নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৯
আগামীকাল আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগামীকাল গণভবনে জাতীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। কাউন্সিলের পর সবচেয়ে শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক কমিটি হলো জাতীয় কমিটি। যদিও ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবরের পর এই প্রথম জাতীয় কমিটির বৈঠক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গঠনতন্ত্রের ১৭ (ক) অনুযায়ী এই জাতীয় কমিটি গঠিত হয়। জাতীয় কমিটিতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ৮১ সদস্যর সঙ্গে ৭৮ টি সাংগঠনিক জেলার সদস্য থাকেন এবং সভাপতি থাকেন ২১ জন। কাউন্সিলের আগে জাতীয় কমিটির বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এবারের জাতীয় কমিটির মূল বিষয় বাজেট বলা হচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পরে সারাদেশ সরকারের বিভিন্ন সমস্যা এবং সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং মন্ত্রীদের দায়িত্বের কথা জাতীয় কমিটিতে উঠে আসতে পারে।
বিভিন্ন জেলায় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা সারাদেশের ঘটমান বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। যে সমস্ত বিষয়গুলো স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা দলের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরতে চান সেগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বিশেষ করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি। এর ফলে জনজীবনে যে অস্বস্তি এবং অস্থিরতা তৈরি হয়েছে সেটা মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে। একজন জাতীয় কমিটির সদস্য যিনি আগামীকালের বৈঠকে যোগ দিবেন, তিনি বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে, আওয়ামীলীগের জনপ্রিয়তা নষ্ট করার জন্য এবং টানা তিন বার ক্ষমতায় থাকা দলটিকে বদনাম করার জন্য একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে এবং এর জন্য দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি হচ্ছে। একই সাথে পরিবহন খাতে অস্থিরতা এবং পরিবহন নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট-হুমকি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানা গেছে। আওয়ামীলীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, জাতীয় কমিটির বৈঠকে কাউন্সিল আনুষ্ঠানিকতার বাইরে সবথেকে বেশি আলোচনা হবে দলের শুদ্ধি অভিযান এবং দলের বহিরাগতদের আগমন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন এবং শুদ্ধি অভিযানের কারণে কিছু চিহ্নিত নেতা-কর্মী আইনের আওতায় আসলেও সেই অভিযান এখন থমকে গেছে। যদিও এই শুদ্ধি অভিযানকে আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে ব্যপক স্বাগত জানানো হয়েছিল। তারা শুদ্ধি অভিযানকে অব্যহত রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে জাতীয় কমিটির বৈঠকে এই শুদ্ধি অভিযানের প্রসঙ্গ আলোচিত হবে এবং তৃণমূল পর্যন্ত শুদ্ধি অভিযান ছড়িয়ে নেওয়ার জন্য তারা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করবেন। আরেকটি বড় বিষয় হলো আওয়ামী লীগে ২০১৪ সালের পর থেকে জামাত বিএনপি থেকে পরিমাণ লোক অনুপ্রবেশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর বারংবার কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তারপরও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে একাংশের অনিহার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন। কাউন্সিল অধিবেশনে জাতীয় কমিটিতে সাংগাঠনিক জেলা থেকে যে ৭৮ জন আসবেন এবং সভাপতি মনোনীত যে ২১ জন থাকবেন তাদের অনেকেই যাদেরকে বহিস্কার করা হচ্ছে না, অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে জানতে চাইবেন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন কেন মানা হচ্ছে না তা জিজ্ঞেস করবেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কারো কারো ক্ষোভ থাকে।
তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, এবারের জাতীয় কমিটির বৈঠক হচ্ছে আনুষ্ঠানিকতার জন্য। এই বৈঠক থেকেই মূলত বাজেট পাশ হবে। এই বৈঠকের পরপরই অনেকগুলো উপকমিটির বৈঠক যেমন- গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি, অভ্যর্থনা কমিটিসহ বিভিন্ন উপকমিটির বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হবে।
তবে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতারা বলছেন যে প্রধানমন্ত্রীকে সামনে পেলে তারা তাদের মনের কথা বলতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের মনের কথা শোনেন। মন খুলে কথা বলার আগ্রহ থেকেই জাতীয় কমিটির বৈঠক নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।