নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯
সাম্প্রতিক সময়ে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এবং সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। পেঁয়াজের দাম কোথাও কোথাও তিনশ টাকা ছুঁয়েছে, যা একটা বিশ্বরেকর্ড। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নিজে আজ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় পেঁয়াজের মূল্য সংকটের পেছনে ষড়যন্ত্রের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন যে, এরকম অস্বাভাবিকভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনও কারণ নেই।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, পেঁয়াজের লাগামহীন উর্ধ্বগতির পেছনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যেমন সীমাহীন ব্যর্থতা রয়েছে, তেমনি একটি বিশেষ মহল সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। দেখা গেছে যে, বিএনপি-জামাতের চিহ্নিত কিছু ব্যবসায়ী যারা পেঁয়াজ আমদানি করেন, মজুদ রাখেন কিংবা সারা দেশে পেঁয়াজ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত, সেই গ্রুপটিই পেঁয়াজের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানোর ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মোট ১২ জন ব্যবসায়ী বাংলাদেশে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। এই ১২ ব্যবসায়ীর ৯ জনই বিএনপি এবং জামাতের সমর্থক। পেঁয়াজ আমদানির সঙ্গে বাংলাদেশের বড় বড় শিল্প গ্রুপগুলো কখনই জড়িত ছিল না। সাধারণত মধ্যস্তরের কৃষি এবং আধাকৃষি বাণিজ্যের সঙ্গে যারা জড়িত তারাই এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনমাস আগে পেঁয়াজের সংকট শুরু হওয়ার একমাস পরে সরকারের উদ্যোগে বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপগুলোকে পেঁয়াজ আমদানি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদের মধ্যে এস. আলম গ্রুপ অন্যতম। তাদের আমদানি করা পেঁয়াজ এখন ঢাকায় আসার পথে। তারা মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছে। সরকারের নির্দেশে আরও কয়েকটি বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এখন পেঁয়াজ আমদানির দিকে মনোনিবেশ করেছে।
কৃষি-বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশ থেকে যে পেঁয়াজগুলো আনা হচ্ছে সেগুলো আসতে আসতে আরও ১৫ থেকে ২০ দিন লাগবে। সেই সময়ের মধ্যে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়ানোর চক্রান্ত হচ্ছে। এদের লক্ষ্য হলো তিনটি-
প্রথমত; পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে জনমনে একটা অস্থিরতা তৈরি করা। সরকারের প্রতি জনগনের মনে অসন্তোষ সৃষ্টি করা।
দ্বিতীয়ত; পেঁয়াজ হলো এমন একটি পণ্য যেটির দাম যদি বাড়ে তাহলে এর সূত্র ধরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরও অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যায়। যেমন, পেঁয়াজের সঙ্গে সঙ্গে এখন চালের বাজার অস্থির হয়ে পড়েছে। অন্যান্য সবজির দামও বেড়েছে।
অর্থনীতিতে ‘চেইন অব প্রোডাক্ট’ বলে একটি কথা আছে। যে পণ্যগুলোর দাম বাড়লে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়ে পেঁয়াজ হলো সেরকম একটি পণ্য। কাজেই পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে পুরো বাজার ব্যবস্থায় বিশৃংখলা এবং অস্থিতিশীলতা তৈরি করার জন্য একটি মহল এই চক্রান্ত করছে।
তৃতীয়ত, পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার ফলে বিপুল পরিমাণ বিদেশি পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসছে। এখন মিয়ানমার মিশরসহ আরও কয়েকটি দেশের পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসছে। অথচ মাত্র ২০-৪৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে উৎপাদিত নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠবে। বিদেশে থেকে যখন পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসবে তখন দেশের উৎপাদিত পেঁয়াজে ন্যায্য মূল্য পাবে না চাষীরা। ফলে কৃষকদের ওপর আরেকটি আঘাত আসবে। যারা কষ্ট করে পেঁয়াজের উৎপাদন করেছে তারাই ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হবেন। সেটার ক্ষোভও সরকারের উপর পড়বে।
অথাৎ এই ত্রিমুখী চক্রান্ত বাস্তবায়নের জন্যই কৃত্রিমভাবে পেঁয়াজের মূল্য সংকট তৈরি করা হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত সংকট বলে জানা গেছে।
একোধিক গোয়েন্দা সংস্থা অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, কিছু কিছু গুদামে পেঁয়াজ পঁচিয়ে ফেলা হচ্ছে। অথাৎ শুধুমাত্র মুনাফা অর্জনই এই পেঁয়াজ সংকটের একমাত্র কারণ নয়, এর পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মনে করছে। কারণ যদি মুনাফা অর্জনই সংকটের মূল কারণ হতো তাহলে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ পঁচতে দিত না। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা যাচ্ছে যে চট্টগ্রামে একাধিক গুদামে পেঁয়াজে পঁচন ধরেছে। তারপরও সেই পঁচা পেঁয়াজগুলো বাজারে দেওয়া হচ্ছে বা ফেলে দেওয়া হচ্ছে।
একাধিক সূত্র বলছে, যদি শুধুমাত্র মানুাফা অর্জনের জন্য পেঁয়াজ গুদামে রাখা হতো, তাহলে সেগুলো পঁচার আগেই বাজারে দেওয়া হতো এবং বেশি মূল্যে বিক্রি করা হতো। কিন্তু এখন যে টন-কে টন পেঁয়াজ পঁচিয়ে ফেলা হচ্ছে সেটার পিছনে একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। আর এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যটা দৃশ্যমান। এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের ব্যর্থতাও অস্বীকার করা যায় না। যখন থেকে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি হয়ে ১০০ টাকায় পৌঁছে যায়, তখনও বাণিজ্য মন্ত্রণায়লয় এ বিষয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এটার পিছনে যারা কলকাঠি নাড়ছে, যারা ষড়যন্ত্র করছে এবং যারা রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো নির্দেশনা দেয়নি। যে কারণে যারা এই সিন্ডিকেট করেছে সেই সিন্ডিকেটের সদস্যরা অবাধে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। শুরুতেই যদি এখানে গোয়েন্দা এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারির ব্যবস্থা করা হতো, তাহলে এই অশুভ চক্রান্ত হতো না বলেও বিশ্লেষকরা মনে করেন। এখন পেঁয়াজ রাজনীতি শেষ পর্যন্ত সরকার কীভাবে সামাল দেয় সেটাই দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি রাজনীতির খবর মির্জা আব্বাস
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি আওয়ামী লীগ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সুশীল সমাজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
এনবিআর কাস্টমস জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে বিএনপিকে আবারও পালাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার দরকার নেই। সরকারেরও দরকার নেই। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির নেতাকর্মীরা বক্তব্য দিয়েছে, আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। সেদিনও দেখলাম পল্টন ময়দান থেকে একে একে দৌড়াতে দৌড়াতে অলিগলি কোথায় দিয়ে যে পালিয়েছে, কেউ চিন্তাও করেনি।
সোমবার (১৩ মে) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে। যদি তারা আবারও জ্বালাও-পোড়াও করে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে বিএনপিকে আবারও পালাতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসে পালিয়ে যাওয়ার কোনো রেকর্ড নেই। ২০০৭ সালে আর রাজনীতি করব না এই মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাদের মূল নেতা পালিয়ে আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৮ অক্টোবরও বক্তব্য দিয়েছিল আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। শেষ পর্যন্ত দেখলাম দৌড়াতে দৌড়াতে তারা পালিয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে এসে কেউ আবারও বিএনপিকে মদত দেবে সে পরিস্থিতি এখন বিশ্বে নেই। যারা দাপট দেখাতো তাদের ক্ষমতা মধ্যপ্রাচ্যেই সংকুচিত হয়ে গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথাই ইসরায়েল শুনে না।
এসময় ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক গোলাপ, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের বিএনপি
মন্তব্য করুন
জামায়াতকে নিয়ে নতুন বিরোধের মুখোমুখি হচ্ছে বিএনপি। স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের এই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিএনপির ভেতরে যেমন শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব অন্তঃকলহ তেমনই বিএনপি যাদের সঙ্গে নির্বাচন প্রতিরোধের আন্দোলন করেছিল তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মতদ্বৈততা। বিএনপির নেতৃত্বের একটি বড় অংশ জামায়াতকে নিয়ে আবার প্রকাশ্য আন্দোলনের পক্ষে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভাতেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল এবং সেই বৈঠকে মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সহ স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য জামায়াতের সঙ্গে প্রকাশ্য জোটের ব্যাপারে তাদের ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানিয়েছেন।
আগামীকাল দুদিনের সফরে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর এটি প্রথম সফর। নানা কারণেই এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশ সফর নিয়ে যেরকম উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ত, এখন সে রকম পরিস্থিতি নেই। ডোনাল্ড লু এর বাংলাদেশ সফর নিয়ে রাজনীতির মাঠে আলাপ আলোচনা আছে। তবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এর কেউই এই সফরকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন না।
আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করলে বিএনপিকে আবারও পালাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার দরকার নেই। সরকারেরও দরকার নেই। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির নেতাকর্মীরা বক্তব্য দিয়েছে, আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। সেদিনও দেখলাম পল্টন ময়দান থেকে একে একে দৌড়াতে দৌড়াতে অলিগলি কোথায় দিয়ে যে পালিয়েছে, কেউ চিন্তাও করেনি।