নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৬ জুন, ২০১৯
রাজনীতিবিদদের যেমন ভালো সময় থাকে, তেমন সংকটকালও থাকে। সংকটকালে একটা রাজনীতিবিদ যদি আপোষকামী হয় বা পালিয়ে যান তাহলে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে একটা বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভিন্ন সংকটকালের অনেক বড় বড় রাজনীতিবিদ বা অনেক ক্ষমতাবানরা পলাতক হয়েছিলেন। পলাতক হওয়ার মাশুল দিতে হয়েছে তাদের রাজনৈতিক জীবনে। অনেকের রাজনৈতিক জীবনও প্রায় অস্তমিত হয়েছে তাদের পলাতক জীবনের কারণে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা গা বাঁচাতে বা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে পলাতক জীবন যাপন বেছে নিয়েছিলেন, তাদের কয়েকজনকে নিয়েই এই প্রতিবেদন:
শামীম ওসমান: আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা তিনি। তার পিতা আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। আওয়ামী লীগ সভাপতিরও তিনি অত্যন্ত আস্থাভাজন এবং ঘনিষ্ঠ। কিন্তু রাজনীতিতে তার যে উচ্চতায় ওঠা উচিত ছিল সেখানে তিনি যেতে পারেননি। কারণ সংকটকালে তিনি পলাতক ছিলেন। ওয়ান ইলেভেনের সংকটের সময় তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন। ২০০১ সাল থেকেই তিনি পলাতক জীবন যাপন শুরু করেন এবং গা ঢাকা দেন। পালিয়ে তিনি কানাডায় অবস্থান করেছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ২০০৯ সালের কাউন্সিলে বলেছিলেন, রাজনীতিতে তিন ধরনের লোক থাকে। এক; যারা বিপর্যয় সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করেন তারা হলেন সত্যিকারের আদর্শবান কর্মী। দ্বিতীয়; যারা বিপদের সময় ভোল পাল্টে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তৃতীয়; যারা পরিস্থিতি মোবাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে পলাতক জীবন যাপন করছেন। তারা হলো আপোষকামী। শামীম ওসমানের ওই পলায়নপরতা আপোষকামীতা হিসেবেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের কাছে চিহ্নিত। সে জন্যেই সম্ভবত তার যে অবস্থানে থাকার কথা ছিল, সেই অবস্থান তিনি পাননি।
মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া: রাজনীতি থেকে প্রায় অস্তমিত হয়ে যাচ্ছেন তিনি। যদিও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি তাকে মন্ত্রীত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিনি মনোনয়নও পাননি। মোফাজ্জল হোসেন মায়াও রাজনীতিতে নিবেদিত প্রাণ ব্যাক্তিত্ব। দলের নীতি আদর্শের বিরোধিতা তিনি কখনও করেননি। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সংকটের সময় তিনি পলাতক জীবন বেছে নিয়েছিলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক: জাহাঙ্গীর কবির নানকও এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। ২০০৯ সালে তিনি প্রতিমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৪তে তিনি মন্ত্রিত্ব না পেলেও এমপি হয়েছিলেন। এবার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবেই তাঁকে সন্তষ্ট থাকতে হয়েছে। জাহাঙ্গীর কবির নানকও ওয়ান ইলেভেনের সময় পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
মির্জা আজম: মির্জা আজমও ওয়ান ইলেভেনের সময় জাহাঙ্গীর কবির নানকের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। যদিও মির্জা আজম এখনও এমপি রয়েছেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্যও তিনি। ২০১৪ সালে তিনি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। কিন্তু রাজনীতিতে তার যে অবদান, তার যে জনপ্রিয়তা সে তুলনায় তার অবস্থান অনেক নিচেই। তার একটি কারণই হতে পারে সেটি হলো সংকটের সময়ে রুখে দাড়ানোর মানসিকতা।
শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপিতেও এরকম পলাতক রাজনীতিবিদরা এখন রাজনীতি থেকেই অপসারিত প্রায়। এদের মধ্যে রয়েছেন-
হারিছ চৌধুরীঃ বিএনপি যখন ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসে তখন সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যাক্তিদের একজন ছিলেন হারিছ চৌধুরি। তারেক এবং বেগম জিয়ার সেতুবন্ধন ছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে হাওয়া ভবনের যে কমিশন বাণিজ্য তার কলকাঠি নাড়তেন তিনি। ওয়ান ইলেভেনে তিনি পালিয়ে যান এবং রাজনীতিতে তিনি ঠিকানাবিহীন ব্যাক্তি হিসেবেই রয়ে গেছেন।
সাদেক হোসেন খোকা: বিএনপির ক্ষমতাবান রাজনীতিবীদদের মধ্যে সাদেক হোসেন খোকা অন্যতম। ওয়ান ইলেভেনে তার ভূমিকা বিতর্কিত হলেও দলে তার অবস্থান ছিল সুদৃঢ়। কিন্তু মেয়র পদ হারিয়ে তিনি পালিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং সেখানেই তিনী অবস্থান করছেন। রাজনীতিতে তিনি থেকেও নেই। বিদেশে অবস্থানের কারণেই রাজনীতিতে তার নাম এখন মুছে যেতে বসেছে।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি দুই দলেই এরকম বহু রাজনীতিবিদ আছেন যারা সংকটে রুখে দাঁড়াতে পারেননি। নিজেদের বাচানোর জন্য পলাতক জীবনই বেছে নিয়েছেন। এই কারণে তাঁদের রাজনীতির উত্থান পর্বেরও সমাপ্তি ঘটেছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।