নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদনের শুনানি হবে আগামী রোববার। এর মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার কার্যত মুক্তির পথ আবার রুদ্ধ হয়ে গেলো। কারণ এই জামিন আবেদনের বিরোধিতা করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন যে এটি সরকারের মামলা নয়, এটি দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা। কাজেই আমরা এই জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করবো। আমরা মনে করি যে আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন নাকচ করে দেওয়ার পর নতুন করে এই জামিনের আবেদন করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টেও যদি আগামী রোববার শুনানির পরে খালেদা জিয়ার জামিন দেয় তাহলে পরেও এই জামিনের বিষয়টি আপিল বিভাগে যাবে। ততক্ষণ পর্যন্ত খালেদার মুক্তি হবে না। শুধুমাত্র জিয়া চ্যারিটেবল মামলা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাতেও খালেদা জিয়াকে জামিন নিতে হবে।
কাজেই আবার আইনি লড়াইয়ে গিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির পথকে বাধাগ্রস্ত করছে বিএনপি, এমনটাই মনে করছেন বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতারা। সে কারণেই বিএনপি মনে করছে যে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে ভুলেভরা সিদ্ধান্তের জন্যই খালেদা জিয়ার মুক্তি এখন আবার অনিশ্চিত হয়ে গেছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে যে ভুলগুলো হয়েছে, তার মধ্যে-
১. আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা:
খালেদা জিয়ার মুক্তির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত হচ্ছে আইনি পথে তাকে মুক্তির চেষ্টা। মনে রাখতে হবে খালেদা জিয়া দুটি মামলাতেই নিম্ন আদালত থেকে দণ্ডিত। একটি মামলায় হাইকোর্ট তার দণ্ড বাড়িয়ে দিয়েছে। এরকম বাস্তবতায় আইনি পথে খালেদা জিয়ার জামিন বা মুক্তি প্রায় অসম্ভব। এই বাস্তবতাকে বিএনপির আইনজীবীরা এবং নেতৃবৃন্দ অনুধাবন করতে পারছেন না।
২. আইনজীবীদের ভুল কৌশল:
বিএনপির আইনজীবীরা এই জামিনের বিষয় নিয়ে ভুল কৌশল অবলম্বন করছেন। তারা শুরুতেই বলেছেন যে, জামিন পেলে বিদেশে যাবেন। বিদেশে যাবার জন্য কোন জামিন দেয়া হয়না। বিশেষ করে যেখানে বলা হয়েছে যে ‘অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট’। বাংলাদেশেই অনেক জায়গায় অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট রয়েছে এবং সম্ভব হয়েছে। যদি তারা জামিন আবেদনে বলতেন যে, উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিন প্রয়োজন, তাহলে সেটা বিবেচনা করা যেত, কিন্তু বিদেশে যাবার জন্য জামিন মঞ্জুরের প্রথা চালু হলে অন্য সব দণ্ডিত আসামীরাই স্বাস্থ্যগত কারণে হাইকোর্টে আপিল করবে এবং জামিন নিয়ে বিদেশে চলে যাবে। তাহলে ন্যায়বিচার এবং দণ্ডিতর সাজা ভোগের যে বিধানটা সুদূর পরাহত হবে। কাজেই এমন একজন দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে জামিনের নির্দেশনা আদৌ হাইকোর্ট দেবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। এটাও বিএনপির একটি ভুল কৌশল।
৩. পরিবারের সিদ্ধান্তহীনতা:
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে তার পরিবার সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। তারা সকলে মনে করছেন, যেভাবেই হোক মুক্তিটাই হলো আসল এবং খালেদা জিয়াকে মুক্তির জন্য সবকিছুই করণীয় দরকার এবং বেগম খালেদা জিয়া তাদেরকে বিশেষ বিবেচনায় মুক্তির ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেটা তারা শোনেননি। পরিবারের এই সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই আবার আইনি প্রক্রিয়ায় যাবার সুযোগ পেয়েছে বিএনপি এবং যেটার ফলে খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ সুদূর পরাহত হলো।
৪. সরকারের সঙ্গে দরকষাকষিতে ব্যর্থতা:
বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন বিএনপির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য একটাই পথে খোলা আছে। আর সেটি হলো সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি করে। সরকারের কাছে আবেদন করে প্যারোলো মুক্তি নেওয়া। কিন্তু এটা করতে বিএনপির নীতি নির্ধারকরা এবং শীর্ষ স্থানীয় নেতার ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের সেই বার্গেনিং পাওয়ার তারা দেখাতে পারেনি।
৫. অগ্রাধিকার নির্ণয়ে ব্যর্থতা:
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, উপ নির্বাচন নাকি দলের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান কোন পথে যাবে বিএনপি তা নিয়ে দলটি নিজেরাই অগ্রাধিকার ঠিক করতে পারেছে না। আর এই অগ্রাধিকার যদি ঠিক করতে না পারে তাহলে খালেদা জিয়ার মুক্তি কখনোই হবে না বলে বিএনপি নেতারা।
বিএনপির অনেক নেতাই বলেন, বিএনপির এখন সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য চেষ্টা করা উচিত এবং সব ধরনের পথগুলোকে ব্যবহার করা উচিত। বিএনপি নেতারা তা পারছে না। তাদের কাছে অনেকগুলো অগ্রাধিকার একের পর এক প্রধান্য পাচ্ছে। যে কারণে খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ সুদূর পরাহত হয়ে যাচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক কারাগা
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সারা দেশেই বাড়ছে দলটির গৃহদাহ। দল পুনর্গঠন ও চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঘিরে দলীটির বিবাদ প্রকাশ্যে আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশ সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘন করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা। তাদের অনেকে এলাকায় গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করতে গোপনে উসকে দিচ্ছেন স্থানীয় নেতাদের। ঢাকায় ফিরে তারাই আবার দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের পথ প্রশস্ত করছেন। এতে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস ঘনীভূত হচ্ছে।
দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের দলীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কারাগারে যাওয়া নেতাদের অনেকের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মনে করছেন দলীয় অনেকে। এ নিয়ে দলের ভিতরে রয়েছে বিতর্ক। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের (অডিও-ভিডিও) ভিত্তিতে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। অনেককে অঘোষিতভাবে ‘ওএসডি’ করা হয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে। এ নিয়ে ক্ষোভে কেউ কেউ রাজনীতি থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। চলে যাচ্ছেন দেশ ছেড়ে।
এসব বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি মহাসাগরের মতো বিস্তৃত একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। এ দলে নেতাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতেই পারে। তবে কোনো রকমের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা কোন্দল নেই।
জানা গেছে, সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বিরোধ-কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে চলমান উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। এই নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বয়কটের পক্ষে নেতা-কর্মীদের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সারা দেশে সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ নেতাই তাদের নিজ নিজ এলাকায় সেই দায়িত্ব পালন করেননি। অনেকে এলাকাতেই যাননি। জেলা বিএনপির শীর্ষকর্তারাও তেমন কোনো ভূমিকা রাখেননি। বরং উল্লিখিত নেতাদের এলাকাতেই ভোট কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে। নির্বাহী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব নেতার দ্বৈত ভূমিকায় তৃণমূলের নেতারা ক্ষুব্ধ।
মন্তব্য করুন