নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৩ পিএম, ২১ অগাস্ট, ২০১৯
স্বামী ছিলেন বাংলাদেশের এক নম্বর তারকা। কিন্তু তিনি নিজে সব সময় আড়ালে থেকেছেন। সেভাবে কখনোই সংবাদমাধ্যমে আসেননি। নায়ক রাজ রাজ্জাক চলে গেছেন জীবনের ওপারে। তবে তাঁর জীবনের গল্পগুলো থেকে গেছে।
কলকাতা থেকে বাংলাদেশে আসেন ১৯৬৪ সালে। বাপ্পারাজের বয়স তখন আট মাস। ঢাকায় এসে উঠলেন কমলাপুর ঠাকুরপাড়ায়। নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশ। শুরুতে এ জন্য অনেক সমস্যা হয়েছিল। অবশ্য আস্তে আস্তে সব ঠিকও হয়ে যায়। নায়ক রাজের জীবনের সত্যিকারের হিরো তার স্ত্রী। শুরুতে ছোটখাটো চরিত্র, সংসারে টানাপোড়েন। তবে হাল ছাড়েননি রাজ্জাক, হাল ছাড়তে দেননি লক্ষী। তিনি বলেন,‘আমিও মনে-প্রাণে চাইতাম, ও যেন চলচ্চিত্রে প্রতিষ্ঠা পায়। ছবিতে অভিনয় করার আগে ও আমাকে প্রায়ই বলত, চলচ্চিত্রে কাজ করতে গেলে অনেক মেয়ের সঙ্গে মিশতে হবে, অভিনয় করতে হবে, তখন তুমি কিছু মনে করবে না তো। আমি বলেছিলাম, না, কিছুই মনে করব না। তুমি কাজ শুরু করো। সে বলল, সংসারের এত ঝামেলা, আমি ব্যস্ত হয়ে গেলে তুমি এসব কীভাবে সামলাবে? আমি বললাম, এসব নিয়ে তুমি কিছু ভেবো না।’
নায়ক রাজ্জাকের যখন নাম ডাক শুরু হলো। তখন তাদের বাসা ছিল ফার্মগেটের হলিক্রস স্কুলের পাশে। লক্ষী বলেন,‘তখন অনেক মেয়ে বাড়িতে আসত ওর সঙ্গে দেখা করতে, অটোগ্রাফ নিতে। দেখতাম, ভক্তরা ওর কাপড় ছুঁয়ে দেখছে, জুতো ছুঁয়ে দেখছে। তাকে জড়িয়ে ধরছে। দেখতাম, কিন্তু কিছুই বলতাম না। আমি কখনোই তার কোনো কিছুতেই বাধা দিতাম না। বরং তাকে সাহস দিতাম। তারপর স্বাধীনতার আগে নিজেরা গুলশানের এই জায়গা কিনলাম। নিজেদের বাড়িতে (লক্ষ্মীকুঞ্জ) উঠলাম। এখনো এই বাড়িতে আছি।’
মাত্র ১৪ বছর বয়সে বিয়ে। কলকাতায় টালিগঞ্জে লক্ষীরা যে বাড়িতে থাকতেন, ঠিক সেই বাড়ির পাশেই ছিল রাজ্জাকের এক আত্মীয়র বাসা। একদিন বাড়ির গেটের সামনে দাড়িয়েছিলেন লক্ষী, তখন রাজ্জাকের পরিবারের কেউ দেখে ফেলে। তারপরই আসে বিয়ে প্রস্তাব। যেদিন দেখতে আসে সেদিনেই আংটি বদল। এর দুই বছর পর বিয়ে।
রাজ্জাকের সিনেমার বড় সমালোচক তার স্ত্রী লক্ষী। সিনেমা হলে গিয়ে ‘আগুন নিয়ে খেলা’ ছবিটি প্রথম দেখেছেন। ছবি দেখার সময় কোথাও ভালো না লাগলে সমালোচনাও করতেন। কবরীকে জড়িয়ে নানা কথা উঠলো। রাজ্জাক- কবরী জুটি ভেঙ্গে গেল। একসঙ্গে আর ছবি করছে না। একদিন লক্ষী মুখু ফুটে জিজ্ঞেস করলো আর একসঙ্গে ছবি করছো না কেন? কি হয়েছে তোমাদের মধ্যে? রাজ্জাক তখন একটি কথাই বললেন,‘ এসবের মধ্যে তুমি এসো না।’ দ্বিতীয় আর কোন কথা জিজ্ঞেস করেননি লক্ষী। যদিও রাজ্জাক-কবরী পরবর্তীতে আবারও সিনেমা করেছেন।
রাজ্জাককে হিরো ডাকতেন লক্ষী। এখন সবচেয়ে মিস করেন আগে খাটাখাটনি করে ঘরে ঢুকেই ‘লক্ষী’ বলে ডাক দিয়ে কিছু চাইতো। আমি তখন তার পিছু নিতাম। সে সারা ঘর ঘুরতো। আর আমি তার পিছনে থাকতাম।
বড় ছেলে বাপ্পা আর মেজ ছেলে বাপ্পী নিজেরাই পছন্দ করে বিয়ে করেছে। ছোটছেলে সম্রাটের বিয়ে রাজ্জাক নিজে মেয়ে পছন্দ করে দিয়েছিলেন। প্রতিদিন ভোরেই গুলশান পার্কে হাটতে যেতেন রাজ্জাক। একদিন বাড়ি এসে বললেন, হাঁটতে গিয়ে একটি মেয়েকে দেখেছে। ভারী সুন্দর! নিজে হাতে মেয়ের ছবিও তুলে এনেছে। সেই ছবি স্ত্রীকে দেখাল। ময়মনসিংহের মেয়ে। মামার বাড়ি বেড়াতে এসেছে। হিরোর ইচ্ছে, মেয়েটিকে সম্রাটের বউ করবে। তারপর মিষ্টি ও স্ত্রীকে নিয়ে মেয়ের মামার বাড়ি গেলেন। লক্ষীও সায় দিলেন।
রাজ্জাকের সঙ্গে তেমন তাকে বাইরে দেখা যেত না। এর কারণটা জানালেন,‘ সে আমাকে বাইরে নিয়ে যেতে চাইতো, কিন্তু আমার ইচ্ছে হতো না। ঘরে থাকতেই পছন্দ করি। আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতেও তেমন যাই না। কলকাতায় বাবার বাড়ি। সেখানেও নিয়মিত যাওয়া হয় না। কয়েক বছর পরপর যাই। একসময় ওর সঙ্গে মার্কেটে যেতাম, তখন ওর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। মার্কেটে গেলে দেখতাম ওর অসংখ্য ভক্ত ওকে ঘিরে ধরেছে। আমি ছেলেমেয়ে নিয়ে তখন দীর্ঘসময় দূরে দাঁড়িয়ে থাকতাম। তখন ছেলেমেয়েরা প্রায়ই বলত, আব্বুর সঙ্গে আর মার্কেটে যাব না।’
রাজ্জাকের রাগটা শেষ জীবনে একটু বেড়েছিল। আর এই রাগটা ছেলেদের উপরই বেশি ঝাড়তেন। ছেলেরা যখন তাকে না বলে বের হতেন বা দেরি করে কোনদিন বাসায় ফিরতেন, তখন রেগে যেতেন। সে কোনমতেই বুঝতে চাইতেন না ছেলেরা বড় হয়েছে।
অনেকেই তার স্ত্রী লক্ষীকে হিন্দু মনে করেন। আসলে তা নয়, তার আসল নাম খায়রুন্নেসা। বাবা আদর করে তাকে ‘লক্ষী’ বলে ডাকতেন। তার জন্মের পর বাবার ব্যবসায় অনেক উন্নতি হয়েছিল বলে লক্ষী বলে ডাকতেন।
এখন সময়টা ছেলের বউ, নাতি-নাতনিদের নিয়ে কাটে। তিনি বলেন,‘সবমিলে আল্লাহর রহমতে সুখে-শান্তিতে আছি। ছেলে ও ছেলেদের বউরা যথেষ্ট শ্রদ্ধা করে। শুধু তিনি নেই।’
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’ এর ৭৭তম
আসরে হাজির হয়েছেন বলিউডের কিংবদন্তী অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। উৎসবে চতুর্থ দিনে নাসিরুদ্দিন
শাহ’র ‘মন্থন’ সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়েছে ‘কান ক্লাসিকে’।
চার যুগ আগে ‘মন্থন’ সিনেমায়
অভিনয় করেছিলেন এই তারকা। যেটি ছিল অভিনেতার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। গুজরাটের
দুগ্ধখামারীদের ওপর কর্পোরেট আগ্রাসন ঘিরে বর্ষীয়ান নির্মাতা শ্যাম বেনেগালের ধ্রুপদি
এই সিনেমাকে সম্মান জানিয়ে এই বিভাগে ঠাই দিয়েছে উৎসব কর্তৃপক্ষ।
এই শ্যাম বেনেগালই নির্মাণ
করেছেন বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’। যেখানে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের
জনপ্রিয় অভিনেতা আরিফিন শুভ। এই অভিনেতার অভিনয় বেশ মনে ধরেছে বলিউডের বিখ্যাত এই তারকার।
নাসিরুদ্দিন শাহ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর
বায়োপিক সিনেমাটি আমি দেখেছি। খুবই ভালো সিনেমা। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বলতে হয়, শ্যাম
বেনেগালের সিনেমাটি ব্যাপকভাবে প্রদর্শিত হয়নি। কিন্তু আমি মনে করি, মূল চরিত্রে যিনি
(শুভ) অভিনয় করেছেন তিনি দারুণ করেছেন। আমি সিনেমাটি উপভোগ করেছি। সিনেমাটি দারুণ
ইনফরমেটিভ, ইন্টারেস্টিং এবং নাটকীয়।’
এ সময় বাংলাদেশে অভিনয়ের আগ্রহও
প্রকাশ করেন এই অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘আমি কখনো বাংলাদেশে সিনেমা করার অফার পাইনি। পেলে
খুব খুশি হতাম। যদিও আমি দুইবার গিয়েছি সেখানে থিয়েটারে পারফর্ম করতে। কিন্তু সিনেমাটা
করা হয়নি। বাংলাদেশের নির্মাতাদের জন্য আমার দরজা সব সময় খোলা।’
ঢাকা সিনেমা অভিনয় নাসিরুদ্দিন শাহ
মন্তব্য করুন
বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ
খান। সিনেমায় অভিনয়ের ক্ষেত্রে এক পয়সাও নেন না বলিউডের এই বাদশাহ। ভারতের সাংবাদিক
রজত শর্মার ‘আপ কি আদালত’ অনুষ্ঠানে এসে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। যেই ভিডিও ইতোমধ্যেই
ভাইরাল।
ভিডিওটিতে শাহরুখের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, ‘সিনেমায় অভিনয়ের জন্য আপনার পারিশ্রমিক কেমন?’। উত্তরে শাহরুখ বলেন, ‘আমি বিভিন্ন শো’র জন্য পারিশ্রমিক নেই, এন্ডোর্সমেন্টের জন্য নেই, লাইভ শো’র জন্য নেই। কিন্তু কখনোই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পারিশ্রমিক নেই না। গেল ২০ বছরে কোনো নির্মাতা এই কথা বলতে পারবে না যে, আমি সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তাদের কাছে অর্থ চেয়েছি। আমি নির্মাতাদের বলি- আপনারা সিনেমায় আমাকে নিন। যদি লাভ হয় আমাকে দিয়েন। না হলে আমাকে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’
এমন উত্তরের পর তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘তাহলে তার আয়ের উৎস কী?’। এ সময় অভিনেতা আরও বলেন, ‘সিনেমায় অভিনয়ের জন্য আমি পারিশ্রমিক না নিলেও আমি সিনেমার বাইরে এত কাজ করি যে, তা দিয়েই আমার সংসার চলে যায়। কারণ সিনেমায় অভিনয় আমার কাছে পূজা করার মতো। এই কাজ করে আমি কখনোই পারিশ্রমিক নেই না।’
সিনেমা অভিনয় পারিশ্রমিক শাহরুখ খান
মন্তব্য করুন
বিশিষ্ট ডা. খোদেজা বেগম মৃধা মৃত্যুবরণ করেছেন। গত রবিবার (১২
মে) রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি
(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
প্রয়াত ডা. খোদেজা বেগম মৃধা কবি, সাহ্যিতিক ও গীতিকার জোবেদা খাতুনের
জেষ্ঠ্য কন্যা ছিলেন। মৃতকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
মরহুমার ভাই তবলা বাদক জাহাঙ্গীর মির্জা বাবুলের মহাখালীর নিজ বাড়িতে
তার কুলখানি গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। কুলখানিতে দেশের বহু ব্যক্তিত্বদের মাঝে উপস্থিত
ছিলেন মরহুমার ভাগনি আঁখি আলমগীর, কবি খোশনূর আলমগীর, ফটো সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান
মিন্টু এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
প্রথমবারের মতো হানিফ সংকেতের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ ও সংগীতশিল্পী তাহসান খান গান গেয়েছিলেন। পেশাদার সংগীতশিল্পী না হয়েও তাহসানের সঙ্গে খুব চমৎকারভাবেই গানটি গেয়েছিলেন ফারিণ। এরপর তা ভক্তদের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হয়।
ফারিণের সঙ্গে নতুন করে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তাহসান খান। শুক্রবার (১৭ মে) গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে তাহসান জানান, ভালোবাসার জন্য বছরের পর বছর ধরে গান করেন তিনি।
সংগীতশিল্পী তাহসান বলেন, আমাকে এবং তাসনিয়া ফারিণকে একসঙ্গে গান করার জন্য বলা হয়েছিল এবং কবির বকুল ভাইকে ধন্যবাদ জানাই তিনি এ সুযোগটা করে দিয়েছিলেন। আমরা ভেবেছি নতুন গান নিয়ে আরও কাজ করবো তবে এখন না। আমাদের যখন মনে হবে গানটা প্রকাশ করার সময় হয়ে গিয়েছে ঠিক তখন আমরা কাজ করবো।
রঙে রঙে রঙিন হব গানের বিষয়ে তাহসান বলেন, মানুষ যে গান ভালোবাসে এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। কারণ আমাকে অনেকদিন পর এবার অনেকে বলেছে, ভাই গানটা খুব ভালো লেগেছে। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে সামনে ব্যস্ততা রয়েছে আমার নতুন গান আসবে।
মন্তব্য করুন
ভারতীয় সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী মোনালি ঠাকুর। জীবন থেকে কঠিন এক শিক্ষা পেলেন তিনি। ঢাকার মঞ্চে তিনি যখন গান গাইছেন। তখন পৃথিবীর মঞ্চ ছেড়ে তার মা মিনতি ঠাকুর না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বিষয়টি জানতে পেরেও গান থামান নি এই শিল্পী। শ্রোতাদের গেয়ে শুনিয়েছেন মায়ের প্রিয় গান ‘তুমি রবে নীরবে’
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শেষে মোনালির মাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার দুটো কিডনিই কাজ করছিল না, ডায়ালাইসিস চলছিল। শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মায়ের একটি ছবি শেয়ার করে ইনস্টাগ্রামে মোনালি লিখেছেন, ‘শেকল ছিঁড়ে গেছে, অবশেষে কষ্টের অবসান।’
বলিউডের অনেক সিনেমার গানে প্লেব্যাক করেছেন মোনালি। তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলো হলো— ‘জারা জারা টাচ মি’ (রেস), ‘গুডনাইট’ (দিল কাবাডি), ‘খুদায়া খায়ের’ (বিল্লু), ‘গোলামাল’ (গোলমাল থ্রি) প্রভৃতি। শুধু গান নয়, বলিউডের বেশকিছু সিনেমাতে অভিনয়ও করেছেন এই গায়িকা।
এর আগে একটি কনসার্টে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বাংলাদেশে এসেছিলেন মোনালি। রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার বিষয়টি অনেক আগেই ঠিক হয়ে ছিল।
মন্তব্য করুন