নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৮ নভেম্বর, ২০১৯
ওয়ান ইলেভেন আওয়ামী লীগের জন্য একটি অগ্নিপরীক্ষা ছিল। ড. ফখরুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে সেনা সমর্থিত অনির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আওয়ামী লীগের ওপর অনেক নির্যাতন এবং নিপীড়ন হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তথাকথিত দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষনেতারাও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, আবার অনেকে সংস্কারপন্থী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। এই সংস্কারপন্থীরা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করার জন্য প্রকাশ্যে বক্তব্য বিবৃতি দিয়েছিলেন।
তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার একক দক্ষতায় ওয়ান ইলেভেন সংকট কাটিয়ে ওঠেন, তৃণমূল নেতাদের সমর্থন নিয়ে ২০০৮ এর নির্বাচনে অংশ নিয়ে ক্ষমতায় আসে। সেই থেকে আওয়ামী লীগ টানা ৩ বার ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন।
২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পরেই এই সংস্কারপন্থীরা দলের মধ্যে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। অধ্যাপক আবু সাইয়িদসহ বিভিন্ন সংস্কারপন্থী দলত্যাগও করেন।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগে যারা সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তারা আবার লাইমলাইটে আসছেন। তাদের তৎপরতা লক্ষণীয়। বিশেষ করে শেখ হাসিনাই বিভিন্ন কাজে তাদের ব্যবহার করছেন। আওয়ামী লীগের মধ্যে যখন অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ এবং বহিরাগতদের নিয়ে নানা অনুযোগ, তখন আবার সংস্কারপন্থীরা আস্তে আস্তে আওয়ামী লীগে জাঁকিয়ে বসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে।
এ সমস্ত সংস্কারপন্থীদের তৎপরতা সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। তিনি ওয়ান ইলেভেনের সময়ে সংস্কারপন্থী ছিলেন এবং অধ্যাপক আবু সাইয়িদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে সংস্কারের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। শেখ হাসিনাকে যারা মাইনাস করতে চেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। নির্বাচনে মনোনয়ন না পেলেও তিনি বিএমএ’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি রাজনীতির মাঠে তাকে তৎপর দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা মহানগরের সম্মেলনকে ঘিরে তিনি বেশ তৎপর।
মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের ঘনিষ্ঠরা বলছেন যে, শেখ হাসিনার সঙ্গেও তার আগের চেয়ে যোগাযোগ বেড়েছে। তাদের মতে ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি বা মেয়র পদের জন্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
তালিকার দ্বিতীয়তে রয়েছেন মুকুল বোস। ওয়ান ইলেভেনের সময়ে তিনি সংস্কারপন্থী ছিলেন, শেখ হাসিনাকে যারা মাইনাস করতে চেয়েছেন তাদের অন্যতম ছিলেন এই মুকুল বোস। দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সেই মুকুল বোস ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর কিছুটা দূরে ছিলেন। কিন্তু আস্তে আস্তে তিনিও লাইমলাইটে আসছেন। তাকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য করা হয়েছে। এখন দলের কাউন্সিলকে ঘিরে তাকে রাজনীতির মাঠে অত্যন্ত সরব এবং তৎপর দেখা যাচ্ছে। সূত্রমতে, মুকুল বোস উপদেষ্টামণ্ডলী পদে আগ্রহী নন। বরং তিনি প্রেসিডিয়াম বা কার্যনির্বাহী সংসদের কোনো একটি পদের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অন্য সময়ের চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে তার যোগাযোগ বেড়েছে।
এরপর আসে ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারুজ্জামানের নাম। তিনি বাসদ থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছিলেন। দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য তিনি। ওয়ান ইলেভেনের সময়ে তিনি সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০০৮ থেকে কোনো নির্বাচনের তিনি মনোনয়ন পাননি, তার আসনে মেহের আফরোজ চুমকি মনোনয়ন পান। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তাকে এলাকায় এবং দলের কার্যক্রমে তৎপর দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে শুদ্ধি অভিযানের পর থেকে আখতারুজ্জামান অনেক বেশি সরব। দলীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, শেখ হাসিনাও সম্প্রতি তাকে ডেকেছেন, কথা বলেছেন। এই প্রেক্ষাপটেই আবার চাঙা হয়েছেন আখতারুজ্জামান।
এরা ছাড়াও যারা আওয়ামী লীগের মধ্যে সংস্কারপন্থী হিসেবে দূরে সরে গিয়েছিলেন, তারা শুদ্ধি অভিযানের পরে আওয়ামী লীগের মূলধারায় ফেরার জন্য আপ্রাণ চেষ্ট করছেন। অনেকেই দলের সভাপতি বা উর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, বহিরাগত, হাইব্রিড, জামাত শিবিরের চেয়ে সংস্কারপন্থীরা ভালো। এরকম একটা চিন্তাভাবনা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে এসেছে। তাই সংস্কারপন্থীরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন।
শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উপহাস করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে তারা লিটলেট বিতরণ কর্মসূচিতে নেমে এসেছে। এবার বুঝুন তাদের অবস্থা।
বিস্তারিত আসছে....
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই বিএনপি লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন। শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উপজেলা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।