নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৪ জুলাই, ২০১৯
গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে দেশের গরীব মানুষের স্বার্থে (!) বাংলাদেশের বামদলগুলো আগামী রোববার সকাল থেকে আধাবেলা হরতাল ডেকেছে। তাঁদের ভাষায় গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারে গ্যাসের দাম বাড়ানোটা দেশের গরিব মানুষের উপর জুলুম। তাই তাঁরা এর প্রতিবাদ করছেন, জনস্বার্থে, বিশেষ করে দেশের গরীব মেহনতি মানুষের স্বার্থে হরতাল ডেকেছেন।
এসব কথা শুনে একটা প্রশ্ন জাগল মনে। জ্বালানী সূত্রের খবরে বলা হয়, আমাদের দেশের উৎপাদিত মোট গ্যাসের ১৬% ব্যবহার হয় গৃহস্থালি কাজে। আবার অন্য হিসেবে মানে স্থাপনা হিসেবে ধরলে ১১% পরিবার পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহার করে। বাকীটা ব্যবহার হয় শিল্প কারখানা বা বাণিজ্যিক কাজে।
আমি ডাটা দিয়ে লেখা জটিল করতে চাই না তবুও সাধারণে মানুষের বুঝার জন্য অন্যভাবে কথাটা একটু যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ করে দেখতে চাই কত ভাগ গরিব পরিবার পাইপ লাইনের গ্যাস ব্যবহার করেন? মূলত ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, আর দুই তিনটা শহরের মানুষ এই পাইপলাইনের গ্যাস গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার করে থাকেন। মনে করি বাংলা দেশের শতকরা ৭০ ভাগ লোক গ্যাসের চুলায় রান্না করেন। কারণ খাগড়াছড়ি, বান্দরবন শহরেও যারা বাস করেন এমন পরিবারও সিলিন্ডার গ্যাস রান্নার জন্য ব্যবহার করে থাকেন। তাহলে ৭০-১১= ৪৯ ভাগ পরিবার আমাদের দেশে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন। তাঁরা প্রতি পরিবার প্রতি সিলিন্ডার বাবদ ১২শ’ টাকা হারে (শহরে ১ হাজার হলেও) কম করে হলেও মাসে ১৮শ’ টাকা খরচ করেন গ্যাসে রান্নার কাজ করতে।
মনে করি ঢাকা শহরের সবাই খুব গরীব (!) মানুষ তাহলেই তাঁরা আগে রান্নার জন্য গ্যাস খরচ করতেন দুই চুলার জন্য ৮ শ’ টাকা আর এখন করবেন ৯৭৫ টাকা। অর্থাৎ ১৭৫ টাকা বেশি। তাহলে গ্রামের যারা সিলিন্ডার গ্যাসে রান্না করেন তাঁরা মাসে কম করে হলেও ১৮০০-৯৭৫= ৮২৫ টাক বেশি খরচ করে আসছেন, এখন আরও বেশি করবেন। সেটা না হিয় বাদ থাক, পুরাতন হিসেব নিয়েই থাকি। আসলেই গ্রামের বড়লোকেরা (!) (বাম নেতারা যা বাস্তবে মনে করেন) শহরের গরীবদের তুলনায় মাসে ৮২৫ টাকা বেশি খরচ করেন।
এবার আসি গ্রাম আর শহরের মানুষের আয়ের হিসেবে। গ্যাস আছে এমন শহরের রিকশাওয়ালাদের আয় কম করে হলেও ১৮ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা প্রতি মাসে। ঢাকা শহরের কোন কোন এলাকায় রিকশাওয়ালাদের মাসিক আয় ৩৫ হাজার টাকার কম নয়। ধরে নিই পাইপলাইনে গ্যাস থাকা শহরের সবাই খুব গরীব তাও তাঁরা মাসে পরিবার প্রতি ১ হাজার টাকার মোবাইল কলের জন্য মানে জরুরী কথা বা গল্প বা নেট চালিয়ে খরচ করেন। কিন্তু সেই তুলনায় গ্রামের মাঝারী বা প্রান্তিক চাষিদের বাৎসরিক আয় হিসেবে নিলে তাঁদের গড় মাসিক আয় ২০ হাজার টাকার অনেক কম। কারণ ক্রি পণ্যের দাম কি তা সবাই জানেন এটা বলার প্রয়োজন নেই। আর যারা গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেন তাঁরা আমার এই কথার সত্যতা স্বীকার করবেন, যদি বাম না হন! গ্রামে আয় রোজগার খুব কমে যাচ্ছে বলেই শহর-নগর হচ্ছে জনারণ্য, গ্রামের মানুষ দলে দলে শহরে মাইগ্রেট করছেন, কাজের জন্য, বেঁচে থাকার খাবারের জন্য।
বড় বড় শহরের বসবাসকারী লোকেরা কি সত্যিই এতো গরীব যে তাঁদের স্বার্থ রক্ষায় ‘গরীবের স্বার্থ রক্ষার দোলগুলো’ শহরের পাইপলাইনের গ্যাসের নাম বাড়ানোর প্রতিবাদে হরতাল ডেকেছে! নাকি এটা বড়লোকদের স্বার্থ রক্ষার দালালী! গ্রামের একজন গরীব চাষি বললেন, এজন্যই বামরা রাজনৈতিক দল হিসেবে আস্তে আস্তে হাওয়ায় মিলিয়া যাচ্ছে। এভাবে বড়লকেদের চামচামি করে চললে কয়েক বছর পরে বাম দল খুঁজতে মাইক্রোস্কোপ লাগবে। আমাদের মত দেশে মিথ্যা অজুহাত যারা বড় লোকের দালালী করে সেই সব বাম দলদের।
এটা আইটির যুগ, তাই গ্রামের লোকেরাও কম বেশি প্রয়োজনীয় তথ্য জানেন যাতে তাঁদের স্বার্থ আছে। গ্রামের সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারকারীরা আশা করেছিলেন, বাম দলেরা সিলিন্ডার গ্যাসের দামে ভর্তুকির জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাবে, আন্দোলন করবে, কিন্তু ঘটনা তো উল্টা। আসলে বামেরা বড় লোকের স্বার্থে হরতাল ডেকেছে, গরীবের নাম ভাঙ্গিয়ে। পরিবহণ, ক্ষুদ্র ঋণ, সামাজিক ব্যবসা, ইত্যাদি সব খাতেই বাম নেতারা এমনই করেন, দুই একজন সত্যিকারের ত্যাগী লোক বাদে। এটাই তাঁদের আসল চরিত্র।
বিশ্ব বাজারে গ্যাসের দাম কমার হিসেবের যে শুভঙ্করের ফাঁকি নিয়ে তাঁরা লাফাচ্ছেন, সেটা নিয়ে না হয় আরেক দফায় বলা যাবে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১৫ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১২ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক অভাবনীয়, অনন্য এবং যুগান্তকারী একটি মডেল। শিশু স্বাস্থ্য, মাতৃ স্বাস্থ্য এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। নবজাতকের মৃত্যু, মাতৃ মৃত্যু কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনুসরণ শুরু করেছে। গত বছর ১৭ মে কমিউনিটি ক্লিনিক ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ সারা বিশ্বের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’।
আজকে আমরা ১৭ মে নিয়ে কথা বলছি। যেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আবার গত বছর এই দিনে তাঁর চিন্তা প্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিককে জাতিসংঘ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, উন্নয়নশীল বাংলাদেশের কথা বলছি, যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, একদিন উন্নত বাংলাদেশ হব বলে স্বপ্ন দেখছি এই সবকিছু শেখ হাসিনার স্বপ্ন, শেখ হাসিনার ইনিশিয়েটিভ। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৭৮১ সালে পলাশি যুদ্ধে ইতিহাসের ঘৃণিত সেনাপতি মির্জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজ উদ্দৌলার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ২০০ বছরের গোলামী আমাদের ললাটে এসেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও বাঙালী এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়নি। যার পটভূমিতে বীরদর্পে আবির্ভূত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ থেকে ৭৫’ বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে স্বাধীনতার লাল পতাকা উড়েছিল বাঙালী আশায় বুক বেধেছিল।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বিয়োগান্তের ঘটনায় জাতি ছিল দিক নির্দেশনাহীন। নারকীয় এই ঘটনায় জনগণ হয়ে পড়েন দিশেহারা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার কোন শক্তি সাহস ছিল না। দলের অনেক বড় বড় নেতাও ছিলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ধানমন্ডির ৩২ বাড়ি ছিল কবরের নীরবতা। সমগ্র জাতি তখন অন্ধকারে। সামরিক বুটে পিষ্ঠ গণতন্ত্র। নির্বাসনে সংবিধান আর মানুষের মৌলিক অধিকার। বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি বঙ্গবন্ধু নাম উচ্চারণ ছিল নিষিদ্ধ।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মৌলিক চরিত্রকেই বদলে ফেলা হয়। বিশেষ করে পাকিস্তানি ধারায় সামরিক শাসনের সংস্কৃতির প্রবর্তন ঘটে দেশে। সাম্প্রদায়িকতা ফিরে আসে রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে। একের পর এক স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা ঘটতে থাকে দেশে। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমন প্রতিকূল সময় ১৯৮১ সালের ১৭ মে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্নাত মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন বাঙালির মুক্তির মহানায়কের যোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা।