালী করার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ও অঙ্গ সংগঠনগুলো পুনর্গঠন, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিশেষ করে দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে ত্যাগী নেতাদের পদায়নের চিন্তাভাবনা চলছে। এসব পদের জন্য ছাত্রদলের সাবেক কিছু নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। এর বাইরে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতেও নতুন কিছু মুখ আসতে পারে। সেখানেও কয়েকজন সাবেক ছাত্র ও যুবনেতা স্থান পেতে পারেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই বছরের ৬ আগস্ট নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেখানে ছাত্রদলের শতাধিক সাবেক নেতাসহ অনেক নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক নেতার পদোন্নতি হয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে জায়গা পেয়েছেন বেশ কয়েকজন। তার পরও বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক পদ খালি রয়ে গেছে।

বিএনপি সূত্র জানায়, বার্ধক্য, অসুস্থতাসহ নানা কারণে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এখন আট থেকে ১০ জনের বেশি সদস্য উপস্থিত থাকেন না। নির্বাহী কমিটির অনেকে অসুস্থ ও বয়সজনিত কারণে নিষ্ক্রিয়। অনেকেই জেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করায় কেন্দ্রে সময় দিতে পারেন না। আবার কেউ কেউ কেন্দ্রে থাকলে এলাকায় সময় দিতে পারেন না। ফলে নির্বাহী কমিটির শূন্য পদ পূরণ এবং ‘এক নেতার এক পদ’ নীতি কার্যকর করার প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনের আগে ধারাবাহিক আন্দোলনে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ভূমিকা মূল্যায়ন করেছে বিএনপি। সেই আন্দোলনে সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় নেতাদের তালিকা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে। সাংগঠনিক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ধাপে ধাপে দল পুনর্গঠন করবেন।

বিভিন্ন সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির শূন্য পদের জন্য বেশ কয়েকজন নেতা আলোচনায় আছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দীন আহমদ, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, জয়নুল আবেদিন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। যুগ্ম মহাসচিব পদের জন্য আলোচনায় আছেন সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আসাদুল হাবিব দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, প্রশিক্ষণবিষয়ক সহ-সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহ-সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুলসহ কয়েকজন।

জানা গেছে, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও পরিবর্তন আনা হতে পারে। এই পদের জন্য আলোচনায় আছেন যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কেন্দ্রীয় নেতা তাইফুল ইসলাম টিপু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, জি কে গউছ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আবদুল খালেক, মো. শরীফুল আলম ও অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।

বিএনপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ‘তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়াতে এবং জনগণকে সংগঠিত করতে সারা দেশে কর্মিসভা করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের কাছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’ এদিকে বিএনপির পাশাপাশি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও মাঠ গোছানোর কাজ শুরু করেছে।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন