নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৪ এএম, ১৬ জুলাই, ২০১৯
যেই দেশটা ক্রিকেট আবিষ্কার করলো, তাদেরই একটা বিশ্বকাপ শিরোপা নেই! এর থেকে বড় আফসোস আর কি হতে পারে? এই ৪৪ বছরে যেই অভাবটা পারেনি কেউ মেটাতে, সেই হতাশাটা সেষ হল ২০১৯ এ এসে। ২০১৫ তে যেই দলটা বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল গ্রুপপর্বে, সেই দলটা প্রথমবারের মতন স্পর্শ করলো বিশ্বকাপ, তাও মাত্র চার বছরের ব্যবধানে। মাত্র চার বছরে একটি দল বদলে নিয়েছে নিজেদের, বদলে ফেলেছে ক্রিকেটের ধরন। সেই বদলে যাওয়া ইংলিশ ক্রিকেটের পিছনের লোকটার নাম ট্রেভর বেলিস। একজন অস্ট্রেলিয়ান। একজন পর্দার আড়ালের নায়ক।
অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সেমি-ফাইনাল জয়ের পর ইংলিশ ক্রিকেটাররা যখন উচ্ছ্বাসে ভেসে যাচ্ছেন, বেশ বিরক্ত হয়েছিলেন বেলিস। এজবাস্টনে সেদিন দলের সবাইকে ডেকে নিলেন ড্রেসিং রুমে। নিজের হ্যাট খুলে শান্ত কিন্ত গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, ‘ইংল্যান্ডের কোচ হয়ে নয়, আমি তোমাদেরকে এখন একটা কথা বলব অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে। একটা সেমি-ফাইনাল জিতেই তোমরা মনে করছো কাজ হয়ে গেছে? এখনও কিছুই জেতোনি তোমরা।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা ঘটনাটি একটি নমুনা মাত্র। গত চার বছরের ধারাবাহিকতার অংশ। ইংলিশ ক্রিকেটারদের প্রতিভা, সামর্থ্য, বেলিসের পরিকল্পনা ও ম্যান-ম্যানেজমেন্টে নিজস্ব ঘরানা এবং অস্ট্রেলিয়ান মানসিকতার ছোঁয়া, সব মিলিয়েই এসেছে ইংল্যান্ডের প্রথম বিশ্ব শিরোপা।
বেলিসের কোচিংয়ের ধরন ও ঘরানা আর মর্গ্যানের নেতৃত্ব, দলের মানসিকতায় বদল, সব মিলিয়ে এসেছে এই সাফল্য। বেলিস বরাবরই কথা কম, কাজ বেশিতে বিশ্বাসী। তার মূল মন্ত্র, বিশ্বাস, আস্থা ও স্বাধীনতা।
যে ক্রিকেটারদের তিনি মনে করেছেন ইংল্যান্ডের জন্য সাফল্য বয়ে আনতে পারে, তাদের ওপর ভরসা করেছেন। সেই ভরসা তাদের মনেও গেঁথে দিয়েছেন। তাদেরকে স্বাধীনতা দিয়েছেন নিজেকে মেলে ধরতে। ভয়ডরহীন খেলতে। বরাবরই চেয়েছেন ক্রিকেটারদের ওপর থেকে চাপ সরিয়ে তাদের মুক্ত মনে খেলতে দিতে।
ক্রিকেটারদের সঙ্গে খুব বেশি কথা অবশ্য তিনি বলেন না। তবে যেটুকু বলেন, সোজাসাপ্টা, সরল ও সরাসরি। যেটুকু দরকার। কখনোই তিনি দলের সাফল্যের কৃতিত্ব সেভাবে নিতে চাননি, ব্যর্থতার সময় দায়িত্ব নিতে পিছপা হননি। মর্গ্যান ও তার ঘরানা প্রায় এক বিন্দুতে মিলে যাওয়ায় সহজ হয়েছে কাজ।
নিজের ধরনে তিনি সফল কোচিং ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই। খেলোয়াড়ী জীবনে ছিলেন আগ্রাসী ব্যাটসম্যান। পরিচিত ছিলেন কাভারে দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের জন্যও। জন্ম নিউ সাউথ ওয়েলসে, অস্ট্রেলিয়ার এই রাজ্য দলটির হয়েই খেলেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে ৯৯২ রান করে রাজ্যের সেরা ক্রিকেটার মনোনীত হয়েছিলেন। তবে জাতীয় দলের কাছে সেভাবে কখনোই যেতে পারেনি। ৫৮ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ার শেষ হয় ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে।
এরপর তিনি নিউ সাউথ ওয়েলসের ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন, কোচিং করিয়েছেন রাজ্যের দ্বিতীয় একাদশকে। ২০০৪-০৫ মৌসুমে স্টিভ রিক্সন চলে যাওয়ার পর দায়িত্ব পান মূল রাজ্য দলের। সাফল্য ধরা দেয় দ্রুতই। জিতে নেন শেফিল্ড শিল্ড। পরের মৌসুমে তার কোচিংয়ে নিউ সাউথ ওয়েলস চ্যাম্পিয়ন হয় সীমিত ওভারের টুর্নামেন্টে।
২০০৭ বিশ্বকাপের পর টম মুডি শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব ছেড়ে দিলে সেই বছরই লঙ্কানদের দায়িত্ব পান বেলিস। তার কোচিংয়ে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে দুই নম্বরে উঠে আসে শ্রীলঙ্কা, এখনও যা লঙ্কানদের সেরা সাফল্য। ২০১১ বিশ্বকাপে তার কোচিংয়ে দল ওঠে ফাইনালে।
বিশ্বকাপের পর লঙ্কানদের দায়িত্ব ছেড়ে ফিরে যান অস্ট্রেলিয়ায়। এবারও গিয়েই পান সাফল্য। ২০১১-১২ বিগ ব্যাশে তার কোচিংয়ে শিরোপা জেতে সিডনি সিক্সার্স। আইপিএলে প্রত্যাশিত সাফল্য পেতে যখন ধুঁকছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স, বেলিস দায়িত্ব নিয়েই তাদের শিরোপা উপহার দেন ২০১২ সালে। নিউ সাউথ ওয়েলস আবার শেফিল্ড শিল্ড জেতে তার কোচিংয়ে, ২০১৩-১৪ মৌসুমে।
২০১৫ বিশ্বকাপের পর দায়িত্ব নেন ইংল্যান্ডের। পাল্টে দেন ইংল্যান্ডের ওয়ানডে দলের চিরায়ত চরিত্র। পরিণত করেন আগ্রাসী, সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত একটি জয়ী দলে। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফাইনালেও উঠেছিল ইংল্যান্ড তার কোচিংয়ে। বেন স্টোকসের চার ছক্কা হজমে সেবার শিরোপা পাওয়া হয়নি। এবার অনেক নাটকীয়তার পর সেই ইংল্যান্ড জিতল আরও বড় বিশ্বকাপ। স্টোকস হলেন নায়ক। বেলিস নেপথ্যের নায়ক। আরও একবার সফল। ক্রিকেটের কাছে ইংল্যান্ডের যেমন এটি পাওনা ছিল, বেলিসের জন্য যেন ছিল অবধারিত। সাফল্যের সঙ্গেই তো তার বসবাস!
এখন তিনি ইংল্যান্ডের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী কোচ। এবার অ্যাশেজ জিতলে, হয়তো বলতে হবে ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সফলতম কোচ। তার সঙ্গে ইংল্যান্ডের চুক্তি এই অ্যাশেজ পর্যন্তই। ফাইনালের আগেই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বিশ্বকাপ ও অ্যাশেজ জিতলেও চুক্তি নবায়ন করবেন না। চার-পাঁচ বছরের বেশি টানা কোনো দলে কাজ করা তার ধরনে নেই।
এরপর জীবন তাকে যেখানেই নিয়ে যাক, ইংল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসে নিজের জায়গা পাকা করেই ফেলেছেন। ইংলিশ ক্রিকেটে অমর হয়ে থাকবেন একজন অস্ট্রেলিয়ান।
বাংলা ইনসাইডার/এসএম
মন্তব্য করুন
বেশ জাকজমকপূর্ণভাবেই আয়োজন করা হয়েছিল আইপিএলের ১৭তম আসরের। যেখানে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংসের শুরুটাও হয়েছিল দারুণ। আসরের শুরু থেকেই নিজেদের প্রথম ছয় ম্যাচে চার জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ওপরের দিকেই ছিল তারা। তবে শেষ দিকে এসে যেন ছন্দ হারিয়ে ফেলে ঋতুরাজ গায়কোয়াডের দল। যার জন্য প্লে-অফের দৌড় থেকেও ছিটকে গেছে তারা।
শনিবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে শেষ ওভারে তাদের জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে ৩৫ রান। তবে রান রেটের হিসেবে ১৭ রান তুলতে পারলে প্লে-অফে জায়গা হতো চেন্নাইয়ের। কিন্তু সেটি করতে পারেনি তারা। মার্ক দয়ালের সে ওভার থেকে তোলে মোটে ৭ রান। এতে হারের পাশাপাশি রান রেটের হিসেবে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা।
ম্যাচ হেরে বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে পুরো মৌসুম না পাওয়ার আক্ষেপ ঝরল চেন্নাইয়ের অধিনায়কের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। পাথিরানার ইনজুরি, তারপর ফিজের না থাকাটা। এরপর পাথিরানা আসলো, দেশে ফিরে গেল, ফিজকেও আমরা হারিয়েছি। এরকম চলতে থাকলে স্কোয়াডে ভারসাম্য আনাটা কষ্ট। ম্যাচের জন্য একাদশ বাছাইও কঠিন হয়ে যায়। পুরো আসরে যেভাবে চোট, ক্রিকেটারদের না পাওয়ার সঙ্গে আমরা লড়েছি তাতে ১৪ ম্যাচে ৭ জয় খারাপ কিছু নয়।’
মুস্তাফিজ আর পাথিরানাকে চেন্নাইয়ের সম্পদ উল্লেখ করে রুতুরাজ বলেন, ‘আমাদের সামনের সারির দুজন বোলার ছিল না। যারা আমাদের জন্য অনেক বড় সম্পদ ছিল। কনওয়েকে আমরা শুরুতে পাইনি। তিন জন মূল ক্রিকেটারের না থাকাটা বড় ধরনের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। চেন্নাইয়ের ম্যানেজমেন্ট, স্টাফরা সবাই পুরো আসর জুড়ে আমাদের অনেক সমর্থন করেছে।’
প্রসঙ্গত, এবারের আসরে ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। তবে জাতীয় দলের ব্যস্ততার কারণে দেশে ফিরতে হয় তাকে। অন্যদিকে ইনজুরির কারণে নিজ দেশ শ্রীলংকায় ফিরতে হয় মাথিশা পাথিরানাকেও।
Indian Premier League IPL T20 আইপিএল মুস্তাফিজুর রহমান
মন্তব্য করুন
আইপিএলের ১৭তম আসরের প্লে-অফ। ইতোমধ্যেই নিশ্চিত হয়েছিল তিন দলের শেষ চার। বাকি ছিল মাত্র একটি দল। আর সেই শেষ দল হিসেবে লড়াই জমেছিল চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর। যেখানে প্লে অফে ওঠার জন্য চেন্নাই সুপার কিংসের দরকার ছিল শুধু জয়। অন্যদিকে, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর দরকার ছিল অঙ্ক কষে জয়। প্লে অফের অঙ্ক মিলিয়ে আইপিএলের শেষ চারে পৌঁছে গেছে বিরাট কোহলিরা। বিপরীতে বিদায় নিয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনিরা।
ভারতীয় ক্রিকেটের দুই তারকার লড়াই হিসেবে আগেই চিহ্নিত হয়ে গিয়েছিল শনিবারের ম্যাচ। ক্রিকেটপ্রেমীরা কার্যত দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। ইয়াশ দয়াল চেন্নাইয়ের ইনিংসের শেষ বলটি করতেই কোহলির পাগলাটে উচ্ছ্বাস দেখলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
শুধু উচ্ছ্বাস নয়, আনন্দে-আবেগে চোখের কোণও ভিজে গেল কোহলির। গ্যালারিতে কাঁদলেন তার স্ত্রী আনুশকা শর্মাও। কাঙ্ক্ষিত জয় আসতেই চিন্নাস্বামীর মাঠে কোহলির দৌড়ের মধ্যে ছিল মুক্তির ছোঁয়া।
একটা সময় প্রথম দল হিসেবে আইপিএলের লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল আরসিবির। সেখান থেকে টানা ছয় ম্যাচে জয়ের পর কোহলি যেন ডানা মেলে উড়লেন মাঠে। মুদ্রার অন্য পিঠও চোখ এড়ায়নি ক্রিকেটভক্তদের।
দলকে আইপিএলের প্লে অফে তুলতে মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন ৪২ বছরের ধোনি। ২০তম ওভারের প্রথম বলে দয়ালকে মারা বিশাল ছক্কাটায় তার পরিচিত সিংহ মেজাজ ধরা পড়েছিল।
ধোনির ছক্কায় ব্যাঙ্গালুরুর শিবিরে যেমন শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তেমনই আশার আলো জ্বলেছিল চেন্নাইয়ের ডাগআউটে। স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের মুখ চকচক করছিল ধোনির ছক্কার পর।
পরের বলে আবার ছক্কা মারার চেষ্টা করতে গিয়ে বাউন্ডারির লাইনের কাছে থাকা স্বপ্নিল সিংহের হাতে ধরা পড়েন ধোনি। মুহূর্তে বদলে গেল দুই শিবিরের ছবি। হতাশায় ব্যাটে ঘুষি মারলেন ধোনি। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হয়তো তখনই ভবিতব্য পড়ে ফেলেছিলেন।
ধোনি যখন হতাশ হয়েছেন, তখনই উচ্ছ্বসিত দেখিয়েছে কোহলিকে। আবার কোহলির হতাশায় স্বস্তি পেয়েছেন ধোনি। টান টান ম্যাচে ক্রমাগত বদলেছে দুই ক্রিকেটারের মুখের অবয়ব। তাদের সঙ্গে বদলেছে চিন্নাস্বামীর আবহ। ক্রিকেট তো এমনই!
মুস্তাফিজ চেন্নাই সুপার কিংস আইপিএল মহেন্দ্র সিং ধোনি
মন্তব্য করুন
অবশেষে সমাপ্তি
হলো মার্কো রয়েস-বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের দীর্ঘ এক যুগের সম্পর্ক। বয়স ভিত্তিক দলের সাথে
সম্পর্ক হিসেব করলে এই সম্পর্কের স্থায়িত্ব আরও বেশি। হিসেব করলে এই সম্পর্কের সময়
দাড়ায় ২১ বছর। পৃথিবীর সব সম্পর্কেরই শেষ আছে। তেমনি শেষ হয়েছে মার্কো রয়েসের ডর্টমুন্ডের
সম্পর্কও। আর তার এই বিদায় হয়েছে রাজকীয় ভাবে।
ডর্টমুন্ডের
সাথে রিউসের এই পথ চলার সময়ে কতো কিছুই না পাল্টেছে। কত ফুটবলার তারকা হয়েছেন, নিজের
শৈশবের ক্লাব থেকে পাড়ি জমিয়েছেন অন্য ক্লাবে, বহু চড়াই-উৎরায় পাড় করে অনেক ক্লাব উঠে
এসেছে লিগের শীর্ষ স্থানে, কেউ আবার নিজেদের ঐতিহ্য হারিয়ে নেমে গেছে তলানিতে। কিন্তু
এই সময় বদলায়নি খালি মার্কো রিউসের ঠিকানা।
ইউরোপের বহু
নামি-ক্লাব থেকে অফার পেলেও ছাড়েনি ক্লাব। তাই ফ্যানদের কাছ থেকে ‘লয়ালটির’
ট্যাগও পেয়েছে সে।
এর আগে ২০১২
সালে ডর্টমুন্ডের হয়ে মূল দলে অভিষিক্ত হয় রয়েস। এরপর কেটে গেছে ১২ টি মৌসুম। এই ১২
মৌসুমে ডর্টমুন্ডের উত্থান-পতনের সাক্ষী হয়েছেন রয়েস। অবশেষে গত ৩ মে আনুষ্ঠানিকভাবে
এই জার্মান তারকা ঘোষণা দেন এই মৌসুমেই ক্লাব ছাড়বেন তিনি।
গতকাল (১৮ মে)
ডর্টমুন্ডের ইদুনা পার্কে ডার্মস্টাটের বিরুদ্ধে খেলতে নামে ডর্টমুন্ড। এই ম্যাচটি
কাগজে-কলমে গুরুত্বহীন হলেও ডর্টমুন্ড সমর্থকদের জন্য ছিল ভিন্ন। কারণ এই ম্যাচের মধ্য
দিয়েই ইদুনা পার্কে হলুদ জার্সি পড়ে শেষ বারের মতো দেখা যাবে ক্লাবের ‘লয়াল বয়’
মার্কো রয়েস। ম্যাচের শুরুতেই তাকে দল থেকে দেওয়া হয় ‘গার্ড অব হনার’।
ম্যাচ শেষে তাকে অশ্রু সিক্ত বিদায় দেন ডর্টমুন্ড ফ্যান ও খেলোয়াড়রা।
ইদুনা পার্কে
নিজের শেষ ম্যাচটি অবশ্য রাঙ্গিয়ে নিয়েছে রয়েস। ম্যাচের ৩৮ তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে
থেকে এক অসাধারণ ফ্রি কিকের মাধ্যমে গোল করেন রয়েস। শেষ পর্যন্ত ম্যাচে ৪-০ তে ডার্মস্টাটকে
বিধ্বস্ত করেছে ডর্টমুন্ড। দলের পক্ষে অন্য তিনটি গোল করেন জুলিয়ান ব্রান্ডট, মালেন
ও ইয়ান মাতসেন।
ডর্টমুন্ডের
হয়ে ৪২৪ ম্যাচে খেলেছেন রয়েস। তাতে ১৬৮ গোল করার পাশাপাশি অ্যাসিস্ট করেছেন ১২৮টিতে।
বরুশিয়ার হয়ে দুটি জার্মান কাপ এবং তিনটি জার্মান সুপার কাপ জিতেছেন রয়েস।
মার্কো রয়েস ডর্টমুন্ড বুন্দেসলিগা ইদুনা পার্কে
মন্তব্য করুন
জেতার জন্য শেষ ওভারে দরকার ৩৫ রান। প্লে-অফে যেতে হলে ১৭ রানই যথেষ্ট ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের জন্য। যশ দয়ালের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে দ্বিতীয় বলেই ধোনিকে ফিরিয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন দয়াল।
গত আসরে শেষ দুই বলে ১০ রান নিয়ে চেন্নাইকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন জাদেজা। আজও একই সমীকরণ ছিল তার কাছে। কিন্তু বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি তিনি। পরপর দুই বলেই ডট দিয়ে চেন্নাইকে ডোবালেন হারের বেদনায়, আর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ভাসল প্লে-অফে ওঠার আনন্দে।
বিরাট কোহলিদের একটা সময় বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছিল অনেকেই। কিন্তু টানা ছয় ম্যাচ জিতে আসরের শেষ দল হিসেবে সেরা চারে নাম লেখালেন তারা। যা পূর্ণতা পায় চেন্নাইকে ২৭ রানে হারানোর ফলে।
বেঙ্গালুরুর আকাশে বৃষ্টি নেমেছে ঠিকই, কিন্তু খেলায় সেভাবে জটিলতা তৈরি হলো না। মাঠে গড়াল সেই ৪০ ওভারই। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ২১৮ রান জমা করে বেঙ্গালুরু। ফাফ দু প্লেসি ও বিরাট কোহলির উদ্বোধনী জুটি থেকেই আসে ৭৮ রান। কোহলি ফিফটি করতে না পারলেও (৪৭) পেরেছেন দু প্লেসি। কিন্তু দারুণ ছন্দে থেকেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক। ৩৯ বলে তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৫৪ রান করেন তিনি।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম বলেই অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে হারায় চেন্নাই। থিতু হতে পারেননি ড্যারিল মিচেলও। এরপর অজিঙ্কা রাহানেকে নিয়ে হাল ধরেন রাচিন রবীন্দ্র। প্রথমবার ফিফটি পাওয়া রবীন্দ্র দারুণ কিছুরই আশা জোগাচ্ছিলেন। কিন্তু ৩৭ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৬১ রানে ফেরেন এই কিউই ওপেনার। ১৪ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে আবারও বিপাকে পড়ে চেন্নাই। এবার ম্যাচের মোমেন্টাম বদলানোর দায়িত্ব নেন রবীন্দ্র জাদেজা। ধোনিকে নিয়ে চেন্নাইকে প্লে-অফে নেওয়ার মিশনে নামেন তিনি। তার ব্যাটিং রীতিমত ভড়কে দেয় বেঙ্গালুরুকে। তাই শেষ ওভারের আগপর্যন্তও ম্যাচ ঝুলছিল সমান পাল্লায়।
চেন্নাইয়ের জন্য কোনোমতে ১৮ রান বা এর কমে হারলেই প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে যেত। কেননা ১৪ পয়েন্ট আগেই অর্জন করে রেখেছে তারা। যে কারণে রানরেটের মারপ্যাচে সমীকরণ ছিল ভিন্ন। বেঙ্গালুরুর অবশ্য জয়ের পাশাপাশি রানরেটের দিকেও খেয়াল রাখতে হয়েছে। শেষ ওভারের আগে চেন্নাই জয় থেকে ৩৫ রান দূরে থাকলেও আতঙ্ক ছিল তাদের মনে। দু প্লেসি বল তুলে দেন যশ দয়ালের হাতে। বাঁহাতি এই পেসারকেই গত আসরে শেষ ওভারে ৫ ছক্কা হাঁকিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছিলেন রিংকু সিং।
এবারও প্রথম বলে ছক্কা হজম করেন দয়াল। কিন্তু পরের পাঁচটি বল সুনিপুণভাবে করে তিনি দেখালেন শেষ ওভারে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা তারও আছে। আর জাদেজা পুড়লেন আফসোসে। ২২ বলে ৪২ রানের তার অপরাজিত ইনিংসটি জলেই গেল। ধোনির ১৩ বলে ২৫ রানের ইনিংসটিও কাজে
এলো না শেষ পর্যন্ত।
১৪ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে চারে থেকে প্লে-অফ নিশ্চিত করল বেঙ্গালুরু।
চেন্নাই সুপার কিংস বেঙ্গালুরু আইপিএল কোয়ালিফায়ার
মন্তব্য করুন
হাতেগোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন। এর পরেই যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে শুরু হতে যাচ্ছে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের সেই মহাযুদ্ধ। যেখানে হাতের কব্জির জোর যার বেশি লড়াইয়ের আধিপত্যটাও তারই দখলে।
আসন্ন জুন মাসের ১ তারিখ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। ক্রিকেট পাড়ায় বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্ট কে ঘিরে ইতোমধ্যেই একটা সাজ সাজ রব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্যান্য বারের তুলনায় দলের সংখ্যা ও সমীকরণ ভিন্ন হওয়ায় এবারের আসনটা বেশ জাঁকজমক হবে বলেই ধারণা করছেন ক্রিকেট বোদ্ধারা।
তবে টুর্নামেন্টটি এখনও শুরু না হলেও টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালিস্ট-ফাইনালিস্ট কারা হবে অথবা কার হাতে উঠতে পারে এবারের শিরোপা, এ নিয়ে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। ক্রিকেট বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সাধারণ ভক্ত- সকলেই যেন দল ও তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স অনুযায়ী নিজেদের প্রেডিকশন সাজিয়ে ফেলেছেন।
এই যেমন উসেইন বোল্ট। ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের অন্যতম সেরা এই দৌড়বিদের মতে, এবারের বিশ্বকাপ শিরোপা উঁচিয়ে ধরবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এখন পর্যন্ত দুইবার শিরোপা জিতেছে উইন্ডিজরা। তবে এখন আর টি-২০তে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই দাপটটা আর নেই। তবুও আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই ফেবারিট মানছেন বোল্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উদ্বোধনের সময় বোল্ট বলেন, 'আমি সব সময়ই আমার ঘরের দলের পক্ষে। আমাদের বড় হিটার আছে কয়েকজন। যদি সব ঠিকঠাক থাকে, তাহলে অবশ্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজ (জিতবে)।’
এছাড়া কুড়ি ওভারের বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ানোর আগেই বিশ্বকাপের সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন বাছাই করেছেন উইন্ডিজের কিংবদন্তি কার্টলি অ্যামব্রোস। তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, ছেলেরা ধারাবাহিক ও স্মার্ট ক্রিকেট খেলা শুরু করলে আমরা ট্রফি জিততে পারব। এটা (বিশ্বকাপ জেতা) সহজ হবে না। তবে আমরা দুই দেশের মধ্যে একটি, যারা দুইবার শিরোপাটি জিতেছি। তাই আমরা এটাকে তিন বানানোর চেষ্টা করব। আর ঘরের মাঠে কোনো দল এই শিরোপা জিততে পারেনি। তাই ছেলেদের ভালো করার জন্য এসব অনুপ্রেরণা জোগাবে এবং আশা করি, তারা পারবে।’
তবে পাকিস্তানি কিংবদন্তি হাফিজের গলায় ভিন্ন সুর। তিনি বলেন, আমার মন বলছে পাকিস্তানকে এক নম্বরে (সেমিফাইনালের জন্য) রাখতে। যদি আমি খেলার কৌশল ও ফরমেশন নিয়ে চিন্তা করি, তবে ভারত ওয়েস্ট ইন্ডিজে তুলনামূলক ভালো খেলবে। স্বাগতিক ক্যারিবীয়রাও ভালো করবে, পাশাপাশি সমান পারফর্ম করতে পারে ইংল্যান্ড।’
বাবর আজমদের দুর্বলতা নিয়ে এই সাবেক অলরাউন্ডার বলেন, বিশ্বকাপে ভালো করার মতো সঠিক ফরমেশন এবং মাইন্ডসেট নেই তাদের। কারণ, দলে কার ভূমিকা কি সেটাও অনির্ধারিত, যার ফলে দলের কোনো নিয়ন্ত্রণও নেই।
‘এ ছাড়া ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২-২ ফল, মোটেও পাকিস্তানের পক্ষে কথা বলছে না। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, পাকিস্তান তাদের পুরো শক্তি নিয়ে খেলেছে। দুর্ভাগ্যবশত সমর্থক হিসেবে আমরা যে ফল প্রত্যাশা করেছি, সেটি আসেনি।’
বাবরদের পিছিয়ে থাকার যুক্তি দেখালেও ঠিকই তারা সেমিফাইনালে খেলবেন বলে ভবিষ্যদ্বাণী দেন হাফিজ। এ ছাড়া তার দৃষ্টিতে সেমিতে খেলতে যাওয়া বাকি তিন দল হচ্ছে- ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড।
তবে ক্রিকেট বোদ্ধাদের এমন আগাম ভবিষ্যৎবাণী অথবা বার্তার তারপর আসলেই কে হচ্ছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের চ্যাম্পিয়ন তা নিয়ে রীতিমতো আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কন্ডিশন মানিয়ে নিয়ে সেখানকার মাটিতে নিশ্চিতভাবেই এশিয়ার থেকে ইউরোপের দলগুলো ভালো করবে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বাড়তি সুযোগ পাবে ভারত-পাকিস্তান সহ বেশ কিছু দল। তাই এবার দেখার পালা আসলেই কারা হচ্ছেন এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্ট, ফাইনালিস্ট এবং চ্যাম্পিয়ন।
মন্তব্য করুন
বেশ জাকজমকপূর্ণভাবেই আয়োজন করা হয়েছিল আইপিএলের ১৭তম আসরের। যেখানে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংসের শুরুটাও হয়েছিল দারুণ। আসরের শুরু থেকেই নিজেদের প্রথম ছয় ম্যাচে চার জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ওপরের দিকেই ছিল তারা। তবে শেষ দিকে এসে যেন ছন্দ হারিয়ে ফেলে ঋতুরাজ গায়কোয়াডের দল। যার জন্য প্লে-অফের দৌড় থেকেও ছিটকে গেছে তারা।
আইপিএলের ১৭তম আসরের প্লে-অফ। ইতোমধ্যেই নিশ্চিত হয়েছিল তিন দলের শেষ চার। বাকি ছিল মাত্র একটি দল। আর সেই শেষ দল হিসেবে লড়াই জমেছিল চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর। যেখানে প্লে অফে ওঠার জন্য চেন্নাই সুপার কিংসের দরকার ছিল শুধু জয়। অন্যদিকে, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর দরকার ছিল অঙ্ক কষে জয়। প্লে অফের অঙ্ক মিলিয়ে আইপিএলের শেষ চারে পৌঁছে গেছে বিরাট কোহলিরা। বিপরীতে বিদায় নিয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনিরা।
অবশেষে সমাপ্তি হলো মার্কো রয়েস-বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের দীর্ঘ এক যুগের সম্পর্ক। বয়স ভিত্তিক দলের সাথে সম্পর্ক হিসেব করলে এই সম্পর্কের স্থায়িত্ব আরও বেশি। হিসেব করলে এই সম্পর্কের সময় দাড়ায় ২১ বছর। পৃথিবীর সব সম্পর্কেরই শেষ আছে। তেমনি শেষ হয়েছে মার্কো রয়েসের ডর্টমুন্ডের সম্পর্কও। আর তার এই বিদায় হয়েছে রাজকীয় ভাবে।
হাতেগোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন। এর পরেই যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে শুরু হতে যাচ্ছে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের সেই মহাযুদ্ধ। যেখানে হাতের কব্জির জোর যার বেশি লড়াইয়ের আধিপত্যটাও তারই দখলে। আসন্ন জুন মাসের ১ তারিখ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। ক্রিকেট পাড়ায় বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্ট কে ঘিরে ইতোমধ্যেই একটা সাজ সাজ রব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্যান্য বারের তুলনায় দলের সংখ্যা ও সমীকরণ ভিন্ন হওয়ায় এবারের আসনটা বেশ জাঁকজমক হবে বলেই ধারণা করছেন ক্রিকেট বোদ্ধারা।