নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৬ জানুয়ারী, ২০২০
সিটি নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে কেন তা নিয়ে খোদ বিএনপির ভেতরে নানারকম প্রশ্ন, মতবিরোধ এবং আপত্তি রয়েছে। কিন্তু তা স্বত্বেও তারেক জিয়ার নির্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
এই নির্বাচনে শুরু থেকেই বিএনপি প্রচার-প্রচারণায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রায় সমান্তরালভাবে চলছে। এই সময় অনেক ভোটাররাই আশাবাদী হয়েছিল যে, শেষ পর্যন্ত হয়তো একটি অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবাধ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখবে বিএনপি। এমনকি আওয়ামী লীগের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া হয়েছিল যে, এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর নির্দেশনা জারি করেছিলেন। সেকারণেই এই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা প্রায় সমান্তরাল ধারায় চলছিল প্রধান দুই দলের মাঝে। কিন্তু বিএনপির লক্ষ্য যে, নির্বাচনে জয়ী হয়ে নগরভবন দখল করা নয়, বরং এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে একটা আন্দোলনের পটভূমি তৈরি করা, সেটি স্পষ্ট হচ্ছে ক্রমশ।
বিএনপি আশা করেছিল যে, নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে তাদের বাঁধা দেয়া হবে কিন্তু সেটি হয়নি। বিএনপি মনে করেছিল যে, নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে তাদের বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত নেতাদের গ্রেপ্তার করা হবে, সরকার সেটাও করেনি। বিএনপি আশা করেছিল যে, নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করবেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন বিএনপির পক্ষেই আচরণ করছে। বিএনপি আশা করেছিল যে, ইভিএম নিয়ে বিতর্ক নির্বাচন কমিশন লবেজান হবে, কিন্তু সাধারণ মানুষ ইভিএমের ব্যাপারে বিএনপির দাবিতে সাড়া দেয়নি। ফলে বিএনপির সামনে নির্বাচনকে বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ এবং সরে এসে আন্দোলনের জন্য একটি পথই খোলা ছিল, তা হলো গোলযোগ, সন্ত্রাস-সহিংসতা তৈরি করে একটি অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি করা। আর সেটা করতে যেয়ে প্রথমে ঢাকা উত্তর মিরপুরে ঘটনা ঘটে, সেখানে তাবিথ আউয়ালের মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটে। সেখানে তাবিথ আউয়ালের মিছিলে হামলার ঘটনাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রচার করা হয়।
যদিও দেখা যায় যে, এটি একটি ছোট-স্বাভাবিক ঘটনা। যেকোন তৃতীয় বিশ্বের নির্বাচনে এটা অত্যন্ত সাধারণ ঘটনা। এই ঘটনাটি যখন বেশিদূর গড়াতে পারলো না তখন ঢাকা দক্ষিণে ইশরাক হোসেনের মিছিলে হামলার ঘটনা সাজানো হলো নতুন করে। এখন এই ঘটনাটিকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে যে, ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী টিমের হাতে অস্ত্র কেন? তাহলে অস্ত্র নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করা বৈধ? এই ঘটনা কি বিএনপির পরিকল্পিত? বিএনপি কি তাহলে নির্বাচন বর্জনের জন্য সহিংসতাকে আঁকড়ে ধরে থাকতে চায়? বিএনপি কি তাহলে নির্বাচন বর্জনের জন্য সহিংসতার অজুহাত দাঁড় করাতে চায়?
বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন যে, নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে তখন এ ধরণের আরো ঘটনা ঘটবে। এই কথার সত্যতা পাওয়া গেছে জামাতের নিরবতা দেখে। এই নির্বাচনে জামাত ভূমিকাহীন। কিন্তু নির্বাচন বিশ্লেষকরা জানেন, ঢাকা দক্ষিণ এবং ঢাকা উত্তর- দুটিতেই জামাতের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোটব্যাংক আছে। তারা এখন পর্যন্ত নিরবতা পালন করছেন। তাহলে নির্বাচনের আগে কি আরো কোন বড় সহিংসতা করবে বিএনপি? যে সহিংসতা থেকে নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়ে বিএনপি একটি আন্দোলনের সূচনা করবে? নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, বিএনপির নীতি নির্ধারকরা বুঝতে পারছে তিনটি কারণে বিএনপির নির্বাচনে এবার জয় সম্ভব নয়।
প্রথমত; সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভোট নিয়ে একটা অনীহা তৈরী হয়েছে এবং সাধারণ ভোটারদের যদি উপস্থিতি কম হয় তাহলে কোনভাবেই এই নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে জয়লাভ করা সম্ভব নয়।
দ্বিতীয়ত; বিএনপি জানে যে, সাধারণ মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারা বিরোধী দলকে ভোট দিলে ঢাকা নগরীর উন্নয়ন হতশ্রী দশা যে আরো বাড়বে এ ব্যাপারে নিশ্চিত। এ কারণেই শেষ পর্যন্ত তারা বিএনপির চেয়ে ক্ষমতাসীন দলকে ভোট দিতে পছন্দ করবে।
তৃতীয়ত; বিএনপির এই দুই প্রার্থীই যে নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল নিয়েছেন। সেই কৌশল সাধারণ মানুষ গ্রহণ করছে না। বরং তারা চাইছে যে, উন্নয়নমুখী কর্মতৎপরতা তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় দেখতে। আর এ কারণেই নির্বাচনী প্রচারণায় পিছিয়ে পড়া বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই লাভজনক মনে করছে। আর এ কারণেই বিএনপি প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে এই সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।
আর এটা যদি তারা করতে পারে তাহলে আগামী দিনে আন্দোলনের একটা প্লাটফর্ম তৈরী করতে পারবে। বিএনপি মনে করছে যে, নির্বাচনের ৫দিন আগে টানেলে আলো দেখছে। এমন একটা পরিস্থিতি তৈরী হবে যখন সহিংসতার অজুহাত দিয়ে বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে পারবে। সেটা বিএনপিকে একটি নতুন আন্দোলন করার সূচনা দিবে। সেটা বিএনপি পারবে কিনা তা বোঝা যাবে আরো কয়েকদিন পর।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান
বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের ধারণা পাল্টিয়েছে, বিশ্বাস জন্মেছে।
তার কারণেই প্রার্থীরা আবারও ভোটাদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটাদের দ্বারে
যাওয়ার যে সংস্কৃতি সেটা আবারও ফিরে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) যশোর শিল্পকলা
একাডেমির মিলনায়তনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে
অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যশোর, নড়াইল ও মাগুরার জেলার প্রার্থী নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে
মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন।
একদিন বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন বিশ্বের
রোল মডেল হবে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৩৬ শতাংশ
এ সময়ে অনেক। দেশের কয়েকটা রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নেয়াতে ভোটার উপস্থিতি কম।
আগামীতে দেশের যত ভোট আসছে, ততই আমাদের ভোটের পরিবেশ, ভোট গ্রহণ পরিবর্তন ঘটছে। বিগত
সময়ে নির্বাচন নিয়ে কি ঘটেছে সেটা ফিরে তাকানোর আর কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন
কমিশন সকল বির্তক, সমালোচনা পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়ে দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
ইসি আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচনে ভোটারের
উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা কাজ করবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম
ধাপে মোট ভোট গ্রহণের শতাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এবার থেকে ভোট গ্রহণে উপজেলা ভিত্তিক
তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা আলাদাভাবে
প্রচারণা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা ভোটাদের বাঁধা দিবে তাদের প্রতিহত করবে প্রশাসন।
আমরা প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি আইনের হাত ও ক্ষমতা অনেক বেশি। নির্বাচন বানচাল করতে
সেই ক্ষমতা কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে প্রশাসন।
ইসি আরও বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমান
কমিশন সততার সঙ্গে কাজ করছে। শুধু কমিশন নয়, নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা সততার
সঙ্গে কাজ করছে। নির্বাচনে সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য আইন পাস করেছে এ কমিশন। কেউ সাংবাদিকদের
কাজে বাধাগ্রস্ত করলে জেল জরিমানার বিধান করা হয়েছে। মিডিয়াকে এ অবস্থানে নেয়ার ক্ষেত্রে
এ কমিশন ও সরকার ভূমিকা রাখছে।
যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল
হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় যশোর, নড়াইল ও মাগুরা জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপাররা
বক্তব্য রাখে। সভায় যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার সকল প্রার্থী, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উপজেলাসমূহের
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাবৃন্দ, আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা
রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাবৃন্দ
এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ
নেয়।
অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে শার্শা উপজেলা
পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে অংশ নেন ইসি আহসান
হাবিব খান।
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।