নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৭ পিএম, ২১ অগাস্ট, ২০১৯
আজ ২১ শে আগস্ট, ২০০৪ সালের আজকের এই দিনে এদেশের মাটিতে একটি রাজনৈতিক দল ও সেই দলের প্রধানকে স্বমুলে ধ্বংস করার জন্যে ঘটানো হয়েছিলো স্বাধীন বাংলার ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভয়াবহ ও নির্মম হত্যাযজ্ঞ। এই দিনটিতে হরকাতুল জিহাদ নামে একটি জঙ্গি গোষ্ঠীর আর্জেস গ্রেনেড হামলায় ঘটনা স্থলেই নিহত হয়েছিল ২৩ জন এবং পরে আরো একজনসহ মোট ২৪ জন। আহতও হয়েছিল কয়েক শতাধিকের বেশি মানুষ। আওয়ামী লীগ ও দলের প্রধানকে চিরতরে শেষ করে দেবার লক্ষ্যে করা এই হামলায় আহত ও নিহতদের স্মরণে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলটির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে একত্রে হয় বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও হামলার ঘটনায় আহত অনেক মানুষ। পার্টি অফিসের মুল দরজার পাশে নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ বেদী, সেই বেদীতে দল ও ব্যক্তি পর্যায় থেকে অর্পণ করা হয়েছে পুষ্পার্ঘ্য।
যখন সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্যে হুড়োহুড়ি চলছে তাঁর সামনেই একটি ফুল গাছের নিচে স্বজল নয়নে দাঁড়িয়ে আছেন ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা। ঘন্টা খানেক তাকে সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কৌতুহল জাগে তাঁর প্রতি। এগিয়ে গিয়ে আলাপের অনুরোধ জানালে সায় দেন তিনি। নিজের নাম জানান পীরজান বেওয়া। আলাপে আলাপে তিনি জানান, সেই যৌবন বয়সে কোলে করে এক শিশু সন্তান নিয়ে ভোলার কোন এক নদী অঞ্চল থেকে জীবনের তাগিদে ঢাকায় এসেছিলেন স্বামীর হাত ধরে। লঞ্চ ঘাট থেকে নেমে এসে বসেন এই বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এলাকায়। তারপর থেকে এখানেই তাদের ঘর সংসার। কোলের প্রতিবন্ধী ছেলে জাকির বড় হতে থাকে, স্বামী অন্য কোথাও কাজ করে যা পান তাই দিয়ে এখানকার ফুটপাতে তাদের দিন চলে যায় ভালো ভাবেই। এর মধ্যে আরো এক ছেলে ও মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন পীরজান।
একদিন হুট করে স্বামীটা মারা যান তারপর তিন সন্তান নিয়ে অস্থায়ী সংসার সমুদ্রের অতলে সাঁতরাতে থাকেন। স্বামী হারানোর পরে এই বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস এলাকাতেই তিনি তাঁর জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করতে থাকেন। জীবিকা বলতে নামাজ শিক্ষা বই বিক্রি করেন তিনি।
প্রতিদিনের মতো ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্টে সমাবেশ স্থলে সে তাঁর প্রতিবন্ধী সন্তান জাকিরকে পার্টি অফিসের ডান পাশে বসিয়ে রেখে নামাজ শিক্ষা বই বিক্রি করছিলেন তিনি। হঠাৎ করে বিকট শব্দে তাঁর কান ঝালাপালা হয়ে যাওয়ার যোগার। চোখ ফিরিয়ে দেখেন লোকে লোকারণ্য সমাবেশ স্থল ছেড়ে যে যেভাবে পারছে রেখে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। কারো কারো শরীর রক্তে ভেজা, কেউ রাস্তার উপরে আধমরা হয়ে পড়ে আছে আবার কেউ রক্তমাখা শরীরে অসহ্য ব্যথায় মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। তখন তাঁর মনে পরে ছেলে জাকিরের কথা। দৌড়ে যায় ছেলে জাকিরকে যেখানে বসিয়ে রেখে এসেছিলেন সেই স্থানে। গিয়ে দেখেন সেখানে কেউ নাই, মনটা অজানা আর অনিশ্চিত আশঙ্কায় হাহাকার করে উঠে তাঁর। খোঁজাখুঁজির পর রক্তাক্ত অবস্থায় তার ছেলে জাকিরকে পান পীরজান বেগম। ছেলেকে নিয়ে যে হাসপাতালে যাবেন তিনি সেই অবস্থায় নেই। চারিদিকে পুলিশ ঘিরে রেখেছে কোয়াও দিয়ে বের হওয়ার অবস্থা নাই। চোখের সামনে দেখছেন আহত ব্যক্তিদের পর্যন্ত পুলিশ ধরে ধরে মারছেন। চিকিৎসা নিতে হাসপাতাল পর্যন্ত যাওয়ার উপায় নাই। তাঁর ভাষ্যমতে কোন রকম লুকিয়ে লুকিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ছেলেকে ভর্তি করান তিনি। হাসপালে গিয়ে আবিষ্কার করেন তারও কপালে দুইটি স্প্রিন্টার বিঁধেছে। মা ও ছেলে একই সাথে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে শুরু করেন এবং চিকিৎসার তিন দিনের মাথায় ছেলেটি মারা যায় তাঁর।
এতটুকু বলেই একেবারে থেমে যান তিনি তারপর কিছুক্ষণ নীরবতা। নীরবতা ভেঙ্গে আবার বলতে শুরু করেন, আমাগো কোন দলীয় পরিচয় আছিলো না বইলা হাসপাতালে ভর্তি নিছে ওরা কিন্তু চিকিৎসা করে নাই ঠিক মতো। ভর্তি থাকা অবস্থায় দেখছি এহানকার কতো ভাই আর আপারে যে ফিরায়া দিছে হাসপাতাল থাইকা। বাবা আমি আমার পোলাডার মুখ দাফনের আগে একবার দেখতেও পারি নাই। আমি ঢাকায় আইছিলাম দুঃখ নিয়া, আমার জীবনে আর দুঃখ পিছ ছাড়লো না। বাকি দুই পোলা আর মাইয়া এতিম খানায় মানুষ হইতাছে একটু আধটু পড়া লেহাও করে। তারা আমারে এইহান থাইকা অন্য যায়গায় নিয়া যাইতে চায়। আমি রাজি হই না, আমি আমার বাবা জাকিরের স্মৃতি খুইজা বেড়াই। এহানে যহন অনেক মানুষজন আসে তহন আমার মনে ওয় আমার বাবা জাকির আমারে মা কইরা ডাক দিবো। আমি দৌড় দিয়া গিয়া আমার আমার অচল পোলাডারে বুকে জড়াইয়া ধরমু। যতদিন বাইচ্চা আছি আমি এহানেইউ থাকতে চাই, এহানেই আমি মরতে চাই যেহানে আমি আমার অচল পোলাডারে হারাইছি।
জিজ্ঞেস করা হয় তাঁর কোন চাওয়া আছে না কি বর্তমান সরকারের কাছে। তিনি বলেন,আমার কিছু চাওয়ার নাই। আমার তো কোন কিছুতেই মন ভরবো না । ভালো লাগবো যদি জীবদ্দশায় খালেদা আর তারেকের ফাঁসি দেইহা যাইতে পারি। কথাগুলো বলতে বলতে অঝড়ে কাঁদতে থাকেন তিনি আর শাড়ির আঁচলে মুছতে থাকেন কান্নার জল। পীরজান বেওয়ার ঘটনাটা গল্পের মতো মনে হওয়ায় সন্দেহ কাজ করতেছিলো মনে। সেই সন্দেহ মনে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেনি। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এই আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসে যারা নিয়মিত যাওয়া আসা করেন কিংবা সব স্তরের নেতা কর্মীরাও পীরজান বেওয়াকে চেনেন এবং তাঁর জীবনের এই ঘটনার ব্যাপারেও জানেন।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ভেড়ম সোনাদিঘী আদিবাসী পাড়া এলাকায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে নওগাঁর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত লুবিন বাস্কে (৭৫) ধামইরহাট উপজেলার ভেড়ম সোনদিঘী আদিবাসী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভেড়ম সোনাদিঘী আদিবাসী পাড়া গ্রামের লুবিন বাস্কের সঙ্গে তার স্ত্রী মালতী রানীর (৫৫) প্রায় পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো। ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিকেল ৫ টার দিকে পারিবারিক কলহের জেরে লুবিন বাস্কে তার স্ত্রী মালতী রানীকে বাঁশের লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মালতী রানীর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় পরদিন লুবিন বাস্কের বড় ভাইয়ের স্ত্রী শ্যামলী মর্মু বাদী হয়ে ধামইরহাট থানায় মামলা করেন। ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করে লুবিন বাস্কের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষের ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জন সাক্ষী আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেন। রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমানে আসামী লুবিন বাস্কের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দন্ডিত করেন নওগাঁর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ। একই সঙ্গে এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নওগাঁ জজ কোর্টের সরকারি কৌসুলি (পি.পি) আব্দুল খালেক। আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী এস এম মর্তুজা মহাতাব উদ্দিন।
স্ত্রী হত্যা যাবজ্জীবন কারাদন্ড স্বামী
মন্তব্য করুন
জয়পুরহাটের কালাইয়ে হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর বস্তার ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় কৃষকরা।
রোববার (১৯ মে) সকাল ১২টায় কালাই পৌর শহরের সরাইল এলাকার আর.বি কোল্ড স্টোরেজের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
এসময় কৃষকরা জানায়, কালাই উপজেলার ১১টি হিমাগারে ৬৫ কেজি আলুর প্রতি বস্তা ভাড়া ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা নির্ধারণ করেছে হিমাগারের মালিকরা। যা গত বছরে ছিল ২৭০ টাকা থেকে ২৯০ টাকা। এভাবে এত টাকা বৃদ্ধি করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। অন্যদিকে, এতে বাজারে আলুর দামও বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন কৃষকরা।
এ ব্যাপারে হিমাগারের মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও ভাড়া না কমিয়ে উল্টো জোর করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। একারণে আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান তারা।
মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুকূলে একটি স্মারকলিপি পেশ প্রদান করেন।
আলু হিমাগার মানববন্ধন দাম বৃদ্ধি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
এনবিআর চেয়ারম্যান ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
চিকিৎসা ঝিনাইদহ-৪ আনোয়ারুল আজিম আনা
মন্তব্য করুন
দেড় মাসেরও বেশি সময় পর আবার মেট্রোরেলের ওপর ভ্যাট বসানোর বিষয়টি সামনে এসেছে। এ নিয়ে সরকারের দুটি সংস্থা রীতিমতো মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। আগামী ১লা জুলাই থেকে এনবিআর বা জাতীয় রাজস্ব উন্নয়ন বোর্ড মেট্রোরেলের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসাতে চায়। অন্যদিকে এতে সায় নেই মেট্রোরেল কৃর্তপক্ষের। আরও স্পষ্ট করে বললে বলা যায় যে, এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মুখোমুখি অবস্থান গ্রহণ করেছেন।
ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য চলতি মাসে ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। সেখানে গিয়ে তিনি গত ৩ দিন ধরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। শনিবার (১৮ মে) রাতে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুর রউফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করানো হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা বিভাগ বিষয়টি তদারকি করছে। সংসদ সদস্যের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেন, গত দুদিন ধরে বাবার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। তবে সব উপায়ে চেষ্টা করছি। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিণ্টু বলেন, বিষয়টি তার পরিবার আজকেই আমাকে জানিয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে জানাবেন। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবু আজিফ জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য নিখোঁজ থাকার খবর লোকমুখে শুনেছি। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।