ইনসাইড হেলথ

আর্থ্রাইটিস জানা-অজানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১২ অক্টোবর, ২০১৯


Thumbnail

আর্থ্রাইটিস বলতে সাধারণত অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টের প্রদাহকেই বোঝানো হয়। এটি নির্দিষ্ট একটি রোগ নয়। অস্থিসন্ধি, অস্থিসন্ধির আশপাশের মাংসপেশি, টেনডন ইত্যাদির অনেকগুলো অসুখ একসঙ্গে আর্থ্রাইটিস নামে পরিচিত। তবে সবচেয়ে বেশি হয় অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস। আজ বিশ্ব আর্থ্রাইটিস দিবসে আপনাদের জন্য থাকছে আর্থ্রাইটিস নিয়ে কিছু আলোচনা।

অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের কারণ, ঝুঁকি আলাদা ধরনের। সাধারণত অস্টিওআর্থ্রাইটিসের ব্যথা হয় কোমর, হাঁটু ও হাতে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে হাতের কবজিসহ শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথা বেশি হয়, তুলনামূলকভাবে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা কম হয়।

অস্টিওআর্থ্রাইটিস

সাধারণত অস্টিওআর্থ্রাইটিস ধীরে ধীরে হয়। প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করলে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হয়, অস্থিসন্ধি ফুলে যায় ও ব্যথা করে, অস্থিসন্ধির জড়তা দেখা দেয় (সাধারণত ঘুম থেকে ওঠার পর বা দীর্ঘসময় বসে থেকে ওঠার সময়), ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রমের পর অস্থিসন্ধিতে তীব্র ব্যথা হয়, অস্থিসন্ধিতে কড়মড় শব্দ হয়।

অস্টিওআর্থ্রাইটিস বেশি হয় হাঁটুর জয়েন্টে। উঁচু কোথাও উঠতে গেলে হাঁটুতে বেশি চাপ লাগে। হাতে যদি ভারী কোনো বোঝা থাকে, তবে তা বহন করা কষ্টকর হয়। হাঁটু ফুলে যায়।

কোমরে হলে নড়াচড়া কঠিন হয়। বিশেষ করে শরীরের নিচের অংশ। ব্যথা কোমরের সঙ্গে সঙ্গে কুঁচকি, উরু এমনকি হাঁটুতেও হতে পারে।

হাতের মধ্যে বৃদ্ধাঙুলে বেশি হয়। আঙুলে ব্যথা হয়, ফুলে যায়, ঝিমঝিম করে, জয়েন্টের আশপাশে গোটার মতো গুটি হয়।

মেরুদণ্ডে হলে ঘাড় ও কোমরে উভয় স্থানে ব্যথা হতে পারে। কখনো কখনো হাত-পা ঝিমঝিম করে।

 

যারা ঝুঁকিপূর্ণ

১. যাদের বয়স বেশি, যেমন বয়স ৬৫-র বেশি হলে অস্টিওআর্থ্রাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

২. ৪৫ বছর বয়সী পুরুষদের এবং ৪৫ পরবর্তী নারীদের এটি বেশি হয়।

৩. অস্থিসন্ধিতে যেকোনো ধরনের আঘাত পেলে অস্টিওআর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে। এ কারণে যারা পেশাগত কারণে শারীরিক পরিশ্রম বেশি করেন বা আঘাতের ঝুঁকিতে থাকেন তাদের ঝুঁকি বেশি।

৪. যাদের ওজন বেশি, অস্টিওআর্থ্রাইটিস তাদের বেশি হয়। সাধারণ স্থূল শরীরের মানুষের হাঁটুতে রোগটি বেশি দেখা দেয়।

৫. কিছুক্ষেত্রে বংশগত কারণেও অস্টিওআর্থ্রাইটিস হতে দেখা যায়।

রোগ নির্ণয়

রোগের ইতিহাস ও রোগের ধরন দেখে রোগ নির্ণয় করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। যেমন এক্স-রে, জয়েন্ট অ্যাসপিরেশন ইত্যাদি।

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস

এতে শরীরের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার কারণেই কিছু টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অস্থিসন্ধির বহিরাবরণীতে প্রদাহ হয়। এ কারণে অস্থিসন্ধি ও এর আশপাশে ব্যথা হয়, জড়তা তৈরি হয়, ফুলে লাল হয়ে যায় এবং শরীরে জ্বরজ্বর অনুভূত হয়। এতে অস্থিসন্ধির আকারের বিকৃতিও ঘটে। সময়ের সঙ্গে এটি তীব্র হতে থাকে। মাঝেমধ্যে ব্যথা ও ফোলা নিজেই কমে যায়, আবার বাড়ে। 

লক্ষণ

রোগটি দীর্ঘমেয়াদি। তাই কখনো লক্ষণ প্রকাশ পায়, আবার কিছুদিন কোনো লক্ষণই থাকে না।

সাধারণ লক্ষণ

১. ঘুম থেকে ওঠার পর অস্থিসন্ধিসহ শরীরের কিছু অংশে ব্যথা ও জড়তা থাকে।

২. হাতের আঙুল, কনুই, কাঁধ, হাঁটু, গোড়ালি ও পায়ের পাতায় বেশি সমস্যা হয়।

৩. সাধারণত শরীরের উভয়পাশ একসঙ্গে আক্রান্ত হয়। যেমন- হাতে হলে দুই হাতের জয়েন্টই একসঙ্গে ব্যথা করে, ফুলে যায় ইত্যাদি।

৪. শরীর দুর্বল লাগে, জ্বরজ্বর অনুভূতি হয়। ম্যাজম্যাজ করে।

৫. কারো ক্ষেত্রে ত্বকের নিচে এক ধরনের গুটি দেখা যায়, ধরলেও ব্যথা পাওয়া যায় না।

প্রতিরোধ

১. শারীরিক তৎপরতা বাড়ানো; যেমন- বহুতল ভবনে ওঠার সময় মাঝেমধ্যেই লিফট ব্যবহার না করে সিড়ি ব্যবহার করা এবং যানবাহনে ওঠার আগে অন্তত ৫০০ মিটার পথ পায়ে হেঁটে যাওয়া।

২. মাঝারি ধরনের ব্যায়াম করা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।

৩. মানসিক চাপ কমানোর জন্য মেডিটেশন করা।

৪. শরীরের জয়েন্টগুলোকে জখমের হাত থেকে বাঁচানো, ইতোমধ্যেই জখম হলে দ্রুত চিকিৎসা করা।

৫. প্রচুর পানি খাওয়া। ক্যালসিয়ামযুক্ত ও ভিটামিনযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।

৬. যেকোনো ছোটখাটো চোটের চিকিৎসা করানো।

৭. ধুমপান, মদপান না করা। কারণ মদ হাড়ের স্বাস্থ্য ও কাঠামো দূর্বল করে।

৮. নিয়মিত দুধ পান করুন। ল্যাকটোজ জাতীয় খাদ্য উপাদান হজমে সমস্যা করলে ক্যালসিয়াম ও ব্রোকলি জাতীয় খাবার বেশি খান।

৯. মেনোপোজ পরবর্তী নারীদের জন্য হরমোন প্রতিস্থাপন, অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

১০. সঠিক আকারের নরম জুতা পরুন।

১১. প্রদাহসৃষ্টিকারী খাবার এড়িয়ে চলুন। লবণ, চিনি, মিষ্টি, মদ, ক্যাফেইন, প্রক্রিয়াজাতকৃত মাংস, সাধারণ রান্নার তেল, ট্রান্স ফ্যাট ও লাল মাংস খাওয়ায় সাবধান।

১২. ঠাণ্ডায় আর্থ্রাইটিসের ব্যথা বাড়ে। তাই ঠাণ্ডা থেকে দূরে থাকুন। কুসুম গরম পানির সেঁক ব্যথা নিরাময়ে কার্যকরী। কুসুম গরম পানিতে গোসল করা যেতে পারে।

চিকিৎসা

আর্থ্রাইটিস জোড়ার রোগ ও বিভিন্ন প্রকার আর্থ্রাইটিস রয়েছে। যদি কারও এ জাতীয় সমস্যা হয় তা হলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসক এক্ষেত্রে কিছু পরীক্ষা করান। যেমন- রক্ত পরীক্ষা, সেরোলজি পরীক্ষা, এক্সরে। আর্থ্রাইটিসের ধরনমতো ওষুধ খেতে হয়। যেমন-ব্যথানাশক এনএসএআইডিএস, ডিজিজ মডিফাইং ওষুধ, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম। আর্থ্রাইটিসে ফিজিওথেরাপি অত্যন্ত কার্যকরী চিকিৎসা। এতে অনেকাংশে রোগীর সমস্যা ব্যথা কমে এবং রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফেরে।

ইলেকট্রোমেগনেটিক রেডিয়েশনে, আল্ট্রাসাইন্ড থেরাপি, ইন্টারফেরেন সিয়াল থেরাপি, বিভিন্ন নিয়মমাফিক কৌশলগত ব্যায়াম, মেনুয়াল থেরাপি প্রয়োগের মাধ্যমে রোগীর সমস্যা বহুলাংশে লাঘব ও অস্থিসন্ধি স্বাভাবিক হয়।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খতিয়ে দেখার নির্দেশ

প্রকাশ: ০১:০৩ পিএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা গ্রহণের কারণে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে এই টিকা যারা নিয়েছেন তাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

বুধবার (৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত সভায় মন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন।

সামন্ত লাল সেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। কিছু দেশে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। আমরাও যেহেতু অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা গ্রহণ করেছি, আমাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। 


স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন   অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জেনে নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ: ০৯:২৬ এএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত দুরারোগ্য ব্যাধি। এ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশে এই রোগের জিন বাহকের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। বাহকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাহকে-বাহকে বিয়ে হলে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় বিয়ের আগে এই রোগের জিন বাহক কি না তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

বুধবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এই আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য খাতে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এবং জনসাধারণকে সুলভে মানসম্মত স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার কল্যাণ (এইচএনপি) সেবা দেওয়ার মাধ্যমে একটি সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আমরা একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধিসহ চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্ট স্টাফের সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছি। গ্রামপর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা দেওয়া হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা চালু করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত ১৫ বছরে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ মাতৃমৃত্যু, নবজাতকের মৃত্যু ও অনূর্ধ্ব ৫ বছর বয়সী শিশুমৃত্যু হার, অপুষ্টি, খর্বতা, কম ওজন ইত্যাদি হ্রাসে ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমডিজি লক্ষ্য অর্জনে অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।


প্রধানমন্ত্রী   থ্যালাসেমিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান

প্রকাশ: ০৮:০৬ এএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সমাজের সচেতন নাগরিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি এবং অনেক ক্ষেত্রেই তা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তাই এ রোগ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই। থ্যালাসেমিয়া বিস্তার রোধে বাহকদের এবং আত্মীয়ের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ককে নিরুৎসাহিত করতে হবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে সন্তান ধারণের পর প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। 

বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি কর্তৃক ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’ উদযাপনের উদ্যোগকে রাষ্ট্রপতি স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘সবাই মিলে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত বাংলাদেশ গড়ব-এটাই হোক এবারের বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসের অঙ্গীকার।’

তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি জিনবাহিত রোগ যা বাহকের মাধ্যমে ছড়ায়। স্বামী-স্ত্রী উভয়ই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হলে সন্তানদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে থ্যালাসেমিয়া জিনবাহক নারী-পুরুষের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়ে থাকে। এজন্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগেই পরীক্ষার মাধ্যমে পুরুষ বা নারী কেউ এ রোগের বাহক কিনা তা নির্ণয় করা জরুরি। এছাড়া রক্তস্বল্পতাজনিত ভয়াবহ এ রোগটি প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলাও প্রয়োজন।  

রাষ্ট্রপতি ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন   থ্যালাসেমিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

চিকিৎসাসেবা খাতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ৬৫ শতাংশ অভিযোগ

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের ৩৫ শতাংশ নিষ্পত্তি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অন্যদিকে ৬৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।

কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

অভিযোগ নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহে ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

আরও পড়ুন: অসুস্থতা নিয়েও পুরুষের তুলনায় বেশিদিন বাঁচে নারী: গবেষণা

বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবাসংক্রান্ত ৬৬টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ সময় নিষ্পত্তি হয়েছে ২৩টি অভিযোগ। সে হিসাবে ৩৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৪৩টি অভিযোগ, যা মোট অভিযোগের ৬৫ শতাংশ।

এর মধ্যে ২০২৩ সালে চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত ২৫টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে মানবাধিকার কমিশন, যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। চলতি বছরের ৩১ মার্চ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে ২০২৩ সালের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

এদিকে ২০২৩ সালের ২৫টি অভিযোগের মধ্যে ভুক্তভোগী কর্তৃক দায়ের করা অভিযোগ দুটি।

অন্যদিকে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমটো) হয়ে গ্রহণ করা অভিযোগের সংখ্যা ২৩, যা এ সময় কমিশন কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সুয়োমটো অভিযোগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ। ভুক্তভোগীদের দায়ের করা দুটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হলেও কমিশন কর্তৃক গৃহীত ২৩টি অভিযোগের মধ্যে মাত্র তিনটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে।

নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে আরও ২০টি অভিযোগ। সে হিসাবে গত বছর চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত অভিযোগের ৮০ শতাংশ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।

এদিকে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সর্বনিম্ন দুটি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে কমিশন।

এর মধ্যে একটি অভিযোগ জমা পড়ে আর কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দায়ের করে অন্যটি। ওই বছর কোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়নি।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯-এর ধারা ১২ অনুযায়ী, দেশের নাগরিকরা কমিশনে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা খাতের অব্যবস্থাপনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে সংস্থাটি। প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কমিশন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কোন কোন ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন তার গুরুত্ব বিবেচনা করে উচ্চ আদালতে রিট করে কমিশন।

আরও পড়ুন: করোনা টিকা ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

চিকিৎসাসেবা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহের ঘাটতিকে দায়ী করছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘যেসব অভিযোগ কমিশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তির জন্য আমরা নিয়মিত তাগিদ দিয়ে থাকি। চিকিৎসাসেবা খাতের অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরো বেশি আগ্রহী হতে হবে।’

এ খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে কমিশন অনেক ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসাসেবা নিতে এসে অনিয়মের শিকার রোগীদের অভিযোগ জমা পড়তে পড়তে পাহাড় হয়েছে। আবার ভুল চিকিৎসা, সেবা নিতে গিয়ে অনিয়মের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগও অনেক। স্বাস্থ্যসেবার প্রকৃত চিত্র শিগগিরই পরিসংখ্যানের মাধ্যমে তুলে ধরবে কমিশন। এরপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘জনসাধারণকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করে কমিশন। গত বছর আমরা জরায়ু ক্যান্সারের ভুয়া ভ্যাকসিন, হাসপাতালের শয্যা নিয়ে বাণিজ্য, ওষুধের মোড়ক পরিবর্তন করে বিদেশি ওষুধ বলে বিক্রি, অনুমোদন ছাড়া ক্লিনিক এবং বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে পারে না কমিশন। এ জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে প্যারিস নীতিমালার আলোকে আইনের সংশোধন জরুরি।’


চিকিৎসাসেবা   জাতীয় মানবাধিকার কমিশন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

অসুস্থতা নিয়েও পুরুষের তুলনায় বেশিদিন বাঁচে নারী: গবেষণা

প্রকাশ: ০৪:১৯ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

নারী পুরুষের তুলনায় বেশি বছর বাঁচলেও অসুস্থতায় বেশি ভোগেন। জনস্বাস্থ্যবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা পেশির সমস্যা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং মাথাব্যথার মতো রোগগুলোতে বেশি ভোগেন। যদিও এসব রোগ প্রাণঘাতী না হলেও তা অসুস্থতা ও শারীরিক অক্ষমতা তৈরি করে।

অন্যদিকে পুরুষেরা হৃদরোগ, শ্বাসযন্ত্র, যকৃতের রোগ, কোভিড-১৯–এর মতো রোগে আক্রান্ত হওয়া এবং সড়ক দুর্ঘটনায় অকাল প্রাণ হারায়। 

নারী ও পুরুষের মধ্যে স্বাস্থ্যগত অবস্থার যে ভিন্নতা আছে, তা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায়। এতে নারীরা জীবনভর অপেক্ষাকৃত উচ্চ মাত্রার অসুস্থতা ও শারীরিক অক্ষমতায় ভোগেন। আর এ অবস্থা নিয়েই তারা পুরুষদের চেয়ে বেশি বছর বাঁচেন।

গবেষণার সাথে যুক্ত ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশন (আইএইচএমই)-এর গবেষক ড. লুইসা সোরিও ফ্লর বলেছেন, ‘এই প্রতিবেদনটি স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিয়েছে যে গত ৩০ বছরে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ইস্যুতে বৈশ্বিকভাবে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা অসম। নারীরা দীর্ঘ আয়ু পেলেও তারা অপেক্ষাকৃত বেশি বছর অসুস্থ থাকে। যেসব পরিস্থিতির কারণে তাদের অসুস্থতা ও অক্ষমতা তৈরি হয়, তা সামাল দিতে সীমিত অগ্রগতি হয়েছে। যেসব পরিস্থিতির (প্রাণঘাতী নয়) কারণে নারীদের বিশেষ করে বয়স্ক অবস্থায় তাদের যে শারীরিক ও মানসিক কার্যক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়ে, তার দিকে নজর দেওয়াটা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। একইভাবে পুরুষেরা অপেক্ষাকৃত উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন এবং প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হন।’

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২১ সালে অসুস্থতা ও মৃত্যুর শীর্ষ ২০টি কারণের মধ্যে ১৩টি কারণই পুরুষের মধ্যে বেশি দেখা গেছে। যেমন- কোভিড-১৯, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়া, হৃদরোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, যকৃতের রোগের মতো সমস্যাগুলো নারীর চেয়ে পুরুষের মধ্যে বেশি দেখা গেছে। নারীরা মেরুদণ্ডের নিচের দিকে ব্যথা, বিষণ্নতা, মাথাব্যথা, উদ্বেগ, হাড় ও পেশির সমস্যা, স্মৃতিভ্রম, এইচআইভির মতো রোগে ভোগেন বেশি। গবেষণা বলছে, এসব কারণে নারীরা অসুস্থতা ও অক্ষমতায় ভুগলেও অকাল মৃত্যু হয় না।

জনস্বাস্থ্য   ল্যানসেট  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন