নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৯
আগামী ২০ এবং ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নতুন কমিটি উপহার দেবে। বলা হচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের এবার যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকবেন তারা পূর্ণকালীন হবেন এবং মন্ত্রীদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে না রাখার একটা সিদ্ধান্ত হতে পারে। বিশেষ করে সম্পাদক মণ্ডলীতে কোন মন্ত্রীকে না রাখার ব্যাপারে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের বর্তমান মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় কমিটির অনেকে আছেন। টানা তিন বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই আছেন যারা বিভিন্ন সময় মন্ত্রী ছিলেন।
এদের মধ্যে কিছূ বর্তমান এবং সাবেক মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় নেতা আছেন যারা সংগঠনেও ব্যর্থ হয়েছেন এবং মন্ত্রীত্বেও ব্যর্থ হয়েছেন। এবারের কাউন্সিলে এই ব্যর্থদের আর জায়গা দেওয়া হবে না বলে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন। মুজিববর্ষ এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করা এবং গতিশীল করার জন্য যারা একদিকে যারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে থাকবেন তাদেরকে যেমন পূর্ণকালীণ দায়িত্বে থাকার অবস্থান দৃঢ় হচ্ছে তেমনি পাশাপাশি যারা সংগঠনের নেতৃত্বের সুযোগ পেয়েও সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি, সংগঠনের কাজে মনোযোগ দেননি তাদেরকেও কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি হলো প্রেসিডিয়াম। প্রেসিডিয়ামের সদস্য হিসেবে রয়েছেন আব্দুল মান্নান খান। আব্দুল মান্নান খান ২০০৯ সালে গৃহায়ন ও পূর্ত মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মন্ত্রী হিসেবে তিনি ব্যর্থ হয়েছন। তার বিরুদ্ধে এখনো দুদকের মামলা আছে। মন্ত্রীত্বে ব্যর্থ হওয়ার কারণে তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পরও সাংগঠনিক কাজে তাকে মনোযোগী দেখা যায়নি। সাংগঠনিক কাজে তার বিচরণ ছিল খুবই সীমিত। বরং প্রেসিডিয়ামের আনুষ্ঠানিক বৈঠক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির আনুষ্ঠানিক বৈঠকগুলো ছাড়া তাকে খুব একটা দলীয় কার্যক্রমে দেখা যায়নি।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম মেয়াদে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তিনি সফল হলেও দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলেন। বিশেষ করে প্রশ্নপত্র ফাঁস কেলেঙ্কারিতে তিনি অনেকটা বেসামাল ছিলেন। সে সময় তিনি অনেকবার পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। নুরুল ইসলাম নাহিদকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে পুরষ্কৃত করা হয়। কিন্তু প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পর দলীয় কর্মকাণ্ডে তাকে মোটেও দেখা যাচ্ছে না। একজন সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক সংস্থার নেতা হয়েও তিনি তার নির্বাচনি এলাকা ভিত্তিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন। এবার আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে তিনি আদৌ থাকবেন কিনা সে নিয়ে অনেকের সংশয় রয়েছে।
আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা টিপু মুনশি। দীর্ঘদিন তিনি আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। ৯ম জাতীয় সংসদে তিনি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তিনি রংপুর-৪ আসন থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১০ম জাতীয় সংসদে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদের নির্বাচনে রংপুর-৪ আসন থেকে তৃতীয়বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। টিপু মুনশি ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রীর পদ পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত বর্তমান মন্ত্রিসভায় ব্যবসায়ীদের তালিকায় তার নাম প্রথম দিকেই চলে আসবে। কারণ পেঁয়াজের দাম, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতিসহ বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের একাধিক কর্মকাণ্ডে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। দলীয় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডেও তিনি শুধু এলাকা ভিত্তিক কর্মকাণ্ডেই তিনি বিশেষ মনোযোগী। স্থানীয় কর্মকাণ্ডের বাইরে তাকে খুব একটা দেখা যায় না। একজন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা হিসেবে জাতীয় কমিটিতে তার ভূমিকা এবং অবদান রাখার দরকার ছিল। সেই ভূমিকা এবং অবদান তিনি কোনটাই রাখতে পারেননি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে এরকম আরো কিছু নেতা আছেন যারা প্রচুর সুযোগ পেয়েছেন মন্ত্রীত্ব ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। কিন্তু সংগঠন বা মন্ত্রীত্বে দক্ষতা দেখিয়ে তাদেরকে যে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। এবার আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যারা দল এবং সংগঠন চালাতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা বাদ পড়বেন এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে শীর্ষ পর্যায় থেকে। কাজেই এবার কাউন্সিলের মাধ্যমে যে কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠিত হবে সেই পুনর্গঠনে এদের মত আরো কিছু নেতা বাদ পড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছ।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।