নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৭ অগাস্ট, ২০১৯
আবার সরকারের উপদেষ্টা এবং মন্ত্রীদের লড়াই শুরু হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে নানা অস্বস্তিতে ভুগছে। এই অস্বস্তির মধ্যে নানারকম সমস্যা দৃশ্যমান হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু, গুজব সন্ত্রাস এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যে সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টাদের মধ্যে মতবিরোধের খবর পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে এই মতবিরোধ প্রকাশ্য হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে একটি শক্তিশালী উপদেষ্টামণ্ডলী গঠন করেছিলেন। সেই সময়ে উপদেষ্টামণ্ডলীর কারো কারো ক্ষমতা মন্ত্রীদের চেয়েও অনেক বেশিই ছিল। এ নিয়ে সংসদে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নও উঠেছিল। সেসময় উপদেষ্টাদের কর্তৃত্ব এবং ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। উপদেষ্টারা শপথ না নিয়ে কেন মন্ত্রিসভার বৈঠকে কেন উপস্থিত থাকেন সেই প্রশ্নও উঠেছিল জাতীয় সংসদে। এরপর উপদেষ্টাদের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সীমিত করা হলেও উপদেষ্টাদের ক্ষমতা কমেনি। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির কর্তৃত্ব কমিয়ে ফেলা হয়, উপদেষ্টামণ্ডলীর ক্ষমতাও সংগঠিত করা হয়। এসময় উপদেষ্টামণ্ডলীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী উপদেষ্টা হিসেবে পরিচিত এইচ টি ইমামকে জনপ্রশাসন উপদেষ্টা থেকে সরিয়ে রাজনৈতিক উপদেষ্টা করা হয়। দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীকে স্বপ্রতিভ হতে দেখা গেছে।
তৃতীয় মেয়াদে এসে আওয়ামী লীগ আবার প্রথম মেয়াদের মতো মন্ত্রিসভা থেকে হেভিওয়েটদের বাদ দেয়। মন্ত্রিসভা গঠিত হয় আনকোরা নতুনদের নিয়ে। এর পরপরই দেখা যাচ্ছে যে উপদেষ্টামণ্ডলীদের প্রভাব বেড়ে গেছে। আগে মন্ত্রী এবং উপদেষ্টাদের বিরোধ কখনো প্রকাশ্য ছিল না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ১৯ জুলাই চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে ক্রমশ মন্ত্রী এবং উপদেষ্টাদের বিরোধ প্রকাশ্য হতে শুরু করেছে। এবং সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে মন্ত্রীদের সঙ্গে উপদেষ্টাদের কর্তৃত্বের লড়াই ভালোই জমে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে দলের দ্বিতীয় প্রভাবশালী নীতিনির্ধারক ব্যক্তি হিসেবে ওবায়দুল কাদের ছিলেন কিন্তু ওবায়দুল কাদেরের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা। প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টাকে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সরব দেখা গেছে। তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সরব হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, ওবায়দুল কাদের যেমন রাস্তায়, জনসভায় দলের নেতাকর্মীদ্দের এই সংকটে মাঠে নামতে উদ্বুদ্ধ করছেন অন্যদিকে প্রশাসন আম্লাতন্ত্রের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছেন এইচ টি ইমাম। কিন্তু দুজনের মধ্যে সমঝোতার অভাব স্পষ্ট বলেই একাধিক সূত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে গতকাল ওবায়দুল কাদের যেমন বলেছেন, ফটোসেশন করলে হবে না, মন্ত্রী এমপিদেরকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে কিন্তু ওইদিনই এইচটি ইমাম বলেছেন যে, ডেঙ্গু মোকাবেলায় সরকার যথেষ্ট কাজ করছে এবং সরকারের সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি, বন্যা পরিস্থিতিতে এইচ টি ইমাম এখন সকাল বিকাল অফিস করছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করছেন। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের নেতাদের নানারকম বৈঠক এবং উপদেশ দিচ্ছেন। এটা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মন্ত্রীরা খুব ভালো চোখে দেখছেন না বলে একাধিক দায়িয়্বশীল সূত্রগুলো বলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেতা বলেছেন, আবার কি তাহলে উপদেষ্টাদের কর্তৃত্ব শুরু হলো? শুধু এইচ টি ইমাম নন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীও এখন সরব। বিশেষ করে বিভিন্ন ইস্যুতে পররাষ্টমন্ত্রীর চেয়ে দূতাবাসগুলো গওহর রিজভীর সঙ্গে কথা বলতে এবং মত বিনিময় করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করছে। এটা পররাষ্টড় মন্ত্রণালয়ের পছন্দ নয়। গওহর রিজভী রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দাতাদেরকে আন্তর্জাতিক মহলে যেভাবে উপস্থাপন করছেন ঠিক একইভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পররাষ্ট্র মন্ত্রী উপস্থাপন করছেন না বলে বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা গেছে। ফলে একটা সমন্বয়ের অভাব এখানে লক্ষ করা গেছে। শুধু এটা নয় বিদ্যুৎ জ্বালানী মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী এবং উপদেষ্টার কর্তৃত্বের লড়াইয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। মন্ত্রী এবং উপদেষ্টাদের কাজের সমন্বয় যদি না হয় তাহলে প্রশাসনের কাজের গতি কমে এবং আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্য দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে সেই নির্বাচনী ইশতেহারের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া প্রলম্বিত হয় বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।