নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের নাগরিকত্ব বিল এবং আসামের নাগরিকপঞ্জির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের অস্থিরতার ঢেউ আছড়ে পড়ছে বাংলাদেশেও। বাংলাদেশের বাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৯ সালের পর থেকে বাংলাদেশে যে ভারত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছিল, কথায় কথায় ভারত বিরোধীতা এবং ভারত বিরোধী রাজনীতিকে যে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছিল সেই অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে আবার ভারত বিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক প্রতিক্রিয়াশীল দলগুলো নতুন করে ভারত বিরোধী রাজনীতির জিকির তোলার সুযোগ পাচ্ছে। আর এই ভারত বিরোধী রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিতে শুরু করেছে বিএনপি।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের পর থেকেই বাংলাদেশের এক ধরণের ভারত বিরোধী রাজনীতির শুরু হয়। এই রাজনীতির সূচনা করেছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। ভারত বিরোধী জিকির তুলেই তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং গনতন্ত্রকে ভুলুণ্ঠিত করেছিলেন।
ভারত জুজুর ভয় দেখিয়েই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার থেকে দূরে রাখার কৌশল নিয়েছিল বিএনপি, জামাত এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিগুলো। কিন্তু ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে তিনি আস্তে আস্তে জনসচেতনতা তৈরি, জনগণকে বোঝানো এবং নিজের ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি রাজনৈতিক কৌশল দিয়ে ভারত ফোবিয়াকে দূর করেন। বিশেষ করে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে গঙ্গার পানি চুক্তি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির মধ্যে দিয়ে তিনি প্রমাণ করেন যে ভারতের সঙ্গে সম্মানজনক ভাবে সমঝোতা করা যায় এবং উভয় পক্ষের সম্মান রেখে সুসম্পর্ক বজায় রাখা যায়।
২০০১ সালে আবার ভারত বিরোধীতরা জিকির ওঠে। সে সময় বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয় যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হবে ইত্যাদি। ভারত বিরোধী প্রোপাগান্ডা দিয়ে ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে দ্রুত মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং দুইদেশের একটা সম্মানজনক সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়। এরপরেই বাংলাদেশে মূলত ভারত বিরোধীতা লোপ পেতে থাকে। এমনকি বিএনপিও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক করার আশ্বাস দেয়, তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা থেকে ভারত বিরোধীতাকে হিমঘরে পাঠান। ২০১৮ এর নির্বাচনের আগে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল মিন্টুসহ অনেকেই একাধিকবার ভারত সফর করেন এবং ভারতের সঙ্গে দেন-দরবার করেন।
এর আগে প্রথম মেয়াদে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পরেও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা এবং ভারতকে মুচলেকা দেওয়ার নীতি গ্রহণ হরেছিল বিএনপি। অবশ্য তারেকের নেতৃত্ব, জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি কারণে ভারত বিএনপি থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিল। এখন নাগরিকপঞ্জী এবং নাগরিকত্ব বিলের পরে বিএনপি নড়েচড়ে বসেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত তিনদিনে অন্তত দুইদফা ভারতের বিরোধিতা করেছেন। বিএনপির মধ্যে যারা স্বাধীনতা বিরোধী, ভারত বিরোধী অংশ রয়েছেন- তারাও নড়েচড়ে বসেছেন। তারা ভারত বিরোধীতা করে মাঠ গরম করার পরিকল্পনা নিচ্ছেন বলেও বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে।
বিএনপি মনে করছে যে, সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন ভারত বিরোধী একটা মনোভাব তৈরি করা হয়েছে। নাগরিকত্ব বিল আর নাগরিকপঞ্জিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিলে দ্রুত জনসমর্থন পাওয়া যাবে।
শুধু বিএনপি নয়, ভারত বিরোধিতার জন্য ২০ দলীয় জোটকে আবার নতুন করে চাঙ্গা করার পায়তারা চলছে। বিশেষ করে জামায়াত, ইসলামী ঐক্যজোটসহ ২০ দলীয় জোটের ইসলাম ৫ ৫৬ নতুন করে সংঘবদ্ধ হবার চেষ্টা করছে। একাধিক সূত্র বলছে, প্রায় অর্ধমৃত এবং অনেকে বেড়িয়ে যাবার পরেও ২০ দলীয় জোট আবার নতুন করে বৈঠক করার চিন্তাভাবনা করছে এবং নাগরিকত্ব বিল এবং নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে কর্মসূচী দেবার চিন্তাভাবনা করছে। খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ের থেকে এখন ভারত বিরোধীতা নিয়ে মাঠে নামাটা অনেক বেশি মুখরোচক এবং সস্তা জনপ্রিয়তা উপায় বলেও মনে করছে।
অবশ্য এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নীতি গ্রহণ করেছে এবং দ্বিপাক্ষিক সমস্যাগুলো পারস্পারিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পথে হাঁটার পক্ষপাতী। আওয়ামী লীগ মনে করছে যে, ভারতের নাগরিকত্ব বিল কিংবা নাগরিক পুঞ্জি নিয়ে প্রকাশ্য বক্তব্য দেয়ার থেকে ভারতের সাথে এসব বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করাই যৌক্তিক এবং সেভাবেই সমস্যার সমাধান হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অতীতেও ভারতের সাথে অনেক জটিল ইস্যু আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছি, আমরা আশা করি যে এই বিষয়টিও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটা সম্মানজনক সমাধানের পথে এগিয়ে যাব।
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চীন সফর ভারত যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।
বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন র্যাবের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায় না তখন বিএনপি নেতারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন। তারা দলীয় কার্যালয়ে মিষ্টিমুখের ব্যবস্থাও করেছিলেন।
আবার ডোনাল্ড লু নির্বাচনের আগে যখন বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছিলেন তখন বিএনপি নেতাদের প্রকাশ্যে মার্কিন বন্দনা করতে দেখা গেছে। ২৮ অক্টোবরের আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই মার্কিন দূতাবাসে বা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বাসভবনে বিএনপির নেতাদের আনাগোনা ছিল। তারা সেখানে চা চক্রে মিলিত হয়েছেন, নৈশভোজে মিলিত হয়েছেন এবং বিভিন্ন রকমের শলাপরামর্শ করেছেন।
পিটার ডি হাস গত বছরের ১০ অক্টোবর বিএনপি যখন সমাবেশ করতে পারেনি তখনও একতরফা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বিতর্কিত সংগঠন মায়ের ডাকের এক নেতার বাসায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি বিএনপির প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি জানিয়েছিলেন। এভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উপর এক ধরনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন এবং সহানুভূতি দেখিয়েছিল।
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহানুভূতি এবং পরোক্ষ সমর্থনের কারণেই বিএনপির আন্দোলনের পালে হাওয়া লেগেছিল। নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি চাঙ্গা ভাব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। যদিও ২৮ অক্টোবরের পর এই ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই আহ্বানের চিঠি নিয়ে পিটার ডি হাস তিনটি দলের নেতাদের কাছে গিয়েছিলেন এবং একটি সংলাপ আয়োজনের শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই সংলাপ আয়োজনে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কেউই সাড়া দেয়নি।
এখন নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে এবং ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ১১ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলার পরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া এবং নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু’র আগে আফরিন আক্তার নির্বাচনের পরে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং সেই সময় তিনি হোটেল ওয়েস্টিনে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শামা ওবায়েদ আফরিন আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যদিও সেই সাক্ষাতের পর তারা কোনও কিছুই সাংবাদিকদেরকে জানাননি। কিন্তু এবার ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। আর এটি বিএনপির মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদেরকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিচ্ছেন না, পাত্তা দিচ্ছে না। বরং সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বিএনপি নেতারা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়ালসহ যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং মার্কিন দূতাবাসে যাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তাদেরকে দুষছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপির মধ্যেই সমস্যা রয়েছে। বিএনপির নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারেননি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিএনপির বক্তব্যগুলো তারা সঠিকভাবে ও যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি। আর একারণেই ডোনাল্ড লু’র সফরের পর বিএনপির মধ্যে চলছে এক ধরনের হতাশা।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি
মন্তব্য করুন
আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, দলের ভেতর সুবিধাবাদী, লুটেরা এবং দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। কিন্তু ২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্র্যাকডাউন হবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করবে। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ এবং তার আদর্শিক জোট ১৪ দলের নেতাদের চীন সফরে হিড়িক পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর এই চীন সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের চীন সফরের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছেন। তবে তারা এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই মনে করছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।